সিলেট শহীদ মিনারে বইমেলা আয়োজনের নামে ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনের চেষ্টার অভিযোগ

সিলেট অফিস :

ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশ থেকে ফ্যাসিবাদ নির্বাসিত হলেও এখনো শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতি সবখানে রয়ে গেছে ফ্যাসিবাদীদের দোসর।
অভিযোগ উঠেছে
বিগত দিনে যারা সিলেটের সাহিত্য অঙ্গনে আওয়ামীলীগের প্রভাব খাটিয়ে জাতীয়তাবাদী এবং ইসলামী মুল্যবোধে বিশ্বাসী লেখকদের কোণঠাসা করে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ চালিয়ে ছিলো ওরা এখনো তৎপর।
প্রস্তুক বিক্রেতা জসিম বুক হাউসের সত্ত্বাধিকারী জসিম উদ্দিন বলেন
২০২১ সালে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে  বাংলার মুখ আয়োজিত বইমেলায় ইসলামী বই রাখার অভিযোগে মেলা থেকে ইসলামী স্টল সরিয়ে দিতে যারা বাধ্য করেছিলো তারা এই পরিবর্তিত বাংলাদেশে আবারও বইমেলার আয়োজন করার তৎপরতা চালাচ্ছে।
প্রকাশক পরিষদের নাম করে আওয়ামীলীগের পদলেহনকারী প্রকাশক চক্র সংঘবদ্ধ হয়ে শহীদ মিনারে একুশের বইবেলা করতে তোরজোর করছে।
এই প্রকাশক পরিষদের সাথে সিলেটের সকল প্রকাশনী সংস্থা জড়িত নয় বলে জানান প্রকাশক ও পরিবেশক জসিম উদ্দিন।
সেচ্ছাসেবী সংগঠন আলোর অন্বেষণ’র সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ হাবিব রহমান বলেন আমরা বিগত ৫ বছর ধরে বাংলা সাহিত্য বিকাশের লক্ষ্যে বইমেলা আয়োজন করে আসছি এবং বইমেলার সমাপনী দিনে বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য লেখকদের সম্মাননা প্রদান করে আলোর অন্বেষণ।
এই ধারাবাহিকতায় এবারও আমরা সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ৫ ম আলোর অন্বেষণ বইমেলার উদ্যোগ নিয়েছি এবং সিলেট সিটি করপোরেশনে শহীদ মিনার ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছি।
সিটি করপোরেশন থেকে আমাদের জানানো হয়েছে প্রকাশক পরিষদের নামে একটি সংগঠন ফেব্রুয়ারী মাসে বইমেলার জন্য আবেদন করেছে।
আমরা খুঁজ নিয়ে জেনেছি
প্রকাশক পরিষদের ব্যানারে যে মেলার উদ্যোগ নিয়েছে তার মুল হোতা মেলা বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক রাজীব চৌধুরী একজন সাহিত্য সন্ত্রাসী পতিত স্বৈরাচারের শাসন আমলে এই ব্যক্তি ক্ষমতার দাপটে সিলেটের সাহিত্য অঙ্গনে অনেক অনিয়মের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন।
ফ্যাসিবাদ আমলে  ইসলামপন্থী লেখক প্রকাশকদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা বইমেলায় স্টল না দেওয়ায় ভুমিকা রাখা রাজীব চৌধুরী নিজের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান চৈতন্য থেকে গত নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী এমএ মান্নান,ড. মুহাম্মদ সাদিক,শফিউল আলম নাদেল এমন কি গত সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামিলীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামানের পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছিলো।
প্রকাশক পরিষদের সভাপতি নাজমুল হক নাজু বিভিন্ন সময় আওয়ামীলীগ প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচবে প্রচারণা চালাতে দেখা যায়।
আওয়ামীলীগের সাথে দহরম মহরম করে চলা এই সব বিতর্কিত প্রকাশক লেখকরা বিগত দিনে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খুঁজলে পাওয়া যাবে বলে তিনি যুক্ত করেন।
আলোর অন্বেষণ’র প্রতিষ্টাতা প্রবাসী সাংবাদিক ও কবি সাজন আহমদ সাজু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের অভিমত ব্যক্ত করে জানান এই নতুন বাংলাদেশে আওয়ামী প্রেতাত্মাদের এই দৌরাত্ম আমাদের সকলের জন্য অশনিসংকেত।
সিলেট সিটি করপোরেশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের উচিৎ এমন কাউকে শহীদ মিনারে মেলা আয়োজন করতে দেওয়ার আগে ২৪ এর বিপ্লবের শহীদের কথা বিবেচনা করা।
এই ফ্যাসিবাদের জুলুম বঞ্চনা,শোষণ নিপীড়ন আর ক্ষমতার দাপট থেকে মুক্ত হতেই ছাত্রজনতা অকাতরে প্রাণ বিলিয়ে দিয়েছিলো।
সিলেটবাসীর উচিৎ এইসব আওয়ামী দালালদের ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখা।কোনো সংগঠনের নাম করে আওয়ামীলীগ যেনো আবার পুনর্বাসনের সুযোগ না পায়।
সাজন আহমদ সাজু বলেন এই অশুভশক্তি খোলস পালটে নানা ফন্দিফিকির করছে যেকোনো কৌশলে আবার নিজেদের অবস্থানে ফিরে যেতে।
কোনো ভাবেই তা হতে দেওয়া যাবেনা।
বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষাকে হৃদয়ে ধারণ করে সবখানেই আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের প্রতিহত করতে হবে সামাজিক ভাবে।
সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতিবছর একুশের  বইমেলা করে আসছিলো প্রথম আলো বন্ধু সভা।
এই বছর সংগঠনটি বইমেলা আয়োজন করছেনা বলে নিশ্চিত করেন বন্ধুসভার সভাপতি।
সিলেট সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা নিঝুম দাস জানান তিনটি সংগঠন থেকে শহীদ মিনারে বইমেলা আয়োজনের জন্য আবেদন করেছে।
এখনো কাউকে মেলা আয়োজনের জন্য শহীদ মিনার বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।

যুগান্তরের সাংবাদিক ও তার পরিবারের প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার:

সংবাদ প্রকাশের জের ধরে দৈনিক যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার হাবিব সরোয়ার আজাদের বাসায় ঢুকে হামলার চেষ্টা ও সপরিবারের হত্যার হুমকির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে এলাকাবাসী।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বাদাঘাট কলেজ রোডে ওই প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ১১ ও ১২ জুলাই যুগান্তরের অনলাইন ও প্রিন্ট ভার্সনে ইউএনওর বদলি সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এছাড়া ইউএনও, জাদুকাটা নদী সেতু, ভূমিমন্ত্রীর বক্তব্য সংবলিত জাদুকাটা নদীতে ড্রেজার জব্দ ও ড্রেজার মালিকদের গ্রেফতারের নির্দেশ, বাদাঘাট বাজারে ভারতীয় বিড়ি জব্দ, কলাগাঁও সীমান্ত ছড়া নদীর বালু উত্তোলন সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এ সংবাদ প্রকাশের জের ধরে ১২ জুলাই বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে দলবল নিয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার হাবিব সরোয়ার আজাদের সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বাদাঘাট কলেজ রোডের বাসায় প্রবেশ করেন। যুগান্তরে এসব প্রতিবেদন প্রকাশের কারণ জানতে চেয়ে কেঁচি গেট খুলে হামলার অপচেষ্টা করেন। এ সময় আশপাশের লোকজন জড়ো হতে দেখে ভবিষ্যতে যুগান্তরে কোনো ধরনের সংবাদ প্রকাশ কিংবা তথ্যের জন্য থানার ওসি-ইউএনওকে ফোন করলে পরিবারের সব সদস্যসহ সাংবাদিক আজাদকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চেয়ারম্যান আফতাব তার দলবল নিয়ে চলে যান।

বক্তারা বলেন, এরপর থেকেই চেয়ারম্যান আফতাব ও তার দলবলের হুমকির মুখে সাংবাদিক আজাদ ও তার সহধর্মিণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বাসায় অবরুদ্ধ হয়ে আছেন। এটি স্বাধীন সাংবাদিকতার উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ দাবি করে বক্তারা বলেন, অবিলম্বে হুমকিদাতাদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। যাতে ভবিষ্যতে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে সাংবাদিক-শিক্ষক দম্পতিকে সপরিবারে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বাসায় অবরুদ্ধ করে রাখার অপচেষ্টা করতে না পারে।

মানববন্ধনে বক্তারা সাংবাদিক আজাদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা জোরদার করা ও অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে বের করে আনার দাবি তুলেন সরকার প্রধান ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- এলাকাবাসীর পক্ষে সমাজসেবক সামসু মিয়া, ব্যবসায়ী আবুল হোসেন, সারোয়ার হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আলীম উদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম, সাংবাদিক এমএ রাজ্জাক, হাসান বশির, রাহাদ হাসান মুন্না, আব্দুল মান্নান, রোকন উদ্দিন, সাবজল হোসাইন প্রমুখ।

এছাড়া উপজেলার কামড়াবন্দ, বাদাঘাটবাসীসহ উপজেলার একাধিক গ্রাম থেকে আসা মানুষজন, সাংবাদিক, শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ইউএনওর বদলি সংক্রান্ত প্রতিবেদন ছাড়াও এর পূর্বে ধারাবাহিকভাবে দৈনিক যুগান্তরে ‘জাদুকাটা নদীর উপর নির্মাণাধীন সেতুতে ড্রেজারের ধাক্কায় প্রায় ৬ কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি, ড্রেজার মেশিন জব্দ ও ড্রেজার মালিকদের গ্রেফতারে ভূমিমন্ত্রীর নির্দেশ, বাদাঘাট বাজারে ভারতীয় বিড়ির চালান জব্দ, কলাগাঁও সীমান্ত ছড়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন এবং নৌপথে চাঁদাবাজির প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

এরপর থেকে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আফতাব নিজেই মুঠোফোন এবং বিভিন্ন সময় তার লোকজন দিয়ে বিভিন্নভাবে হাবিব সরোয়ার আজাদকে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে।

বুধবার দুপুরে উপজেলার সাংবাদিক আজাদের সহধর্মিণী জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক তৎপরতার মুখেও অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে গেল শুক্রবার বিকালের পর থেকেই আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে বাসায় অবরুদ্ধ অবস্থায় আছি।

উল্লেখ্য, এ ঘটনার পর রাতেই সাংবাদিক আজাদ নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা চেয়ে এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আফতাবসহ তার দলবলে থাকা অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেছেন।
সুনামগঞ্জ, সিলেট, ঢাকা:১৭.০৭.২৪

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
আমতলীতে সাংবাদিক ও শিক্ষককে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা প্রধানকে কেন বরখাস্ত করলেন নেতানিয়াহু কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন বুয়েট শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়কে ওসাকা এক্সপো–২০২৫: কৃত্রিম দ্বীপে এ যেন এক টুকরা ফিলিস্তিন জেনেভা ক্যাম্পের মাদক সম্রাট বশির মোল্লার হাতে নাশকতার নীলনকশা বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়, সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা চেয়েছে: আসিফ নজরুল রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধার শিশুকে বাসায় নিয়ে ধর্ষণ, ট্রাফিক কনস্টেবল কারাগারে আবহাওয়া অফিস বৃষ্টি নিয়ে যে বার্তা দিলো মায়ের বিয়ের বেনারসি শাড়িতে জয়া আহসান