দোয়া করবেন ভাই, বোবা হয়ে আছি: পলক

স্টাফ রিপোর্টার:

জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে দায়ের করা এক মামলার তদন্তের অগ্রগতি জানাতে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ আওয়ামী লীগের গ্রেপ্তার সাবেক মন্ত্রী, আমলা, বিচারপতি এবং রাজনীতিবিদসহ ১৬ জনকে দ্বিতীয়বারের মতো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

তারপর পলকসহ কয়েকজন হেভিওয়েট আসামিকে নিয়ে পুলিশের গাড়িটি ট্রাইব্যুনাল ছেড়ে চলে যায়।

সবা:স:জু- ৩৮৮/২৪

আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার:

রাজধানীতে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের চোরাগোপ্তা তৎপরতা। ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের রক্তের দাগ না শুকাতেই, রাজধানীজুড়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। প্রতিদিনই রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় তারা চোরাগোপ্তা বিক্ষোভ মিছিল করছে। এই মিছিলে অংশ নেওয়া অনেকের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার হত্যার মামলা রয়েছে।

সরকারি তরফ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হলেও সেগুলো পর্যাপ্ত প্রভাব ফেলছে না, যার ফলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে চলছে ব্যাপক সমালোচনা।

এই পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে, ঢাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। তিনি ডিএমপির ক্রাইম ও গোয়েন্দা বিভাগকে কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন—সক্রিয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় তল্লাশি চালিয়ে তাদের গ্রেফতারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এছাড়া সিআইএমএস (সিটিজেন ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম) ফরম পূরণের মাধ্যমে রাজধানীর কোন এলাকায় কে থাকেন, কারা রাজধানী ছেড়েছে এবং নতুন করে কারা প্রবেশ করেছে সেসব তথ্য সংগ্রহের ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে। গ্রেফতারি পরোয়ানা ও মামলা নিষ্পতি কম হওয়ায় ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন তিনি। চিহ্নিত অপরাধী গ্রেফতারে নিয়মিত ব্লকরেইড দেওয়াসহ এসব বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন কমিশনার।

সোমবার রাজধানীর রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে এসব নির্দেশনা দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সভায় ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সরওয়ার; (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এসএন মো. নজরুল ইসলাম; (সিটিটিসি) মো. মাসুদ করিমসহ যুগ্ম পুলিশ কমিশনার, উপপুলিশ কমিশনার ও সব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি), বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) মো. ফারুক হোসেন মার্চ-২০২৫ মাসের সার্বিক অপরাধ পরিস্থিতি যেমন-ডাকাতি, দস্যুতা, চুরি, সিঁধেল চুরি, খুন, অপমৃত্যু, সড়ক দুর্ঘটনা, নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র উদ্ধারসহ বিভিন্ন মামলাসংক্রান্ত তথ্য উপস্থাপন ও পর্যালোচনা করেন। মাসিক অপরাধ সভায় মার্চ মাসে ঢাকা মহানগরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও জননিরাপত্তা বিধানসহ ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসাবে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে কর্মকর্তাদের পুরস্কৃত করেন ডিএমপি কমিশনার।

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অনেকে নতুন করে ঢাকায় আসছেন আবার অনেকে ঢাকা ছেড়েছেন। পটপরিবর্তনের পর রাজধানীতে কারা কোথায় বসবাস করছেন তাদের বিষয়ে তথ্য নিতে নাগরিক তথ্য হালনাগাদকরণে বা সিআইএমএস (সিটিজেন ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম) ফরম পূরণের ওপর জোর দিয়েছেন কমিশনার।

মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় ডিএমপির মামলা, গ্রেফতারসহ নানা পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়। সেখানে দেখা গেছে, মামলা যে হারে রুজু হচ্ছে সে হারে নিষ্পত্তি হচ্ছে না। এছাড়া ওয়ারেন্ট তামিলের বা গ্রেফতারি পরোয়ানা বাস্তবায়নের হারও কম। যে হারে আদালত থেকে ওয়ারেন্ট তামিল হচ্ছে সে হারে নিষ্পত্তি হচ্ছে না। পেন্ডিং ওয়ারেন্টের সংখ্যাই বেশি থাকছে। এর ফলে অনেক আসামি সুযোগ নিচ্ছে। এসব বিষয় উলে­খ করে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে সভায়।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মারামারি, হানাহানি চলছে। এসব বন্ধ করতে কার্যকর উদ্যোগ নিতেও নির্দেশ দিয়েছেন কমিশনার। আগের মতো এলাকার মানুষের সহযোগিতা নিয়ে পুলিশিং করার ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।

অপরাধ পর্যালোচনা সভায় ডিএমপির উপকমিশনারদের (ডিসি) বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম অফিসাররা যে যে বিষয়ে দক্ষ তাকে সেই বিষয়ে কাজ করাতে হবে। ট্রাফিক বিভাগের পুলিশের উদ্দেশে কমিশনার বলেছেন, আপনারা আরেকটু সচেতন ও সহনশীল হবেন। হুটহাট রিকশা ড্রাইভারকে মারধর করবেন না। তারা অন্যায় করলে প্রসিকিউশন করেন। কিন্তু তাদের সঙ্গে অবশ্যই মানবিক আচরণ করবেন।

ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী ওসিদের উদ্দেশে বলেছেন, আমলযোগ্য অপরাধের ঘটনায় অবশ্যই মামলা নিতে হবে। কোনো ঘটনা আড়াল করা যাবে না। মামলার রহস্য উদঘাটন করে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। অপরাধ যাতে না ঘটে তার জন্য প্রতিরোধমূলক পুলিশি কার্যক্রম বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, সর্বোচ্চ বিনয়ী থেকে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে হবে। কোনো অবস্থায়ই দৃষ্টিকটু ও অপেশাদার আচরণ করা যাবে না। ডিএমপির প্রতিটি থানার ওসিকে মামলা তদন্ত করতে হবে। থানা এলাকার প্রতিটি ভবনের সিকিউরিটি গার্ডদের সঙ্গে থানার টহল টিমের সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করতে হবে। কোনো অপরাধের তথ্য তাদের কাছে থাকলে তারা যেন পুলিশকে সেই তথ্য প্রদান করে সেভাবে কাজ করতে হবে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম