ঢাকায় ছিনতাই বেড়ে যাওয়ার কথা স্বীকার

স্টাফ রিপোর্টারঃ

সম্প্রতি ঢাকায় ছিনতাই প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে নিজের মোবাইল ও ব্যাগ নিজ দায়িত্বে নিরাপদে রাখার মাধ্যমে পুলিশকে ‘সহায়তা’ করতে বলেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) ঢাকা ক্লাবে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদেরকে এ ব্যপারে সাহায্য করব। কিন্তু নিজের ব্যক্তিগত ব্যাগ এবং মানিব্যাগ, পার্স, মোবাইল নিজে একটু নিরাপদে রাখার চেষ্টা করবেন। তাহলে এ কাজটির মাধ্যমে আপনি আমাদের সহযোগিতা করতে পারবেন।’

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ইদানিং যে অপরাধটি মানুষের মধ্যে শঙ্কার সৃষ্টি করেছে সেটি ছিনতাই। ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত অধিকাংশ মাদকাশক্ত অল্প বয়সের ছেলেরা। ১৫ থেকে ২২ বছরের ছেলেরা মাদকে আশক্ত হয়ে এই ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।’

তিনি বলেন, ‘ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৮০ ভাগই মোবাইল ফোন ছিনতাই হয়। বাসে বা প্রাইভেটকারে যখন কথা বলে তখন মোবাইল নিয়ে দৌড় দেয়। তাদেরকে হাতেনাতে ধরা অত্যন্ত কঠিন কাজ। আমার অফিসারদের কাছে বড় অস্ত্র থাকে, বুট পরা, ইউনিফর্ম পরা থাকে। ছিনতাইকারী থাকে খালি পায়ে বা একটা কেডস পরা। তার সাথে দৌড়ে পারাটা অনেক কঠিন। তাই প্রথমত আমি ঢাকাবাসীকে অনুরোধ করব, আপনার মোবাইল, মহিলারা যারা পার্স ব্যবহার করেন আপনার পার্স বা হ্যান্ডব্যাগ নিজের নিরাপত্তায় ভালোভাবে রাখার চেষ্টা করেন।’

তিনি বলেন, ছিনতাইয়ের ব্যপারে গত এক সপ্তাহে ব্যপক ব্যবস্থা নিয়েছি। দিনে এবং রাতে পেট্রোল সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ডিবিকেও এ কাজে লিপ্ত করেছি। গত এক সপ্তাহে তথ্য মোতাবেক আগের তুলনায় ছিনতাই কমে এসেছে। আশা করছি আমরা ছিনতাইকে আরও নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হবো।’

এদিকে, ছিনতাই প্রতিরোধে গত ২২ ডিসেম্বর থেকে রাজধানীজুড়ে ‘বিশেষ অভিযান’ পরিচালনা শুরু করে ডিএমপি। পরদিন অভিযানের প্রথম ২৪ ঘণ্টায় ৯৩ জন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতারের তথ্য দিয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এস এন মো. নজরুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, এই ছিনতাই প্রবণতা ‘কমে না আসা পর্যন্ত’ বিশেষ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ঢাকায় দুই থেকে আড়াই কোটি লোকের বসবাস। এখানে হতদরিদ্র, নিন্মবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংখ্যাই বেশি। বেকারত্বের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। নানাবিধ সামাজিক সমস্যা প্রকারন্তরে পুলিশের ঘাড়েই এসে পড়ে। ইদানিং বিভিন্ন গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের লোকেরা ছোটখাট দাবি আদায়ের জন্য রাজপথকেই বেছে নেয়। সবাই মনে করে রাজপথ দখলে নিলে তাদের দাবিদাওয়া দ্রুত আদায় হবে বা সমস্যার সমাধান হবে। যার ফলে ঢাকার ভঙ্গুর ট্রাফিক আরও নাজুক অবস্থায় চলে যায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষকে রাস্তায় থাকতে হয়।’

ঢাকার উত্তর থেকে দক্ষিনে মূলত মিরপুর রোড, এয়ারপোর্ট রোড ও রামপুরা রোড, এই তিনটি সড়কের কথা তুলে ধরে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘একটি রোড বন্ধ হলে পুরো শহর অচল হয়ে যায়। আমরা এ সমস্যার প্রতিনিয়ত সম্মুখীন হচ্ছি। তাই অনুরোধ দাবির ব্যপারে খোলা মাঠ, অডিটোরিয়াম, সভাস্থল বেছে নিন। যথাযথ কর্তৃপক্ষকে সেখানে ডেকে টেবিলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করুন। ঢাকাবাসীর ট্রাফিক ব্যবস্থাকে আরও ভঙ্গুর করে তুলবেন না এটি আমার সবিনয় নিবেদন।’ ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর ডিএমপি সদস্যরা যেরূপ আচরণ করেছে, সেই আচরণ থেকে বের হয়ে আসতে চাই। কিন্তু এজন্য সময়ের প্রয়োজন। আমার সকল অফিসারের নতুন করে প্রশিক্ষণের বিশেষভাবে প্রয়োজন। প্রশিক্ষণ ছাড়া হঠাৎ করে ৪০ হাজার সদস্যকে পরিবর্তন সম্ভব না। তাই আমরা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ইতোমধ্যে শুরু করেছি। কোথায় কী পরিমান বল প্রয়োগের প্রয়োজন সেদিকে আমরা দৃষ্টি রাখছি। অচিরেই আপনারা সেই পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন।’

৫ অগাস্টের পরে ডিএমপির মনোবল ‘একদম ভেঙে পড়ে’ এবং বিগত পাঁচ মাসের ‘অক্লান্ত পরিশ্রমে’ অনেকটাই কাটিয়ে উঠার কথা জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার। তিনি বলেন, ‘পুলিশ যদি নিস্ক্রিয় থাকে তার ফলাফল কি হয় ৫ অগাস্টের পরে ঢাকাবাসী মর্মে মর্মে উপলব্দি করেছে। এই পুলিশ আপনাদের লাগবে। আমাদের অনেক শর্টকামিংস দুর্বলতা আছে, সেগুলা থেকে বের হয়ে আমরা আপনাদের সেবা দিবো। কিন্তু ডিএমপি আপনাদের লাগবে।’

এসময় নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা’ স্বত্ত্বেও ‘সকল কষ্ট স্বীকার’ করে ঢাকাবাসীকে সেবা দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।  ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমার সহকর্মীদের অনেক ভুল ভ্রান্তি হয়ে যায়। সেই ভুলভ্রান্তি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ। সেসব সংশোধন করে যেন ঢাকাবাসীকে যেন সেবা দিতে পারি সকলের কাছে কামনা করছি। সীমিত সংখ্যক পুলিশ দিয়ে সকল সমস্যার সমাধান অত্যন্ত দূরুহ। সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করলে আমরা অবশ্যই ভালো থাকবো।’

 

সবা:স:জু- ৬৯৯/২৫

অবশেষে ডিআইজি হচ্ছেন হারুন উর রশিদ হাযারী

স্টাফ রিপোর্টার:

পুলিশের ১৭ ব্যাচের মেধাবী হারুন উর রশিদ হাযারী দীর্ঘদিন পদোন্নতি বঞ্চিত থাকার পর অবশেষে ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি পেতে চলেছেন।

রবিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের (এসএসবি) (২০২৪ সালের ২০তম) সভায় হারুন উর রশিদসহ পুলিশ ক্যাডারের ৭৪ কর্মকর্তাকে ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়।

এখন এই পুলিশ কর্মকর্তাদের পদোন্নতির সুপারিশ অনুমোদনের জন্য প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হবে। প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনের পর যেকোনো সময় প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে।

হারুন উর রশিদ হাযারী সৎ, দক্ষ ও মেধাবী পুলিশ কর্মকর্তা হলেও আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে মূল্যায়িত হননি। রাজনৈতিক বিবেচনার কারণে যোগ্যতা থাকার পরও দীর্ঘকাল তার পদোন্নতি আটকে রাখা হয়।

হারুন উর রশিদ হাযারী ১৯৯৮ সালে পুলিশে যোগদান করেন। পুলিশের ১৭ ব্যাচের মেধা তালিকায় তার অবস্থান তৃতীয়। তার ব্যাচের অনেক কর্মকর্তা অতিরিক্ত আইজিপি হয়েছেন।

এর আগে তিনি নোয়াখালী ও ফেনী জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন। এছাড়াও তিনি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উপকমিশনার ছিলেন।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
বিদেশ থেকে যতটুকু স্বর্ণ আমদানি করলে দিতে হবে না ভ্যাট প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎতে যাচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব ফকরুল বাংলাদেশে ইতিহাস গড়ল উইন্ডিজ দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন রাজউক ইমারত পরিদর্শক শামীম রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধে কে জিতবে, তা নিয়ে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নিচেছ ট্রাম্প নাসার চন্দ্র মিশনে স্পেসএক্স জুলাই যোদ্ধা স্বীকৃতি পেতে নতুন করে দেড় হাজারের বেশি আবেদন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিল শুনানি শুরু প্রধান প্রকৌশলীর আস্থাভাজন ইএম ২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদ সম্পদের পাহাড় জানানো যাচ্ছে অভিযোগ, থানায় বসলেই ভিডিওকলে হাজির এসপি