চট্টগ্রামে এমএলএমের আদলে প্রতারণার ফাঁদ, টার্গেট নতুন সদস্য

স্টাফ রিপোর্টারঃ

চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানার গোলাপাহাড় মোড়ের একটি ভবনে ‘সেলফ এমপ্লয়মেন্ট টেকনোলোজি লিমিটেড’ নামের প্রতিষ্ঠানের সুসজ্জিত অফিস। নির্ধারিত ফি নিয়ে এ প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধন করানো হয় গ্রাহকদের। তাদের বেশিরভাগ গ্রাহক কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বিনিময়ে তাদের বিভিন্ন সুবিধা এবং কাজের সুযোগ দেওয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু আদতে এই প্রতিষ্ঠানটির কাজ গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া। এভাবে কোটি টাকা তুলে একবার এ প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে গেলেও পরে আবারও এমএলএমের আদলে নতুন রূপে হাজির হয়ে ফাঁদ পাতে প্রতারণার।

জানা গেছে, এ প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনায় আছেন তিন ভাই শাহদাৎ হোসেন শাহীন, ইমাম হোসেন ও শামীম। তাদের বাড়ি মিরসরাইয়ে। একশ্রেণির যুবকদের অল্প সময়ে কোটিপতি হওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মাত্র ৫০০ টাকায় নিবন্ধন করানো হয় ‘সেলফ এমপ্লয়মেন্ট টেকনোলোজি লিমিটেড’ নামের প্রতিষ্ঠানটিতে। নিবন্ধনের পর কোনো ধরনের বিনিময় ছাড়া টাকা আয়ের কিছু ‘টেকনিক’ শিখিয়ে বড় লোক হওয়ার স্বপ্ন দেখানো হয় গ্রাহকদের। তবে প্রতিষ্ঠানটির টার্গেট শুধু সদস্য বাড়ানো। এভাবে সারাদেশ থেকে কয়েক বছরে তাদের সদস্য সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখের কাছাকাছি। এভাবে গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে অন্তত পাঁচ কোটি টাকা।

প্রতিষ্ঠানটিতে ৫০০ টাকায় নতুন গ্রাহক হলে আয়ের অর্থ বিপরীতে তারা ২০০ পয়েন্ট পান। সেই গ্রাহক অন্য কাউকে সদস্য বানালে পান কমিশন। এভাবেই এমএলএম ব্যবসার আদলে পরিচালিত হয় প্রতিষ্ঠানটি। সেক্ষেত্রে একজন গ্রাহক অন্যজনকে গ্রাহক বানালে পান ১৯০ টাকা। বাকি অর্থ যায় প্রতিষ্ঠানের খাতায়।

গ্রাহক হওয়ার পর অনেকে লোভে পড়ে বিনিয়োগ করতে থাকেন। এমনকি পরিচিত মানুষদেরও নিবন্ধন করান প্রতিষ্ঠানে। এখানে গ্রাহকরা বিনিয়োগ করলে তাদের দেওয়া হয় ‘পয়েন্ট’। এ পয়েন্ট দিয়ে টাকা উঠানো যায় প্রতিষ্ঠান থেকে। এভাবে অনেক মানুষ এখানে বিনিয়োগ করলেও শেষ পর্যন্ত প্রতারিত হয়েছেন প্রতিষ্ঠানের হাতে। আর নিবন্ধনের ৫০০ থেকে দেড় হাজার টাকা হারিয়ে অনেকে অল্প টাকার জন্য পুলিশে অভিযোগ দেন না।

আরও জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১৪ এপ্রিল চট্টগ্রাম নগরীর ওয়াসার মোড়ে শুরুতে ‘সেলফ এমপ্লয়মেন্ট ডটকম’ নামের একটি সাইট খুলে প্রতিজন গ্রাহক থেকে ১৫০০ টাকা করে নিবন্ধন ফি নেওয়া হয়। এভাবে প্রায় ৫০ হাজার গ্রাহক থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয় অন্তত সাড়ে সাত কোটি টাকা। মোটা অংকের টাকা সংগ্রহের পর সুকৌশলে সাইটির বন্ধ করে দেয় তারা।

পরে ২০২০ সালের জুনের দিকে চট্টগ্রাম নগরীর ও আর নিজাম রোডের ইম্পালস সিটি সেন্টারে ষষ্ঠতলায় ‘সেলফ শপিং ডটকম’ নাম দিয়ে নতুন করে আবারও যাত্রা শুরু করে তারা।

ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সরাসরি বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ব্যবহৃত এক ধরনের বাজারজাতকরণ কৌশল যাতে বিদ্যমান পরিবেশকগণকে নতুন পরিবেশক নিয়োগে উৎসাহিত করা যাবে না।

কিন্তু এক্ষেত্রে একজন গ্রাহক নিবন্ধন হওয়ার পর আরেকজনকে নতুন গ্রাহক তৈরি করতে উৎসাহিত করছে প্রতিষ্ঠানটি।

পাপন নামের এক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বলেন, ‘অনলাইনে প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে দেখে ২০১৯ সালে ১৫০০ টাকা জমা দিয়ে কাজ শুরু করি। টাকা দেওয়ার পর আমাকে নিবন্ধন করে তারা। সেখান থেকে বলা হয়, লোক দিতে পারলে ইনকামের পয়েন্ট পাওয়া যাবে। আমি কয়েকজনকে ভর্তি করাই। সেখানে কয়েকশ’ পয়েন্ট পেয়েছি। ১০০০ থেকে ২০০০ পয়েন্ট জমলে টাকা উঠানো যেত। তবে সদস্য ফি বাবদ কোনো বিনিময় পাইনি।’

তিনি বলেন, ‘আমি যাদেরকে ভর্তি করিয়েছি, তারাও আমার মতো। অর্থাৎ একজন গ্রাহক নতুন গ্রাহক ঢোকালে আয়ের পয়েন্ট ওঠে। ওখানে টাকা বিনিয়োগের লোভ দেখায় তারা। কিন্তু একবার টাকা বিনিয়োগ করলে তা আর পাওয়া সম্ভাবনা নেই।’

প্রতিষ্ঠানটির আরেক সদস্য টুটুল বলেন, ‘২০১৮ সালে ১৫০০ টাকা দিয়ে সেলফ এমপ্লয়মেন্টের সদস্য হয়েছি। নিবন্ধন হওয়ার পর অনলাইনে বিজ্ঞাপন ক্লিক করলে আয়ের পয়েন্ট পাওয়া যাবে বলে জানায় তারা। কিছু পয়েন্টও পেয়েছি। সেই অনুযায়ী কিছু টাকাও পেয়েছি। তবে ১৫০০ টাকা নিবন্ধন হওয়ার বিনিময়ে কোনো পণ্যমূল্য পাইনি। বড় বড় স্বপ্নের লোভ দেখাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। বাস্তবে তার কোনো কিছু নেই।’

জানতে চাইলে সেলফ এমপ্লয়মেন্ট টেকনোলোজি লিমিটেডের পরিচালক ইমাম হোসেন  বলেন, ‘আমি অফিসে যাই না। এটা আমার ভাই পরিচালনা করে। এ বিষয়ে উনাকে ফোন করে বিস্তারিত জানতে পারবেন।’

প্রতিষ্ঠানের আরেক পরিচালক শাহাদাৎ হোসেন শাহীন  বলেন, ‘আমরা গ্রাহকের কাছ থেকে যে টাকা নিই, ওটার বিনিময়ে গ্রাহকদের ব্যবসার সুযোগ দিচ্ছি। কিন্তু পণ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে না। তাদের ট্রেনিং ও টাকা আয় করার পথ দেখানো হচ্ছে। অনেকেই টাকা ইনকাম করছেন।’

২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট বন্ধ করার কারণ জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘বন্ধ করা সাইটটির গ্রাহকদের মুভ করা হয়েছে নতুন ওয়েবসাইটে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাদেকুর রহমান বলেন, ‘আমি ছুটিতে রয়েছি। বিষয়টি এখনই ওসি সাহেবকে জানাচ্ছি। তিনি বিষয়টি দেখবেন।’

চন্দনপুর ইউপি উপ-নির্বাচনের প্রতীক পেয়ে প্রার্থীদের শোডাউন: ভিন্নরকম ছিলো হাতপাখার!

স্টাফ রিপোর্টারঃ

কুমিল্লা মেঘনা উপজেলার ৩নং চন্দনপুর ইউনিয়নের আসন্ন উপ-নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার (৯ মে,২০২৩) উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ জাহিদ হোসেন সকল প্রার্থীদের উপস্থিত সম্মুখে বরাদ্দকৃত প্রতীক বুঝিয়ে দেন। সবশেষে ১০ জন প্রার্থীকে মনোনীত করা হয়।

যারা প্রতীক পেয়েছে তারা হলেন, মোঃ সেলিম আহম্মেদ (নৌকা), মোঃ আমির হোসেন (হাতপাখা), মোঃ এবাদ উল্লাহ (ঘোড়া), মোঃ আ ন ম বজলুর রশিদ (আনরস), মোঃ মোখলেছুর রহমান (টেবিল ফ্যান), মোঃ হাবিজুল্লাহ দুরা গাজী (সিএনজি), মোঃ সেলিম সরকার (চশমা), মোঃ গোলাম মহিউদ্দিন মোহন (আম পাতা), মোঃ ফজর আলী (মটর সাইকেল), মোহাম্মদ আলী (টেলিফোন)।

সরেজমিনে দেখা যায়, বরাদ্দকৃত প্রতীক পেয়ে শোডাউন করেছেন সকল প্রার্থীরা। তবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র মনোনীত প্রার্থী মো.আমির হোসেন-এর শোডাউন ছিলো ভিন্নরকম। দুপুর ১২ টার দিকে মেঘনা উপজেলার নির্বাচন অফিস থেকে বের হয়ে দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে তিনি বিশাল মিছিল বের করেন। মিছিলটি পুরো ৩নং চন্দনপুর ইউনিয়ন পদক্ষিন করে।

মোঃ আমির হোসেন বলেন, জনগণ এবার ইসলামী শক্তিকে বিজয় করার জন্য বদ্ধপরিকর। এবার ৩নং ইউনিয়নে হাতপাখার যেভাবে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে, সুষ্ঠুভাবে ইউনিয়নবাসী ভোট দিতে পারলে বিজয় আমাদের হবে ইনশাআল্লাহ।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
বিদেশ থেকে যতটুকু স্বর্ণ আমদানি করলে দিতে হবে না ভ্যাট প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎতে যাচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব ফকরুল বাংলাদেশে ইতিহাস গড়ল উইন্ডিজ দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন রাজউক ইমারত পরিদর্শক শামীম রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধে কে জিতবে, তা নিয়ে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নিচেছ ট্রাম্প নাসার চন্দ্র মিশনে স্পেসএক্স জুলাই যোদ্ধা স্বীকৃতি পেতে নতুন করে দেড় হাজারের বেশি আবেদন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিল শুনানি শুরু প্রধান প্রকৌশলীর আস্থাভাজন ইএম ২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদ সম্পদের পাহাড় জানানো যাচ্ছে অভিযোগ, থানায় বসলেই ভিডিওকলে হাজির এসপি