এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু

ডেস্ক রিপোর্ট:

সারাদেশে একযোগে শুরু হয়েছে ২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকাল ১০টায় বাংলা প্রথম পত্রের মাধ্যমে এ বছরের লিখিত পরীক্ষা শুরু হলো।

সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের ভিড় দেখা গেছে। নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রে উপস্থিত হয়েছে। গেটের সামনে সুশৃঙ্খলভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে তারা কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। শিক্ষার্থীদের পরনে ছিল ইউনিফর্ম, হাতে প্রবেশপত্র ও প্রয়োজনীয় উপকরণ। অধিকাংশের মুখে ছিল মাস্ক এবং কেউ কেউ হ্যান্ড স্যানিটাইজার সঙ্গে নিয়ে এসেছিল। গেটের সামনে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক, কক্ষ পরিদর্শক ও পুলিশের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।

জানা গেছে, এ বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মোট ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে সাধারণ ৯টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১০ লাখ ৫৫ হাজারের বেশি, মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে ৮৬ হাজারের বেশি এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে ১ লাখ ৯ হাজারের বেশি পরীক্ষার্থী রয়েছে।
শিক্ষা বোর্ড জানিয়েছে, গত বছরের তুলনায় এবার পরীক্ষার্থী কমেছে ৮১ হাজার ৮৮২ জন। ২০২৪ সালে পরীক্ষার্থী ছিল ১৩ লাখ ৩২ হাজার ৯৯৩ জন।

পরীক্ষা সুষ্ঠু, নকলমুক্ত ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা। শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৫ আগস্ট পর্যন্ত দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। প্রশ্নফাঁসের গুজব প্রতিরোধ, কেন্দ্রের বাইরে জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।

পরীক্ষার্থীদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা বোর্ড। এর মধ্যে রয়েছে- পরীক্ষা শুরুর অন্তত ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে, ওএমআর শিটে সঠিকভাবে তথ্য লেখা ও বৃত্ত ভরাট করতে হবে, উত্তরপত্র ভাঁজ করা যাবে না, কেবল সাধারণ ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে, পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ফোন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং তত্ত্বীয়, এমসিকিউ ও ব্যবহারিক পরীক্ষায় আলাদাভাবে উত্তীর্ণ হতে হবে। এছাড়া পরীক্ষার সময় পরীক্ষার্থীদের নিজ প্রতিষ্ঠান নয়, অন্য প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করে আসন নির্ধারণ করা হয়েছে এবং প্রতিটি পরীক্ষার অংশে উপস্থিতি স্বাক্ষর বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা গ্রহণে ৩৩ দফা নির্দেশনা দিয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে- প্রতি ২০ জন পরীক্ষার্থীর জন্য একজন কক্ষ পরিদর্শক রাখতে হবে, শিক্ষার্থীদের তিন ফুট দূরত্ব বজায় রেখে বসাতে হবে, নির্ধারিত সেট অনুযায়ী প্রশ্নপত্র খোলা যাবে এবং অব্যবহৃত প্রশ্নপত্র সেট ফেরত পাঠাতে হবে। কেন্দ্রের বাইরে জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ, মাইকিংয়ের মাধ্যমে সচেতনতা তৈরি, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং নকল প্রতিরোধে পোস্টার লাগানোর নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

আজ সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর ভাসানটেক সরকারি কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শন করার কথা রয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। এরপর তিনি সরকারি বাংলা কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা পরিচালনার দিকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশের সময় শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সংশ্লিষ্টদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিভ্রাট এড়াতে স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিসগুলোকে আগেভাগেই প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। আর পরীক্ষাকেন্দ্রে শুধুমাত্র এনালগ কাটাযুক্ত ঘড়ি ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

পরীক্ষাকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) পরীক্ষাকেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী প্রদত্ত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে শুধুমাত্র পরীক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন।

আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সমন্বয়ক খন্দকার এহসানুল কবির জানিয়েছেন, পরীক্ষার সার্বিক নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থা সর্বোচ্চ সতর্ক থাকবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নজরদারি থাকবে এবং কেউ পরীক্ষার পরিবেশ নষ্টের চেষ্টা করলে তা কঠোরভাবে দমন করা হবে।

২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার লিখিত অংশ চলবে ১০ আগস্ট পর্যন্ত। ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু হবে ১১ আগস্ট থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত।

পরীক্ষার সময়সূচি অনুযায়ী, সকালের পরীক্ষা সকাল ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত এবং বিকেলের পরীক্ষা দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

শিক্ষা বোর্ড চাইলে বিশেষ পরিস্থিতিতে সময়সূচি পরিবর্তন করতে পারবে বলে জানানো হয়েছে।

বোর্ডের প্রকাশিত সময়সূচি অনুযায়ী, ২৬ জুন বাংলা প্রথম পত্র, ২৯ জুন বাংলা দ্বিতীয় পত্র, ১ জুলাই ইংরেজি প্রথম পত্র, ৩ জুলাই ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র, ৭ জুলাই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, ১০ ও ১৩ জুলাই পদার্থবিজ্ঞান, হিসাববিজ্ঞান ও যুক্তিবিদ্যা, ২০ ও ২২ জুলাই রসায়ন, ইতিহাস ও ইসলামের ইতিহাসসহ অন্যান্য বিষয়ের পরীক্ষা হবে।

৩১ জুলাই থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত উচ্চতর গণিত, ফিন্যান্স, জীববিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, পরিসংখ্যান, শিশু বিকাশ, ব্যবসায় সংগঠনসহ অন্যান্য বিষয়েও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বিকেলের শিফটে উচ্চাঙ্গ সংগীত, পালি, আরবি, গার্হস্থ্যবিজ্ঞান, লঘু সংগীতসহ নানা বিষয়ের পরীক্ষা হবে নির্ধারিত সময় অনুযায়ী।

জবি প্রক্টরেরে উপর হামলার ঘটনায় জবিশিসের অবস্থান

উম্মে রাহনুমা ,জবি প্রতিনিধি:

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রষ্টরের উপর হামলার ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি স্তম্ভিত। গতকালের ন্যাক্কারজনক ঘটনার পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ জরুরি ভিত্তিতে ৭ ডিসেম্বর সকাল ১১ টায় কার্যনির্বাহী কমিটির সভা করে গৃহীত সিদ্ধান্ত সমূহ অবহিতকরণ ও প্রষ্টরের উপর হামলার বিষয়ে শিক্ষক সমিতির অবস্থান জানানোর জন্য আজকে সংবাদ সম্মেলন আহবান করে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রষ্টরের উপর হামলার প্রতিবাদে শিক্ষক সমিতির সিদ্ধান্ত ও কর্মসূচি সমূহ:

আগামীকাল ৮ জানুয়ারি দুপুর ১২.০০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণকে নিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে। শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে প্রতিবাদ সমাবেশ করা হবে | বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহোদয়ের সাথে সাক্ষাৎ করা এবং হামলা বিষয়ে শিক্ষকগণের উদ্বেগ উপাচার্যকে অবহিতকরণ | শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে প্রষ্টরের সাথে দেখা করে সামগ্রিক বিষয় জানা ও সমিতির অবস্থান জানানো। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি করে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন করা। দোষীদের বিচারের আওতায় আনার জন্য সুনির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলা করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানানো। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা। দোষীদের শাস্তি নিশ্চিতকরণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সহায়তা করা | বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে বাসস্ট্যান্ড ও টেম্পুস্ট্যান্ড সরিয়ে নেয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া। কোনো অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বাসস্ট্যান্ড শিক্ষকগণ মেনে নিবেন না।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি বলেন “বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের উপর হামলা মানে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর হামলা। এমন ঘটনা যেন না ঘটে সে বিষয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। যেনো এমন কোনো ঘটনা যেনো আর কখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের কারো সাথে না হয়।”

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন বলেন ” মত এবং পথের পার্থক্য ব্যাতিরেকে সবার নিরাপত্তা দিতে শিক্ষক সমিতি সবার নিরাপত্তা চায়। আপোষহীন ভাবে আমরা শক্ত অবস্থানে থাকবো। আমরা গত ৫ তারিখে দায়িত্ব নিয়েছে এবং এর পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে তার বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার ভূমিকা রাখবো। যৌক্তিক আল্টিমেটাম দিয়ে আমরা সুরাহার পথ বেছে নিবো। শিক্ষক সমিতি শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারী সকলের পক্ষেই কথা বলবে এবং দায়িত্বশীল পর্যায়ে অবস্থান করবে।

সবা:স:জু- ৬৯১/২৫

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
জানানো যাচ্ছে অভিযোগ, থানায় বসলেই ভিডিওকলে হাজির এসপি প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে কার্গো ভিলেজের অগ্নিকাণ্ডে অত্যন্ত হতাশাজনক : মির্জা ফখরুল রাজনৈতিক দের মাঝে যে অনৈক্য কুমিরের দেখা মিলল রাজশাহীর পদ্মায় সরকার ও সেনাবাহিনী, গণতন্ত্রে উত্তরণ ও ন্যায়বিচার যেন ব্যাহত না হয় আজ থেকে আমরণ অনশন, প্রত্যাখ্যান শিক্ষকদের শিক্ষার্থীরা রোডম্যাপের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন শাকসু নির্বাচনের জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল গণফোরাম অন্যদেরও সই করার আহ্বান কমিশনের সূচক সাড়ে ৩ মাস আগের অবস্থানে লেনদেন ৪ মাসে সর্বনিম্ন আওয়ামীলীগ ফিরলে হাসিনার পা ধরেও মাফ পাবেন না: রাশেদ খান