
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে দুর্বল করতে সংখ্যালঘু দ্রুজদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরায়েল— এমন মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। এমন অভিযোগও রয়েছে, ঐক্য ভাঙতে সিরিয়ার অভ্যন্তরীন দাঙ্গাকে উসকে দিয়েছেন কৌশলী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। দ্রুজ সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা শুধুই বাহানা। তাদের সহায়তার মধ্য দিয়ে মূলতঃ যুদ্ধাবস্থা জিইয়ে রাখাই তার লক্ষ্য।সিরিয়ায় সংখ্যালঘু দ্রুজ ও বেদুইনদের মধ্যকার দাঙ্গা, সরকারি বাহিনীর হস্তক্ষেপ এবং সবশেষ দেশটির রাজধানীতে ইসরায়েলের হামলা পরিস্থিতি রীতিমতো ঘোলাটে। যদিও ইসরায়েলের দাবি দ্রুজদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সংঘর্ষে জড়িয়েছে তারা।
মূলত ১১শ’ শতকে ‘আল-তাওহীদ’ নামে নতুন এক ধর্মীয় মতাদর্শ প্রচারের মাধ্যমে দ্রুজ গোষ্ঠীর আবির্ভাব। আল তাওহীদ অর্থ একেশ্বরবাদ। দ্রুজ অনুসারীরাও নিজেদের পরিচয় দেয় আল- মুহাদ্দিন হিসেবে। তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসে রয়েছে গ্রিক, পারস্য ও ভারতীয় দর্শনের প্রভাব। প্রধান ধর্মগ্রন্থের নাম ‘কিতাব আল-হিকমা’- যার অর্থ জ্ঞানগ্রন্থ। বলা হয় সারা বিশ্বে দ্রুজদের সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ।ইসরায়েল ও দখলকৃত গোলান মালভূমিতে প্রায় ১ লাখ ৫২ হাজার দ্রুজের বসবাস। এমনকি সামরিক বাহিনী আইডিএফেও রয়েছে তাদের ব্যাপক অংশগ্রহন। দ্রুজদের উপর আক্রমন প্রতিহতে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে তেলআবিবের হামলার পেছনে নেতানিয়াহুর চতুরতা এবং অন্য উদ্দেশ্য আছে বলে মত বিশ্লেষকদের।
তেলআবিব ইউনিভার্সিটির মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ জোয়েল ডি পারকার বলেন, ইসরায়েল থেকে অন্তত এক হাজার দ্রুজ তাদের সম্প্রদায়ের প্রতি সংহতি জানিয়ে সিরিয়ায় প্রবেশ করেছে। আমি কখনো দেখিনি ইসরায়েল নিজেরাই তাদের নাগরিককে অন্য দেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়। যারা সিরিয়ার গিয়েছে তাদের সাথে অস্ত্রও থাকতে পারে। আমার ধারণা, এটা ইসরায়েলর তরফ থেকে একধরনের সতর্কবার্তা।
সাবেক ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত এলোন পিনকাসের মতে, ব্যাপারটি পুরোপুরি সুযোগসন্ধানী। বন্ধু দ্রুজদের সহায়তার নামে নেয়া উদ্যোগ দেখা যায়নি কুর্দিদের জন্য। মূলত সিরিয়াকে ঐক্যবদ্ধ হিসেবে দেখতে চান না বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। আহমেদ আল শারার নেতৃত্বে শক্তিশালী শাসন ব্যবস্থা গড়ে উঠলে সেটি তার জন্য সুবিধার হবে না।রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সিরিয়াকে ঐক্যবদ্ধ দেখতে চান না বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তাই দ্রুজদের সহায়তার নামে দেশটির অভ্যন্তরীন দাঙ্গাকে জিইয়ে রাখার ফন্দি এঁটেছেন তিনি।