ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগে জর্জরিত যুব উন্নয়ন পরিচালক হামিদ খান

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥

স্বৈরাচারী আ.লীগ সরকারের পতনের পর ও থেমে নেই ফ্যাসিবাদের দোসরদের দৌরাত্ম, গত ৫ ই আগস্ট আ.লীগ সরকার পতনের পরও তাদের দোসররা এখনো রয়েছে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে, সম্প্রতি গণমাধ্যমের আলোচনায় এসেছে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও ক্রিড়া প্রতিমন্ত্রী রাসেলের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ই লার্নিং এন্ড আর্নিং এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ আলম।

দেশের ৬৪ জেলায় ২৮ হাজার ৮০০ জনকে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ দিতে সরকার ৩০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বরাদ্দ দেয়, প্রকল্প পরিচালক মোঃ আব্দুল হামিদ খানের সর্বাত্মক সহযোগিতায় ও বিতর্কিতভাবে যোগ্য প্রতিষ্ঠানকে পাশ কাটিয়ে ছাত্রলীগ নেতা ই লার্নিং এন্ড আর্নিং এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ আলমের প্রতিষ্ঠান কাজ পায়।

প্রতিটি জেলায় ৬০০ জন করে শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবেন। প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা দৈনিক ২০০ টাকা ভাতা ও ৩০০ টাকার খাবার পাবেন। ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী উচ্চ মাধ্যমিক পাস কর্মপ্রত্যাশী নারী-পুরুষ এই প্রশিক্ষণের সুযোগ পাওয়ার কথা ছিল অথচ অনুসন্ধানে জানা যায় দেশের বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন ভুয়া নাম ও মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করে অর্থ আত্মসাৎ করা হচ্ছে।

মাসুদ আলম সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও সাবেক ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ হাসান রাসেলের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত, এছাড়াও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এমপি মন্ত্রীদের সাথে ছিল তার ঘনিষ্ঠতা, তিনি ২০২২ সালে শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলেন্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড ও ২০২৩ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ড পুরস্কার পেয়েছে, একটি বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশনের সাক্ষাৎকারে তিনি স্বীকার করেছিলেন চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন ও ২০০১ সালের বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কারণ তার বাবা আওয়ামী লীগ নেতা ছিল ও গত ৭ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দুইদিন পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি স্টিকার যুক্ত গাড়িতে এক বস্তা (আড়াই কোটি টাকা) টাকা সহ আটক হন মাসুদ আলম এবং সেই সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল।

ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে এত তথ্য থাকার পরও ফ্রিল্যান্সিংয়ের প্রকল্প পরিচালক মোঃ আব্দুল হামিদ খান মাসুদ আলমের কাছ থেকে ঘুষ ও কমিশন বাণিজ্য করে তাকে কাজ পাইয়ে দিয়েছেন।

অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, এই তথ্য গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন সাংবাদিককে হামিদ খান ম্যানেজ করে দেন, ইতিমধ্যে মাসুদ আলম ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক অনুসন্ধান শুরু করেছে ও তাদের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। অথচ পরিচালক হামিদ খানের কাছে সাংবাদিকরা গেলে তিনি মাসুদ আলমের প্রশংসা করেন কয়েকজন সাংবাদিককে হামিদ খান বলেন ভাই ব্রাদার মনে করে কাজ করেন নিউজ করে কি করবেন সুসম্পর্ক রাখেন লাভবান হবেন, মাসুদ আলমের বিরুদ্ধে বেশ কিছু গণমাধ্যমের সংবাদপ্রকাশ হওয়ার পরও অর্থের বিনিময়ে তা প্রত্যাহার করিয়াছেন আর এগুলোর মধ্যস্থতা করেছেন যুব উন্নয়নের প্রকল্প পরিচালক হামিদ খান।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্প পরিচালক হামিদ খান অনেক ঘুষখোর ও দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি, তিনি অবৈধ অর্থে নিজের পরিবার ও বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের নামে বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদ করেছেন এবং তিনি অর্থছড়া কিছুই বোঝেন না ও মাসুদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ কমিশন নিয়েছেন তিনি, মাসুদ আলম ফ্যাসিবাদের দোসর এই তথ্য তিনি সরকারের উচ্চপর্যায়ে উপস্থাপন করেননি। আপনারা আরো ভালোভাবে অনুসন্ধান করুন তাহলে উনার আরো কুকীর্তি বেরিয়ে আসবে, যুব উন্নয়ন থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন অবৈধ ভাবে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন প্রভাবশালী কর্মকর্তা মন্ত্রী এমপিদের সঙ্গে হামিদ খানের ঘনিষ্ঠতা ছিল সেই ধারাবাহিকতায় তিনি মাসুদ আলমের পক্ষে কাজ করেন।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য হামিদ খানের মুঠো ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

বনের জমি দখল করে নির্মাণ কাজ! কর্মকর্তারা বলছে মানছেনা বাঁধা

 

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ

পরিবেশের এই বিপন্নতা নিয়ে বন বিভাগ একেবারেই উদাসীন। বনজমি দখলদারদের বিরুদ্ধে বন বিভাগ জিরো টলারেন্স থাকার ঘোষনা দিলেও মাঠপর্যায়ে এ ঘোষনা তেমন কার্যকর হচ্ছে না। বনকর্তাদের গুটিকয়েক ভূমিদস্যুদের সাথে আতাত করায় বনজমি দখলের হিড়িক আগের চেয়ে দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ। চিহ্নিত এই বনভূমি দখলবাজরা ভবন নির্মাণ করে ভাড়া দিলেও সংশ্লিষ্ট বনকর্তারা তাদের আইন প্রয়োগে রহস্যজনক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার সাতখামাইড়,বলদীঘাট,শিমলাপাড়া বিটে বনের জমি দখল করে পাকা ঘরবাড়ি নির্মাণের প্রতিযোগিতা চলছে।

কাওরাইদ ইউনিয়ন,মাওনা ইউনিয়ন,রাজাবাড়ি প্রহলাদপুর ইউনিয়ন ও তেলিহাটি ইউনিয়ন এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে বনের সংরক্ষিত গেজেট ভুক্ত প্রায় হাজার বিঘা জমি এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল ও স্থানীয় কতিপয় দালাল তদবির কারকদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় বনের জমি দিনে রাতে বন কর্মকর্তাদের মেনেজ করে দখল প্রতিযোগিতায় মাঠে নেমেছে ওই অসাধু মহলটি।

এদিকে কেউ কেউ আবার শুধু দখলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, জমি দখল করে নিজের কব্জায় রেখে পজিশন বিক্রির হিড়িক পড়েছে এই ইউনিয়ন গুলোতে। এর ফলে কেউ আঙ্গুল ফুলে হচ্ছে কলা গাছ। আবার অন্যদিকে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বনাঞ্চল।

সরজমিনে দেখা যায় শ্রীপুর উপজেলা রেঞ্জ এর আওতাধীন কাওরাইদ বিটের বিধায় আবদার এলাকায় বনবিভাগের জায়গায় নতুন একটি গবাদিপশু পালন করার বিশাল খামার নির্মাণের কাজ চলছে,বন বিভাগের কর্মকর্তারা নির্মাণ কাজে বাঁধা দিয়ে আশার পরও কাজ চলমান পাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মৃত রুস্তম আলীর ছেলে আতাউর রহমান আতা গংরা এই গবাদিপশুর খামারের নির্মাণ কাজ করছেন। তারা বলেন আমরা আমাদের জায়গায় ঘর নির্মাণ করছি,আমাদের সকল জমির কাগজপত্র ঠিক আছে, তবে আমাদের কিছু জায়গায় গেজেট থাকায় বনবিভাগের লোকজন এসেছিলো,তারা কাগজপত্র নিয়ে যেতে বলেছে।

স্থানীয় বিধায় আবদার গ্রামের একজন বাসিন্দা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তি জানান এখানে ২৬০৯ দাগে বনের গেজেট রয়েছে, যার জন্য কিছু দিন ধরে বলদীঘাট বিট সহ শ্রীপুর রেঞ্জ এর লোকজন এখানে এসেছে, শুনছি তারা বাঁধা দিয়ে গেছে কিন্তু এখান থেকে তারা চলে যাওয়ার পরপরই আবারও কাজ চলমান হয়ে পরে।

এ বিষয়ে কাওরাইদ বিটের অফিসার বনি শাহাদাত হোসেন বলেন ২৬০৯ দাগে আমাদের বনের গেজেট রয়েছে, আমরা কয়েকবার তাদের কাজে বাঁধা দিয়ে আসছি,তারপরও যদি কাজ করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শ্রীপুর রেঞ্জ এর কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমানকে মোবাইল নাম্বারে কল দিলে তিনি কল রিসিভ করেন নি।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম