পুলিশ ছদ্মবেশধারী ও আন্তঃজেলা দুর্ধর্ষ ডাকাত গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০

স্টাফ রিপোর্টারঃ

পুলিশ ছদ্মবেশধারী ও আন্তঃজেলা ডাকাত দলের দুর্ধর্ষ ডাকাত সর্দার জসিম মোল্ল্যা ও তার প্রধান দুইজন সহযোগীকে ঢাকার দক্ষিন কেরাণীগঞ্জ এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০পুলিশ পোশাক ও বিপুল সরঞ্জামাদি উদ্ধার ।গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল ০৮ নভেম্বর ২০২২ খ্রিঃ তারিখ র‌্যাব-১০ এর একটি অভিযানিক দল রাজধানী ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ ছদ্মবেশে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের দুর্র্ধষ ডাকাত সর্দার ও তার প্রধান ০২ সহযোগী’কে গ্রেফতার করে এবং অজ্ঞাতনামা ২/৩ জন ব্যক্তি কৌশলে পালিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের নাম ১। জসিম মোল্ল্যা (৩৫), পিতা- আইয়ুম মোল্লা, সাং- চর ধুপুরিয়া, ২। মোঃ জাহিদুল কাজি (২৫), পিতা-মৃত মোঃ জব্বার, সাং- পশ্চিম রামকৃষ্ণপুর, উভয় থানা- জাজিরা, জেলা-শরিয়তপুর, ও ৩। মোঃ ইয়াসিন (৩০), পিতা মৃত- সাচ্চু মিয়া, সাং- মনুবেপারীর ঢাল, থানা- কেরাণীগঞ্জ মডেল, জেলা- ঢাকা বলে জানা যায়। এসময় তাদের নিকট থেকে ০৩টি স্বর্ণের চেইন, ০১টি রুপার ব্রেসলেট, ০২টি ল্যাপটপ, পুলিশের এসআই র‌্যাংক ব্যাজসহ ০২টি হাফ শার্ট, ০২টি প্যান্ট, ০২টি ক্যাপ, ০২টি বেল্ট, ০১টি ওয়াকিটকি, ০২ জোড়া কালো বুট, ০১টি রিফলেকটিং জ্যাকেট, ০২টি রেইন কোর্ট, ০১টি খেলনা পিস্তল (কালো কাভারসহ), ০১টি চাপাতি, ০২টি সুইচ গিয়ার চাকু, ০৩টি লোহার ফোল্ডিং স্টিক, ০১টি ড্রিল মেশিন, ০২টি স্ক্রু ড্রাইভার, ০১টি রেঞ্জ, ০২টি হাতুরি, ০১টি কাটার মেশিন, ০২টি প্লাস, ০১টি প্লাস কাটার, ০৬টি লোহার রডের টুকরা, ০১টি করাত, ০২টি ছেনি কাটার, ০১টি দুরবিন, ০১টি ল্যান্ড ফোন, ০১টি ডিজিটাল ওয়েট মেশিন, ০৩টি মাউস, ০৫টি কাটারের বেøড, ০১টি বাংলাদেশ পুলিশ লিখিত লেমিনেটিং কাগজ, ০১টি মহিলাদের ছদ্মবেশ ধারণের আলগা চুল, ০৫টি মোবাইল ফোন ও নগদ- ৫৩,০৫০/- (তিপ্পান্ন হাজার পঞ্চাশ) টাকা উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তারা বেশ কিছুদিন যাবৎ ঢাকা, নরসিংদী, শরিয়তপুর ও মুন্সিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশি ছদ্মবেশে এবং ডাকাতির অভিপ্রায়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে স্বর্ণালংকার, টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ ডাকাতি করত। এছাড়া তারা বড় বড় ব্যবসায়ীদের অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের চাঁদা নিত এবং ডাকাতির কাজে কেউ বাধা প্রদান করলে বা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদেরকে অস্ত্র দিয়ে হত্যা ও গুরুতর জখম করত।

গ্রেফতারকৃত জসিম মোল্ল্যা উক্ত আন্তঃজেলা দুর্ধষ ডাকাত দলের সর্দার। তার নেতৃত্বাধীন উক্ত ডাকাত দল শরিয়তপুরের জাজিরাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় একটি ত্রাশের রাজত্ব কায়েম করে আসছিল। তারা সংঘবদ্ধভাবে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বাড়ি ও প্রতিষ্ঠানে ডাকাতি করাকালে কেউ বাধা প্রদান করলে জসিম মোল্যা তার সাথে থাকা দেশীয় অস্ত্র (সুইচ গিয়ার চাকু, চাপাতি, হাতুড়ি, লোহার রড ইত্যাদি) দিয়ে তাদেরকে গুরুতর জখম করে ডাকাতি কার্য সম্পন্ন করত। জসিম শরীয়তপুরের জাজিরা এলাকায় গত ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ খ্রিঃ তারিখে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর রিপন হত্যা মামলার প্রধান আসামী। এছাড়া সে পুলিশের পোশাক পরিধন করে ভূয়া পুলিশের এসআই পরিচয় দিয়ে বড় বড় ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন ভয়ভীতি প্রদর্শন করে মোটা অংকের চাঁদা গ্রহণ করত। এতে কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে সে তার ডাকাত দল নিয়ে তাদের উপর অক্রমন করে তাদেরকে মারধর ও জখম করে তাদের সর্বস্ব লুট করে নিয়ে যেত। জাজিরা এলাকায় সে ছিল এক মুর্তিমান অতংকের নাম। তার হীনকর্মে ঐ এলাকার লোকজন ভীত ও সন্ত্রস্থ থাকত। এছাড়া জসিম মোল্ল্যা (৩৫) এর বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, প্রতারণা, মারামারি ও হত্যা চেষ্টাসহ মোট ১৩টি মামলা রয়েছে যার মধ্যে ০১টি মামলায় সে সাজাপ্রাপ্ত আসামী বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত জাহিদুল ও ইয়াসিন ডাকাত সর্দার জসিম মোল্যার অন্যতম দুইজন প্রধান সহযোগী। তারা দেশের বিভিন্ন জেলা ও এলাকার বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন অর্থ-সম্পদশালী ও প্রবাসীদের বাড়ীর ঠিকানাসহ যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে ডাকাত সর্দার জসিম মোল্যাকে প্রদান করত। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে জসিম মোল্যা তার ডাকাত দলসহ ডাকাতি করত বলে জানা যায়। এছাড়া মোঃ জাহিদুল (২৫) এর বিরুদ্ধে অস্ত্র, ডাকাতি, চুরি ও হত্যা চেষ্টাসহ ০৪টি মামলা রয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে র‌্যাব।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা রুজুর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর নেতৃত্বে ই/এম শাখা দুর্নীতি ও অনিয়মের আখড়া

 

এইচ আর শফিক:

নির্বাহী প্রকৌশলী ও বর্তমান ঢাকা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আলমগীর খানের নেতৃত্বে গণপূর্ত অধিদপ্তরের ঢাকা জোনের ই/এম শাখা দুর্নীতি, অনিয়ম ও লুটপাটে আখড়া হিসেবে গড়ে উঠেছে। দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ এসব কর্মকর্তারা বিদেশে পাছার করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এই দুর্নীতির সিন্ডিকেটে তার সহযোগী হিসেবে রয়েছে উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাহিদ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মজুমদার ট্রেডিং।

দুর্নীতির চিত্র চিত্রপট:
এই অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সিসি ক্যামেরা না বসিয়ে কোটি টাকা আত্মসাৎ গাড়ি চালকের বেতন বাবদ ৮৭ লক্ষ টাকা অপচয়, পর্যাপ্ত জনবল থাকা সত্ত্বেও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেখিয়ে অর্থ লুটপাট এবং ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মত গুরুতর অপরাধের অভিযোগ নিয়ে তারা বহাল তবিয়তে চেয়ারে দুলছেন।

 

দুর্নীতির চিত্র-১:
সাভার স্মৃতিসৌধ এলাকায় কোনো সিসি ক্যামেরা স্থাপন না করেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা বিল পরিশোধ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে গণপূর্ত অধিদফতরের ই/ত্রম বিভাগ-৬-এর প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে।

দুর্নীতির চিত্র-২
অন্যদিকে গণপূর্ত কাঠের কারখানা বিভাগ উচ্চমান মূল্যে হস্তান্তর হওয়ার পরেও বছরে ব্যয় প্রায় ছয় কোটি টাকা। আর ই/এম বিভাগ-৮-এ দুটি গাড়ির বিপরীতে ৩১ জন চালকের পেছনে বছরে অতিরিক্ত ব্যয় করা হয়েছে ৮৭ লাখ টাকা। ২০১৬-১৭ সালের অডিট রিপোর্টে এই অনিয়ম ধরা পড়েছে।
অডিট রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে- ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড মেকানিক্যাল (ই/এম) বিভাগ- ৬ ঢাকার নির্বাহী প্রকৌশলী কার্যালয় ৩টি ১৬ চ্যানেল বিশিষ্ট ডিডিআর, ১২টি পিটিডোঙ ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা, ৩টি ডিসপেণ্ড মনিটর, ১০টি ডে নাইট ভিশন ক্যামেরাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মালামাল চুক্তি অনুযায়ী সরবরাহ ও স্থাপনের জন্য পর পর দুদিনে একজন ঠিকাদারকে তিনটি কার্যাদেশ দেয়। উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর পত্র স্মারক নং- ৩৫০২ (তারিখ; ১৪-০৬-২০১৬) এবং স্মারক নং-৩৫০৭ ও ৩৫০৮ (তারিখ : ১৫- ০৬-২০১৬)- এর মাধ্যমে চুক্তি মোতাবেক ঠিকাদারকে ১ কোটি ১৮ লাখ ৮১ হাজার টাকা | চূড়ান্ত বিল পরিশোধ করা হলেও কাজগুলো সমাপ্ত করা হয়নি। ওই বছরের ২০ অক্টোবর অডিট বিভাগের কর্মকর্তারা সাভার স্মৃতিসৌধে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে ব্যবহার অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে। তা ছাড়া পর্যাপ্ত কারিগরি লোক থাকার পরও উৎপাদন শূন্য অথচ বিদ্যুৎ বিল অস্বাভাবিক বলে অডিট রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। কর্মচারীরা নিয়মিত বেতন-ভাতা নিলেও কোনো কাজ করছে না। তা ছাড়া অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী পর্যাপ্ত জনবল থাকার পরও দৈনিক মজুরি ও চুক্তিভিত্তিক জনবল নিয়োজিত রয়েছে, এতে সরকারের আর্থিক অপচয় হচ্ছে বলে অডিট বিভাগ জানিয়েছে।

সূত্র জানায়, এ বিষয়ে গণপূর্ত অধিদফতরের ই/এম ঢাকা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আলমগীর খান বলেন, অডিট আপত্তির জবাব সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে অডিট বিভাগকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

দুর্নীতির চিত্র-৩
এমন অপরাধ সিন্ডিকেটের নেটের গুরু গণপূর্ত অধিদফতরের ই/এম ঢাকা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আলমগীর খান গ্রামের বাড়ীতে তার নিজ ও তার আত্মীয়-স্বজনের নামে শতশত একর কৃষি জমি রয়েছে। সূত্র মতে জানা যায়, তিনি ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত অর্থে তিনি ঢাকা শহরে ও তার আশে। পাশে একাধিক বাড়ী ও এ্যাপার্টমেন্ট, বাণিজ্যিক প্লট, আবাসিক প্লট ক্রয় করেছেন এবং বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের নামে বিরাট অংকের টাকা এফডিআর করে রেখেছেন। তাছাড়া, বিভিন্ন দেশে সে প্রায় ১০০ কোটি টাকা পাচার করেছেন যা তদন্ত করলে বেড়িয়ে আসবে। যে কোন সময় বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা মনে করেন, দুর্নীতিবাজ গণপূর্ত অধিদফতরের ই/এম ঢাকা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আলমগীর খান এর ঘুষ, দুর্নীতি, অবৈধভাবে প্রদোন্নতি প্রাপ্ত, অবৈধ সম্পদ অর্জন, বিদেশে টাকা পাচারের বিষয় দ্রুত তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে গণপূর্তির সুনাম ও মর্যাদা অক্ষুন্ন থাকবে।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে মন্তব্য জানতে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আলমগীর হোসেন একাধিক কর্মকর্তাকে ফোন করা হয়েছে কিন্তু তারা ফোন রিসিভ করেননি।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
আওয়ামীলীগ ফিরলে হাসিনার পা ধরেও মাফ পাবেন না: রাশেদ খান বিমানবন্দর অগ্নিকান্ডে পুড়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম কুমিল্লায় গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পালিয়েছেন স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজন ঢাকা এলজিইডিতে দুর্নীতির একচ্ছত্র অধিপতি বাচ্চু মিয়া বিমান বন্দরের সামনে এখোনো উৎসুক জনতার ভীড় নেভেনি আগুন বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি শিক্ষকদের সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড মামলার পথেই হাঁটছে বকশীগঞ্জের সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলা রাজউকের ইমারত পরিদর্শক মনিরুজ্জামান ৭ বছরেই শত কোটি টাকার মালিক শাহজালাল বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ নতুন ইতিহাস গড়লেন দীপিকা পাড়ুকোন