নাটোরে ট্রাক দুর্ঘটনায় ৮ জনের প্রাণহানি চালক গ্রেফতার

নাটোরে ট্রাক দুর্ঘটনায় ৮ জনের প্রাণহানি চালক গ্রেফতার

নাটোর সংবাদদাতা:

নাটোরের বড়াইগ্রামে ট্রাক ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৮ জন নিহতের ঘটনায় অভিযুক্ত ট্রাকচালক মহির উদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। বুধবার রাত ১০টার দিকে সদর উপজেলার বামনডাঙ্গা গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিকেলে তাকে আদালতে তোলা হবে। গতকাল বুধবার রাতে নাটোর সদর উপজেলার বামনডাঙ্গা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

গতকাল সকাল সাড়ে ৯টার সময় বড়াইগ্রামের আইড়মারী এলাকার তরমুজ পাম্পের সামনে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে মাইক্রোবাসের চালকসহ আটজন নিহত হন। তাঁদের মধ্যে সাতজনই স্বজন, যাঁরা কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে হাসপাতালে ভর্তি এক স্বজনকে দেখতে সিরাজগঞ্জ যাচ্ছিলেন। এ ঘটনায় গতকাল নজরুল ইসলাম নামে নিহত একজনের স্বজন ট্রাকচালককে আসামি করে সড়ক নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন।

বড়াইগ্রাম থানা সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাতেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সম্মিলিতভাবে ট্রাকচালককে গ্রেপ্তারে মাঠে নামেন। তাঁরা গতকাল মধ্যরাতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে চালক মহির উদ্দিনকে সদর উপজেলার বামনডাঙ্গা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেন। রাতেই ট্রাকচালক মহিরকে বনপাড়া হাইওয়ে থানায় হস্তান্তর করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার তাঁকে আদালতে হাজির করা হবে।

র‍্যাব-৫ নাটোর ক্যাম্পের কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাফিজ আল আসাদ জানান, বড়াইগ্রামের বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের আইরমাড়ি ব্রীজ এলাকায় ট্রাক-মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে কুষ্টিয়া থেকে সিরাজগঞ্জগামী মাইক্রোবাসের সাতজন যাত্রী ও চালকসহ মোট আটজন নিহত হয়। ঘটনার পর থেকে ট্রাকচালক মহির উদ্দিন গা ঢাকা দেয়। এরপর তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ট্রাক চালককে গ্রেফতার করা হয়।

পরে তাকে বনপাড়া হাইওয়ে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বনপাড়া হাইওয়ে থানার ওসি ইসমাইল হোসেন জানান, বুধবার সকালে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ধর্মদহ গ্রাম থেকে একটি মাইক্রোবাসে করে সিরাজগঞ্জে রুগী দেখতে যাচ্ছিলেন একই পরিবারের সাতজন। পথে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার আইরমাড়ি ব্রীজ এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক মাইক্রোবাসকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই পাঁচ নারী নিহত হন।

মাইক্রোবাসে থাকা অপর তিনজন গুরুতর আহত হলে উদ্ধার করে নিকটস্থ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একজনের মৃত্যু হয়। আর বাকি দুজন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় মারা যায়। মাইক্রোবাসে থাকা চালকসহ মোট আটজনই মৃত্যুবরণ করেন।

নিহতরা হলেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ধর্মদহ এলাকার জাহিদুল ইসলাম (৫৫), তার স্ত্রী সেলিনা খাতুন (৫০), বোন ইতি খাতুন (৪৮), চাচাতো বোন আনোয়ারা খাতুন (৫৫), চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী আনোয়ারা খাতুন (৫০), শ্বাশুড়ি আনজুমান আরাা খাতুন (৬৫) ও শ্যালিকা সীমা খাতুন (৩৫) এবং মাইক্রোবাসচালক শাহাবুদ্দিন আহমেদ (৪২)।

পরে রাতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের এক আত্মীয় নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে ট্রাক চালকের নামে বড়াইগ্রাম থানায় সড়ক নিরাপত্তা আইন-২০১৮ ধারায় একটি মামলা দায়ের করলে র‌্যাব সদস্যরা অভিযান চালিয়ে ট্রাক চালককে আটক করে।

বাবা হার্ট অ্যাটাকে ছেলে ক্যান্সারে মর্মান্তিক বিদায় একই পরিবারের দুই প্রাণের

বাবা হার্ট অ্যাটাকে ছেলে ক্যান্সারে মর্মান্তিক বিদায় একই পরিবারের দুই প্রাণের

নেত্রকোনা সংবাদদাতা:

একদিকে ছেলের ফুসফুস ক্যান্সার, অন্যদিকে অর্থ সংকট—এই দুশ্চিন্তাই এক অসহায় বাবার জীবন কেড়ে নিল। আর বাবার মৃত্যুর মাত্র কয়েকদিন পরই বিনা চিকিৎসায় থেমে গেল মেধাবী কলেজছাত্র সোহান হোসেনের জীবন। নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা উপজেলার হাফেজ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মোঃ মোরসালিন হোসেন সোহান (১৯) দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুস ক্যান্সারে ভুগছিলেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি বাবা মোঃ সোবাহান হোসেন চিকিৎসার ব্যয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে গত ৩০ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন।

বাবার মৃত্যুর পর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও এলাকাবাসীর সহায়তায় সোহানকে ময়মনসিংহ মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাকে ঢাকায় রেফার করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ঢাকায় নেওয়ার পথেই সোহান শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। অভাব আর অসহায়তার সঙ্গে লড়াই করতে করতে শেষপর্যন্ত হেরে গেল দুই প্রজন্ম—একজন পিতা, আর তার স্বপ্ন বয়ে বেড়ানো সন্তান।

সোহানের মৃত্যুতে গোটা পূর্বধলায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কলেজের সহপাঠী, শিক্ষক, প্রতিবেশী এবং সমাজকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবেগঘন বার্তা দিয়েছেন। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো এক বিবৃতিতে বলেন, “সোহানের মৃত্যু শুধু একটি পরিবারের ক্ষতি নয়, বরং একটি সম্ভাবনার করুণ মৃত্যু। দরিদ্র মানুষের চিকিৎসার নিশ্চয়তা না থাকায় প্রতিনিয়ত আমরা এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা প্রত্যক্ষ করছি।”

এদিকে এলাকাবাসীর প্রশ্ন—“দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারে ভোগা একজন ছাত্র এবং তার বাবার আকস্মিক মৃত্যু—এই পুরো বিষয়টিতে কি স্বাস্থ্য বিভাগ বা স্থানীয় প্রশাসনের কোনো দায়িত্ব ছিল না?” সাধারণ মানুষের চিকিৎসা নিয়ে রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সহায়তা প্রাপ্তির সুযোগ ও মানবিক রাষ্ট্রব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে এই করুণ ঘটনা। একই সঙ্গে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে—একটি জীবন বাঁচাতে সমাজের সম্মিলিত প্রয়াস কতটা জরুরি।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
আজ থেকে আমরণ অনশন, প্রত্যাখ্যান শিক্ষকদের শিক্ষার্থীরা রোডম্যাপের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন শাকসু নির্বাচনের বিদেশ যেতে না পারায় মাইক ভাড়া করে এলাকাবাসিকে গালিগালাজ করলেন কিশোরগঞ্জের যুবক জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল গণফোরাম অন্যদেরও সই করার আহ্বান কমিশনের সূচক সাড়ে ৩ মাস আগের অবস্থানে লেনদেন ৪ মাসে সর্বনিম্ন আওয়ামীলীগ ফিরলে হাসিনার পা ধরেও মাফ পাবেন না: রাশেদ খান বিমানবন্দর অগ্নিকান্ডে পুড়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম কুমিল্লায় গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পালিয়েছেন স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজন ঢাকা এলজিইডিতে দুর্নীতির একচ্ছত্র অধিপতি বাচ্চু মিয়া বিমান বন্দরের সামনে এখোনো উৎসুক জনতার ভীড় নেভেনি আগুন