গ্যালাক্সি গ্রুপের ওয়ালিদ এর বিরুদ্ধে অর্থ পাচার ও কর ফাঁকির অভিযোগ

গ্যালাক্সি গ্রুপের মালিক ওয়ালিদ এর বিরুদ্ধে বিদেশে টাকা পাচার ও ৬৫ কোটি টাকা কর ফাঁকির অভিযোগ!

নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের নামকরা ব্যবসায়ীদের একজন গ্যালাক্সি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: আহমেদ ইউসুফ ওয়লিদ। যার জাতীয় পরিচয়পত্র নং: ৪১৯ ৫৮৪ ৬৬৯৮, পাসপোর্ট নম্বর: ই০০০৯০২০০), পিতা- তৌফিক উদ্দীন আহমেদ, মাতা: নাজিবা বেগম। ঠিকানা: গ্যালাক্সি গ্রুপ, তাজ ম্যারিয়ট, ৬ষ্ঠ তলা, ২৫, গুলশান এভিনিউ, ঢাকা- ১২১২। স্থায়ী ঠিকানা: বাড়ী ৭/এ, রাস্তা: ১১৬, গুলশান- ১, ঢাকা- ১২১২ এর বিরুদ্ধে আওয়ামী ছত্রছায়ায় বিদেশে টাকা পাচার ও ৬৫ কোটি টাকা কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ জমা পড়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনে। বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবি ব্যারিষ্টার সৈয়দ আল-কায়সার গতকাল এই অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
অভিযোগের বর্ণনায় জানাগেছে, গ্যালাক্সি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: আহমেদ ইউসুফ ওয়লিদ দেশে নানা ব্যবসা বাণিজ্যের পাশাপাশি সংযুক্ত আর আমিরাতের দুবাইতে গড়ে তুলেছেন নানা ব্যবসা। সেখানে রয়েছে একাধিক বাড়ি গাড়িও। আওলাদ গংদের সেকেন্ড হোম হওয়ায় স্ত্রী সন্তানরা প্রায়ই থাকেন দুবাইতে। লেখাপড়াও চলছে সেখানেই। দুবাইয়ের এতো সব কিছুর পেছনে আছে বাংলাদেশের পাশাপাশি তার দুবাইয়ের সিটিজেন শীপ যা আবার অঢেল অর্থ ব্যাতীত অসম্ভব। থাইল্যান্ডে তার মালিকানাধীন বিলাস বহুল একটি হোটেলও আছে। অঢেল এ অর্থ তিনি অবৈধভাবে কামিয়ে পাচার করেছেন হুন্ডির মাধ্যমে যা এখনো চলমান। আর অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করতে বিভিন্ন সময়ই জড়িয়েছেন না অনৈতিক কাজে।

এসব করতে গিয়ে সামনে আসা বাঁধা বিপত্তি কাটাতে ঢাল হিসেবে রেখেছিলেন নামকরা রাজনীতিবিদদের। এক সময় তার প্রতিষ্ঠানে গেলেই যেগুলোর অস্তিত্ব টের পাওয়া যেত। দেয়াল জুড়ে দেখা যেত তোফায়েল আহমেদ, সালমান এফ রহমান, হাসানুল হক ইনু’র সাথে হাস্যোজ্জল ছবি। কখনো ইউসুফ ওয়ালিদের নিজের আবার কখনো তার পরিবারের সদস্য ও গ্রুপের শুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সাথে নিয়ে তোলা এসব ছবি তার ও তার পরিবারের সদস্যদের ক্ষমতা জানান দিতো। আর খুনি হাসিনার এসব দোসরদের ব্যবসায়িক পার্টনার হিসেবে পরিচয় দিয়েও বাগিয়ে নিয়েছেন নানা অনৈতিক সরকারী সুবিধা। ওয়ালিদের স্ত্রী মেরিনা আহমেদ, কন্যা ওয়ামিয়ান ওয়ার ওয়ালিদ, আত্মীয় শামসুদ্দিন চৌধুরী মিনার প্রত্যেকেই গ্রুপের বিভিন্ন অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের বড় কর্মকর্তা যারা এই দুর্নীতির সাথে জড়িত।
২০১৪ এবং ২০১৮ তে প্রায় ৬৫ কোটি টাকা কর ফাঁকির অভিযোগ উঠেছিলো আওয়ামী শাসনামলের অন্যতম সুবিধাভোগী এ ব্যবসায়ী ও তার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। গ্যালাক্সি গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠাান জিবিএক্স লজিষ্টিক এর বিরুদ্ধে ওঠা ঐ অভিযোগ এর তদন্তে আন্তর্জাতিক শিপিং ব্যবসা থেকে বড় কমিশন লাভ করলেও যথাযথ কর পরিশোধ না করার প্রমাণ মিলেছিলো।
এনবিআর এর সেন্ট্রাল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট ঘটনা তদন্ত করে জমা দেয়ার পর ওই কোম্পানির বিপরীতে উপ-কর কমিশনার একটি দাবী সম্বলিত চিঠি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠান। কিন্তু যার মাথার ওপর ও আশ পাশে তোফায়েল, সালমান ও ইনুর মতো দুর্নীতিবাজদের উপস্থিতি ছিলো তাকে বা তার পরিবারকে ছোঁয়ার সাহস ছিলোনা কারোই। ফলে দীর্ঘদিন কেটে গেলেও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টির অনুমোদন দেননি। এতে ওই কোম্পানি থেকে অনাদায়ী কর আদায় করা যায়নি। যা নিয়ে উস্মাও প্রকাশ করেছিলো আদালত। জানতে চেয়েছিলো কিভাবে ম্যানেজ করা হয়েছিলো দুদককে কেন চুপ থাকছে সব প্রতিষ্ঠানই।
৫ আগস্টের আগে পরে আওয়ামী দোসরদের অবৈধ অর্থ হুন্ডির ম্যাধমে বিদেশে পাচারও করেছেন তিনি। জানা গেছে ওয়ালিদ এবং তার পরিবারের সদস্যদের সকল অর্থনৈতিক অপকর্ম ম্যানেজ করে আসছেন শামসুদ্দিন মিনার ও তালুকদার নামের দুই ব্যক্তি। হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচার করার দায়িত্ব পালন করে বেলায়েত নামক আরেক ব্যক্তি। রাজস্ব সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ করে মিজান এবং সৌরভ। কর ফাঁকি দিয়ে অবৈধ অর্থকে বৈধ করতে সিদ্ধহস্ত এ দুই ব্যক্তি সকল রকমের ডকুমেন্ট তৈরী ও সরবরাহ করে থাকেন।
আওলাদ এর মালিকানাধীন গ্যালক্সি এয়ার ওয়েজ-এর এয়ারলাইন্স ব্যবসা থেকে উপার্জিত অর্থও থাকছে না বাংলাদেশে। হুন্ডির মাধ্যমে তা পাচার করা হচ্ছে বিদেশে। আওয়ামী শাসনামলে দুর্নীতির ম্যাধমে টাকার কুমির বনে যাওয়া ওয়ালিদ গং আঁৎকে উঠেছিলেন ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের সময়। তাই টাকা ঢেলে এবং কিছু ক্ষেত্রে ভাড়াটে লোক পাঠিয়ে আন্দোালন দমানোর হত্যাযজ্ঞে অংশ নেয়ার অভিযোগ আছে ইউসুফ ওয়ালিদ এবং তার ডান শাসুদ্দিন মিনারের বিরুদ্ধে। মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা আসামী করা হয় এ দু জনকে (মামলা নং: ৩৪/১২৪৪)। তবে আওয়ামী দোসররা পালিয়ে গেলেও তাদের সহায়তায় টাকার কুমির বনে যাওয়া ওয়ালিদ গং টাকার প্রভাবে এখনো রয়েছেন বহাল তবিয়েতে। করছেন অফিস, চলাচ্ছেন দুর্নীতি বাণিজ্য।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য গ্যালাক্সি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: আহমেদ ইউসুফ ওয়লিদ এর অফিসে ফোন দিলে তার পিএস জানান,স্যার দেশের বাইরে আছেন।

সহকারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ

অনলাইন ডেস্কঃ

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে সহকারী শিক্ষকদের মারধরে প্রধান শিক্ষক কামরুল আহসান সোহেল (৫২) আহত হয়েছেন। এ সময় তার ছেলে সিনহা ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ফাতেমা বেগম আহত হন। ভবন নির্মাণে জটিলতাসহ নানা দ্বন্দ্বের জেরে সহকারী শিক্ষকরা মারধর করেন বলে অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের।

মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) দুপুরে পলাশবাড়ী উপজেলার বরিশাল ইউনিয়নের জুনদহ উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, নতুন চারতলা ভবন নির্মাণের উদ্দেশে গত বছরের নভেম্বর মাসে স্কুলের পুরাতন টিনসেড ওয়ালআপ ভবন ভেঙে ফেলা হয়। কিন্তু জমির সীমানা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হলে প্রতিবেশী জমির মালিকের অভিযোগে সেখানে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনও সম্ভব হয়নি।

বর্তমানে টিনের ছাপড়া ঘর তৈরি করে প্রখর রোদের মধ্যেই পাঠদান চলছে। সম্প্রতি পাশের জমির মালিকও স্কুলের টয়লেটে যাতায়াতের রাস্তাটি বাঁশের বেঁড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন। এসব কারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির শেষ নেই। এ নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরর মধ্যে চাপাক্ষোভ তৈরি হয়।

তারা আরও জানায়, বিদ্যালয়ের এসব সমস্যা সমাধানে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সহকারী শিক্ষক মুক্তার, রিজেন, কাওছার মোখছার, নাঈমসহ অন্যান্যদের সাথে প্রধান শিক্ষকের বাকবিতণ্ডা বাধে। এর একপর্যায়ে প্রধান শিক্ষক সোহেল ধাক্কা-মারধরের শিকার হন। খবর পেয়ে তার স্বজনরা তাকে বাঁচাতে এলে ছেলে সিনহা ও ছোট ভাইয়েরর স্ত্রী ফাতেমা আহত হন।

হাসপাতালে ভর্তি আহত প্রধান শিক্ষক কামরুল আহসান সোহেল বলেন, বিদ্যালয়ের নানা সমস্যাসহ বর্তমান পরিস্থিতি সকলের জানা। এসব নিয়ে ক্ষুদ্ধ সহকারী শিক্ষকরা। বিদ্যালয় চলাকালে হঠাৎ করে সহকারী শিক্ষকরা একজোট হয়ে মারমুখি হয়ে উঠেন। একপর্যায়ে তারা আমাকে শারীরিকভাবে মারধর করে আহত করে। ঘটনার সময় বাঁধা দিলে তারা ছেলেসহ ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে মারধর করেন। তিনি শারীরিকিভাবে পক্ষঘাত বলেও দাবি করেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষকরা। তাদের মধ্যে সহকারী শিক্ষক মুক্তার হোসেন ও রিজেন মিয়া জানান, বিদ্যালয়ের বেশ কিছু বিষয় নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে মতবিরোধ চলছিলে। এর জেরে প্রধান শিক্ষকের পরিবারের সদস্যরাই বিদ্যালয়ে এসে তাদের ওপর হামলা চালান। আর প্রধান শিক্ষক রেগে গিয়ে টেবিলে থাপড়ালে কাঁচ ভেঙে তার হাত কেটে যায়।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে পলাশবাড়ী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাহাতাব হোসেন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করা হয়। এসময় শিক্ষক ও স্থানীয়দের কাছে ঘটনার বিষয় জানা হয়। তবে শিক্ষকদের উভয়পক্ষ একে-অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিচ্ছে। এ ব্যপারে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা বলেন, এখনও পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সূত্রঃ যমুনা টিভি

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম