নীলফামারীতে সদর উপজেলা যুব উন্নয়ন কার্যালয়ের চেক বিতরণ

 

নীলফামারী প্রতিনিধি:

নীলফামারী সদর উপজেলা যুব উন্নয়ন কার্যালয় থেকে ৪০ জন যুব’র মাঝে জনপ্রতি ১২ হাজার টাকা হিসেবে ৪ লক্ষ ৮০ হাজার
পরিবারভিত্তিক ঋণের চেক বিতরণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার ২৪শে জানুয়ারি নীলফামারী সদর উপজেলা যুব উন্নয়ন কার্যালয়ে সদর উপজেলায় ৪০ জন যুবকের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষে মাঝে জনপ্রতি
১২ হাজার টাকা হিসেবে ৪ লক্ষ ৮০ হাজার পরিবারভিত্তিক ঋণের চেক বিতরণ করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন নীলফামারী সদর উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসার মোঃ আলমগীর হোসেন, সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ ফিরোজ সরকার, সহকারী উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসার মোঃ হাফিজুর রহমান ও মোঃ জিকরুল হক।

সেই সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার এখনো ধরাছোঁয়ার বাহিরে

স্টাফ রিপোর্টার:

কয়েকটি অস্ত্রসহ এক বিশেষ ভঙ্গিমায় দাঁড়িয়ে আছেন কবির বিন আনোয়ার। বছর দুই আগে তিনি নিজেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন ছবি প্রচার করে আলোচনার জন্ম দেন। তবে বিভিন্ন মহলের আলোচনা-সমালোচনা তৎকালীন প্রভাবশালী এ সচিবকে দমাতে পারেনি। উল্টো ওই ঘটনার কিছুদিন পর বিরাট গাড়িবহর নিয়ে রাজনৈতিক নেতার মতো শোডাউন করে নতুন বিতর্কের জন্ম দেন।

সেসময় প্রশ্ন উঠেছিল, বাইক আর প্রাইভেটকারের বিরাট বহর নিয়ে রাজনৈতিক নেতা বা এমপি-মন্ত্রীর মতো কোনো আমলা কি শোডাউন করতে পারে কি না ? কিংবা অস্ত্র নিয়ে যে ভঙ্গিমায় তিনি ছবি তুলেছেন এবং নিজেই তা প্রচার করেছেন, একজন আমলার সঙ্গে তাও কি মানানসই? সেসব প্রশ্নের কোনো উত্তর তখন মেলেনি। বরং যেন পুরস্কৃত হয়েছিলেন আলোচিত সাবেক এই আমলা।

এমনসব বিতর্ক আর সমালোচনার মধ্যেই ২০২৩ সালের ৩ জানুয়ারি কবির বিন আনোয়ারকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে নিয়োগ দেয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। তবে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ওই পদে তিনি ছিলেন মাত্র ১৯ দিন। যদিও এরপর তাকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা করা হয়েছিল।

কবির বিন আনোয়ার বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের ৭ম ব্যাচের কর্মকর্তা। ১৯৮৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সহকারী কমিশনার হিসেবে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে তার চাকরি জীবন শুরু। এরপর মাঠ প্রশাসন ওসরকারের বিভিন্ন পদে থেকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই কর্মসূচির প্রকল্প পরিচালকও ছিলেন তিনি। সবশেষ মন্ত্রিপরিষদ সচিব হওয়ার আগে তিনি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ছিলেন।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার সময় কবির বিন আনোয়ারের বিরুদ্ধে ক্ষমতার প্রভাব খাটানো থেকে শুরু করে নানা বিতর্কিত কাণ্ড ঘটানোর অভিযোগ ছিল। বিশেষ করে জনপ্রশাসনে তাকে নিয়ে আলোচনার অভাব ছিল না। তবে সরকার ঘনিষ্ঠ প্রভাবশালী আমলা হওয়ায় সেসময় তাকে নিয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পেত না। আড়ালে-আবডালেই চলত সমালোচনা।

কবির বিন আনোয়ার ফার্মগেটের সরকারি বাসার ছাদে নিয়মিত মদ্যপানের আসর বসাতেন বলেও জনপ্রশাসনে প্রচলিত আছে। এ নিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে চরম ক্ষোভ-অসন্তোষও ছিল। এছাড়া পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্বে থাকাকালে তার পছন্দের ব্যক্তিরা ঠিকাদারি কাজ পেত বলেও অভিযোগ রয়েছে।

গেল ৫ আগস্ট প্রবল গণআন্দোলনের মধ্যে ইতি ঘটেছে আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসন। আওয়ামী লীগের এই ক্ষমতাকালে কবির বিন আনোয়ারের মতো আমলাদের দৌরাত্ম আর ক্ষমতার প্রদর্শনও ছিল চোখে পড়ার মতো। তাদের এত ক্ষমতার উৎসই বা কি সেই প্রশ্নও ছিল সাধারণের মনে।

পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর আত্মগোপনে চলে যান সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ আওয়ামী লীগের নেতারা। আত্মগোপন করেছেন সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বরত ব্যক্তিদের কেউ কেউ। এরইমধ্যে উল্লেখযোগ্য বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। আবার কেউ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে পালানোর সময় আটকও হচ্ছেন।

ক্ষমতার পালাবদলের মধ্যে অন্য অনেকের মতো আত্মগোপন করেছেন কবির বিন আনোয়ারও। আবার তিনি বিদেশে চলে গেছেন বলেও শোনা গেছে। এরইমধ্যে সিরাজগঞ্জে দুই বিএনপি কর্মী ও একজন যুবদল নেতা হত্যার ঘটনায় পৃথক তিন মামলায় আসামিও হয়েছেন সাবেক এই মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম