ইবিতে বিবস্ত্র করে ছাত্রীর ভিডিও ধারণ

ইবি প্রতিনিধি॥

কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক ছাত্রীকে রাতভর মারধর ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রলীগ নেত্রী ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ছাত্রীর অভিযোগ, তাকে চড়-থাপ্পড় মেরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে এবং বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করেছে অভিযুক্তরা।

গত রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হলের গণরুমে ডেকে নিয়ে ওই ছাত্রীকে নির্যাতন করা হয়।

নির্যাতনকারী ছাত্রলীগ নেত্রীর নাম সানজিদা চৌধুরী অন্তরা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এবং পরিসংসখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তার সহযোগী তাবাসসুম ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী ছাত্রীও একই বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী তাবাসসুম রাত ৮টায় ভুক্তভোগী ছাত্রীকে প্রজাপতি-২ রুমে যেতে বলেন। অসুস্থ থাকায় সেদিন তিনি যেতে পারেননি। এরপর ভুক্তভোগী ছাত্রীকে হল থেকে নামিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন তাবাসসুম। শনিবার ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে প্রথম দফায় র‍্যাগিং করে তাকে হল থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তবে হলের প্রভোস্টের সহযোগিতায় তখন সেটা সম্ভব হয়নি।

পরদিন রোববার ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ ৭-৮ জন মিলে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে গণরুমে ডেকে নিয়ে মারধর করেন। এ সময় তাকে এলোপাতাড়ি চড়-থাপ্পড় মারা হয় এবং মুখ চেপে ধরে গালিগালাজ করা হয়। এমনকি তাকে ময়লা গ্লাস মুখ দিয়ে পরিষ্কার করতে বলেন সানজিদা। পরে ওই ছাত্রীকে জামা খুলতে বলেন অভিযুক্তরা। জামা না খুললে পুনরায় মারতে থাকেন তাকে। এরপর জোর করে তাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করা হয়। ওই ভিডিও সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকি দেন তারা। এ ঘটনা কাউকে বললে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয় ভুক্তভোগীকে।

ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, আমাকে গত রোববার গণরুমে ডেকে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন করেছে। আমার শরীরে এখনো ব্যাথা করছে। জীবন বাঁচাতে পরদিন সোমবার ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে আসি। আমি অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।

নির্যাতনকারী হিসেবে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী বলেন, সে আমার নাম করে আমাকেই ভয় দেখাচ্ছিলো। এজন্য তাকে ‘বোঝানো’ হয়েছে। তবে তার সঙ্গে আমরা এমন ধরনের কোনো ঘটনা ঘটাইনি।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, ঘটনা যদি সত্য হয় এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ প্রমাণ হয় তাহলে আমরা প্রশাসনের কাছে তার শাস্তির দাবি জানাব এবং আমরা সাংগঠনিকভাবেও ব্যবস্থা নেব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, আমি একটি প্রোগ্রামে আছি। অফিসে গিয়ে লিখিত অভিযোগটি দেখব। এরপর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েই র‍্যাগিংয়ের অনুমতি নেই। আমি নীতিগতভাবে এটা কখনো সমর্থন করি না। আমি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বসে বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

 

ইমামকে দিগম্বর করে ভিডিও ধারণকারী গ্রেফতার গাজীপুরের সেই মাদ্রাসায় এখনো তালা ঝুলছে

মোসাঃহাফসা আক্তার।

গাজীপুরে জুমার বয়ানে মাদকের কুফল নিয়ে আলোচনার জেরে মসজিদের ইমামকে মারধর ও দিগম্বর করে ভিডিও ধারণ করার মামলার প্রধান আসামী মফিজুর রহমান টুটুলকে মঙ্গলবার দুপুরে গ্রেফতার করেছে মহানগর গাছা থানা পুলিশ। টুটুল গাছা থানার চান্দরা এলাকার একজন চিহ্নিত মাদক কারবারি। টুটুল ও তার সহযোগীদের অত্যাচারে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল। মঙ্গলবার বিকেলে গাছা থানায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জিএমপি দক্ষিণ বিভাগের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান।
এদিকে সরেজমিনে চান্দরা আল আকসা জামে মসজিদ ও মসজিদ সংলগ্ন দারুল হাবিব মাদ্রাসায় গিয়ে ভুক্তভোগী ইমাম মুফতি শফিকুল ইসলাম তালুকদারকে পাওয়া যায়নি। মাদ্রাসাটির প্রধান ফটকে তালা ঝুলতে দেখা গেছে। মুসল্লিরা জানান, আলোচিত ঘটনার পর তিনি দুই মাসের ছুটি নিয়ে গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনায় চলে গেছেন। তার পরিচালিত দারুল হাবিব মাদ্রাসাটিও সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আসরের নামাজের সময় কথা হয় মুসল্লি শামসুল হকের সাথে। তিনি বলেন, ‘আমার বাড়ি অন্য মহল্লায়। আমাদের মহল্লার মসজিদের পরিবর্তে আমি এই মসজিদের ইমামের পেছনেই বেশি নামাজ পড়ি। এই ইমামের সূরা-কিরাত উচ্চারণ আমার খুব ভালো লাগে, তার বয়ান শুনলে হৃদয় কেঁপে উঠে।’
অপরদিকে মাদকের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, মাদক কারবারি টুটুল ও তার সহযোগীদের অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। টুটুল ও তার বড় ভাই সরকারি দল আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পান না। তাছাড়া টুটুল গাজীপুর সিটি করপোরেশনের গাছা অঞ্চলের প্রভাবশালী একজন ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ঘনিষ্ট লোক হিসেবে এলাকায় পরিচিত এবং একসময় সাবেক গাছা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের একজন প্রভাবশালী নেতার সাথে ঝুট ব্যবসাও করতেন টুটুল। মসজিদের একজন মুসল্লি মাদকের বাস্তব চিত্র দেখানোর জন্য সংবাদকর্মীদেরকে মসজিদে যাওয়ার রাস্তায় নিয়ে যান। এসময় ওই রাস্তার পাশে বাউন্ডারি বেষ্টিত একটি খালি জায়গায় ফেনসিডিলের খালি বোতল ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
উল্লেখ্য, জুমার বয়ানে মাদকের কুফল নিয়ে আলোচনা করায় মসজিদের ইমামকে মারধর ও দিগম্বর করে ভিডিও ধারণ করার সংবাদ গত সোমবার বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশ হওয়ার পর প্রশাসনের টনক নড়ে। এ ঘটনায় সোমবার বিকেলে পুলিশের পক্ষ থেকে ওই এলাকায় মাদক বিরোধী সমাবেশ করা হয়। এ সমাবেশে একাধিক বক্তা পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘মাদক কারবারিদের কবল থেকে আমাদেরকে বাঁচান, আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে বাঁচতে চাই।’

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
বিদেশ থেকে যতটুকু স্বর্ণ আমদানি করলে দিতে হবে না ভ্যাট প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎতে যাচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব ফকরুল বাংলাদেশে ইতিহাস গড়ল উইন্ডিজ দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন রাজউক ইমারত পরিদর্শক শামীম রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধে কে জিতবে, তা নিয়ে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নিচেছ ট্রাম্প নাসার চন্দ্র মিশনে স্পেসএক্স জুলাই যোদ্ধা স্বীকৃতি পেতে নতুন করে দেড় হাজারের বেশি আবেদন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিল শুনানি শুরু প্রধান প্রকৌশলীর আস্থাভাজন ইএম ২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদ সম্পদের পাহাড় জানানো যাচ্ছে অভিযোগ, থানায় বসলেই ভিডিওকলে হাজির এসপি