কুমিল্লায় গুপ্তধন ভেবে কুড়িয়ে পাওয়া বোমা বাড়িতে নিয়ে গেলেন সুফিয়া! অতঃপর

 

মিরাজুল ইসলামঃ

কুমিল্লার ব্রা‏হ্মণপাড়ায় ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে উদ্ধার করা একটি বোমা শনিবার দুপুরে বিষ্ফোরন ঘটিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। বোম ডিসপোজাল ইউনিট কাউন্টার টেরিরোজমের একটি দল মাটিতে পুতে বিষ্ফোরণের মাধ্যমে ধ্বংস করেছে। গত শুক্রবার পাতা কুড়াতে গিয়ে বোমাটি গুপ্ত ধন মনে করে বাড়িতে নিয়ে আসেন এক নারী । পরে তার ছেলে সেটিকে চিনতে পেরে পুকুরের পানিতে নিমজ্জিত রাখে।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, ব্রা‏হ্মণপাড়া উপজেলার শশীদল ইউনিয়নের মল্লিাকাদীঘি গ্রামের সুফিয়া বেগম নামের এক নারী গত শুক্রবার বিকালে তাদের বাড়ির পাশেই শুকনা পাতা কুড়াতে গিয়েছিলেন। এ সময় তিনি মাটিতে পুতে থাকা পিতলের তৈরী একটি বস্তু দেখতে পান। গুপ্তধন মনে করে বাড়িতে নিয়ে যায় তিনি। গোপনে পাড়িতে নিয়ে তিনি সেটা তার ছেলে মাইন উদ্দিনকে দেখান। এ সময় মাইনউদ্দিন বুঝতে পেরে বস্তুটিকে বোমা বলে তাৎক্ষনিক পুকুরে ফেলে দেয়।
পরে মাইনউদ্দিন ৯৯৯ ফোন করে বিষয়টি অবহিত করেন। খবর পেয়ে ব্রা‏হ্মণপাড়া থানা পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে ঘটনার সত্যতা পায়। এ সময় পুকুরে ফেলে রাখার বিষয়টি নজরে রেখে পুলিশের বোমা ডিস্পোজাল ইউনিটকে খবর দেয়।
পুলিশের বোমা ডিস্পোজাল ইউনিট কাউন্টার টেরিরোজমের পরিদর্শক মো. মোদাচ্ছের কায়সার এর নেতৃত্বে এক দল পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পুকুর থেকে বোমাটিকে উদ্ধার করে দেখতে পায় একটি অবিষ্ফোরিত কামানের গোলা। ওজন ১০ কেজি, দৈর্ঘ- সাড়ে ১৩ ইঞ্চি। পরে পাটিতে পুতে বিষ্ফোরন ঘটিয়ে একটি ধ্বংস করা হয়েছে।
সুফিয়া বেগম বলেন, এটিকে দেখে আমার মনে হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ গুপ্তধন। তাই এটিকে বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলাম। পরে আমার ছেলে বলছে একটি বোম। পরে পানিতে ফেলে দিয়ে আমার ছেলে ৯৯৯ ফোন করে বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ব্রা‏হ্মণপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মাহমুদুল হাসান রুবেল, ব্রা‏হ্মণপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ইকরামুল হক, থানার উপ পরিদর্শক (এস.আই) আল হাবি রবিন প্রমুখ।
ব্রা‏হ্মণপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মাহমুদুল হাসান রুবেল জানান, পাতা কুড়াতে গিয়ে এক নারী বোমাটি খুজে পায়। গুপ্তধন মনে করে বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে তার ছেলে এটিকে বোম মনে করে পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়। পরে ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অবিষ্ফোরিত কামানের গোলাটি উদ্ধার করা হয়। বিষ্ফোরন করে ধ্বংস করা বোমাটির ওজন ১০ কেজি, দৈর্ঘ- সাড়ে ১৩ ইঞ্চি।
পুলিশের কাউন্টার টেরিরোজমের পরিদর্শক মো. মোদাচ্ছের কায়সার বলেন, এটি অবিষ্ফোরিত কামানের গুলা। যেকোন সময় বিষ্ফোরণ হতে পারত। ধারণা করা হচ্ছে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নিক্ষেপ করা অবিষ্ফোরিত গোলা এটি ।

নবীনগরে বালু মহলের দখল নিতে সন্ত্রাসীদের গুলিবর্ষণ, গুলিবিদ্ধ ৩

বিপ্লব নিয়োগী তন্ময়,নবীনগর ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি।

নবীনগর পশ্চিমাঞ্চলের বড়িকান্দি ইউনিয়নের নুরজাহানপুর গ্রামে ঢুকে পার্শ্ববতী নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার চরমধুয়া ইউনিয়নের সন্ত্রাসীদের অতর্কিত হামলা, গুলি ও বোমাবর্ষণ, ৩ জন গুলিবিদ্ধ বেশ কয়েকজন আহত।

রবিবার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের সোনাবালুয়া ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন উপজেলার ধরাভাঙ্গা গ্রামের মকবুল হোসেন ও মুক্তারামপুরের সোহেল মিয়া। তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

স্থানীয় এলাকা বাসী ও পুলিশ জানায়, বড়িকান্দি ইউনিয়নের জাফরাবাদ মৌজায় মেঘনা নদী থেকে সম্প্রতি প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বালু উত্তোলনের ইজারা পায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ শোভনের মালিকানাধীন মুন্সি এন্টারপ্রাইজ। ইজারা পাওয়ার পর মেঘনার জাফরাবাদ ও নতুন চর বালুমহাল থেকে বালু উত্তোলন শুরু করে ইজারাদারের লোকজন। কিন্তু ইজারাদারের লোকজনের অভিযোগ, বালু উত্তোলন শুরুর পর থেকেই মেঘনার অন্য প্রান্তে থাকা নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার নদীতীরবর্তী কিছু লোক (বালু ব্যবসায়ী) এ এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করতে হলে তাদের (রায়পুরার) মোটা অঙ্কের চাঁদা দিতে হবে বলে বারবার দাবি করে আসছিল।

এ অবস্থায় রবিবার সন্ধ্যালগ্নে মেঘনার অন্য প্রান্ত থেকে সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা তিন-চারটি স্পিডবোট ও ইঞ্জিনের নৌকায় নদীর নবীনগর প্রান্তে এসে বালুমহালের ক্যাশ কাউন্টারে হামলা চালায়। শ্রমিকদের ওপর অতর্কিতভাবে গুলি ছুড়তে তারা। এতে বালুশ্রমিক মকবুল হোসেন ও সোহেল মিয়া গুলিবিদ্ধ হন। তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ইজারাদার শাহাদাৎ হোসেন শোভন বলেন, ‘ইজারা পাওয়ার পর বালু উত্তোলনের শুরু থেকেই নদীর অন্য প্রান্তে থাকা রায়পুরা উপজেলার কিছু সন্ত্রাসী আমাদের কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে আসছিল। চাঁদা না দেওয়ায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা গতকাল আচমকা হামলা চালিয়ে দুজনকে গুলিবিদ্ধ করে পালিয়ে যায়। আমরা এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেব।নবীনগরের ইউএনও তানভীর ফরহাদ শামীম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘ঘটনাটি রাতেই শুনেছি। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) মো. এমরান হোসেন ও নবীনগর সার্কেলের দায়িত্বে থাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক।এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম