আসল ওষুধের নামে নকল ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ওষুধের ছড়াছরি

নিজস্ব প্রতিবেদক॥
ওষুধ তৈরির কারখানা আছে। সেখানে তৈরি হয় করোনা, ক্যানসারসহ কঠিন সব রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ। স্ট্রিপে সিল পড়ে নামিদামি সব ব্র্যান্ডের। কিন্তু সব ওষুধই নকল। এর অন্তরালে কাজ করছে একাধিক চক্র। হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা, হুমকিতে ফেলছে জনস্বাস্থ্য। আর এসব ওষুধের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার মিটফোর্ড।

নকল ওষুধ সেবন করে মানুষ সুস্থ না হয়ে আরও বেশি অসুস্থ হচ্ছে। মহামারির চেয়ে বেশি মারা যাচ্ছে নকল ও ভেজাল ওষুধ খেয়ে। আর আইসিইউ ও সিসিইউতে চিকিৎসাধীন রোগীদের এসব ওষুধ দেওয়া হলে তাদের মৃত্যু শতভাগ নিশ্চিত বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নকল ও ভেজাল ওষুধ নিয়ন্ত্রণে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। তাদের মনিটরিং ব্যবস্থা খুবই দুর্বল। নকল ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদনকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন তারা।

‘আসল ওষুধের প্রকৃত দামের তুলনায় অনেক কম দামে নকল ওষুধগুলো বাজারে বিক্রি হচ্ছিল। এগুলো মাদকের চেয়েও ভয়ংকর। মানুষ অসুস্থ হয়ে ওষুধ সেবন করে। আর নকল ওষুধ সেবন করে মানুষ সুস্থ না হয়ে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এ কে লুৎফুল কবীর বলেন, কোভিড রোগীদের মোনাস-১০ ওষুধ সেবন করতে দেওয়া হয়। কিন্তু নকল মোনাস-১০-এ কোনো কার্যকর উপাদানই নেই। এই ওষুধ সেবন করে রোগের প্রকোপ আরও বেড়ে যায়। আস্তে আস্তে অবস্থা খারাপের দিকে গিয়ে মৃত্যু হয় রোগীর। তাই নকল ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদন গণহত্যার শামিল। এটা বন্ধ করা উচিত। এসব ওষুধ তৈরি, বিক্রি ও বিপণনে জড়িতরাও সমান অপরাধী।

নকল ওষুধের ভয়াবহতা প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. জয় চৌধুরী বলেন, নকল ওষুধ ব্যবহারে হার্ট, লিভার ও কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া গর্ভবতী নারী ও তার সন্তানের জন্য মারাত্মক ক্ষতিসহ মানবদেহের নানা ক্ষতি হতে পারে। নকল অ্যান্টিবায়োটিক খেলে পরে দেখা যায় আসল অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করছে না। ফলে ওই রোগীকে পরবর্তীকালে চিকিৎসা করতে চিকিৎসকদের অনেক বেগ পেতে হয়।

এ দিকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় কয়েকটি ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অবৈধ, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ প্রস্তুত ও বাজার জাতের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এই সব ইউনানি আয়ুর্বেদিক ওষুধ প্রস্তুকারী প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন যাবত ওষুধের ব্যানারে কালার ফ্লেভার ও কেমিকেল ব্যবহার পূর্বক ওষুধ প্রস্তুত করে বাজারজাত করছে ফলে এই সব ওষুধ সেবনে জনগণের কোন উপকার হচ্ছে না। উপোরন্ত জনগণ বিরুপ প্রতিক্রায়ার শিকার হয়ে নানা রকম শারীরিক জটিলতায় ভুগছে। এই অভিযোগ ভুক্তভোগি মহলের একাধিক সূত্রের। যে সকল ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অবৈধ, অন-অনুমোদিত, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদন ও বাজার জাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে, এর মধ্যে শিরিন ল্যাবরেটরীজ (ইউনানী), গ্রেন প্লাস ফার্মাসিউটিক্যালস (ইউনানী), সবুজ ফার্মাসিউটিক্যালস (ইউনানী), অনির্বান মেডিসিনাল ইন্ডাস্ট্রীজ (আয়ু), জেনেসিস ফার্মাসিউটিক্যালস (আয়ু), দিহান ফার্মাসিউটিক্যালস (আয়ু), হামজা ল্যাবরেটরীজ (ইউনানী) এবং এসএস ফার্মাসিউটিক্যালস (ইউনানী) অন্যতম।

হামজা ল্যাবরেটরীজ (ইউনানী)ঃ এইচপি তুলসী ৪৫০ মিলি, এইচপি তুলসী ১০০ মিলি, ট্যাবলেট হামজা রুচিক্যাপ, ক্যাপসুল পেঙ্কুল, ক্যাপসুল হামজা গ্যাস্কুল, সিরাপ হামজাপ্লেক্স (শরবত আমলা), ট্যাবলেট সুপার ক্যাপ (ভিটামিন এ টু জেড), ক্যাপসুল নিমভিট, ট্যাবলেট স্লিফিট, হামজাক্যাল- ডি, সিরাপ কফকুল, ক্যাপসুল নোএজমা, সিরাপ জিনবিট ৪৫০ মিলি (শরবত জিনসিন), সিরাপ জিনবিট ১০০ মিলি (শরবত জিনসিন), হালুয়া গ্রেফোট, সিরতাপ এয়াপেলটন ৪৫০ মিলি, সিরাপ সিইলিভ। যৌন উত্ত্বেজক ওষুধ সিলড্রেনাফিন, সাইট্রেট ও ট্রাডালাফিন সাইট্রেট নামক ভায়গ্রার উপাদান ব্যবহার করছে বলে ও ওষুধ ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত একটি সূত্রের দাবি। জ্বরের ওষুধে প্যারাসিটামল, গ্যাস্ট্রিক ও আলসারে ওষুধে এন্টাসিড, রেনিটিডিন, ওমিওপ্রাজল এবং ব্যথা ও ব্যথানাশক ওষুধে ডাইক্লোফেনাক সোডিয়াম বিপি নামক এলোপেথিক ওষুধের কাচা মাল ব্যবহারের খবর পাওয়া গেছে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে। এ ওষুধের বিষয়ে ভোক্তা ও হাকিম, কবিরাজ, ইউনানী বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসকদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন এই ওষুধগুলোর মান খুবই খারাপ যা মানুষের শরীরে দীর্ঘমেয়াদী রোগ সৃষ্টির জন্য দায়ী হতে পারে। এ বিষয়ে ওষুধ মালিকদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা এ বিষয়টি অস্বীকার করে এবং এ নিয়ে কোন কথা বলতে রাজী হয়নি। ইউনানীর সমিতির উচ্চপদস্থ কর্মকতার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, হামজা ল্যাবরেটরীজ তাদের নতুন সদস্য তাই তাদের সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য এখনো নেই। তবে এদের বিরুদ্ধে যদি কিছু লেখা হয় তাহলে এতে তাদের কোন আপত্তি নেই। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, হামজা সহ যে সমস্ত কোম্পানীর নামে খবর প্রকাশিত হয় তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে শাস্তিমূলক ব্যাবস্থা গ্রহণ করছি ও অব্যাহত রয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে সবার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

শিরিন ল্যাবরেটরীজ (ইউনানী) শিবচর, মাদারীপুর, ভেজাল ও নি¤œমানের ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাত করছে এমন অভিযোগ বহুদিনের। সুত্র মতে শিরিন ল্যাবরেটরীজ (ইউনানী) মালিক রেজাউর করিমের নির্দেশে কোম্পানীটি সস্তা ও মিডফোডের খোলা বাজার থেকে কেমিকেল ক্রয় করে নিম্নমানের ভেজাল ঔষধ উৎপাদন করছে, এছাড়া ও কোম্পানীটির বিভিন্ন ঔষধের মোড়কে ফুলও ফলের ছবি ব্যবহার করে পন্য উৎপাদন করছে। সেই সাথে অন্য কোম্পানীর লেভেল কাটুন নকল করে অতি মুনাফার আশায় হুবহু দেখতে পন্য উৎপাদন করছে।

গ্রেন প্লাস ফার্মাসিউটিক্যালস (ইউনানী) হেমায়েতপুর, পাবনাঃ উক্ত কোম্পানী ২ (দুই) টি সিরাপ ডিভিয়া, সিরাপ রিস্টিক ভিটামিন ওষুধে ডেক্সামেথাসন, সিপ্রোহেপ্টাডিন, থিয়ভিট (গাবাদী পশু মোটা তাজা জাত করণ কেমিকেল) ও ক্যালসিয়াম ক্যার্বনেট ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ উঠে। এছাড়াও সিরাপ ই-ক্লিপ, ক্যাপসুল নিসাত-জিতে যৌন উত্ত্বেজক ওষুধ সিলড্রেনাফিন, সাইট্রেট ও ট্রাডালাফিন সাইট্রেট নামক ভায়গ্রার উপাদান ব্যবহার করছে বলে ও ওষুধ ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত একটি সূত্রের দাবি। জ্বরের ওষুধে প্যারাসিটামল, গ্যাস্ট্রিক ও আলসারে ওষুধে এন্টাসিড, রেনিটিডিন, ওমিওপ্রাজল এবং ব্যথা ও ব্যথানাশক ওষুধে ডাইক্লোফেনাক সোডিয়াম বিপি নামক এলোপেথিক ওষুধের কাচা মাল ব্যবহারের খবর পাওয়া গেছে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে।

সবুজ ফার্মাসিউটিক্যালস (ইউনানী) বগুড়াঃ সবুজ আমলকী প্লাস ৪৫০মিলিঃ, সবুজ জিনসিন ৪৫০মিঃলিঃ সিরাপ উৎপাদন ও বাজারজাত করছে উক্ত সবুজ জিনসিন নামক সিরাপে সিনড্রেনাফিন সাইট্রিয়েট ও ট্রাডালাফিন সাইট্রিয়েট ব্যবহারের অভিযোগ উঠলে অতি সম্প্রতি ঔষধ প্রশাষন সবুজ জিনসিন সহ আর ও ২টি প্রডাক্ট বাতিল করেন। খোজ নিয়ে জানা গেছে প্রডাক্ট বাতিল হলেও মিডফোর্ডের পাইকারী বাজারসহ সারা বাংলাদেশে খোলাবাজারে ঔষধগুলো পাওয়া যাচ্ছে। এব্যাপারে সবুজ ফার্মাসিউটিক্যালস মালিক মো. সবুজের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বগুড়া ওষুধ প্রশাসন আমার নিয়ন্ত্রনে আমার চাচাতো ভাই আওয়ামী লীগের নেতা এখান থেকে কেউই আমার কিছু করতে পারবে না, তিনি আরও বলেন ঢাকায় ওষুধ প্রশাষনের বড় অফিসারদের তিনি মাসুহারা দিয়ে থাকেন ফলে সেখান থেকেওকিছু হবে না বলেও দাবি করেন।

অনির্বান মেডিসিনাল ইন্ডাসট্রীজ (আয়ু) কেরানীগঞ্জ, ঢাকা এর কারখানা আবাসিক ভবনে থাকায় এবং ভেজাল ও নি¤œমানের ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাত করার দায়ে র‌্যাবের ভ্রাম্যমান আদালত বেশ কয়েক বার হানা দেয়। গত বছর র‌্যাবের ভ্রাম্যমান আদালত অনির্বান মেডিসিনাল ইন্ডাস্ট্রীজ (আয়ু) এর কারখানায় নকল ভেজাল বিরোধী এক অভিযান পরিচালনা করে। ভ্রাম্যমান আদালত অনির্বানের কারখানায় গিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশসহ নানা রকম অনিয়ম দেখতে পায়, ফলে উক্ত কোম্পানীকে ২৭,০০,০০০/- (সাতাশ লক্ষ) টাকা জরিমানা করে।

এস এ ল্যাবরোটরীজ (ইউনানী) একই ডিএআর নাম্বার ব্যবহার করে সরবত সেব দুই নামে উৎপাদন ও বাজারজাত করছে যার ট্রেড নাম হিটোন (শরবত শেব) ও আপেল-জি (শরবত শেব), হেপঠো, ম্যাগফেরল, ম্যাগোজিন (শরবত জিনসিন), মিকোরেক্স (শরবত ছদর) নামক ঔষধ সমূহ লেবেল কার্টুনে চূড়ান্ত অনুমোদন ব্যাতিত উৎপাদন ও বাজারজাত করছে বলে অভিযোগ উটেছে। আরো জানা যায় যে কোম্পানীটি লাইসেন্স নবায়ন না করে কোম্পানীর মালিক অন্য কোম্পানীর ওষুধ নিম্নমানের কেমিক্যাল ব্যাহার করে দীর্ঘ দিন ধরে উৎপাদন ও বাজারজাত করছে।

নারায়ণগঞ্জের বিসমিল্লাহ ল্যাবরোটরীজের (ইউনানী) নামক ঔষধ কোম্পানি কতৃপক্ষ গ্লোবিরোন (শরবত ফওলাদ) ২০০ মিলি সিরাপ, আমলা (শরবত আমলা) ৪৫০ মিলি, পুদিনা (আরক পউদিনা) ক্যাপসুল বি- নিশাত ও নিশাত ৪৫০ মিলি, পিউ- বি ( শরবত গাওজবান) ৪৫০ মিলি, তুলশী (কফসিরাপ) ১০০ মিলি, বাসক (কফসিরাপ) ১০০ মিলি, রুচি- বি (হাব্বে হেলেতিন) সিরাপ, এট্রোজিন (জিন্সিং সিরাপ) ১০০ মিলি এবং ক্যাপসুল বি-জিনসিন, বি-জিনসিন নামক ১০০ মিলি সিরাপ একই ডিএয়ার নম্বর ব্যবহার করে দুই নামে যথাক্রমে এট্রাজিন ও বি-জিনসিন নাম ব্যবহার করছে। বর্তমানে বিসমিল্লাহ ল্যাবরেটরীজ (ইউনানী) কাগজে কলমে বন্ধ দেখানো হলেও ঔষধের উৎপাদন বাজারে থেমে নেই।

জুরাইন জেনেসিস ফার্মাসিউটিক্যালস (আয়ু) কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন যাবত ওষুধের নামে বাহারী মোড়কে ভয়ংঙ্কর পাশ্বপ্রতিক্রিয়াযুক্ত ওষুধ বাজারজাত করার অভিযোগ উঠেছে। ওষুধে ডেক্সামেথাসন, সিপ্রোহেপ্টাডিন, থিয়ভিট (গাবাদী পশু মোটা তাজা জাত করণ কেমিকেল) ও ক্যালসিয়াম ক্যার্বনেট ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যৌন উত্তেজক ওষুধ সামগ্রীতে সিলড্রেনাফিন, সাইট্রেট ও ট্রাডালাফিন সাইট্রেট নামক ভায়গ্রার উপাদান ব্যবহার করছে বলে ও ওষুধ ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত একটি সূত্রের দাবি মুনইশ, দশ্মুলারিষ্ট, আমলকী প্লাস রসায়ন, ভারজিটন, জি- যমানী, জিওভিটা, ভিগো ওষুধের মধ্যে পাওয়া গেছে। জ্বরের ওষুধে প্যারাসিটামল, গ্যাস্ট্রিক ও আলসারে ওষুধে এন্টাসিড, রেনিটিডিন, ওমিওপ্রাজল এবং ব্যথা ও ব্যথানাশক ওষুধে ডাইক্লোফেনাক সোডিয়াম বিপি নামক এলোপেথিক ওষুধের কাচামাল ব্যবহারের খবর পাওয়া গেছে। অথচ বাংলাদেশ আয়ুর্বেদিক ফর্মুলারী এবং বাংলাদেশ ইউনানী ফর্মুলারীতে এলোপথিক ওষুধের কাঁচামাল বা কোন প্রকার কেমিকেল ব্যবহারের নিয়ম নেই।

ইউনানী-আয়ুর্বেদিক ওষুধ কোম্পানীর কর্তৃপক্ষ এই সব কেমিকেল এর ব্যবহার প্রতিনিয়ত করেই চলছে। ভাবসাবে মনে হয় রাজধানী জুরাইন এলাকাটা ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের আওতামুক্ত। যেন উক্ত এলাকায় ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কোন নিয়ন্ত্রন নেই। থাকলে দিহান ফার্মাসিউটিক্যালস (আয়ু) এবং জেনেসিস ফার্মাসিউটিক্যালস (আয়ু) জনাস্বাস্থ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া ফেলে এমন সব ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাত করতে পারত না।

অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও মাঠ পার্যায়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা রহস্যজনক নিরবতা পালন করছেন। কর্মকর্তাদের এই অত্যাধিক নিরবতাকে ভিন্ন চোখে দেখছেন সচেতন মহল।

জুরাইনের দিহান ফার্মাসিউটিক্যালস (আয়ু) এর বিরুদ্ধে একই ডিএআর নাম্বার ব্যবহার করে ২ নামে একই ভিটামিন সিরাপ প্রস্তুত ও বাজারজাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে, এছাড়াও উক্ত কোম্পানী এনজয় প্লাস ক্যাপসুল, এনজয় প্লাস সিরপ, রুচিটন সিরাপ, দি-টন ও দি-গোল্ড নামক ট্যাবলেট দীর্ঘদিন যাবত অবৈধ ভাবে বাজারজাত করছে। এই বিষয়ে অভিযোগ এনে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সাবেক মহা পরিচালক এর বরাবর একাধিক লিখিত অভিযোগ জমা হলেও কতিপয় কর্মকর্তার দুর্নীতির কারণে দিহান ফার্মাসিউটিক্যালস (আয়ু) এর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর।

এ সকল বিষয় নিয়ে সংবাদপত্র গুলোতে ধারাবাহিক ভাবে ওষুধ কোম্পানি সর্ম্পকে সত্য ঘটনা তুলে ধরার পর মাঝে মধ্যে ওষুধ প্রশাসন কোম্পানির বিরুদ্ধে আই ওয়াশ করে থাকেন বলে জানা যায়। ফলোশ্রুতিতে কিছু দিন পর থেকে নিম্নমানের ওষুধ তৈরি করতে মহাব্যস্ত হতে দেখা যায় কোম্পানিগুলোকে।

সাধারণ জনগণ এ সমস্ত কোম্পানির বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণসহ কোম্পানি বাতিলের জোর দাবি জানাচ্ছে ওষুধ প্রশাসনের মহাপরিচালক কাছে। (চলবে)

 

গণপূর্তে স্বৈরাচারের দুই কর্মকর্তার দুর্নীতি!

স্টাফ রিপোর্টার:

চলমান রয়েছে ‘রাষ্ট্র’ সংস্কার। বৈষম্যেবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ওই কার্যক্রমের শুরু হয়েছে। মন্ত্রণালয়, দপ্তর, অধিপ্তর ও পরিদপ্তরসহ রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর ও সমর্থিত কর্মকর্তাদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করা হচ্ছে। তবে, গণপূর্ত অধিদপ্তরের চিত্র ভিন্ন। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর ও সমর্থিত প্রকৌশলী এবং অন্য কর্মকর্তরা অধিদপ্তরটির গুরুত্বপূর্ন দায়িত্বে এখনো আছেন বহাল তবিয়তে। বর্তমান প্রধান প্রকৌশলীসহ অতিরিক্ত প্রধান, তত্বাবধায়ক ও নির্বাহী এবং অন্য প্রকৌশলীদের অনেকেই গণপূর্ত অধিদপ্তরে আওয়ামী লীগ সমর্থিত। এসব তথ্য ওই অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছেন।

গণপূর্তে কে এই প্রকৌশলী শহীদুল আলম!:

গণপূর্ত ক্যাডারের ১৭তম ব্যাচের কর্মকর্তা মো. শহিদুল আলম চাকরিজীবনে বেশির ভাগ সময় কাটিয়েছেন লিয়েনে (বিনা বেতনে দীর্ঘমেয়াদি ছুটি) বিভিন্ন দাতা সংস্থায় কাজ করে। তিনি লিয়েন নিয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকে (এডিবি) কর্মরত থাকা সত্ত্বেও অবৈধভাবে সরকারি বেতন নেন বলে অভিযোগ করে এডিবির দুর্নীতি প্রতিরোধ শাখা। অবশ্য পরবর্তীতে তিনি ভুল স্বীকার করে সরকারি অর্থ ফেরত দিয়েছিলেন।

এছাড়াও তার বিরুদ্ধে রয়েছে নানান অভিযোগ। কিন্তু সব অভিযোগ ধামাচাপা দিয়ে তিনি উল্টো পদোন্নতি বাগিয়েছেন। বর্তমানে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সংস্থাপন ও সমন্বয়) এর চলতি দায়িত্বে। এখন নিয়ম লঙ্ঘন করে এবং পদোন্নতির শর্তপূরন ছাড়াই তাকে স্থায়ী ভাবে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী পদে পদোন্নতির জন্য সম্প্রতি সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের (এসএসবি) কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

সংস্লিষ্টরা জানান, এসএসবির পদোন্নতি সংক্রান্ত নীতিমালায় প্রস্তাবিত কর্মকর্তার বিগত ৫ বছরের এসিআর এর সারসংক্ষেপ এবং ফিডার পদে ২ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু চলতি দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ২০১৫ সালের ১৬ জুন থেকে ২০২০ সালের ৮ জুন পর্যন্ত সময়ে লিয়েনে থাকায় ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালের ৯ জুন পর্যন্ত সময়ের এসিআর নেই বলে এসএসবিতে পাঠানো সারসংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে তার এসিআর রয়েছে মাত্র দুই বছরেরও কম সময়ের। তাছাড়া ফিডার পদ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পদে কমপক্ষে দুই বছরের অভিজ্ঞতার নিয়ম থাকলেও যে সময়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে তখন তার এই পদে দুই বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা পূর্ন হয়নি বলে সংস্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
প্রস্তাবে অন্য তিনজন চলতি দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ওম প্রকাশ নন্দী, কাজী ওয়াসিফ আহমেদ এবং কাজী মো. আবু হানিফ এর ৫ বছরের এসিআর রয়েছে এবং তারা তিন জনই ৫ বছরের বেশি সময় ধরে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে স্থায়ী হয়েছেন। আর শহিদুল আলম দেশে ফিরে চাকরিতে যোগ দেওয়ার কিছু দিন পরে ২০২১ সালের ২৩ জুন নিয়ম বহির্ভুত ভাবে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর দায়িত্ব পান বলে অভিযোগ রয়েছে। শহিদুল আলমের তিন বছর আগে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের বাদ দিয়ে শহিদুল আলমকে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী পদে স্থায়ী করার জোর তদবির চলছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, লিয়েন কালীন সময়ে গণপূর্ত থেকেও বেতন ভাতা নিয়েছেন আবার বিদেশী কোম্পানীতে চাকুরী করে সেখান থেকেও বেতন নিয়েছেন। যা সরকারি চাকুরী বিধির পরিপন্থি। বিষয়টি জানাজানি হলে তিনি নিজের অপরাধ স্বীকার করে ২০১৬ সালে লিয়েনকালীন সময়ে নেওয়া বেতন ভাতা ফেরত দিয়েছেন।

জানা গেছে, দীর্ঘ ১৩ বছর পর ২০২১ সালে বিদেশ থেকে ফিরে এসে তিনি গণপূর্তের প্রধান কার্যালয়ে যোগদান করেন এবং প্রধান প্রকৌশলী মো: শামীম আখতারকে ম্যানেজ করে তার ডান হাত বনে যান। তাকে প্রধান কার্যালয়ের অতি: প্রধান প্রকৌশলী (সমন্বয়) পদে পদায়ন করে দেওয়া হয় অসীম ক্ষমতা। গণপূর্তের প্রকৌশলীদের বদলী সমন্বয়ের দায়িত্ব পান তিনি। এরপর তার করা তালিকা মতই প্রকৌশলীদের বদলী করছেন প্রধান প্রকৌশলী মো: শামীম আখতার।

দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও অসাদাচারণের জন্য গণপূর্ত অধিদফতরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শহীদুল আলমকে অপসারনের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছিল গণপূর্ত অধিদফতর ঠিকাদার সমিতি। গত ২২ মে সেগুনবাগিচায় পূর্ত ভবনে ঠিকাদার সমিতির একটি অবস্থান কর্মসূচি থেকে তার বিরুদ্ধে নানান অনিয়মের অভিযোগ তোলা হয়। কর্মসূচি শেষে প্রধান প্রকৌশলী বরাবর একটি স্মারকলিপিও দেওয়া হয় সমিতির পক্ষ থেকে।
এর আগে ঠিকাদার সমিতি নেতারা অভিযোগ করেন, মো. শহিদুল আলম সরকারি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বাধা সৃষ্টি করছে। নানা প্রকল্প থেকে অনিয়ম ও দুর্নীতি করা শহীদুল আলম গণপূর্ত অধিদফতরের উন্নয়ন সহযোগী ঠিকাদারদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে থাকেন। সবগুলো ডিভিশনে নিজস্ব ঠিকাদার নিয়োগ করে টাকা হাতিয়ে নিয়ে থাকেন। এছাড়া মন্ত্রণালয়ের নাম ভাঙ্গিয়ে নানা ধরনের প্রজ্ঞাপন জারি করে থাকেন যার সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই বা মন্ত্রণালয়ের কোন নির্দেশনাও নেই। এমনকি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয় সভায় ঠিকাদার সমিতিকে পাশ কাটিয়ে নিজের পছন্দসই ঠিকাদারদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।

নাছিমের ইশারায় গণপূর্তে এখন বদলি বাণিজ্যের নেতৃত্ব!

গণপূর্ত অধিদপ্তরের চলতি দায়িত্বের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার ব্যক্তিগতভাবে পীর এবং সৎ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত থাকলেও তার এই সততার সুযোগের পুরোটাই কাজে লাগাচ্ছেন গণপূর্ত ঢাকা মেট্রোপলিটান জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. নাছিম খান। সংস্থাপনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীও শহীদুল আলমও স্বচ্ছ মানুষ হিসেবে পরিচিত। কিন্তু নাছিম খান সিন্ডিকেটের সামনে অসহায় এই দুই কর্মকর্তা। গণপূর্তের বদলি বাণিজ্য সিন্ডিকেটের পুরো নেতৃত্ব দিচ্ছে এই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা।

বিসিএস ১৫ ব্যাচের মধ্যে গ্রেডেশন তালিকায় সবচেয়ে নিচে অবস্থান করা মো. নাছিম খান এখন স্বপ্ন দেখছেন চলতি দায়িত্বে থাকা মোহাম্মদ শামীম আখতারকে সরিয়ে নিজেই ওই চেয়ারে বসতে। নিজের সাঙ্গপাঙ্গদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেছেন, সাত নম্বরের শামীম চিফ ইঞ্জিনিয়ারের চলতি দায়িত্বে থাকতে পারেলে ১২ নম্বরে থাকা আমি কেনো থাকতে পারবো না। উপরের কাউকে ডিঙ্গিয়ে তো শামীম রেগুলার হতে পারবে না। আমিও রেগুলার হবো না। সমস্যা কোথায়। তোমরা টাকা দেও। আমি ব্যবস্থা করছি।

পোস্টিং নিয়ে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলীর বদলি ক্ষমতা সিজ করেছিল গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। দীর্ঘদিন পরে তা ফিরিয়ে দেয়ার পর গণপূর্তে নিয়মিত পোস্টিং শুরু হয়েছে। কিন্তু শুরুতেই বাণিজ্য পেতে বসেছেন নাছিম খান। বর্তমানে বাংলাদেশ গণপূর্ত ডিপ্লোমা প্রকৌশল সমিতি বা বাপিডিপ্রকৌস খুব শক্তিশালী সংগঠন ও নেতৃত্ব থাকায় তারা বিভিন্ন পোস্টিংয়ে নিজেদের চয়েজ দিয়ে থাকে। এ নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে একটা ঠান্ডা লড়াই রয়েছে।
খান বর্তমান প্রধান প্রকৌশলীকে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের মধ্যে বিকল্প নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার একটি পরামর্শ দেন। এতে প্রধান প্রকৌশলী ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর (সংস্থাপ ও সমন্বয়) সায় থাকলেও এর নেপথ্যে ব্যবসা ফেদে বসেন নাসিম খান। বাংলাদেশ গণপূর্ত ডিপ্লোমা প্রকৌশল সমিতি বা বাপিডিপ্রকৌস এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর সরকারকে নিয়ে বিকল্প সমিতি একটিভ করার অংশ হিসেবে সম্প্রতি যে অর্ডারগুলো হয়েছে তাতে নাছিম খানের লিস্টগুলোকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

প্রধান প্রকৌশলী বদলির ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার পর ৬৯জন প্রকৌশলীকে বদলি করা হয়েছে। যার মধ্যে ৯০ ভাগ প্রকৌশলী কোন না কোনভাবে টাকা খরচ করতে বাধ্য হয়েছেন। অথচ প্রধান প্রকৌশলী এসব ঘুষের টাকা ধরেন না। পুরোটাই যায় নাছিম খানের পেটে।

উপ-সহকারী প্রকৌশলী সহকারী প্রকৌশলী পদে বদলির জন্য নাসিম খানঢাকা গণপূর্ত মো. সেলিম হোসেন, মো. আবুল কাশেম চৌধুরী, মো. আনোয়ারুল ইসলাম ও মো. সেকান্দার জোবায়েদ আলীর কাছ থেকে। এর মধ্যে মো. সেলিম হোসেনকে ঢাকা গণপূর্ত মেট্রো জোন, মো. আবুল কাশেম চৌধুরীকে শেরেবাংলা নগর গণপূর্ত বিভাগ-৩. মো. আনোয়ারুল ইসলামকে ঢাকা গণপূর্ত মেট্রো জোন ও মো. সেকান্দার জোবায়েদ আলীকে শেরেবাংলা নগর গণপূর্ত বিভাগ-২ এ বদলি করা হয়েছে।

এ নিয়ে বাংলাদেশ গণপূর্ত ডিপ্লোমা প্রকৌশল সমিতি বা বাপিডিপ্রকৌস নেতারা প্রধান প্রকৌশলীর কাছে অভিযোগ করেছেন। তারা হাতে নাতে কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরলেও নির্বিকার প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার। নিজের কনফার্ম না হওয়া এবং ব্যাচমেটদের মধ্যে নাছিম খানকে তার আজ্ঞাবহ মনে হওয়ায় তিনিও এসব পরোক্ষ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন।

কর্মকর্তারা জানান, নাছিম খানের এসব দুর্নীতির বিষয়ে মোহাম্মদ শামীম আখতার ও শহীদুল আলম অবহিত থাকলেও নিজেদের প্রভাব বলয় ধরে রাখার জন্য নিশ্চুপ রয়েছেন। ১৭ ব্যাচের গ্রেডেশনে শহীদুল আলম সবার উপরে থাকায় তার প্রধান প্রকৌশলী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি কোন বিরোধে জড়িয়ে সে সম্ভাবনা নষ্ট করতে চাইছেন না।

একজন উপ-সহকারি প্রকৌশলীর পদোন্নতির প্রস্তাব মন্ত্রনালয়ে পাঠানোর পর পদোন্নতি হওয়ার আগেই তার কর্মস্থলে অন্য একজন কর্মকর্তাকে বদলী করার ঘটনার নায়ক ছিল এই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। গত বছরের ৪ জুলাই কুমিল্লা গনপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারি প্রকৌশলী শেখ মোহাম্মদ হোসেনকে ঢাকার গণপূর্ত ই/এম সার্কেল-২ এর উপ-সহকারি প্রকৌশলী মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ এর স্থলে বদলী করা হয়। বদলী আদেশে বলা হয়েছে পদোন্নতি হওয়া সাপেক্ষে মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ এর পদ শূন্য হওয়ার পর বদলী আদেশটি কার্যকর হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, পদোন্নতির প্রস্তাব পাঠানোর পর তা অনুমোদন হওয়ার আগেই ঐ পদে আরেকজনকে বদলী করার পেছনো মোটা অংকের আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে। তা না হলে ঢাকার বাইরে থেকে কেন হঠাৎ একজনকে বদলী করা হলো যে পদে এখনো পদোন্নতি হয়নি। সে সময়ে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সংস্থাপন ও সমন্বয়) মো. নাছিম খান এবং গণপূর্তের বদলী বানিজ্যের সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেট আরও বেশ কয়েকজন নির্বাহী প্রকৌশলীকে বদলী করেন।
অভিযোগ রয়েছে, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী নাসিম খান নিজে মেট্রোপলিটন জোনে বদলী হওয়ার খরচ তোলার জন্য উপ-সহকারি শেখ মোহাম্মদ হোসেনকে এবং অন্য আরও তিন জন নির্বাহী প্রকৌশলীকে সুবিধাজনক কর্মস্থলে বদলীর ব্যবস্থা করেন। প্রধান প্রকৌশলী একই ব্যাচের এবং ঘনিষ্ট বন্ধু হওয়ায় তিনি এই সুযোগ নিয়েছেন। সে সময়ে নাছিম খান এবিষয়ে বলেছিলেন, বদলীর ক্ষেত্রে কোন অনিয়ম বা আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ সঠিক নয়। পদ শূন্য হওয়ার আগে এধরনের বদলীর রেওয়াজ আগেও রয়েছে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
বিদেশ থেকে যতটুকু স্বর্ণ আমদানি করলে দিতে হবে না ভ্যাট প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎতে যাচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব ফকরুল বাংলাদেশে ইতিহাস গড়ল উইন্ডিজ দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন রাজউক ইমারত পরিদর্শক শামীম রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধে কে জিতবে, তা নিয়ে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নিচেছ ট্রাম্প নাসার চন্দ্র মিশনে স্পেসএক্স জুলাই যোদ্ধা স্বীকৃতি পেতে নতুন করে দেড় হাজারের বেশি আবেদন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিল শুনানি শুরু প্রধান প্রকৌশলীর আস্থাভাজন ইএম ২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদ সম্পদের পাহাড় জানানো যাচ্ছে অভিযোগ, থানায় বসলেই ভিডিওকলে হাজির এসপি