স্বাস্থ্য অধিদফতরের দুর্নীতির দায়ে পরিচালক (প্রশাসন) বদলি, এলো বড় দুর্নীতিবাজ

নিজস্ব প্রতিবেদক॥
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীন ৮৮৯ জন মেডিকেল টেকনোলোজিস্ট ও ১৮০০ মেডিকেল টেকনিশয়ান নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস ও লিখিত পরীক্ষার খাতা পরিবর্তনের মতো দুর্নীতি-জালিয়াতিতে জড়িত থাকার দায়ে অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. শেখ মোহাম্মদ হাসান ইমামকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। তবে তার পরিবর্তে নতুন যাকে পরিচালক (প্রশাসন) করা হয়েছে ডা. মো. শামিউল ইসলাম (ডা. সাদী), ইনি আরো বড় দুর্নীতিবাজ বলে পরিচিত স্বাস্থ্য সেক্টর ছাড়াও বিভিন্ন মহলে।
উল্লেখ্য, দুর্নীতির দায়ে মেডিকেল টেকনোলোজিস্ট ও টেকনিশিয়ান নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করা হয় গত ২০ সেপ্টেম্বর বিকেলে। এ বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি রিপোর্ট প্রদানের পর নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করা হলেও দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেয়া হচ্ছিলো না। এ নিয়ে টিআইবিসহ বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছিলো। দুর্নীতি প্রমাণ হওয়ায় স্বাস্থ্যের টেকনোলোজিস্ট ও টেকনিশিয়ান নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল: তবে দুর্নীতিবাজরা এখনো বহাল-তবিয়তে” শিরোনামে একটি তথ্যবহুল প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। অবশেষে আজ বিকেলে নতুন এই বদলির আদেশ জারি করা হলো।
বস্তুত, এই দুর্নীতিতে জড়িত রয়েছে একটি বড় সিন্ডিকেট। ওই সিন্ডিকেটের প্রধান দুই ব্যক্তি হলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাবেক এপিএস ড. মোহাম্মদ আরিফুর রহমান সেখ এবং পরিচালক (প্রশাসন) ডা. শেখ মোহাম্মদ হাসান ইমাম। ডা. শামিউল ইসলাম সাদীও সিন্ডিকেটে জড়িত আছেন। এছাড়া কর্মচারীদের মধ্যে ফারুক হাসান, আহসান সাইয়েদ এরশাদ, দেলোয়ার হোসেনসহ বেশ কয়েকজন জড়িত।
অথচ শীর্ষ দুর্নীতিবাজ বলে পরিচিত ডা. শামিউল ইসলাম সাদীকেই নতুন পরিচালক (প্রশাসন) হিসেবে পদায়ন করা হলো। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব (পার-২) এর স্বাক্ষরে এই পদায়ন করা হয়। একই প্রজ্ঞাপনে শেখ মোহাম্মদ হাসান ইমামকে করা হয় অধিদফতরের পরিচালক (এমবিডিসি)। ডা. সাদীর নতুন এই নিয়োগের আগে পরিচালক (এমবিডিসি) ও লাইন ডাইরেক্টর টিবি লেপ্রোসি এন্ড এএসপি পদে দায়িত্বপালন করছিলেন। এছাড়া প্রজ্ঞাপনে ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক (ব্লাড ট্রান্সফিউশন) ডা. মো. মাজহারুল হককে করা হয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের হাসপাতাল সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্টর লাইন ডাইরেক্টর এবং হাসপাতাল সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্টর লাইন ডাইরেক্টর ডা. মো. খুরশীদ আলমকে দেয়া হয় অধিদফতরের টিবি-লেপ্রোসি এন্ড এএসপির লাইন ডাইরেক্টর পদে।
জানা গেছে, পরিচালক (প্রশাসন) পদে ডা. সাদীর এ নিয়োগ নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ডা. শামিউল ইসলাম সাদী ইতিপূর্বে মোহাম্মদ নাসিম স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকাকালে পরিচালক (হাসপাতাল) পদের দায়িত্বে ছিলেন। ওই সময় বস্তায় ভরে টাকা নেয়ার ঘটনাসহ অনেক কেলেংকারির জন্ম দেন তিনি। বর্তমানে তিনি গোটা স্বাস্থ্য সেক্টরেই এপিএস আরিফের দুর্নীতির সহযোগীর ভূমিকায় রয়েছেন। কেউ কেউ তাকে এপিএস আরিফের দুর্নীতির উপদেষ্টাও বলে থাকেন। মনে করা হচ্ছে, এপিএস আরিফই ডা. শামিউল ইসলামকে নতুন পরিচালক (প্রশাসন) পদে পদায়নের ব্যবস্থা করেছেন।

 

বঙ্গবন্ধু পরিষদ নেতা গোপাল কৃষ্ণ দেবনাথ হচ্ছেন এলজিইডি’র প্রধান প্রকৌশলী?

স্টাফ রিপোর্টার:

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী মো. আলি আখতার হোসেন একজন আওয়ামীপন্থি কর্মকর্তা ও বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ এলজিইডি শাখার সভাপতি। তার জন্ম তারিখ ১৯৬৫ সালের ২০ অক্টোবর। সেই অনুযায়ী তিনি চলতি মাসের ১৯ অক্টোবর অবসরে যাবেন।

জানা গেছে, মো. আলি আখতার হোসেনের অবসরের পর এলজিইডি’র অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী গোপাল কৃষ্ণ দেবনাথ প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করছেন। কিন্তু গোপাল কৃষ্ণ দেবনাথ একজন কট্টর আওয়ামীপন্থি কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠকর্মী হিসেবে পরিচিত। তিনি বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের এলজিইডি শাখার সহসভাপতি। এ ছাড়া তিনি কানে কম শোনেন। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ অভু্যত্থানের পর তিনি বেশ কয়েকদিন ভয়ে অফিসে আসেননি।

অভিযোগ আছে, তিনি আওয়ামী শাসনামলে শেখ সেলিম ও শেখ হেলালের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এবং লিটন চৌধুরী ও শাহজাহান খানের ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে কাজ করেন। আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর তিনি প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর গোপালগঞ্জ জেলার এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুর অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, তিনি ক্ষমতাচু্যত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও সরাসরি যোগাযোগ রাখতেন। ৫ আগস্ট গণ অভু্যত্থানের আগ পর্যন্ত তিনি প্রায়ই শেখ সেলিম, শেখ হেলাল, লিটন চৌধুরী ও শাহজাহান খানের বাসায় এলজিইডি’র প্রধান প্রকৌশলী মো. আলি আখতার হোসেনকে নিয়ে মিটিং করেছেন। তিনি ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন এবং আন্দোলনের শহীদদের কখনো স্বীকার করেন না। যার কারণে গণ অভু্যত্থানের পর কোনো প্রোগ্রামে ও মিটিংয়ে বিষয়টি এড্রেস না করে সবসময় কথা বলেন। এ বিষয়টি নিয়ে এলজিইডিতে সবাই বিব্রত।

জানা যায়, তিনি অফিসে আওয়ামীপন্থি অফিসারদের নিয়ে একটি গ্রম্নপ তৈরি করেছেন এবং আওয়ামীপন্থি অফিসারদের নিয়ে প্রায়ই গোপন মিটিং করেন। তিনি স্থানীয় সরকার বিভাগে কর্মরত আওয়ামীপন্থি অফিসারদের সঙ্গে গোপন যোগাযোগ রক্ষা করে চলেন। এলজিইডি সংশ্লিষ্ট মহল জানান, গোপাল কৃষ্ণ দেবনাথকে এলজিইডি’র প্রধান প্রকৌশলী করা হলে আওয়ামীপন্থি অফিসারগণ আরও সক্রিয় হবেন। এতে এলজিইডির কর্মকান্ডে বাধাগ্রস্ত হবে, এলজিইডি একটি অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে এতে এলজিইডি’র কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হবে। সংশ্লিষ্ট মহল বলছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম গতিশীল রাখার জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন। তাই এলজিইডি’র কার্যক্রম স্বাভাবিক ও গতিশীল রাখার স্বার্থে আওয়ামী লীগ নেতা ও এলজিইডি’র অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী গোপাল কৃষ্ণ দেবনাথকে এলজিইডি প্রধান প্রকৌশলী পদে পদায়ন করা সমীচীন হবে না বলে তাদের অভিমত।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে কার্গো ভিলেজের অগ্নিকাণ্ডে অত্যন্ত হতাশাজনক : মির্জা ফখরুল রাজনৈতিক দের মাঝে যে অনৈক্য কুমিরের দেখা মিলল রাজশাহীর পদ্মায় সরকার ও সেনাবাহিনী, গণতন্ত্রে উত্তরণ ও ন্যায়বিচার যেন ব্যাহত না হয় আজ থেকে আমরণ অনশন, প্রত্যাখ্যান শিক্ষকদের শিক্ষার্থীরা রোডম্যাপের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন শাকসু নির্বাচনের জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল গণফোরাম অন্যদেরও সই করার আহ্বান কমিশনের সূচক সাড়ে ৩ মাস আগের অবস্থানে লেনদেন ৪ মাসে সর্বনিম্ন আওয়ামীলীগ ফিরলে হাসিনার পা ধরেও মাফ পাবেন না: রাশেদ খান বিমানবন্দর অগ্নিকান্ডে পুড়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম