যাত্রাবাড়ীতে ভূয়া কবিরাজের দৌরাত্ম্য চরমে ! প্রশাসন নিরব কেন?

স্টাফ রিপোর্টার:

প্রশাসনের চোখের অন্তরালে দীর্ঘদিন যাবত উনচল্লিশ প্রকার রোগের চিকিৎসা সহ ঔষধ প্রদান করছে তথা কথিত এবং উচ্চ মহলের পরিচয় প্রদান কারী কথিত ভূয়া ডাক্তার/কবিরাজ/গবেষক। এছাড়া রোগী পরিচয় নিজ বাসায় মেয়েদেরকে দিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ পরিচালনা্র অভিযোগ রয়েছে। যাত্রাবাড়ী থানা থেকে আনুমানিক ২-৩ শত গজ অদুরে ৩১৯/এ দক্ষিণ যাত্রাবাড়ী, ইলিশ কাউন্টার ও মেট্রোপলিটন স্কুল ও ক্যামব্রিয়ান সংলগ্ন,ঢাকা ঠিকানায় “মায়ের দোয়া পূর্ণ” নামে ক্লিনিকের ব্যবসা। সকাল ১০ ঘটিকা হতে রাত ১০ ঘটিকা পর্যন্ত প্রতিনিয়ত রোগী দেখে ভেষজ ঔষধ প্রদান করে আসছেন মোঃ এহিদুল ইসলাম ( গবেষক ) । নিবন্ধন না থাকলেও একটি প্রাইভেট ক্লিনিক বা হাসপাতালের মত রোগীদেরকে ৪ টি আলাদা কক্ষে হাসপাতালের মত বেডে রেখে নিজ তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন এই ব্যাক্তি । সরেজমিনে সংবাদ সংগ্রহে্র জন্য যাওয়ার পর সংবাদকর্মীদের সামনে একটি কাগজ দেখান, যেখানে দেখা যায় ইউনিয়ন পর্যায়ে ট্রেড লাইসেন্স নেওয়া ছিলো, পরিষ্কার ভাবে উল্লেখ আছে যে, ট্রেড লাইসেন্সধারী উক্ত ইউনিয়নের হাটবাজারে এসকল গাছ-গাছড়ার ঔষধ বিক্রি করতে পারবেন, তবে সেইটাও প্রকাশ্য দিবালোকে। কিন্তু উল্লেখ্য ট্রেড লাইসেন্সের মেয়াদ গত ৩০/০৬/২০১৩ ইং তারিখ শেষ হয়ে গেছে। এ বিষয়ে গবেষক পরিচয়দানকারী চিকিৎসক জানান, প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না, ট্রেড লাইসেন্সের প্রয়োজন পড়ে নি তাই ট্রেড লাইসেন্স করিনি। অনুসন্ধানে জানা যায়, কথিত ডাক্তার যেসকল রোগের ওষুধ প্রদান করেন, সেই গাছ দিয়ে বানানো ঔষধের উপর কোন ডিগ্রী বা অনুমতিপত্র নেই। মেয়াদোত্তীর্ণ ট্রেড লাইসেন্স টি ঢাকার কোন সিটি কর্পোরেশনেরও নয় বরং খুলনা বিভাগের বাগেরহাট জেলার মোল্লারহাট উপজেলার অধীনে ০৩নং গাংণী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে করা হয়েছিল, যার লাইসেন্স নং-৫৩, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম- এহিদুল কবিরাজ ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের স্থান- গাংণী বাজার। কিন্তু গত ৩০/০৬/২০১৩ ইং তারিখ শেষ হয়ে যায় মেয়াদ, তাছাড়া ট্রেড লাইসেন্সে নাম এহিদুল শরিফ অথচ বর্তমান সময়ে ভিজিটিং কার্ডে মোঃ এহিদুল ইসলাম ( গবেষক ) কবিরাজ । ইউনিয়ন পরিষদ থেকেও পরবর্তীতে ট্রেড লাইসেন্স টি নবায়ন করেন নি। সংবাদকর্মীরা গোপন সংবাদ পেয়ে, অনুসন্ধানের জন্য তাদের সহকর্মী এক সাংবাদিককে রোগী বানিয়ে কথিত ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে, সাংবাদিক কে বলে্ন, আপনার লিভারে পানি জমছে এবং রক্তে অনেক সমস্যা রয়েছে যেমন এলারজি, যার কারনেই রোগীর রাতে জ্বর আসে। অতঃপর একটি কোটা থেকে এক চামচ পরিমান ঔষধ রোগীর মুখে দিয়ে পানির সহিত খাইয়ে দেন। ঔষধ খাওয়ানোর পর একটি বিছানায় কিছু সময় বিশ্রামের জন্য শুইয়ে দেওয়া হয়। সংবাদকর্মীকে বিশ্রামের জন্য দেওয়া বেডের পাশের বেডে একজন অজ্ঞাত ব্যাক্তিকে শুয়ে কাপতে থাকা অবস্থায় দেখা যায়। বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় এক বালতি পানিতে বরফ মিশিয়ে সেই পানিতে কাপড় ভিজিয়ে তার শরীর মুছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অন্য দিকে ২-৩ জন ব্যাক্তি একাধিক বরফের টুকরো কাপড়ে মুড়িয়ে রোগীর বুকে এবং পিঠে চেপে ধরে রেখেছেন। স্বল্প সময়ের মধ্যে বুকে ও পিঠে বরফ চেপে রাখায় রোগীর শরীরে কাপুনি উঠে যায়। বরফের ঠান্ডা এবং কাপুনি সহ্য না করতে পেরে এক পর্যায়ে রোগী টি চিৎকার শুরু করেন। চিৎকারের মাত্রা বেড়ে গেলে তাকে অন্য বেডে স্থানান্তর করে শুকনো কাপড়ের সাহায্যে শরীর মুছিয়ে লেপ/কম্বল দিয়ে পেচিয়ে রাখা হয়। কৌতুহল বসত একজন সংবাদকর্মী অজ্ঞাত লোকটির বিষয়ে জানতে চাইলে কবিরাজ জানান, উনার তীব্র জ্বর এসেছে তাই ট্রিটমেন্ট চলছে। রোগীর কাপুনি এবং কষ্ট সম্পর্কে জানতে চাইলে এইটাই উক্ত রোগীর প্রধান ট্রিটমেন্ট বলে তিনি জানান।অতঃপর রোগীর বেশে থাকা সাংবাদিক উঠে বসেন এবং নরম সুরে নিজের ট্রিটমেন্ট সম্পর্কে জানতে চাইলে, এক কোটা গাছের ওষুধ ধরিয়ে দিয়ে বলেন, এই ঔষধ ৩ দিন নিয়ম করে সেবন করুন। ভিজিট এবং ঔষধের মূল্য জিজ্ঞেস করলে বলেন, এইটা অনেক পাওয়ারফুল ঔষধ দাম ৬০০ টাকা। সংবাদকর্মীদের মধ্যে একজন বলেন, বর্তমানে আমার কাছে এত টাকা নেই। ৬০০ টাকা না থাকা সত্ত্বে কথিত ডাক্তার/কবিরাজ বলেন, আচ্ছা আপনাদের কাছে আছে কত? সংবাদকর্মী বলেন হয়ত ৪০০ টাকা মত আছে। ডাক্তার বলেন, ঠিক আছে ৪০০ টাকা দেন আর তিনদিন ঔষধ খাওয়ার পরে আবার আসবেন তখন বাকি ২০০ টাকা দিয়ে দিবেন এবং নতুন ওষুধ নিয়ে যাবেন । আমি আপনার থেকে ভিজিট চাই নি, প্রথমবার এসেছেন তাই শুধু মাত্র ঔষধের মূল্য বলেছি। তবে আগামী দিন থেকে সেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ভিজিট দিতে হবে । সাংবাদিকেরা পরবর্তীতে নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করেন এবং অনুসন্ধানে্র স্বার্থে ডাক্তার ও কবিরাজ পরিচয়ে ভেষজ ঔষধ বানানো এবং তা দিয়ে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। বিভিন্ন ভাবে খতিয়ে দেখলে জানা যায়, প্রতিনিয়ত তিনি বিপুল পরিমাণ রোগী দেখছেন। আশেপাশের কক্ষ ঘুরে দেখা যায়, মোঃ এহিদুল ইসলামের গবেষনা এবং ঔষধ প্রস্তুত করার জন্য নেই কোনো ল্যাব কক্ষ এবং ক্যামিষ্ট। প্রতিষ্ঠানে তিনি একাই চিকিৎসক/কবিরাজ , গবেষক, ক্যামিষ্ট ও সেবক-সেবিকা। উপস্থিত থাকা রোগী পরিচয়দানকারী একজন মেয়েকে দেখে জিজ্ঞেস করা হলে মেয়েটি বলেন, গাজীপুর থেকে বাবাকে নিয়ে এসেছেন ডাক্তার দেখাতে, বর্তমান উনার বাবা একটু বাইরে গেছেন। পরবর্তীতে জানা যায়, আসলে মেয়েটির বাবা এখানে নেই এমনকি উনার বাবাকে চিকিৎসা করানোর জন্য এখানে নিয়ে আসে নি। আসলে মেয়েটি এসেছেন কথিত ভুয়া ডাক্তারের মাধ্যমে অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হয়ে অর্থ উপার্জন করতে। কথিত ডাক্তার মেয়েদের কে তার ক্লিনিকে নিয়ে এসে বিভিন্ন খদ্দের জুটিয়ে চালিয়ে যায় অসামাজিক কার্যকলাপ । এলাকাবাসী জানতেন মোঃ এহিদুল ইসলাম ( গবেষক ) একজন ডাক্তার, এইজন্য এইসকল বিষয় নজরে পড়েনি কারো, সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দীর্ঘদিন যাবত ভুয়া চিকিৎসা প্রদান সহ অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে আসছেন তিনি। গবেষনা বাবদ কোনো অনুমতিপত্র না থাকলেও নিজের মত করে বিভিন্ন গাছ ব্যবহার করে বানিয়ে এবং বিক্রি করে চলেছেন ভেষজ ঔষধ। এ বিষয়ে মোঃ এহিদুল ইসলাম আরো জানান, যাত্রাবাড়ীতে প্রায় ২০ বছরের অধিক সময় ধরে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন তিনি। এখন অবদি কোনো রোগীর অভিযোগ নেই যে, আমার ঔষধে কাজ করে নি বা রোগী সুস্থ হয় নি। কিন্তু সংবাদকর্মীদের কাছে একাধিক ভুক্তভোগী জানায়, এহিদুল ইসলামের কাছে থেকে দীর্ঘদিন যাবত চিকিৎসা সেবা নেওয়ার পরেও সুস্থ হতে পারে নি অনেকেই। অথচ মাসের পর মাস ঔষধ পরিবর্তন করে মিষ্টি মধুর কথা বলে এবং এই ঔষুধে অবশ্যই উপকার পাবেন বলে আশ্বস্ত করে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া নামে চালিয়ে যাচ্ছে বাণিজ্য। হিসেব করলে দেখা যায়, প্রতিনিয়ত ঔষধ পরিবর্তন করে ঔষধের মূল্য সহ নিজের ভিজিট ও নিয়ে নেন। মানুষ ঠকিয়ে এবং অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে মাসের পর মাস ভিজিট ও ঔষধ বাবদ হাজার হাজার টাকা আদায় করে বড়লোক বনে হয়েছে চলেছেন অর্থ সম্পদের মালিক। অন্যদিকে তার থেকে চিকিৎসা প্রাপ্ত হয়ে সুস্থ হওয়ার আশায় থাকা মানুষেরা আর্থিক ক্ষতিগ্রস্তের সাথে শারীরিক ভাবেও কষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জানা যায়, ৩৯ পদের চিকিৎসা দেন কথিত কবিরাজ/ডাক্তার/গবেষক, এই ৩৯ পদের চিকিৎসার জন্য উনার কাছে ১০০ প্রকারের অধিক নিজের বানানো ভেষজ পাউডার বা গাছরা ঔষধ রয়েছে । এক পর্যায়ে, সাংবাদিকদেরকে বিভিন্ন উচ্চ মহল ও রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে ভয়-ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করেন মোঃ এহিদুল ইসলাম। উচ্চ স্বরে সাংবাদিকদের বলেন, আমার বড় ভাই সচিব এজন্য আমার কোন কিছু প্রয়োজন হয় না। আমি চাইলে এই মুহূর্তে আপনাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারি। অতঃপর কথিত চিকিৎসক স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের মোবাইল ফোনে কল করে ঘটনাস্থলে আসতে বলেন। তার ফোন পেয়ে ৮-১০ জন ব্যাক্তি ঘটনাস্থলে আসেন এবং সংবাদকর্মীদের বলেন, আমরা অনেক দিন ধরে এই ডাক্তারকে চিনি এবং জানি। মোঃ এহিদুল ইসলাম আসলেই অনেক ভালো চিকিৎসক এবং মানুষ হিসেবেও ভালো। আর প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র আছে কিনা তা সঠিক জানা নেই, তবে এহিদুল ভাই বলেছিলেন তার সকল প্রকার সনদ আছে। যাই হোক আপনারা সংবাদকর্মীরা এসেছেন, চাইলে নিউজ করতে পারেন। কিন্তু বিষয় হচ্ছে আপনারাও আমার পরিচিত, আবার এহিদুল কবিরাজকেও অনেক দিন ধরে চিনি, তিনি ভালো লোক। তাই এইসকল বিষয় নিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করলে অনেক খুশি হবো। একই সময় মোঃ এহিদুল ইসলাম বলে ওঠেন, থাক অনুরোধ করার মত মানুষ আমি নই, আমার ভাই সচিব। সংবাদ প্রকাশ করে কোনো লাভ নেই, তাতে আমার কিছুই হবে না, সমাধানের অনেক রাস্তায় আমার জানা আছে । আর সংবাদ প্রকাশ হলে যদি সমস্যা মনে হয় তো এই স্থান ছেড়ে দিবো। ঢাকা শহরে ভাড়া দিলে বাসার অভাব নেই। এইখানে যেমন সবাইকে ম্যানেজ করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি অন্য স্থানেও করতে পারবো। আপনাদের যা করার করুন, টাকা থাকলে যত বড় সমস্যায় হোক সমাধান আছে আর আমি করতেও পারি। আমি সল্প সময়েই আপনাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবো। কিন্তু কথিত ভুয়া কবিরাজ/ডাক্তার/গবেষক পরিচয়দানকারী মোঃ এহিদুল ইসলাম অবগত ছিলেন না যে, ক্লিনিকে যাওয়ার পূর্বেই সংবাদকর্মীরা উল্লেখ্য ভুয়া ডাক্তারের বিষয়টি যাত্রাবাড়ী থানা ওসি মফিজুল ইসলাম এবং ডিসি ওয়ারী বিভাগ কে ফোন কলের মাধ্যমে অবগত করেন। যাত্রাবাড়ী থানার ওসি এবং ডিসি মহোদয় সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা সরেজমিনে গিয়ে দেখুন, যদি আসলেই ভুয়া ডাক্তার বা অপরাধ করে থাকেন তাহলে, আপনাদের সংবাদ সংগ্রহ শেষে আমাদের সত্যতা জানান আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিব। বিষয়টি মোঃ এহিদুল ইসলাম জানার পর পাশের গোপন কক্ষে যেয়ে মুঠোফোনের মাধ্যমে অজ্ঞাত এক ব্যাক্তির সাথে আলোচনা করে আবার ফিরে আসেন। অতঃপর মোঃ এহিদুল ইসলাম সংবাদকর্মীদের সাথে বিনয়ের সহিত ব্যবহার শুরু করেন। সংবাদকর্মীরা তথ্য সংগ্রহ শেষে ঘটনাস্থল থেকে প্রস্থান কালে মোঃ এহিদুল ইসলাম সংবাদকর্মীদের সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ করে বলেন, আমরা চাইলে বসে সমাধান করতে পারি। এই কথা বলতে বলতে তিনি সংবাদকর্মীদের মধ্যে একজনের সাথে হাত মেলানোর কৌশলে টাকা গুজে দেওয়ার চেষ্টা করেন। সংবাদকর্মীরা টাকা নেওয়ার মাধ্যমে সমাধানের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
উল্লেখ্য মোঃ এহিদুল ইসলাম ( গবেষক ) নিজের ভিজিটিং কার্ডে মেয়াদ উত্তীর্ণ ট্রেড লাইসেন্স নাম্বার সরকারি বৈধ রেজিঃ নং-৫৩ বলে ব্যবহার করে আসছেন। কোনো ডিগ্রী বা অনুমতি না থাকলেও নিজেই পরিচালনা করছেন প্রাইভেট হাসপাতাল, ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান, চিকিৎসা সেবা প্রদান সহ রাতে বিভিন্ন মেয়েদেরকে প্রতিষ্ঠানে রেখে অসামাজিক কার্যকলাপ।
এ বিষয়ে এহিদুল ইসলামের সাথে সংবাদের প্রতিবেদক মুঠোফোনে কল করলে তিনি বলেন, আমার সবই আছে আর আমি কবিরাজ তো। আমার ভাবি সচিব উনি বলেছেন গাংণীর ট্রেড লাইসেন্স আনলেই হবে। আমি সেইটা দিয়েই কবিরাজি করছি। ভাবি কোন মন্ত্রনালয়ের সচিব জিজ্ঞাসা করলে বলেন, আমার বড় ভাবি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর ৬ নং ডাইরেক্টর । তিনি আমাকে বলেছেন আপনার আগের ট্রেড লাইসেন্স থাকলেই আপনি কবিরাজি করতে পারবেন।আমার ভাবি বলেছেন, আপনি তো অনেক ভালো একটা কবিরাজ তাই দেশে থেকে আপনার ঐটা আনতে হবে, আনলেই আপনি কবিরাজি করতে পারবেন। আর যদি বড় কোনো রোগী থাকে সেক্ষেত্রে রোগীর গার্জিয়ান পক্ষ সাথে থেকে চিকিৎসা করিয়ে নিয়ে যায়। ঔষধ প্রস্তুত সম্পর্কে জানতে চাইলে জানান, আমি তো বাজারজাত করি না,শুধু রোগী দেখলে তাদেরকেই ঔষধ দিয়ে থাকি। ভিজিটিং কার্ডে গভ রেজিঃ নং- ৫৩ সম্পর্কে বলেন, এইটা আমার সরকারি লাইসেন্স আর আমার ভাবি এইটা করে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সরকারি ওয়েবসাইট ভিজিট করে দেখা যায় ৬ নং ডিরেক্টর পোস্টে কোনো মহিলা নেই বরং একজন পুরুষ। তাহলে কি একবার বড় ভাই সচিব , বড় ভাবি সচিব , মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ৬ নং ডিরেক্টর , এইসকল পরিচয় দিয়েই বেচে যাচ্ছেন কথিত গবেষক। এইসকল উচ্চ মহলের পরিচয় প্রদানের মাধ্যমেই কি ধরাছোয়ার বাইরে থেকে অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছেন? প্রশ্ন রয়েই যায় যার উত্তর দেওয়ার মত পাওয়া যায় না কাউকে ।
সংবাদকর্মীদের অনুসন্ধানের প্রেক্ষিতে কিছু সাধারন মানুষ উল্লেখ্য ভুয়া ডাক্তার/কবিরাজ/গবেষক/ক্যামিষ্ট মোঃ এহিদুল ইসলামের সকল অবৈধ কার্যক্রম সম্মন্ধে বিস্তারিত অবগত হয়ে বলেন, এহিদুল ইসলাম স্থানীয় বিভিন্ন ব্যাক্তিবর্গকে অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে বিভিন্ন অপকর্ম সহ অসামাজিক কার্যকলাপ পরিচালনা করে চলেছে। তাই আমরা সহজে মুখ খুলে কিছু বলতে বা কোনো প্রকার প্রতিবাদ করতে পারি না,মুখ খুললেই অর্থের বিনিময়ে চুপ থাকা উচ্চ মহল আমাদের ক্ষতি করতে পারে। তবে এইভাবে চললে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হবে এবং উঠতি বয়সী ছেলে-মেয়েরাও তার অসামাজিক কার্যকলাপের সাথে জড়িয়ে পরতে পারে। তাই উল্লেখিত সকল বিষয় বিবেচনা করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের স্বার্থে, যথাযথ কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন স্থানীয় সচেতন মহল ।

চটকদার বিজ্ঞাপনের আড়ালে ছুটি গ্রুপের প্রতারণার ফাঁদ!

বিশেষ প্রতিনিধি॥

চটকদার বিজ্ঞাপনের আড়ালে ছুটি গ্রুপ আবাসন ও রিসোর্ট প্রকল্পের নামে পেতেছে প্রতারণার ফাঁদ। শেয়ার বিক্রি ও সাফ কবলা রেজিস্ট্রেশনের স্বপ্ন দেখিয়ে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে কয়েকশ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ছুটি গ্রুপের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে সুন্দরী নারীদের টোপ হিসেবে ব্যবহার করছে।

অনেক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেছেন, ছুটি গ্রুপের মেগা প্রজেক্ট পাঁচ তারকা মানের ‘ছুটি রিসোর্ট কক্সবাজার’-এর শেয়ারপ্রতি সাড়ে ৬ লাখ টাকা বিক্রি করছে এবং এক রুম বিক্রি করছে বহু বিনিয়োগকারীর কাছে। এতে লাভ তো দূরের কথা, বিনিয়োগের টাকা ফেরত পাওয়াও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। জানা গেছে, ২০২৭ সালের মধ্যে কক্সবাজারে ছুটি রিসোর্ট নির্মাণ শেষ করার কথা বলে সাড়ে ৩ হাজার শেয়ার মার্কেটে ছাড়ে ছুটি গ্রুপ। কিন্তু এখন পর্যন্ত ৩ শতাংশ কাজও শেষ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। অনেকে বিনিয়োগের টাকা ফেরত চাইলেও নানা প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে ছুটি গ্রুপ।

জানা গেছে, সাম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমসহ বেশকিছু মাধ্যমে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে গাজীপুরের পুবাইলে ‘ছুটি অরণ্যবাস’ নামে একটি পাঁচ তারকা হোটেল এবং কক্সবাজারে মেগা প্রজেক্ট ছুটি রিসোর্টের জন্য বিনিয়োগকারী খুঁজছে ছুটি গ্রুপ। এতে সাফ-কবলা দলিলমূলে শেয়ার মালিক হওয়ার সুযোগ এবং হস্তান্তরযোগ্য মালিকানা, ছুটির নিজস্ব রিসোর্টে ফ্রি অবকাশ যাপনের সুযোগ, ছুটি ক্লাব মেম্বারশিপ এ ৫০% থেকে ৭০% পর্যন্ত ডিসকাউন্ট, একবার বিনিয়োগে আজীবন হালাল মুনাফা লাভের সুবর্ণ সুযোগ, সামাজিক পদমর্যাদা বৃদ্ধি, জমিসহ আজীবন মালিকানা, উত্তরাধিকার সূত্রে হস্তান্তরের সুযোগসহ নানা প্রলোভন দেওয়া হলেও গ্রাহকের পকেটকাটা ছাড়া আর কিছুই বুঝে না ছুটি গ্রুপের লোকজন, বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, এভাবেই অভিনব কায়দায় গত ১৩টি বছর ধরে গ্রহকের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে ছুটি গ্রুপ। তাদের মূল টার্গেট থাকে প্রবাসী, কালো টাকার মালিক। এ ছাড়া মধ্যবিত্তদের আকর্ষণ করতে ১ থেকে ৫ লাখ টাকায় সাফ কবলারও ফাঁদ পাতা হয়। সূত্র জানায়, গ্রুপটির এমডি ইঞ্জিনিয়ার মিজানুর রহমানের রাজউক থেকে দুর্নীতির দায়ে চাকরি যায়। এরপর গ্রুপটির অপর দুই এমডি মোস্তফা কামাল ও মাসুদুর রহমান মাসুদ মিলে নিজস্ব সুন্দরী নারী কর্মী থেকে শুরু করে একাধিক নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

এছাড়াও মাদক কারবারির সঙ্গেও জড়িত রয়েছে তারা বলে গোয়েন্দা সূত্রে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই তিন প্রতারকের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরও বেশকিছু শিল্পপ্রতিষ্ঠান থেকে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে বিতারিত কর্মী। এরা মিলে একটি প্রতারক সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। এই সিন্ডিকেটটি বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাতের জন্য নিত্যনতুন প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করছে। দুর্নীতির টাকায় গত ২০১৩ সালে প্রথম গাজীপুরে ছুটি রিসোর্ট ও পূর্বাচলে ছুটি রিসোর্ট নির্মাণ করে লিজ নেওয়া জমিতে।

পরবর্তীতে ওই নির্মিত প্রজেক্টের নাম ব্যবহার করে তারা উত্তরা-১০ নম্বর সেক্টর এবং বসুন্ধরা আবাসিকের জি ব্লকের ২৯ নম্বর রোডের ৮৪০ নম্বর প্লটে আবাসন প্রকল্পের নামে এফএনএফ প্রপারর্টিজ নামে একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান তৈরি করে হাজারো মানুষের কষ্টের টাকা আত্মসাৎ করে তাদের নিঃস্ব করে দেয়। এখন নতুনভাবে ছুটি হারমোনি, ছুটি বে, ছুটি রিসোর্ট কক্সবাজার, সিলেটে সালতানাত টি রিসোর্টের কথা বলে চটকদার বিজ্ঞাপন ব্যবহার করে কোম্পানির সুন্দরী নারী কর্মীদের টোপ দিয়ে মার্কেট থেকে কয়েকশ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সাফ-কবলা রেজিস্ট্রেশনের স্বপ্ন দেখিয়ে তারা বিনিয়োগের প্রলোভন দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে এসব টাকা। প্রকৃত পক্ষে গত ৬-৭ বছরেও এসব প্রজেক্টে কাজ শুরু তো দূরের কথা, একটি ইটও ব্যবহার করা হয়নি। কোনো ক্রেতা এখন পর্যন্ত রেজিস্টেশন বুঝে পায়নি। যদি কোনো ক্রেতা টাকা ফেরত চায় তাহলে তাকে দিনের পর দিন আজ না কাল দিবে বলে প্রতারণা করছে ছুটি গ্রুপ।

জানা গেছে, ছুটির পূর্বাচল, গাজীপুর ছাড়াও কুয়াকাটা এবং কক্সবাজারের মেরিনড্রাইভ সড়কে রয়েছে ছুটির প্রোজেক্ট। কক্সবাজার টেকনাফের এলাকার মেরিন ড্রাইভ সড়কের পুরায় তৈরি হচ্ছে ছুটি রিসোর্ট কক্সবাজার। যেখানে ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিনিয়োগকারীরা পাবেন সাবকবলাসহ মালিকানা বুঝে নেওয়ার সুযোগ। ছুটি রিসোর্ট কক্সবাজার সাড়ে ৩ হাজার শেয়ার মার্কেটে ছাড়ছে, যার প্রতিটি শেয়ারের মূল্য সাড়ে ৬ লাখ টাকা।

বিনিময়ে বিনিয়োগকারীরা কী পাবেÑ এমন প্রশ্নের জবাবে ছুটি রিসোর্টের এক বিক্রয় প্রতিনিধি বলেন, আজীবন জমি ও রিসোর্টের মালিকানা। বিনিয়োগের ওপর বার্ষিক ১৫-২০% মুনাফা। (শেয়ার প্রতি বার্ষিক ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত)। সহজ কিস্তি বা এককালীন ক্রয়ের সুবিধা। সব ‘ছুটি রিসোর্ট’-এ আজীবন ৫০% ছাড়ে থাকার সুযোগ। ভবিষ্যতে শেয়ারের মূল্য কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে। সাফকবলা দলিলে রেজিস্ট্রেশন। এসব স্বপ্ন দেখিয়ে গ্রাহক আকৃষ্ট করলেও পরবর্তীতে লাভ তো দূরের কথা, মূল টাকা পেতেই হয়রানিতে পরতে হয় গ্রাহকদের। ছুটি রিসোর্ট কক্সবাজারের কাজ ২০২৭ সালে শেষ করার কথা থাকলেও দেখা যায়, এখন পর্যন্ত ৩ শতাংশ কাজও শেষ করতে পারেনি। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ছুটি যে মানের রিসোর্ট তৈরির কথা বলে প্রচার চালাচ্ছে তা শেষ করতে কত বছর লাগবে জানে না কেউ।

জানা গেছে, কক্সবাজারে ছুটি গ্রুপ শেয়ার বিক্রির নামে প্রতারণা করছে নিয়মিত। অনেক ভুক্তভোগীর অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানটি সাড়ে ৬ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকায় প্রতিটি শেয়ার বিক্রি করে কক্সবাজারের হোটেলের। পরবর্তীতে বিনিয়োগকারীরা লাভ তো দূরের কথা; বিনিয়োগের টাকাও ফেরত পান না তারা। জমির মালিকদের সঙ্গে জমি বায়না করে কাজ শেষ না করেই হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। পরবর্তীতে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বিরোধ তৈরি হয়েছে জমির মালিকদের।

সূত্র জানায়, কক্সবাজারে সাড়ে ৬ লাখ টাকায় সাফকবলা রেজিস্ট্রেশনের এই প্রতারণাটি স্থানীয়ভাবে ‘টাইম শেয়ারিং’ নামে পরিচিত। অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তারা নামমাত্র মালিকানা দিলেও পুরো বিষয়টিই অবৈধ। এ ক্ষেত্রে বেশির ভাগ বিনিয়োগকারী বছর শেষে মুনাফা পাওয়া তো দূরের কথা, উলটো তাদের আসল টাকা খোয়াতে হচ্ছে। ছুটি গ্রুপ কক্সবাজার, কুয়াকাটাসহ দেশের বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় হোটেল নির্মাণের নামে এই টাইম শেয়ারিং ব্যবসা শুরু করছে। তাদের মূল টার্গেট থাকে প্রবাসী, কালো টাকার মালিক। এ ছাড়া মধ্যবিত্তদের আকর্ষণ করতে ৫ লাখ থেকে সাড়ে ৬ লাখ সাফকবলার এই ফাঁদ পাতা হয়। স্বল্প টাকায় সাফকবলা মালিকানার এই চটকদার বিজ্ঞাপনে নিঃস্ব হয়েছে বহু পরিবার।

প্রতারণার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ছুটি গ্রুপের এই প্রতারণা সম্পর্কে শেয়ারহোল্ডাররা একজন আরেকজনের বিষয়টি কখনোই জানতে পারেন না। এভাবে একটি হোটেলের মালিকানা হিসেবে হাজার হাজার শেয়ার বিক্রি হচ্ছে। যাদের কেউ কাউকে পরস্পর চেনেন না। একই শেয়ার পুনরায় আরেক গ্রুপের কাছে সাফকবলা বলে বিক্রি করা হয়। শেয়ার মালিকদের বছর শেষে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা লাভ দেখানো হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে লোকসান দেখিয়ে ভবিষ্যৎ প্রকল্প এবং মেইনটেন্যান্স হিসেবে আসল টাকা রেখে দিয়ে বছরের পর বছর ঘোরানো হয়।

 

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
বিদেশ থেকে যতটুকু স্বর্ণ আমদানি করলে দিতে হবে না ভ্যাট প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎতে যাচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব ফকরুল বাংলাদেশে ইতিহাস গড়ল উইন্ডিজ দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন রাজউক ইমারত পরিদর্শক শামীম রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধে কে জিতবে, তা নিয়ে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নিচেছ ট্রাম্প নাসার চন্দ্র মিশনে স্পেসএক্স জুলাই যোদ্ধা স্বীকৃতি পেতে নতুন করে দেড় হাজারের বেশি আবেদন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিল শুনানি শুরু প্রধান প্রকৌশলীর আস্থাভাজন ইএম ২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদ সম্পদের পাহাড় জানানো যাচ্ছে অভিযোগ, থানায় বসলেই ভিডিওকলে হাজির এসপি