ঢাকা কাস্টম হাউসে পদে পদে অনিয়ম, আছে সিন্ডিকেট ও দালাল চক্র

হাফসা আক্তার:

ঢাকা কাস্টম হাউসে যাত্রী হয়রানি, নতুন নয়, রয়েছে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ। পদে পদে অনিয়ম দুর্নীতি ও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিভিন্ন প্রবাসী বাংলাদেশি যাত্রীদের হয়রানির অভিযোগ প্রতিনিয়ত বাড়ছেই।

অভিযোগ রয়েছে, আইন ও বিচার শাখার অফিস সহকারী চাইলা প্রু মারমার বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্য ও প্রবাসী বাংলাদেশি যাত্রীদের হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। বিমানবন্দরে ঢাকা কাস্টম কর্তৃক আটককৃত মালামালের নথি আইন ও বিচার শাখায় গেলে, চাইলা প্রু মারমার দালাল চক্র ও সিন্ডিকেটের কাছে সাধারণ যাত্রীরা হয়রানি শিকার হতে হয়। এই অফিসে নথি এলে নথি আটকে মোটা অংকের টাকা দাবি করা হয়। এই অফিস সহকারী চাহিদা অনুযায়ী উৎকোচ না পেলে ফাইল থেকে গায়েব হয়ে যায় নথি। আর প্রতিটি ফাইল ফোটাবের জন্য অফিস সহকারী চাইলাকে ৩০০০ থেকে ৫০০০ টাকা দিতে হয়। এই শাখায় সরকারি নিয়োগকৃত না হয়েও, সরকারি চেয়ার টেবিল ব্যবহারকারী শেফালীকে প্রতিটি ফাইলের জন্য ১৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা দিতে হয়। এই শাখা ঘুষ-দুর্নীতি আঁতুড়ঘর। বিচার শাখায় ঘুষ ছাড়া কোন কাজ হয় না। রয়েছে দালাল সিন্ডিকেট। দালাল দিয়ে কাজ করতে হয়। দালাল ছাড়া কাজ করা অসম্ভব। দালালের মাধ্যমে কাজ করলে বিদ্যুৎ গতিতে কাজ হয়। বিচার শাখায় গড়ে উঠেছে শক্তিশালী দালাল চক্র। ঘুষ দিলে কাজ হয় বিদ্যুৎ গতিতে, আর না দিলে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয় প্রবাসী বাংলাদেশি যাত্রীরা।

অভিযোগ রয়েছে, অফিস সহকারী চাইলা প্রু মারমার এক ডজন দালাল রয়েছে। দালাল ও সিন্ডিকেটের প্রধান মোস্তাফিজ ও রহমান, এদেরকে নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি নিজেই। আর এই দালাল সিন্ডিকেট ছাড়া তিনি কোন কাজই করেন না। আর দালাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। দালাল ছাড়া কাজ করতে চাইলে সেবা প্রার্থীদেরকে মাসকে মাস ঘুরতে হয়। যোগদানের পর থেকেই আইন ও বিচার শাখায় দুর্নীতির রামরাজত্ব গড়ে তুুলেন চাইলা প্রু মারমা।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবাসী সহ যাত্রীর কাছে পাওয়া শুল্কযুক্ত স্বর্ণের বার, স্বর্ণালংকার, শাড়ি, মোবাইল ফোন, থ্রি-পিসসহ বিভিন্ন মালপত্র আটক করেন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। তখন কাস্টম গোডাউনে মালপত্র আটক রেখে ডি, এম (ডিটেনশন ম্যামো) মামলা দিয়ে যাত্রীদের ছেড়ে দেয়াহয়। পরে শুল্ক পরিশোধের মাধ্যমে মালপত্র খালাস করতে বিমানবন্দর কাস্টমসে আসেন যাত্রীরা।

এ সময় মোস্তাফিজ ও রহমান দালাল চক্রের খপ্পরে পড়েন। শুধু আইন ও বিচার শাখায় প্রায় দুই ডজন দালাল তৎপর রয়েছে কাস্টমস অফিস ঘিরে। কিছু কর্মকর্তা ও চাইলা প্রু মারমার যোগসাজশে এ কাজটি করছে দালাল চক্র। শুল্ক পরিশোধ না করায় আটক বিভিন্ন পণ্য খালাস ঘিরে বাণিজ্য করছে এই দালাল চক্র। মালপত্র খালাসের নামে ‘কন্টাক্ট’ করে লাখ লাখ টাকা যাত্রীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে এই চক্রটি। এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নিরীহ প্রবাসী বাংলাদেশী যাত্রীরা। কর্মকর্তাদের হয়রানি এড়াতে প্রবাসীরাও ঝুঁঁকছেন দালালদের দিকে। বিশেষ করে নিয়ম না জানার কারণে স্বর্ণ এনে বিমানবন্দরে বিপদে পড়েন প্রবাসীরা। আর এতেই কপাল খুলেছে কর্মকর্তাদের ও দালাল চক্রের।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ, আমি দেশের বাহিরে ঘুরতে গিয়েছিলাম বাইরে থেকে আশার সময় পরিবারের জন্য ডায়াবেটিস পরীক্ষা করার জন্য একটি মেশিন নিয়ে আসি। ডি, এম (ডিটেনশন ম্যামো) বিচার শাখায় গেলে চাইলা প্রু মারমা বলেন, আপনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ছাড়পত্র নিয়ে আসেন। তারপর ফাইল ফোটার দিবো। আর এখানে ঘোরাঘুরি করে লাভ নাই।

অভিযোগের বিষয়ে, অফিস সহকারী চাইলা প্রু মারমা মুঠোফোনে বলেন, ঘুষ বাণিজ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা কেউ যদি আমার নামে টাকা নিয়ে থাকে তাহলে এটার দায় কি আমার? শেফালীর বিষয় তিনি বলেন, এটা আমার কতৃপক্ষ জানে এটা আমি জানি না। প্রশ্ন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ছাড়পত্র নিয়ে, তিনি বলেন, আমার আর,ও স্যার আমাকে বলে দিয়েছে তাই আমি বলেছি, নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন আসিফ স্যার।

ধোলাইখাল-গাবতলী-মাতুয়াইল-উত্তরায় সংঘর্ষ, আমানসহ আটক অর্ধশতাধিক

স্টাফ রিপোর্টার॥
রাজধানীর চারটি প্রবেশমুখেই বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে পুলিশ। এ সময় পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নির্বিচারে লাঠিচার্জ করে। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। ধোলাইখাল, উত্তরা, মাতুয়াইল এবং গাবতলীতে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ধোলাইখালে পুলিশের বাধার পর বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। একাধিক ভিডিওতে দেখা গেছে, বিএনপির কয়েকজন কর্মী গয়েশ্বর রায়কে বাঁচাতে ঘিরে ধরে আছেন। এসময় তাদের এলোপাতাড়ি পিটুনি শুরু করে। একপর্যায়ে আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যান গয়েশ্বর রায়। মাটিতে পড়ার পরও বিএনপির এই অন্যতম শীর্ষ নেতাকে বেধড়ক পেটাতে থাকে পুলিশ।

পরে তাকে আহত অবস্থায় আটক করা হয়। এসময় ঢাকা বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদকেও আটক করা হয়।
এদিকে চারটি স্পট থেকে বিএনপির অন্তত অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। আহত হয়েছেন অনেকে।

গাবতলীতে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে অ্যাকশনে নেমেছে পুলিশ। অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে গেলে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।

উত্তরায় জড়ো হওয়া নেতাকর্মীদেরকে ধাওয়া দিয়েছে পুলিশ। উত্তরার বিএনএস সেন্টারের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশ টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এসময় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

ওদিকে বেলা ১১টার দিকে যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে সড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। সড়কে অবস্থান নিয়ে নানা স্লোগান দেন তারা। একপর্যায়ে অ্যাকশনে যায় পুলিশ। বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে লঠিচার্জ ও কাদানে গ্যাস ছুড়ে পুলিশ। শুরু হয় দুপক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া।

এরা আগে বেলা ১১টায় ধোলাইখালে ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. নিপুণ রায়ের নেতৃত্বে দলটির সহস্রাধিক নেতাকর্মী অবস্থান কর্মসূচি পালনে অংশ নেন। সড়কে অবস্থান নিয়ে সরকার বিরোধী নানা স্লোগান দেন তারা।

সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশপথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থান নেয়। তাদের পাশাপাশি লাঠি হাতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের অবস্থান নিতে দেখা যায়।

 

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
অনিয়মের অভিযোগ থাকা সত্বেও পদোন্নতি পেতে মরিয়া গণপূর্তের প্রকৌশলী রাকিবুল প্রধান প্রকৌশলীর আস্থাভাজন ইএম ২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদ সম্পদের পাহাড় জানানো যাচ্ছে অভিযোগ, থানায় বসলেই ভিডিওকলে হাজির এসপি প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে কার্গো ভিলেজের অগ্নিকাণ্ডে অত্যন্ত হতাশাজনক : মির্জা ফখরুল রাজনৈতিক দের মাঝে যে অনৈক্য কুমিরের দেখা মিলল রাজশাহীর পদ্মায় সরকার ও সেনাবাহিনী, গণতন্ত্রে উত্তরণ ও ন্যায়বিচার যেন ব্যাহত না হয় আজ থেকে আমরণ অনশন, প্রত্যাখ্যান শিক্ষকদের শিক্ষার্থীরা রোডম্যাপের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন শাকসু নির্বাচনের জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল গণফোরাম অন্যদেরও সই করার আহ্বান কমিশনের