এমপির স্বজন পরিচয় দেয়া ড্রাইভারের কব্জায় রিকশাচালকের জমি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

পেশায় ছিলেন গাড়ির চালক নিজেকে বর্তমান এমপির ঘনিষ্ঠ আত্মীয় পরিচয় দিয়ে গড়ে তুলেছেন নিজের এক বলয়।

২০১৩ সালে গাড়ি চালানো ছেড়ে হয়ে যান বর্তমান বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী নজরুল ইসলাম সাত্তারের ডান হাত। স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন এখন নজর নিলাক্ষিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদের দিকে।

একজন গাড়ি চালক থেকে রাতারাতি নেতা বনে যাওয়া ও ক্ষমতার এক বিশাল বলয় তৈরী করা নিয়ে বিস্ময়ের শেষ নাই স্থানীয় মানুষজন ও নেতাকর্মীদের মাঝে।

বিগত কয়েক বছরে সাত্তার চেয়ারম্যানকে সামনে রেখে গ্রাম্য বিচার-সালিশ করে গড়ে তুলেছেন অঢেল সম্পত্তি।

জমি সংক্রান্ত কোনো বিচার আসলেই জমির কাগজ হাতে নিয়ে শুরু করেন নানা টাল বাহানা। নজরুল ইসলাম ইদুর ক্ষমতার মুখে জমি বেহাত হয়েছে একজন রিকশাচালকের।

ভুক্তভোগী রিকশা চালকের নাম নূর ইসলাম। তিনি জানান, জমির দখল নিয়ে অনেকদিন মামলা চলার পর – মামলা তুলে নেয় প্রতিপক্ষ এরপর জমির কাগজ আসে নজরুল ইসলাম ইদুর হাতে। অভিযোগ আছে এরপরেই নিজের নাম ভুয়া দলিল করে রিক্সা চালক নুরু ইসলামের জমি দখল করে নজরুল ইসলাম ইদু। বিক্রি করে দেন জমির উপরে থাকা বাঁশ ঝাড়।

বিষয়টি নিয়ে নুরু ইসলাম যান ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও ইদুর শেল্টারদাতা তৎকালীন নিলাক্ষিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সাত্তারের কাছে।

নূর ইসলাম জানান, জমির কাগজ দেখতে অস্বীকৃতি জানায় সাত্তার এবং বলে দেন, ‘এই জমি তুমি পাবে না।’

একই বিষয়ে জনাব নূর মোহাম্মদের (স্থানীয় সংসদ সদস্য জামালপুর- ১) দ্বারস্ত হন ভুক্তভোগী। এ সময় জনাব নূর মোহাম্মদ তাকে থানায় অভিযোগ ও আইনের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দেন।

পরে থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে ব্যর্থ হয়ে আদালতে মামলা করেন নুরু ইসলাম। কিন্তু এইখানেও বাধে বিপত্তি। ইদুর প্রভাবে বাঁশ ঝাড় সম্পর্কিত মামলায় হেরে যান তিনি চার জন সাক্ষী থাকা সত্ত্বেও – আপিল করতে পারেননি অর্থাভাবে।

নুরু ইসলামের আইনজীবীর সাথে কথা বলে জানা যায়, দুটি মামলা বিচারাধীন একটি ভুয়া দলিল অন্যটি পুনরায় জমির দখল পাওয়া। যদি রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার না করেন তবে নুরু ইসলামের ন্যায় বিচার পাওয়া সম্ভব।

স্থানীয় আরো একজন ভুক্তভোগী পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বহুদিন আগে জমির দাগ নিয়ে বিবাদে সালিশ করেন সাত্তার। সালিশে সিদ্ধান্ত দেন তিনি নিজে জমি মেপে দেখবেন। এর পর শুরু হয় টাল বাহানা। আজ না কাল করতে করতে কেটে চায় বছর। দখলকারীরা এরইমধ্যে জমিতে ঘর তুলে ফেলেন।

ভুক্তভোগী জানান, এ বিষয়ে বিচার চাইতে গেলে রেগে যায় সাত্তার।

এই ভুক্তভোগী বলেন, ‘সাত্তার সাহেব
আমাকে বলেন, মানুষের জমি পাহারা দেয়া তার কাজ না।

জমির দখল হারানো ভুক্তভোগী এখন বিচারের আশায় ঘুরছেন আদালতে।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, কাজ ও ব্যবসার প্রয়োজনে যারা বকশীগঞ্জ উপজেলার বাইরে থাকেন, তাদের জমিকে লক্ষ্যবস্তু বানান অভিযুক্তরা।

এ বিষয়ে জানতে নজরুল ইসলাম ইদুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এগুলো মিথ্যা। এমন কোনো ঘটনা নাই। আমি দুইটা রায় পেয়েছি।’

স্থানীয় সংসদ সদস্যকে নিজের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে তার ক্ষমতা বলে নিজের বলয় তৈরির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এমপিই হইছে কয়দিন?’

একই বিষয়ে নজরুল ইসলাম সাত্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

সিরাজগঞ্জে একজনের মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন

সিরাজগঞ্জে একজনের মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন

সিরাজগঞ্জ জেলা সংবাদদাতাঃ দীর্ঘ সাড়ে ছয় বছর পর সিরাজগঞ্জ পৌর যুবলীগ নেতা গোলাম মোস্তফা হত্যা মামলায় এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২৩ জুন) দুপুরে সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-৩ এর বিচারক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান আসামিদের উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।

নিহত গোলাম মোস্তফা সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ছিলেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার রানীগ্রাম মহল্লার আব্দুস সামাদের ছেলে তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক (৩৮)। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন একই মহল্লার কাশেম আলীর ছেলে সেলিম রেজা (৪২) ও বাদল সেখ (৩৯), আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে নজরুল ইসলাম (৪০) ও সাইফুল ইসলামের ছেলে সাইদুল ইসলাম (৪৩)।

অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-৩ এর অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) হামিদুল ইসলাম গনমাধ্যমকে রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, মামলার ১৮ জন আসামির মধ্যে একজনকে মৃত্যুদণ্ড ও চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ১৩ জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, নিহত গোলাম মোস্তফার সঙ্গে আসামিদের সামাজিক, ব্যবসায়িক ও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জেরে ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর গোলাম মোস্তফা ফজরের নামাজ শেষে ভোরে প্রাতঃভ্রমণে বের হন। প্রাতঃভ্রমণ শেষে তিনি পৌর শহরের পাশে রানীগ্রাম পশ্চিমপাড়া বাজারের একটি চা স্টলে বসেন। এসময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে রামদা, ছোরা, লোহার রডসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তার ওপর অতর্কিত হামলা করা হয়।

এসময় তারেকুল ইসলাম তারেক রামদা দিয়ে কুপিয়ে জখম ও অন্য আসামিরাও তাকে উপর্যুপরি আঘাত করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শিখা খাতুন বাদী হয়ে ২০ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেন। এতে আরও ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়। মামলার তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ২৮ জুন ১৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ। মামলায় ১৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
জানানো যাচ্ছে অভিযোগ, থানায় বসলেই ভিডিওকলে হাজির এসপি প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে কার্গো ভিলেজের অগ্নিকাণ্ডে অত্যন্ত হতাশাজনক : মির্জা ফখরুল রাজনৈতিক দের মাঝে যে অনৈক্য কুমিরের দেখা মিলল রাজশাহীর পদ্মায় সরকার ও সেনাবাহিনী, গণতন্ত্রে উত্তরণ ও ন্যায়বিচার যেন ব্যাহত না হয় আজ থেকে আমরণ অনশন, প্রত্যাখ্যান শিক্ষকদের শিক্ষার্থীরা রোডম্যাপের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন শাকসু নির্বাচনের জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল গণফোরাম অন্যদেরও সই করার আহ্বান কমিশনের সূচক সাড়ে ৩ মাস আগের অবস্থানে লেনদেন ৪ মাসে সর্বনিম্ন আওয়ামীলীগ ফিরলে হাসিনার পা ধরেও মাফ পাবেন না: রাশেদ খান