শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসক সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত

 

শার্শা উপজেলা প্রতিনিধি :

চিকিৎসক সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত যশোরের শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ২২ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও এ হাসপাতালে রয়েছেন মাত্র ৫জন। যদিও খাতা-কলমে দায়িত্ব পালন করছেন ৭জন। দুইজনের মধ্যে একজন বেনাপোল ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে এবং আরেকজন যশোর জেলা সিভিল সার্জন অফিসে দ্বায়িক্তরত রয়েছেন।
এছাড়াও সার্জারি যন্ত্রপাতির অপ্রতুলতা, অপরিচ্ছন্নতা, ওয়ার্ডে পানি ও বিদ্যুতের সমস্যা, ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত বাথরুমসহ নানা সমস্যা রয়েছে হাসপাতালটিতে। প্রায় দু’কোটি টাকা মুল্যের দুটি অপারেশন থিয়েটার দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে ।
স্থানীয়রা জানান, ১৯৬২ সালে নির্মিত হয় এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। উপজেলার ১১ ইউনিয়ন, একটি পৌরসভা ও বেনাপোল স্থলবন্দরের অন্তত চার লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র সরকারি হাসপাতাল এটি। ২০১৫ সালের ৩ মার্চ ৩১ শয্যার হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও সেবার মান বাড়েনি। দেওয়া হয়নি চাহিদা মতো জনবল। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হাসপাতালে ২২টি মেডিকেল কর্মকর্তার পদ থাকলেও খাতা-কলমে রয়েছেন ৭জন। হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন ৫জন। বাকি ২জন অন্যত্র ডিউটিতে থাকেন। তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী থাকার কথা ৭৭ জন। সেখানে মাত্র ৩৫জন কাজ করছেন। ২২জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী থাকার কথা থাকলেও আছে ১০জন।
হাসপাতালে প্রতিদিন তিন শতাধিক রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। ভর্তি হন ৩৫-৪০ জন। চিকিৎসা দিতে না পারায় বেশিরভাগ রোগীকে উন্নত চিকিৎসার কথা বলে জেলা হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
হাসপাতালের একমাত্র এক্স-রে মেশিনটি মাঝে মধ্যে ঠিক হলেও ফিল্ম থাকে না। দুটি অপারেশন থিয়েটার থাকলেও চিকিৎসকের অভাবে অব্যবহৃত পড়ে থাকে বছরের পর বছর। প্যাথলজি বিভাগ থাকার পরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য রোগীদের বাইরের ক্লিনিকে পাঠানো হয়।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার লক্ষণপুর গ্রামের জাহানারা খাতুন জানান, জরুরি বিভাগ থেকে ডাক্তার রোগের কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বাইরে থেকে করিয়ে আনতে বলেন। আমরা গরীব মানুষ। টাকা দিয়ে বাইরে থেকে টেস্ট করানোর অবস্থা নেই। হাসপাতালের যন্ত্রপাতি ও ডাক্তার থাকলে আমাদের খুবই উপকার হতো। অসুস্থ মাকে নিয়ে হাসপাতালে আসা ছকিনা খাতুন বলেন, সকাল ৮টার দিকে হাসপাতালে এসেছি। সাড়ে ১১টা বাজলো। এখনও আমার রোগী দেখলো না। সেবা নিতে এসে আমরা সেবা পাচ্ছি না।
উপজেলার সামলাগাছি গ্রামের মফিজুর রহমান বলেন, পেটের সমস্যা নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই। কিন্তু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় মেডিকেল অফিসার ব্যবস্থাপত্র দিয়েছেন। কিন্তু ওষুধ খেয়ে অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি।
বেনাপোলের সাহিদুল ইসলাম জানান, তিনি পায়ের ক্ষত নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে যান। সার্জারি বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে যেতে হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মাহফুজা খাতুন জানান, হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল বাড়ানো হয়নি। হাসপাতালে চিকিৎসক, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির জনবল সংকট রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে শূন্য পদে জনবল পূরণ হলে চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্ভব। #

ঝিনাইদহের একটি রাস্তা এখন ৭ গ্রামের মানুষের ভোগান্তির কান্না

 

ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি:

ঝিনাইদহ জেলার হরিনাকুন্ডু উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর বাওর (বন্ধ) জল মহলের দক্ষিণ পাশ দিয়ে রাস্তাটি কেটে দেয়ার ফলে সাত গ্রামের মানুষের দুঃখ কষ্ট এবং চরম ভোগান্তির কান্না হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে যে একসময়ের নবগঙ্গা নদীর প্রবাহমান স্রোতধারা চাঁদপুর গ্রামের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ইউ টার্ন হয়ে পুনরায় সোজা হয়ে প্রভাত প্রবাহিত হয়ে যায়। নদীর এই ইউট্রেন বাকের ফলে এই অঞ্চলের সাত গ্রামের মানুষের ঝিনাইদহ শহরে যাতায়াত কঠিন হয়ে পড়ে। মানুষের এই জনদুর্ভোগের কথা সরকার বিবেচনা করে নদীর প্রবাহমান স্রোতধারার উপর একটি রাস্তা নির্মাণ করে এবং জন মানুষের কয়েক বিঘা জমি অধিগ্রহণ করে ১৯৭৯ সালে নদীর স্রোতধারা সোজা করে দেয়।

এই রাস্তা নির্মাণের ফলে চাঁদপুর ইউনিয়ন ও দৌলতপুর ইউনিয়নের হামেরহাটি, যাদবপুর খালকুলা ,দারিয়াপুর ,পৈলানপুর ও রূপদাহ এই ৭ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ ঝিনাইদহ শহরে পল্লী বিদ্যুৎ হাসপাতাল এবং আদালত সহ বিভিন্ন স্থানে অতি সহজে যাতায়াত করত। শুধু তাই নয়, এই গ্রামগুলোর মানুষের শত বিঘা জমি চাষাবাদ করতো। এই গ্রামগুলিতে রয়েছে ৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২টা কমিউনিটি ক্লিনিক।

এই বছরের শুরুতে ফেব্রুয়ারি মাসের দিকে এই জলমহলের দক্ষিণ পাশে রাস্তাটি ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক ভেকু দিয়ে অপসারণ করে দেয়। জেলা প্রশাসকের এই রাস্তাটি অপসারণ করে দেয়ার ফলে এই অঞ্চলের মানুষের চরম ভোগান্তির কান্না হয়ে দাঁড়ায়। ঝিনাইদহ জেলা শহরে যেতে হলে এখন তাদের আরো ৫ কিলোমিটার রাস্তা অধিক পাড়ি দিতে হচ্ছে। যেখানে তারা ঝিনাইদাহ শহরে ৪ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিলেই পৌঁছাতে পারতো এখন তাদের ঝিনাইদহ শহরে যেতে হচ্ছে ৯ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিয়ে। শুধু তাই নয়, এই অঞ্চলের মানুষের প্রায় শতাধিক বিঘা জমি চাষ করতে আসতে হচ্ছে ১২/১৩ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে। এই রাস্তা নির্মাণের ফলে একটি জলমহল সৃষ্টি হয়েছিল যাহা থেকে দেশের রাজস্ব খাতে প্রতিবছর ৮ থেকে ৯ লক্ষ টাকা জমা হতো। জল মহলে প্রতিবছর জেলেরা প্রচুর মাছ উৎপাদন করত যাহা দেশের পুষ্টির চাহিদা পূরণে ব্যাপক অবদান রাখতো। এই অঞ্চলের প্রায় ৫০ টি পরিবারের অর্থ উপার্জনের স্থান হয়ে উঠেছিল এই জলমহলটি। এই রাস্তায় জনমানুষের চলাচলের সুবিধার্থে ১৮-১৯ অর্থবছরে ১৪ লক্ষ টাকা ব্যয় করে একটি সেতু নির্মাণ করে দেন। যাহা এখন হাস্যরসের বস্তুতে পরিণত হয়েছে। এই রাস্তাটি অপসারনের ফলে এখন ৭ গ্রামের ২০ হাজার মানুষের ভোগান্তির কান্না হয়ে উঠেছে।

বাওড়পাড়ের এই রাস্তা দিয়ে ওপারে চাষ করেন চাঁদপুর গ্রামের নজির বিশ্বাস, শাহাদত, ফজলু, হায়দার, জাহিদ, রেজাউল, জমির বালিথা, সরোয়ার সহ অনেকে শুধু চাঁদপুর গ্রাম নয় হামেরহাটি গ্রামের বজলু নান্নু পিন্টু ও মকবুল বিশ্বাস এবং পৈলানপুর গ্রামের ওমর আলী সহ ৭/৮ জন এবং রুপদা গ্রামের বাহারসহ ৫-৬ জন কৃষক চাষাবাদ করেন।

এই গ্রামগুলোর কৃষকরা জানায় আমাদের এখন ওই জমিগুলো চাষ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে এই জমিগুলো এখন আমাদের হয় বিক্রি করে ফেলতে হবে নইলে ফেরে রাখতে হবে।

এই প্রসঙ্গে চাঁদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল আহমেদ দাবি করেন যে এই রাস্তাটি পুনঃনির্মাণ অতি জরুরী। যার মাধ্যমে আমার ইউনিয়নের ১০ হাজার মানুষ অতি সহজে ঝিনাইদহ যেতে পারবে এবং এই বাওড়ে মাছ উৎপাদন হলে দেশের পুষ্টি চাহিদা পূরণে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। এই রাস্তাটি কাটার ফলে জনগণের ব্যাপক অসুবিধা। জেলা প্রশাসক অপরিকল্পিতভাবে কিছু মানুষের উস্কানিতে এই রাস্তাটি কেটে দিয়েছেন। যাহা এখন জনসাধারণের ব্যাপক জনদুর্ভোগ এর কারণ হয়ে উঠেছে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে কার্গো ভিলেজের অগ্নিকাণ্ডে অত্যন্ত হতাশাজনক : মির্জা ফখরুল রাজনৈতিক দের মাঝে যে অনৈক্য কুমিরের দেখা মিলল রাজশাহীর পদ্মায় সরকার ও সেনাবাহিনী, গণতন্ত্রে উত্তরণ ও ন্যায়বিচার যেন ব্যাহত না হয় আজ থেকে আমরণ অনশন, প্রত্যাখ্যান শিক্ষকদের শিক্ষার্থীরা রোডম্যাপের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন শাকসু নির্বাচনের জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল গণফোরাম অন্যদেরও সই করার আহ্বান কমিশনের সূচক সাড়ে ৩ মাস আগের অবস্থানে লেনদেন ৪ মাসে সর্বনিম্ন আওয়ামীলীগ ফিরলে হাসিনার পা ধরেও মাফ পাবেন না: রাশেদ খান বিমানবন্দর অগ্নিকান্ডে পুড়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম