স্টাফ রিপোর্টার:
মুজিব কিল্লা প্রকল্পের এপিডি আবদুল্লাহেল কাফি সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ প্রকল্পে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ফ্যাসিষ্ট হাসিনার মন্ত্রী মায়া চৌধুরী ও বিপুল পরিমান নগদ টাকাসহ গ্রেফতার হওয়া সিনিয়র সচিব শাহ কামালের অনৈতিক ক্ষমতা অপব্যবহার করে তার ২য় স্ত্রী কাসফিয়া তামান্নার নামে মেসার্স কাসিবা কনস্ট্রাকন নামে লাইসেন্স তৈরী করে সাইক্লোন শেল্টার প্রকল্পের বিপুল পরিমাণ কাজ হাতিয়ে নেন। সরকারী চাকুরীজীবি হলেও চাকুরী বিধি লঙ্ঘন করে নিজ দপ্তরে নিজের সুপারভিশনে স্ত্রী কাসফিয়া তামান্নার মালিকানাধীন মেসার্স কাসিবা কন্সেন্ট্রেশন নামে লাইসেন্স খুলে সেই প্রতিষ্ঠানের অনুকুলে ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে কার্যাদেশ নিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ লোপাট করেন। ফ্যাসিস্ট সরকারের মন্ত্রী এনামেরও ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিতি ছিল কাফির।
এ বিষয়ে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ও চেয়ারম্যান, দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দেন আবদুল লতিফ সরকার।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ফ্যসিস্ট আওয়ামী সরকারের মন্ত্রীদের আস্থাভাজন কাফি তৎকালীন প্রকল্প পরিচালক আবদুস সালাম সরকারকে বাধ্য করে কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলায় কালামারছড়া উচ্চ বিদ্যালয় বহুমুখী ঘুর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে নির্মান প্রকল্প ও কয়রা উপজেলার অন্য ০১টি কাজ তার স্ত্রী কাসফিয়া তামান্নার মালিকানাধীন কাসিবা কন্সেন্ট্রেশন এর নামে নিয়ে তদারকি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেন। এছাড়া নামে বেনামে বিপুল সংখ্যক প্রকল্পের কাজ হাতিয়ে নেন তিনি।
কাফির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠায় এবং তা প্রমানিত হওয়া তাকে ২০২২ সালে কাফিকে মুজিব কিল্লা প্রকল্প হতে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় পদায়ন করা হয়। এবিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় ১৭/০২/২০২২ তারিখে নিউজ পরিবেশন করা হয়।
কাফি মুজিব কিল্লা প্রকল্পে আবার বিপুল পরিমাণ টাকা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ কে দিয়ে ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণা একদিন আগে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে অর্ডার করান যেন শিডিউল ঘোষণার কারণে তার অর্ডার বাতিল না হয়। এ পদায়নে কাফিকে সাহায্য করেন সচিব কামরুল হাসান এর ছোট ভাই এনজিও কর্মকর্তা জনাব মুরাদ হাসান ও পতিত সরকারের মন্ত্রী মুহিবের ঘনিষ্ঠ জন হিসেবে পরিচিত টিআর কাবিখা বিশেষ বরাদ্দ বানিজ্যের হোতা অতিরিক্ত সচিব জনাব কেএম আবদুল ওয়াদুদ৷ তৎকালীন প্রকল্প পরিচালক জনাব মোঃ জানে আলম কাফিকে মুজিব কিল্লা প্রকল্পে যোগদানে অপারগতা প্রকাশ করলেও পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষের চাপের মুখে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হন।
বর্তমানে মুজিব কিল্লা প্রকল্পের দরপত্র মুল্যায়নে পিডিকে ইজিপি প্রক্রিয়ায় মুল্যায়নে সহায়তা করেন কাফি। টেন্ডারে সর্বনিম্ন দরদাতা হওয়া ঠিকাদারদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করেন তিনি। টেন্ডার সিকুইরিটি মেয়াদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে যাদের সাথে আর্থিক লেনদেনে সমঝোতা না হয় তাদেরকে ২/১ দিন আগে সিকুইরিটি মেয়াদ বৃদ্ধির রিকুয়েষ্ট পাঠানো হয়। স্বল্প সময়ে ঠিকাদার চাইলেও মেয়াদ বৃদ্ধির কাজটি সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হন। অথচ ইজিপি প্রক্রিয়ায় ন্যুনতম ১০ দিন মেয়াদ থাকা অবস্থায় মেয়াদ বৃদ্ধির রিকুয়েষ্ট পাঠানোর বিধান রয়েছে।
এবিষয়ে প্রকল্প পরিচালক ও মহাপরিচালক মহোদয় বরাবর বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।
পুনরায় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কাফির পদায়নে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রশাসনে সৎ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত প্রকল্প পরিচালক জনাব মোঃ জানে আলম প্রকল্প ছেড়ে বদলী হতে বাধ্য হন।
তিনি দুর্যোগ অফিসে চাকুরী করেই নিজের ভাগ্য পাল্টিয়ে ফেলেন। বর্তমানে কাফি তাঁর নিজ জেলা শহরে একটি ১টি বহুতল ভবন নির্মাণ করেন যার ব্যায় ০৩ কোটি টাকার মতো। উত্তরা মডেল টাউনের ১২ নং সেক্টরে ১৭ নং রেডে বাড়ী নং-৩৫ এ নিজ নামে ক্রয়কৃত একটি আলিশান ফ্ল্যাটে স্বস্ত্রীক জীবন যাপন করেন। যেটি ২.০০ কোটি টাকায় তিনি ক্রয় করেন। তার মেয়ের স্কুলে যাতায়াতের জন্য রয়েছে একটি নোয়া গাড়ি! যা ৩০ লক্ষ টাকায় ক্রয় করেন। মোহাম্মদী হাউজিং সোসাইটিতে একটি নয় তলা ভবনে ০৩টি ফ্ল্যাট রয়েছে। বসিলা রেব ক্যাম্পের পিছনে ১০ তলা ভবনে ০২টি ফ্লাট রয়েছে। বগুড়ার গাবতলী উপজেলার মহেশপুর ইউনিয়নে এলাকায় একটি দুগ্ধ খামার ও বেশ কয়েকটি ফিশারী ফার্ম গড়ে তোলেন।
চাকুরীকালে জনাব কাফি ও তাঁর স্ত্রীর নামে সঞ্চয়পত্রসহ ব্যাপক ব্যাংক ব্যালেন্স রয়েছে মর্মে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়।
মুজিব কিল্লা প্রকল্পে নিজের একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করার জন্য আউট সোর্সিং নিয়োগকৃত ৫০ জনের মধ্যে ২২ জনকে নিয়োগ দেন একাই কাফি। এর মধ্যে তার ছোট ভগ্নিপতির ভাগ্নে রাউফন আজাদকে উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে, তার মামাতো ভাই জনাব মোঃ আতিকুর রহমানকে উপ-সহকারী প্রকৌশলী , বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট তার ক্লাসমেট জনাব মোঃ টিপু সুলতানকে নোয়াখালী জেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী, কাফির আরেক ক্লাসমেট ও জনাব মোঃ রবিউল ইসলামকে ঝালকাঠি জেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী , অন্য সহকারী প্রকৌশলী বাকী বিল্লার শ্যালক মোঃ সাজ্জাদ নূরকে জামালপুর জেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী, কাফির ২য় স্ত্রী কাসফিয়া তামান্নার বান্ধবী জনাব আতিয়া আক্তারকে ডেন্টাল টেকনিশিয়ান হওয়া স্বত্তেও একচ্ছত্র আধিপত্য খাটিয়ে অফিস সহকারী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে গুরুতর অভিযোগের ভিত্তিতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলেও নিজ প্রকল্পে ঠিকাদরীর হোতা কাফি এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ মাসুদ || বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ২১/১ নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০ || মোবাইল : ০১৫১১৯৬৩২৯৪,০১৬১১৯৬৩২৯৪ || ই- মেইল: dailysobujbangladesh@gmail.com || ওয়েব : www.dailysobujbangladesh.com
Copyright © 2025 দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ. All rights reserved.