ত্রিভুজ প্রেমের বলি জহিরুল রোমহর্ষক বর্ণনা খুনির

স্টাফ রিপোর্টার:

যশোরের মনিরামপুরের গোবিন্দপুর গ্রামে ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ত্রিভুজ প্রেমের সম্পর্কের বিরোধের জেরে জহিরুলকে খুন করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একইসঙ্গে হত্যায় ব্যবহৃত কুড়াল ও একটি মোটরসাইকেলও উদ্ধার করা হয়।

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মনিরামপুর উপজেলার শ্যামনগর গ্রামের হাবিবুর মোল্লার ছেলে শফিকুল ইসলাম, একই গ্রামের মফিজুর রহমানের ছেলে মামুন হোসেন ও জলির মোড়লের স্ত্রী মর্জিনা বেগম।

 

পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার শফিকুল জানান, মনিরামপুরের কোনাকোলা বাজারে জহিরুল ইসলামের টিউবওয়েলের ব্যবসা আছে। তিনি শ্যামনগর গ্রামের জলিল মোড়লের স্ত্রী মর্জিনা বেগমের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। আর আগে থেকেই মর্জিনা বেগম পরকীয়া চালিয়ে আসছিলেন শফিকুল ইসলাম নামে আরেক ব্যবসায়ীর সঙ্গে। জহিরুলের সঙ্গে পরকীয়ার বিষয়টি সম্প্রতি  শফিকুল জানতে পারলে মর্জিনা বেগমের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা ও দূরত্ব তৈরি হয়।

 

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শফিকুল ইসলাম প্রতিশোধ নিতে জহিরুলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১০ ডিসেম্বর রাতে সহযোগী মামুনকে নিয়ে শফিকুল ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকেন। তারা কোনাকোলা বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে জহিরুলের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে ধারালো কুড়ালের আঘাতে হত্যা করে মরদেহ ও মোটরসাইকেল রাস্তার পাশে ফেলে রাখে। পরদিন ১১ ডিসেম্বর সকালে মনিরামপুর উপজেলার নেহালপুরগামী বাটবিলা পাকারাস্তা বিলের পাশে উদ্ধার হয় জহিরুল ইসলামের মরদেহ। এ ঘটনায় কোনো আসামির নাম উল্লেখ ছাড়ায় নিহতের স্ত্রী সাইফুর নাহার মনিরামপুর থানায় মামলা করেন।

 

পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়, হত্যার ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় জেলা গোয়েন্দা শাখা ও থানা পুলিশ যৌথভাবে তদন্তে নামে। তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অপরাধীদের শনাক্ত করা হয়।

 

সবা:স:জু- ৩৬২/২৪

হিন্দুপাড়ায় হামলার ঘটনায় সেলিমের রিমান্ড শুনানী আগামীকাল

হিন্দুপাড়ায় হামলার ঘটনায় সেলিমের রিমান্ড শুনানী আগামীকাল

আলাউদ্দিন কবির, রংপুর প্রতিনিধিঃ

রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়নের আলদাদপুর বালাপাড়া গ্রামের হিন্দু পাড়ায় হামলার ঘটনায় জড়িত যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার সাংবাদিক সেলিমের রিমান্ড শুনানী আগামীকাল সোমবার অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল রোববার দুপুরে তাকে গংগাচড়া আমলী আদালতে পাঠালে সিনিয়র জুডিশিয়াল-১ আদালতের বিচারক কৃষ্ণ কমল রায় আগামীকাল সোমবার উম্মুক্ত আদালতে শুনানীর দিন ধার্য্য করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে কোর্ট ইন্সপেক্টর আমিনুল ইসলাম জানান, আগামীকাল সোমবার পুলিশের পক্ষ থেকে ওই আসামির রিমাণ্ড আবেদন করা হবে। তাকে কঠোর নিরাপত্তার মাধ্যমে জেলখানায় পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

 

গ্রেফতার হওয়া হাবিবুর রহমান সেলিম তার ফেসবুক পেজে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জনগণকে সরাসরি উস্কানি দিয়ে উত্তেজিত করেছে বলে তথ্য প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে ওই সাংবাদিককে রংপুর সদরের হরিদেবপুর ইউনিয়নের গোকুলপুর চওড়াপাড়ায় নিজ বাড়ি থেকে আটক করে গংগাচড়া থানায় সোপর্দ করে সেনাবাহিনী। পরে তাঁকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগকে কেন্দ্র করে রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়নের আলদাদপুর বালাপাড়া গ্রামের হিন্দু পাড়ায় অজ্ঞাত লোকজন ভাঙচুর, লুটপাট ও হামলা চালায়।

 

ওই হামলায় অন্তত ১৫টি বসতঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের শিকার হয়েছিল। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে পুলিশের এক কনস্টেবল গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় ২৯ জুলাই রবীন্দ্রনাথ রায় (৫৫) বাদী হয়ে গংগাচড়া মডেল থানায় ১ হাজার থেকে ১২শ’ অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি দণ্ডবিধির ১৪৯/ ৪৪৭/ ৪৪৮/ ৩৩২/ ৩৩৩/ ৩৫৩/ ৩৭৯ /৩৮০/ ৪২৭/ ৩৪ ধারায় দায়ের করা হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া হাবিবুর রহমান সেলিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে তার ফেসবুক পেজে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জনগণকে সরাসরি উস্কানি দিয়ে উত্তেজিত করেছিল।

 

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত গ্রেফতার সেলিম সাংবাদিকতার সাইনবোর্ড লাগিয়ে ফ্যাসিষ্ট আওয়ামীলীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী ছিল। আলদাদপুরের হিন্দু পল্লীতে হামলার ঘটনায় সে জড়িত ছিল এবং হামলার জন্য জনগণতে উস্কে দিয়েছিল বলে জানা গেছে। যাতে করে বর্তমান সরকার বেকায়দায় পড়ে যায়। অন্যদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাবিবুর রহমান সেলিম বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রংপুর সদর উপজেলার সাবেক সভাপতি। তারাগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের সাবেক সাধারন সম্পাদক। সাবেক রংপুর জেলা আওয়ামীলীগ সদস্য। বর্তমান আওয়ামীলীগ সদর উপজেলা শাখার কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন।

 

২০২৪ সালের ১৯ জুলাই রংপুর সিটি বাজার এলাকায় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ক্যাডাররা রামদা, ছুরি ও পিস্তল নিয়ে ছাত্র জনতার উপর হামলা চালিয়েছিল। এ সময় নিহত হয়েছিল সাজ্জাদ হোসেন, মুসলিম উদ্দিন মিলন, আব্দুল্লাহ আল তাহির, মেরাজুল ইসলাম মেরাজ। কথিত সাংবাদিক সেলিমের নেতৃত্বে সেইদিন পাগলাপীর থেকে শতাধিক ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসী সেই হামলায় অংশ নিয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০২৪ সালের ৫ আগষ্টের আগে কোতয়ালী সদর থানায় নিরপরাধ ও নির্দলীয় ছাত্র জনতার নামের তালিকা পাঠিয়ে মামলার ভয় দেখিয়ে হয়রানি ও অর্থ আদায়। চাঁদাবাজি ইত্যাদি অভিযোগ রয়েছে। যা পুলিশ তদন্ত করছে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম