এবার শপিং কমপ্লেক্সের স্ক্রিনে ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’

স্টাফ রিপোর্টারঃ

এবার শেরপুরের এক শপিং কমপ্লেক্সের ডিজিটাল সাইনবোর্ডে ‌‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’ লেখা ভেসে উঠেছে। এ ঘটনায় শপিং কমপ্লেক্সের মালিক ও কর্মচারীসহ দুজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন স্থানীয়রা।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

আটককৃতরা হলেন শপিং কমপ্লেক্সের মালিক সদর উপজেলার রৌহা ইউনিয়নের আবদুল মালেকের ছেলে রাজু মিয়া (৩৯) ও কর্মচারী একই এলাকার সাইফুল ইসলামের ছেলে কাউসার আহমেদ (১৯)।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে শেরপুর পৌর শহরের রঘুনাথ বাজার রোডে রাজ ক্রোকারিজের ডিজিটাল সাইনবোর্ডে ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’ লেখা দেখা যায়। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং শেরপুর পৌর ছাত্রদলের নেতারা ঘটনাস্থলে আসেন। নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের স্লোগান প্রদর্শিত হওয়ায় স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে প্রতিষ্ঠানটির মালিক ও একজন কর্মচারীকে আটক করে।

শেরপুর পৌর ছাত্রদলের সদস্যসচিব খালিকুজ্জামান সিদ্দিকী আসিফ বলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ প্রকাশ্যে বিচরণ করতে ভয় পায়। এ জন্য তারা আত্মগোপনে থেকে বিভিন্ন ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করছে। তারই অংশ হিসেবে গোপনে আঁতাত করে এ কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এভাবে কাপুরুষের মতো রাজনীতি হয় না। রাজনীতি করতে হলে মাঠে আসতে হবে। আমরা শেরপুর পৌর ছাত্রদল নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠনকে প্রতিহত করতে প্রস্তুত।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শেরপুর জেলা কমিটির সংগঠক আরাফাত রহমান বলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠনের স্লোগান ডিজিটাল স্ক্রিনে চালানোর ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এটা অবশ্যই একটি পরিকল্পিত ঘটনা। ফ্যাসিবাদী যে চক্রটি ছাত্রদের ওপর নির্মমভাবে গুলি করেছে, তারাই এ কাজটি করেছে। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে শেরপুর সদর থানার ওসি মো. জুবায়দুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, আমি ঘটনাটি শুনে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ পাঠিয়েছি। দুজনকে আটক করা হয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।

 

সবা:স:জু- ৭১০/২৫

ক্লাস পরীক্ষা শুরুর আশ্বাসে আন্দোলন থেকে সরলেন বাকৃবির শিক্ষার্থীরা

ক্লাস পরীক্ষা শুরুর আশ্বাসে আন্দোলন থেকে সরলেন বাকৃবির শিক্ষার্থীরা

ময়মনসিংহ সংবাদদাতা:

হল ছাড়ার নির্দেশনা প্রত্যাহার, এক সপ্তাহের মধ্যে ক্লাস ও পরীক্ষা শুরুর আশ্বাসে আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) রাতে পাঁচ ঘণ্টার আলোচনা শেষে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আপাতত কর্মসূচি বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন। তবে যে দাবিতে তারা আন্দোলনে নেমেছিলেন সেই সমন্বিত বা কম্বাইন্ড ডিগ্রির বিষয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। এ বিষয়ে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে বলে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পাঁচ ঘণ্টার আলোচনা শেষে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক শহীদুল হক।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি এএইচ এম হিমেল বলেছেন, এসব আশ্বাসে বুধবারের আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর ব্যাত্যয় হলে আবার কর্মসূচি দেওয়া হবে।
সমন্বিত ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলার পর উপাচার্যের ক্ষমা চাওয়া ও হামলাকারী বহিরাগতদের গ্রেপ্তারসহ ছয় দফা দাবির নতুন কর্মসূচি নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছিলেন বাকৃবির শিক্ষার্থীরা।

দ্বিতীয় দিনের মতো তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ রেললাইন অবরোধ করেছিলেন। পরে সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ গিয়ে ব্যাংকের শাখা এবং ট্রেজারি ভবনে তালা দেয়।
এমন প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ৪০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে নিঃশর্ত আলোচনায় বসেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কৃষি অনুষদের হল রুমে রাত ১২টা পর্যন্ত চলে আলোচনা। আলোচনায় জুমে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ কে এম ফজলুল হক ভূঁইয়া।

দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টার আলোচনা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক শহীদুল হক বলেন, ছাত্র-শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনা ফলপ্রসু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে শিক্ষার্থীদের হলে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বুধবার সিন্ডিকেট মিটিংয়ের মাধ্যমে হল ত্যাগের নির্দেশনা প্রত্যাহার করা হবে। এক সপ্তাহের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতিও শিক্ষার্থীদের দেওয়ার কথা তুলে ধরেন তিনি। কম্বাইন্ড ডিগ্রির বিষয়ে তিনি বলেন, আপাতত তিন ডিগ্রি অর্থ্যাৎ একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে। আর অন্যান্য বিষয়ে সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত হবে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি এ এইচ এম হিমেল বলেন, সভায় কর্তৃপক্ষের তরফে চলমান আন্দোলনের দাবিগুলোর বিষয়ে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এরপর তারা বুধবারের কর্মসূচি থেকে সরে আসার কথা বলেছেন। সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি বলেন, হল ছাড়ার নির্দেশনা প্রত্যাহার, এক সপ্তাহের মধ্যে ক্লাস-পরীক্ষা স্বাভাবিক করা, বহিরাগতদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হয়রানি না করা এবং কম্বাইন্ড ডিগ্রি নিয়ে সিন্ডিকেট সভায় আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে সভায় সবার সম্মতি এসেছে। ভেটেরিনারি অনুষদ এবং পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীদের প্রায় এক মাস ধরে কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলন চলছিল। দুই অনুষদের ডিগ্রিকে একীভূত করে একটি সমন্বিত ডিগ্রি দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা।

গত রোববার একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় বিষয়টি সমাধান না হওয়ায় দুপুর ১টার দিকে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে উপাচার্যসহ প্রায় ২০০ শিক্ষক-কর্মকর্তাকে আটকে রেখে তালা মেরে দেন শিক্ষার্থীরা। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের পাশ থেকে ২৫০-৩০০ জন বহিরাগত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে। শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়লে বহিরাগতরা তালা ভেঙে দিলে অবরুদ্ধ শিক্ষকরা বেরিয়ে যায়। এসময় সাংবাদিক শিক্ষার্থীসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়। এমন পরিস্থিতিতে রোববার রাত সাড়ে ৯টায় অনলাইনে অনুষ্ঠিত জরুরি সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তে অনির্দিষ্টকালের জন‍্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সব ছাত্র-ছাত্রীকে সোমবার সকাল ৯টার মধ্যে হল ত‍্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ সিদ্ধান্ত না মেনে পরদিন হল না ছেড়ে আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকেন তারা।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম