
মিরপুর সংবাদদাতা:
রাজধানীর মিরপুরে ইন্টারনেট ব্যবসার দ্বন্দ্বে তাহমিনা আক্তার রানু (৪৫) নামে এক নারীকে মাথায় গুলি করে হত্যা করেন বলে এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত রানু অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর আপন বড় বোন। রোববার (৩ আগস্ট) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে মিরপুর ১ নম্বর দক্ষিণ বিশিলের ৭ নম্বর রোডের একটি বাড়িতে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
গভীর রাতে বাবুসহ ৩ ব্যক্তি রানুর বাসায় ঢুকে, তাকে গুলি করে তারা বেরিয়ে আসেন। মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়া হলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান বাবু (৩৫) মিরপুরের ১২ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক। তাদের বাবার নাম লুৎফর রহমান। নিহত তাহমিনা আক্তার রানু অবিবাহিত ছিলেন। তিনি দক্ষিণ বিশিলে খালা আনিসা বেগমের টিনশেড বাড়িতে থাকতেন।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর দক্ষিন বিশিল এলাকায় ইন্টারনেট ব্যবসা রয়েছে। এ ব্যবসা থেকে তার প্রতি মাসে ৪-৫ লাখ টাকা ইনকাম হয়। সে ছাত্র হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় ফেরারি জীবনযাপন করেন। বাবুর অবর্তমানে তার বোন তাহমিনা আক্তার রানু ইন্টারনেট ব্যবসা দেখাশোনা করেন। প্রতিমাসে ব্যবসার হিসাব নিকাশ রানু তার ভাইকে বুঝিয়ে দেন। সম্প্রতি ইন্টারনেট ব্যবসার হিসাব নিয়ে ভাই বোনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। পারিবারিকভাবে এ নিয়ে কয়েক দফা আলোচনাও হয়। গভীর রাতে বাবুসহ ৩ ব্যক্তি রানুর বাসায় ঢুকে তাকে গুলি করে। মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়া হলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
ডিএমপির মিরপুর বিভাগের পুলিশ কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার কয়েকটি ভিডিও ফুটেজ তারা পেয়েছেন। ওই ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ঘটনার সময় বাবু অজ্ঞাত নামা ২-৩ জনকে নিয়ে ভিকটিমের বাসায় প্রবেশ করেন। আবার একই ব্যক্তিদের নিয়ে বাসা থেকে বের হন। এই সময় আশপাশের অনেকে গুলির আওয়াজ শুনেছেন।ডিএমপি’র মিরপুর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, ভিকটিমকে হাসপতালে নেওয়া হলে তার আত্মীয়-স্বজন প্রথমে ডাক্তারের কাছে মিথ্যা তথ্য দেয়। তারা ডাক্তারকে জানান, ভিকটিম সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। এতে ডাক্তারের সন্দেহ হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে খবর দেয়। ডিএমপি’র মিরপুর বিভাগের ডিসি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। ইন্টারনেট ব্যবসায় ৪-৫ লাখ টাকা লাভ হতো। ভিকটিমের ভাই বাবু এই ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতো। বাবু ছাত্র হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় পালিয়ে থাকতেন। এজন্য বোনকে ব্যবসা দেখাশুনার দায়িত্ব দেন।
পুলিশের ধারণা, ব্যবসায়িক কিংবা পারিবারিক দ্বন্দ্বে এ ঘটনা ঘটতে পারে। কয়েকটি ভিডিও ফুটেজ আমরা পেয়েছি। এটি পর্যালোচনা চলছে। ভিডিওতে বাবুকে ভিকটিমের বাসায় ঢুকতে দেখা গেছে।