পচন ধরেছে ভালুকের শরীরে, সিলগালা সেই চিড়িয়াখানা

পচন ধরেছে ভালুকের শরীরে, সিলগালা সেই চিড়িয়াখানা

স্টাফ রিপোর্টার:

ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিটি কর্পোরেশনের ৪নং ওয়ার্ড কমিশনার মাহবুবুর রহমান দুলালের মালিকানাধীন অবৈধ চিড়িয়াখানা সিলগালা করেছে বনবিভাগ। এ সময় বিভিন্ন প্রজাতির ২৩টি বন্যপ্রাণী জব্দ করেছে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট।

সম্প্রতি চিড়িয়াখানার ভেতরে থাকা একটি ভালুকের শরীরে পচন ধরে দুর্গন্ধ ছড়ালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ঘটনাটি জানতে পেরে অভিযান পরিচালনা করে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট।

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে নগরীর জয়নুল আবেদীন উদ্যানের অবৈধ মিনি চিড়িয়াখানায় অভিযান চালিয়ে অসুস্থ ভালুকসহ সব বণ্যপ্রাণী জব্দ করা হয়।

জব্দ করা প্রাণীর মধ্যে রয়েছে- একটি অজগর সাপ, ২টি ময়ুর, ৫টি হরিণ, ২টি মদনটাক পাখি, ১টি কুমির, ২টি ভাল্লুক, ১টি সজারু, ৫টি বানরসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি।

এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক নার্গিস সুলতানা। তিনি জানান, বন্যপ্রাণী সংগ্রহ, দখলে রাখা, প্রদর্শন ও সংরক্ষণ করা দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু এখানে অবৈধভাবে চিড়িয়াখানা পরিচালানা করে বন্যপ্রাণী বন্দি রাখা হয়েছিল। এ ঘটনায় ২৩টি বন্যপ্রাণী জব্দ করা হয়। জব্দকৃত এই প্রাণীগুলোকে গাজীপুর সাফারি পার্কে অবমুক্ত করা হবে। তবে এর মধ্যে কিছু প্রাণীকে ১৫ দিন কোয়ারেন্টিনে রেখে স্বাভাবিক বণ্য পরিবেশে অবমুক্ত করা হবে বলে জানান তিনি।

বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাস বলেন, আইন অমান্য করে ব্যক্তিগত প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে এই চিড়িয়াখানাটি গড়ে তোলা হয়েছিল। খবর পেয়ে প্রাণীগুলোকে উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে একটি ভালুক খুব অসুস্থ, তার শরীরে পচন ধরেছে। আহত এই ভালুকটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দীর্ঘ ১২ বছর যাবৎ এই চিড়িয়াখানাটি তৎকালীন মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ইকরামুল হক টিটুর অনুসারী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিটি কর্পোরেশনের ৪নং ওয়ার্ড কমিশনার মাহবুবুর রহমান দুলাল পরিচালনা করে আসছিল।

তবে একটি সূত্রের দাবি, এই চিড়িয়াখানাটি ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন থেকে নামমাত্র মূল্যে ইজারা নিয়েছিলেন ফুলবাড়িয়ার সংসদ সদস্যের পুত্র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমদাদুল হক সেলিম। পরে তার কাছ থেকে ৪নং ওয়ার্ড কমিশনার মাহবুবুর রহমান দুলালের মালিকানা নিয়ে পরিচালনা করে আসছিলেন। তখন থেকে এই চিড়িয়াখানাতে বিভিন্ন প্রাণীকে খাচায় বন্দি করে টিকিট বিক্রির মাধ্যমে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়। পাশাপাশি রেস্টুরেন্ট এবং বিভিন্ন রাইড স্থাপনের মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবসার প্রসার ঘটানো হয়।

তবে বিগত ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে তারা গা ঢাকা দিলে চিড়িয়াখানাটির দায়িত্ব নেন নগরীর ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান মামুন। তবে শুরু থেকেই চিড়িয়াখানটির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা এবং কর্মীদের দুর্ব্যবহার নিয়ে অভিযোগ ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলে কিছু বলতে পারতো না। তবে সম্প্রতি চিড়িয়াখানার ভেতরে থাকা একটি ভালুকের শরীরে পচন ধরে দুর্গন্ধ ছড়ালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ঘটনাটি জানতে পেরে অভিযান পরিচালনা করে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মিনি চিড়িয়াখানার বর্তমান পরিচালক মিজানুর রহমান মামুন বলেন, মানুষের চিত্ত বিনোদনের কথা চিন্তা করে নামমাত্র দর্শনার্থী বিনিময় মূল্যে চিড়িয়াখানা পরিচালনা করা হচ্ছে। আমরা নিয়মিত প্রাণীদের প্রতি যত্ন নেওয়ার চেষ্টা করি। তবে সম্প্রতি একটি ভালুক আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে অসুস্থ হলে তার পায়ে পচন ধরে এবং ঘা হয়ে যায়। বিষয়টি টের পেয়ে একজন ভেটেরিনারি চিকিৎসকের মাধ্যমে মাধ্যমে ভালুকটিকে সুস্থ করার চেষ্টা চলছিল।

বর্তমানে এই চিড়িয়াখানার মালিক ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিটি করপোরেশনের ৪নং ওয়ার্ড কমিশনার মাহবুবুর রহমান দুলাল একটি মামলায় কারাবন্দি থাকায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

খুনি,অস্ত্র ,মাদক ,হুন্ডি ব্যবসায়ী,সীমান্তে চোরা-চালানকারীদের মদদ দাতা খোদ সাংসদ শেখ আফিল উদ্দিন

 

রেজা, ঢাকা-:

৮৫ যশোর -১ (শার্শা) শার্শা বেনাপোল নিয়ে গঠিত এ আসনের সংসদ সদস্য আফিল উদ্দিন। সীমান্ত উপজেলা শার্শা, এখানে আইন আছে, আছে বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বাহনী উপস্থিতি কিন্তু এসবের সব কিছু যেন মাফিয়া গডফাদার শেখ আফিল উদ্দিন এমপির কাছে জিম্মি । স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসের অর্থদাতা খোদ আকিজ শিল্পগোষ্ঠী ও এমপি আফিল উদ্দিন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধার সময় এমপি আফিলের পিতা আকিজ উদ্দিন পাকিস্তানী বাহিনীকে বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করেন ও মুক্তিকামী মানুষের সম্পদ লুন্ঠন করেন।১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপরিবারে হত্যার পর শার্শার মাটিতে এমপি আফিল উদ্দিনের পিতা শার্শা উপজেলা মুসলিম লীগের নেতা মরহুম আকিজ উদ্দিন রঙের হোলি খেলেছিলেন।বিভিন্ন তথ্য সূত্রে ও সংবাদ পএে তারা স্বাধীনতা বিরোধী পরিবার বলে উঠেছে।
এমপি আফিল উদ্দিনের বড় ভাই আদ্বদিন ফাউেন্ডশনের নির্বাহী পরিচালক শেখ মহিউদ্দিন জামায়াতে ইসলামীর
বড় ডোনার।শেখ মহিউদ্দিন বরিশাল মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত অবস্হায় ছাএ শিবির”এর পক্ষে সংসদ
ভিপি পদে নিবার্চন করেন।
এমপি আফিল উদ্দিন একাধিক বিএনপি, জামায়াতের নেতাকর্মীকে উপজেলা আ.লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়েছেন।
১৯৯৬ সালে বেনাপােল ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সপ্মদক নুরজ্জামানকে ২০১৩ সালে শার্শা উপেজলা
আওয়ামী লীগের সাধারণ সপ্মদক নিবার্চিত করেন।বিএনপি সাবেক সাংসদ মরহুম আলী কদরের দেহরক্ষী অহিদুজ্জামানকে জেলা পরিষদের সদস্য, উপজেলা যুবলীগের গুরুত্বপূর্ণ সভাপতির পদে বসিয়েছেন।অগ্নি কন্যাখ্যাত মতিয়া চৌধুরীর মঞ্চ ভাংচুর করা ২০১১ সালে খোদ সাংসদ এর গাড়ি বহর থেকে শার্শা উপজেলা পরিষদ সামনে থেকে যুবলীগের সাধারণ সপ্মাদক বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ র‍্যাবের হাতে আটক হওয়া, সাবেক নাভারন কলেজ ছাএদলের সভাপতি সোহরাব হোসেনকে ২০০৩ সালে বানিয়েছেন উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সপ্মাদক এখনো সোহরাব উপজেলা যুবলীগের চলমান সাধারণ সপ্মাদক। ২০১১,২০১৬তে তার প্রত্যক্ষ মদদে শার্শা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দিয়ে বানিয়েছেন চেয়ারম্যান। সোহরাব আন্তর্জাতিক চোরা কারবারি, মাদক,অস্ত্র, স্বর্ণ সীমান্তে চোরাচালান করে হয়েছেন শত শত কোটি টাকার মালিক, আমেরিকা বানিয়েছেন সেকেন্ড হোম।
এবার বেনাপোলে পৌর নির্বাচনে তার অনুসারী আঁচড়ার কামালকে কাউন্সিলার হয়েছেন সে স্বর্ণ পাচারের ও ছিনতাই চক্রের সাথে জড়িত অপহরণ ও হত্যা মামলায় যশোর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাকে গ্রেফতার করেছে।
স্বাধীনতা বিরোধী পরিবারের সন্তান আকিজ শিল্পগোষ্ঠীর মালিক আকিজ উদ্দিনের ছেলে শেখ আফিল উদ্দিন তিনি আফিল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তিনি ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আ.লীগের দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নিবার্চিত হন এরপর থেকে অর্থ,ক্ষমতা,প্রভাব খাটিয়ে বাজিমাত করে টানা তিনবারের একই আসনে হয়েছেন সংসদ সদস্য।এলাকায় গড়ে তুলেছেন খুন,অস্ত্র ব্যবসা,মাদক ব্যবসা,সীমান্তে চোরাচালান সিন্ডিকেট,হুন্ডি ব্যবসা,হাটের নিয়ন্ত্রণসহ এক শক্তিশালী অপরাধের রাজত্ব। শার্শার বাহদুরপুর শেখারীপোতা সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর তার গড়ে তোলা মফিজুল বাহনী কর্তৃক চালিয়েছেন অমানুষিক নির্যাতন দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন ৩১টি হিন্দু পরিবার লুন্ঠন করা হয়েছে তাদের সম্পদ।
বেনাপোল পৌর আ.লীগ কার্যলয়ে চালিয়েছেন হামলা ভাংচুর, তার শাসনমালে বিগত ১৫ বছরে উপজেলায় করতে পারে নাই একটিও আ.লীগের দলীয় কার্যলয়।বনমান্দার এলাকায়
৫০০ বিষা জলাশয় করে গড়ে তুলেছেন মৎসা খামার। শার্শায় করেছেন সম্পদের পাহাড়, জুটমিল,উলাশী এলাকায় পোল্টি খামার।সরকারি জলাশয় বাওড়,বেতনানদী দখল করে তার অনুসারীদের দখল করে চাষ করা । সরকারের একটি অংশ হওয়া সত্বেও সরকারি নিদর্শনা অমান্য করে পোল্ট্রি দাম বাড়িয়ে দিয়ে লুটেছেন পোল্ট্রি সিন্ডিকেট ৫১৮কোটি টাকা সরকারকে ফেলেছিলেন বিপাকে। আফিল উদ্দিন যখন শার্শায় এসেছিলেন তখন তার শার্শায় একবিষা জমি ছিল না।এখন শত শত বিষা জমি।জুট মিলের ভিতর অনেকের জমি দখল করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে চটকাপোতার নাজিম মাস্টার জমিও এর ভিতর রয়েছে।
তার শাসনামলে ২০০৮ থেকে ২০২৩ _পর্যন্ত_ শার্শায় খুন হয়েছেন ৬২ জন সরকার ও দলীয় নেতাকর্মী।
আহত হয়েছেন শত শত। পুরো উপজেলায়ই পরিচিতি পেয়েছে মৃত্যুপুরী হিসেবে।২০১০সালে সালে লক্ষণপুর ইউনিয়নের পারুইখুপি গ্রামে খুন হন বিএনপির কর্মী হামিদ সেই খুনের মামলায় আফিলের সর্মথিত কর্মীদের নামে অভিযোগপএ এজাহার ভুক্ত করলে ২০১০সালের ১৫ আগস্ট তৎকালীন শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক এসআই আসাদসহ ছয় পুলিশ সদস্যকে তার জুটমিলে ডেকে নিয়ে বেধড়ক মারপিট করেন বলে সেসময়ে সংবাদপএে প্রকাশিত হয়েছিল। এ বিষয়ে ওসি এনামুল হক বাদী হয়ে সাংসদ শেখ আফিল ও তার ব্যক্তিগত সহকারীসহ চারজনের নাম উল্লেখ ও ৭/৮ জনকে অজ্ঞাত করেন সাধারণ ডায়েরি(জিডি) করেন নং৫৪-৫,ইং১৫/৮/২০১০
তারিখে এতে_ আরো ক্ষিপ্ত থানায় ঘেরাও করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
আফিলের প্রত্যক্ষ মদদে থাকা পুটখালির নাসির উদ্দিন ওরফে গোল্ড নাসির, অস্ত্র,মাদক,স্বর্ণ,গরু পাচার,হুন্ডি ব্যবসাসহ সীমান্তে চোরাচালানের মূলহোতা কুখ্যাত সস্ত্রাসী নাসিরকে গত ২৩ স্বেপ্টবর ২০২৩ ইং: তারিখে বাগআঁচড়া থেকে তার কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, তিনটি রিভলভার ও ১৯ রাউন্ড গুলিসহ তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানায় র‌্যাব।
২০১২ সালে সাংবাদিক জামালকে শার্শার কাশীপুর বাজারে সন্ত্রাসীরা তাকে কুপিয়ে হত্যার পর একটি চোখ তুলে নেয় বলে স্থানীয়রা জানায়।
মাদক বিক্রি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় জামালকে হুমকি দিয়ে আসছিল মাদক বিক্রেতারা। এ নিয়ে শার্শা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছিলেন তিনি। যশোর থেকে প্রকাশিত স্থানীয় দৈনিক গ্রামের কাগজের প্রতিনিধি ছিলেন। ভারত সীমান্তবর্তী কাশীপুর গ্রামের এই বাসিন্দা শার্শা প্রেসক্লাবের ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
ক্ষমতাসীন দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং সীমান্তে চোরাচালান ও হাটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্বে যশোরের শার্শা উপজেলায় গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসংগঠনের ৬২ জন নেতা-কর্মী খুন হয়েছেন শার্শা উপজেলায়।
খুন হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে সরকারি দলের ১ জন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান, ১ জন সাবেক চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ৯ জন, কৃষক লীগের ১ জন, সাংবাদিকসহ যুবলীগের ১৪ জন এবং ছাত্রলীগের ১১ জন নেতা-কর্মী রয়েছেন।
এসব ঘটনায় শার্শা থানায় ২৭টি ও বেনাপোল বন্দর থানায় ১৪টি মামলা হয়। পুলিশ জানায়, এই ৪১টি মামলায় অন্তত ২৫০ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আসামিদের কেউ কারাগারে নেই। সবাই আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
সাংসদ আসামিদের কীভাবে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন, সরেজমিনে ঘুরে তার কিছু নমুনা পাওয়া গেছে। ২০০৯ সালে বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ওরফে বাবুকে হত্যা করা হয়। মামলার প্রধান আসামি ইলিয়াস কবির বকুল।উপজেলা আ.লীগের সাবেক সহ-সভাপতি খোরশেদ আলমকে সাতমাইল গরু হাটে প্রকাশ্যে মারধর লাঞ্ছিত করেন বকুল মারধর শিকার হওয়ার এক সপ্তাহের মাথায় তিনি মারা যান।সাংসদ শেখ আফিল উদ্দিন ২০১১ সালের ইউপি নির্বাচনে প্রত্যক্ষ সমর্থন দিয়ে তাঁকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন। এরপর ২০১৩ সালে ইলিয়াস কবিরকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদেও বসান। ২০১৬ সালে তাঁকে আবারও চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন পেতে সহায়তা করেন সাংসদ। পরে স্থানীয় বাজার কমিটির সভাপতিও হয়েছেন তিনি ও ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সপ্মাদক পদে বহাল আছেন। নজরুল হত্যা মামলার এজাহার ও অভিযোগপত্রে আমার নাম ছিল। কিন্তু ওই মামলা থেকে আদালত আমাকে খালাস দিয়েছেন।’
বেনাপোল পৌর আওয়ামী লীগ নেতা ইবাদত হোসেন হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরাও একই সুবিধা পেয়েছেন। এই মামলার তদন্তে নাম এসেছে স্থানীয় জুলফিকার আলী ওরফে মন্টু, মো. ওয়াহিদুজ্জামান ও মাহতাবের। সাংসদ আফিল তাঁদের রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বলে অভিযোগ আছে। সাংসদ ২০১৭ সালে জুলফিকারকে বেনাপোল স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি, ওয়াহিদুজ্জামান ছিলেন যুবদল নেতা, তিনি শার্শার বিএনপির সাবেক সাংসদ ও অর্থদাতা মরহুম আলী কদরের দেহরক্ষী ছিলেন তাকেও বসিয়েছেন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে ওয়াহিদুজ্জামানকে যশোর জেলা পরিষদের সদস্য এবং মাহতাবকে বেনাপোল মহিলা মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি পদে বসিয়েছেন।

বেনাপোলের আওয়ামী লীগের কর্মী আবদুস সামাদ হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি আমিরুল ইসলামকে ২০১৭ সালে স্থানীয় কাগজপুকুর বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হতে সাংসদ আফিল সহায়তা করেছিলেন।
এদিকে পুটখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক হত্যা মামলায় সিরাজুল ইসলামকে আসামি করা হয়। সাংসদের অনুসারী বলে পরিচিত সিরাজুলকে ২০১৩ সালে পুটখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে বসানো হয়। পরে মামলার অভিযোগপত্র থেকে পুলিশ সিরাজুলের নাম বাদ দিলে তাকে অস্ত্রের লাইসেন্স দেয় জেলা প্রশাসন। মামলার অন্য আসামিরা হত্যাকাণ্ডের পর রাজ্জাকের পরিবারকে হুমকি ও চাপ দিয়ে মামলা পরিচালনা থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। বাদী ভয়ে এখন আর আদালতে যান না।
জানতে চাইলে সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘রাজনৈতিক দলাদলির কারণে আমাকে আসামি করা হয়েছিল ঠিকই। তবে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ না পাওয়ায় বেনাপোল থানার পুলিশ আমাকে অভিযোগপত্র থেকে বাদ দিয়েছে।’
২০১৫ সালে যুবলীগের কর্মী তোজাম্মেল হোসেন ওরফে তুজামকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যা মামলায় তৎকালীন শার্শা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুর রহিম সরদারকে প্রধান আসামি করা হয়। রহিম সাংসদ আফিল উদ্দিনের অনুসারী। আসামিরা দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। সাংসদের হস্তক্ষেপে বর্তমানে রহিমসহ আসামিরা এলাকায় ফিরেছেন। রহিম মাদক ব্যবসা, চাদাবাজি, চোরাই মোটরসাইকেল সিন্ডিকেটের মূলহোতা। সাংসদ রহিমকে এলাকায় ফিরিয়ে এনে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। সরকারি বরাদ্দের বিভিন্ন কাজ পাচ্ছেন রহিম বর্তমানে তিনি যুবলীগের রাজনীতি করেন।
তোজাম্মেলের স্ত্রী ঝর্না বেগম বলেন, ‘এমপি আমাদের পক্ষে নেই। রহিমকে সহায়তা করেন। এ জন্য মামলা এখন আর চলছে না।’
২০০৯ সালের ১০ মার্চ রাতে শার্শার বাগআঁচড়া বাজারে বাড়ির ছাদে খুন হন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম। এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান ইলিয়াস কবিরসহ আটজনকে আসামি করে শার্শা থানায় মামলা হয়। রফিকুলের ভাই আসাদুজ্জামান বলেন, মামলার এক নম্বর আসামি ইলিয়াস কবির সাংসদ আফিলের অনুসারী। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আসামিরা নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। এখন তাঁরা ভয়ে আদালতে যান না।
আসামিদের এভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ার অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে।
বাদীপক্ষের অভিযোগ, অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিদের বেশির ভাগ যশোর-১ (শার্শা) আসনের আওয়ামী লীগের সাংসদ শেখ আফিল উদ্দিনের অনুসারী। শেখ আফিল ১৫ বছর ধরে সাংসদ। আর আসামিরা প্রায় ১৫ বছর ধরেই সাংসদের পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছেন। সভা-সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন। সাংসদের ছবি ব্যবহার করে শার্শা ও বেনাপোল বন্দর এলাকায় ব্যানার-ফেস্টুনও ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। ক্ষমতার দাপটে তাঁরা পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছেন। ভুক্তভোগীদের ভাষ্য মতে নিজ দলের ২শতাধিক নেতাকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। আর কত লোকযে লাঞ্ছিত- মারধরের শিকার হয়েছেন তার হিসাব নেই। এ গেল নিজ দলের হাতে গোনা কয়েকজনের আ.লীগের নেতাকর্মীদের কথা, এমন অংসখ্য উদাহরণ রয়েছে। এখানে আ.লীগের কর্মীরা নিরাপদ না বলে শঙ্খা করেন দলের কয়েকজন নেতাকর্মী।
বিরোধী দলের ২০এর অধিক নেতাকর্মী খুন হয়েছেন।বিরোধী তথা বিএনপি নেতাকর্মীদের মারধরের শিকার হতে হয় প্রতিনিয়ত।নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির একজন কর্মী বলেন আমার দুই ভাই খুন হয়েছে।আমাদের বসত ভিটা বর্তমানে শ্মশান হয়ে আছে আমরা বসত ভিটায় যেতে পারি না। বাড়িঘর ছেড়ে অনেকে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে রয়েছেন।তার আশ্রয় প্রশয়ে চিন্তিত অপরাধীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আফিল উদ্দিন এবার আ.লীগের দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে নেমেছেন।
এবিষয়ে জানতে অভিযুক্ত সাংসদ আফিলের উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম