স্টাফ রিপোর্টারঃ
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সরকারি খাল দখল করে গড়ে উঠা ভবন নিয়ে এলাকাবাসী স্বোচ্চার হলেও নীরব রাজউক, সিটি কর্পোরেশন সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ও রাজউকের কারওয়ানবাজার জোনাল অফিসে মোঃ নুরল হুদা নামে এক ব্যক্তি সরকারী খাল দখল করে রাজউকের অনুমোদনহীন বিল্ডিং এর বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে আবেদন করেছেন।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ২ মার্চ ২০২৫ তারিখে ও রাজউকের কারওয়ানবাজার জোনাল অফিসে ১৮ মার্চ ২০২৫ তারিখে ৩৩৫ নাম্বার স্মারকে অভিযোগটি দাখিল করেছেন তিনি। অভিযোগে বলা হয়েছে বিগত সময়ে আওয়ামী দখলদারদের অপকর্ম এবং দখলদারিত্ব দেখেও চুপ থাকতে হয়েছে। বর্তমানে আওয়ামী ভূমিদস্যুদের থেকে সরকারি জায়গা পুনরুদ্ধারের সুযোগ এসেছে । মোহাম্মদপুরে লাউতলা ০৭ নাম্বার রোডে সুধাংশু চৌধুরী ওরফে রতন সরকারি খাল দখল করে দশ তলা ভবন নির্মাণ করেছেন। এই ভবনটি ঢাকা সিটি জরিপ অনুসারে ঢাকা জেলার মোহাম্মদপুর থানার কাটাসুর মৌজার সরকারি ০১ নং খাস খতিয়ানের সরকারি খাল ভরাট করে খাস জমি দখল করে রাজউকের অনুমোদন না নিয়ে পেশিশক্তির দাপটে নির্মাণ করা হয়েছে। এমতাবস্থায় এই এলাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি ও অগ্নি দূর্ঘটনা ঘটার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন এলাকাবাসী এর ফলে ব্যাপক প্রাণ হানির আশঙ্কাও করছেন তারা।
মোঃ নুরল হুদার অভিযোগের কাগজ গণমাধ্যমের হাতে আসলে অনুসন্ধানী প্রতিবেদক মাহতাবুর রহমান এই বিষয়ে অনুসন্ধান করেন। রাজউক এবং দক্ষিন সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সাথে এই বিষয় নিয়ে কথা বললে সিটি কর্পোরেশন বলছে রাজউকের কথা, রাজউক বলছে সিটি কর্পোরেশনের কথা। এমতাবস্থায় কেন উচ্চ আদালতে গিয়ে জনগনের সম্পদ রক্ষার্থে ও জনস্বার্থে মামলা করা হইবে না এই বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদক মাহতাবুর রহমান সরকারি ডাকযোগে লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করেছেন।
এই সকল বিষয় নিয়ে সুধাংশু চৌধুরী কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই ভবন আমার নয়, আমি এটার মালিক নয়।
সরকারি খাল দখল করে ভরাট পরবর্তী রাজউক অনুমোদন না নিয়ে বহুতল ভবন নির্মানের বিষয়ে রাজউক পরিচালক (জোন-৫) মোঃ হামিদুল ইসলাম বলেন বর্তমানে অবৈধ ভবন উচ্ছেদ অভিযান চলমান রয়েছে। আপনারাও আমাদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করুন।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন সরকারি জমি ও খাল উদ্ধারে আমাদের অভিযান চলমান আছে। আপনাদের দেয়া তথ্য নোট করলাম, সরকারি খাল অবশ্যই উদ্ধার করে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে আমরা কাজ করছি।
সরকারি খাস জমি অবৈধভাবে দখল বা কোনো অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করলে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড বা অনধিক পাঁচ লাখ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত করার বিধান রয়েছে। ভবন নির্মাণের অনুমোদন গ্রহণ না করা মূলত ইমারত নির্মাণ আইন, ১৯৫২ এর ৩ (১) ধারা ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালা, ১৯৯৬ এর ৩ উপবিধির লঙ্ঘন। অনুমোদনের বাইরে ভবন করলে নির্মাণ আইন, ১৯৫২ এর ১২ ধারা অনুযায়ী অভিযুক্ত ব্যক্তির সাত বছর পর্যন্ত কারাদন্ড হতে পারে।
মহানগরী, বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরের পৌর এলাকাসহ দেশের সকল পৌর এলাকার খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান, উদ্যান এবং প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন, ২০০০ সনের ৩৬ নং আইন, ৮(১) কোন ব্যক্তি এই আইনের কোন বিধান লঙ্ঘন করিলে অনধিক ৫ বছরের কারাদন্ডের বিধান রয়েছে।
ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২১ এর ২২ ধারায় বলা হয়েছে যদি কোনো ব্যক্তি, সরকারি খাসজমি বা অন্য কোনো সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত বা সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন ভূমি বেআইনিভাবে দখল করেন বা উহাতে অবৈধ অবকাঠামো নির্মাণ করেন, তাহা হইলে তাহার অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক দুই বৎসরের কারাদন্ড, বা অনধিক চার লক্ষ টাকা অর্থদন্ড, বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন। ইহা জামিন অযোগ্য অপরাধও বটে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ মাসুদ || বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ২১/১ নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০ || মোবাইল : ০১৫১১৯৬৩২৯৪,০১৬১১৯৬৩২৯৪ || ই- মেইল: dailysobujbangladesh@gmail.com || ওয়েব : www.dailysobujbangladesh.com
Copyright © 2025 দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ. All rights reserved.