
মাহতাবুর রহমানঃ
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর ইমারত পরিদর্শকগণ ১০ম গ্রেডের কর্মকর্তা যাদের বেতন ৩০ হাজার টাকার বেশি নয় কিন্তু অর্জিত সম্পদ ও বিলাসী জীবন তাদের দুর্নীতির চিত্র ফুটিয়ে তোলে।
মোঃ শামীম হোসাইন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর জোন ৩/১ এ কর্মরত আছেন বর্তমানে। মন্ডলবাড়ি, ছনগাছা, শাহানগাছা, সিরাজগঞ্জ জেলার মোঃ মিজানুর রহমান এর পুত্র শামীম রাজউক এ যোগদান করেন ২৫ অক্টোবর ২০১৫ সালে এবং অবসরে যাবেন ৩১ ডিসেম্বর ২০৫০ সালে।
মোঃ শামীম হোসাইন রাজউক জোন ৪ এ কর্মরত থাকাকালিন নোটিশ ব্যবহার করে ভবন মালিকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করা, দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ উপার্জন, ঘুষ গ্রহন করে অনৈতিক ও আইন বিরোধী কাজ সম্পাদন করা সহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ায় এরিয়া পরিবর্তন করে রাজউক জোন ৩/১ এর এড়িয়ার দায়িত্ব দেয়া হয়।
সরকারি চাকুরীর করছেন ৯ বছর যাবৎ কিন্তু পরিদর্শক শামীম এরই মধ্যে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। অবৈধভাবে ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড থেকে পন্য এনে শামীম হোসাইন এর স্ত্রী মৌসুমী আক্তার অনলাইনে Mou Dot Collection নামে ফেসবুক পেইজ খুলে বিক্রয় করছেন।
মোঃ শামীম হোসাইন ও মৌসুমী আক্তারের তিন ছেলের মধ্যে বড় ও মেজ ছেলে ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুলে লেখাপড়া করে। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে এই স্কুলে সন্তান লেখাপড়া করানো যথেষ্ট ব্যয়বহুল। বাৎসরিক খরচ আনুমানিক ১২ লক্ষ টাকা।
ইমারত পরিদর্শক শামীম হোসাইনের সম্পদ সনুসন্ধান করতে গিয়ে চক্ষু চড়ক গাছ। উত্তরা ০৪ নং সেক্টরে কিনেছেন ফ্লাট। দক্ষিনখান কসাইবাড়ি রেলগেট সংলগ্ন দক্ষিন মোল্লারটেকে একই ঠিকানায় ফ্লাট রয়েছে ০৪টি। দক্ষিনখানে একাধিক প্লটের শেয়ার রয়েছে তার। বগুড়ায় শ্বশুর বাড়িতে নিজ অর্থায়নে বাড়ি তৈরি করেছেনে এবং স্ত্রীর নামে জমি ক্রয় করেছে ১০বিঘা।
শুধু ফ্লাট ও প্লট কিনেই থেমে থাকেননি শামীম হোসাইন। কিনেছেন গাড়িও কিন্তু সরকারি কর্মকর্তা হওয়ায় এবার কৌশলের আশ্রয় নিয়েছেন। শামীম হোসাইনের সহযোগী লতিফ মিয়ার নামে পুবালী ব্যাংক জয়দেবপুর শাখায় গাড়ির লোন অ্যাকাউন্ট করে কিনেছেন হেরিয়ার গাড়ি তবে নিবন্ধন করিয়েছেন লতিফ মিয়ার নামেই। তবে Yamaha Fazer Fi v2, ঢাকা মেট্রো ল-৪৪৩৩৫৪ এই মটরসাইকেলটি মোঃ শামীম হোসাইন নামেই নিবন্ধিত রয়েছে কিন্তু Suzuki GSX-R150, ঢাকা মেট্র ল-১৬০৩৭৮ মটরসাইকেলটি মোঃ শামীম হোসাইনের টাকায় কেনা হলেও তার দুর্নীতির একসহযোগীর নামে নিবন্ধিত রয়েছে। এছাড়াও তার একাধিক জীবন বীমা রয়েছে বলে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
ইমারত পরিদর্শক শামীম হোসাইন রাজউক এর ১০ম গ্রেডের কর্মকর্তা কিন্তু ডেভেলপার কোম্পানী নির্মান টেক লিমিটেড এর একজন শেয়ার হোল্ডার তিনি। এইচএফডি ইক্যুইটি লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানও গড়ে তুলেছেন যার চেয়ারমান মোঃ শামীম হোসাইন এর স্ত্রী মৌসুমী খন্দকার ও ব্যবস্থ্যাপনা পরিচালক মোঃ শামীম হোসাইন এর বড় ভাই মোমেনুল ইসলাম শোভন।
মোঃ শামীম হোসাইনের দুর্নীতি ও অপকর্ম নিয়ে দুদকে অভিযোগ করেছেন মোঃ রুবেল হাওলাদার নামে এক ব্যক্তি। এই অভিযোগের বিষয় শামীম হোসাইনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি আপনারা যাচাই করে দেখেন আমার এমন কিছু আছে কিনা।
এই সকল বিষয় নিয়ে রাজউক জোন-৩ এর পরিচালক সালেহ্ আহমদ জাকারিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার কথা বলার চেষ্টা করলেও পতিবেদন লেখা পর্যন্ত কথা বলা সম্ভব হয়নি।
শামীম হোসাইনের দুর্নীতি ও অপকর্ম নিয়ে অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।