চটকদার বিজ্ঞাপনের আড়ালে ছুটি গ্রুপের প্রতারণার ফাঁদ!

বিশেষ প্রতিনিধি॥

চটকদার বিজ্ঞাপনের আড়ালে ছুটি গ্রুপ আবাসন ও রিসোর্ট প্রকল্পের নামে পেতেছে প্রতারণার ফাঁদ। শেয়ার বিক্রি ও সাফ কবলা রেজিস্ট্রেশনের স্বপ্ন দেখিয়ে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে কয়েকশ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ছুটি গ্রুপের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে সুন্দরী নারীদের টোপ হিসেবে ব্যবহার করছে।

অনেক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেছেন, ছুটি গ্রুপের মেগা প্রজেক্ট পাঁচ তারকা মানের ‘ছুটি রিসোর্ট কক্সবাজার’-এর শেয়ারপ্রতি সাড়ে ৬ লাখ টাকা বিক্রি করছে এবং এক রুম বিক্রি করছে বহু বিনিয়োগকারীর কাছে। এতে লাভ তো দূরের কথা, বিনিয়োগের টাকা ফেরত পাওয়াও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। জানা গেছে, ২০২৭ সালের মধ্যে কক্সবাজারে ছুটি রিসোর্ট নির্মাণ শেষ করার কথা বলে সাড়ে ৩ হাজার শেয়ার মার্কেটে ছাড়ে ছুটি গ্রুপ। কিন্তু এখন পর্যন্ত ৩ শতাংশ কাজও শেষ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। অনেকে বিনিয়োগের টাকা ফেরত চাইলেও নানা প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে ছুটি গ্রুপ।

জানা গেছে, সাম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমসহ বেশকিছু মাধ্যমে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে গাজীপুরের পুবাইলে ‘ছুটি অরণ্যবাস’ নামে একটি পাঁচ তারকা হোটেল এবং কক্সবাজারে মেগা প্রজেক্ট ছুটি রিসোর্টের জন্য বিনিয়োগকারী খুঁজছে ছুটি গ্রুপ। এতে সাফ-কবলা দলিলমূলে শেয়ার মালিক হওয়ার সুযোগ এবং হস্তান্তরযোগ্য মালিকানা, ছুটির নিজস্ব রিসোর্টে ফ্রি অবকাশ যাপনের সুযোগ, ছুটি ক্লাব মেম্বারশিপ এ ৫০% থেকে ৭০% পর্যন্ত ডিসকাউন্ট, একবার বিনিয়োগে আজীবন হালাল মুনাফা লাভের সুবর্ণ সুযোগ, সামাজিক পদমর্যাদা বৃদ্ধি, জমিসহ আজীবন মালিকানা, উত্তরাধিকার সূত্রে হস্তান্তরের সুযোগসহ নানা প্রলোভন দেওয়া হলেও গ্রাহকের পকেটকাটা ছাড়া আর কিছুই বুঝে না ছুটি গ্রুপের লোকজন, বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, এভাবেই অভিনব কায়দায় গত ১৩টি বছর ধরে গ্রহকের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে ছুটি গ্রুপ। তাদের মূল টার্গেট থাকে প্রবাসী, কালো টাকার মালিক। এ ছাড়া মধ্যবিত্তদের আকর্ষণ করতে ১ থেকে ৫ লাখ টাকায় সাফ কবলারও ফাঁদ পাতা হয়। সূত্র জানায়, গ্রুপটির এমডি ইঞ্জিনিয়ার মিজানুর রহমানের রাজউক থেকে দুর্নীতির দায়ে চাকরি যায়। এরপর গ্রুপটির অপর দুই এমডি মোস্তফা কামাল ও মাসুদুর রহমান মাসুদ মিলে নিজস্ব সুন্দরী নারী কর্মী থেকে শুরু করে একাধিক নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

এছাড়াও মাদক কারবারির সঙ্গেও জড়িত রয়েছে তারা বলে গোয়েন্দা সূত্রে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই তিন প্রতারকের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরও বেশকিছু শিল্পপ্রতিষ্ঠান থেকে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে বিতারিত কর্মী। এরা মিলে একটি প্রতারক সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। এই সিন্ডিকেটটি বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাতের জন্য নিত্যনতুন প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করছে। দুর্নীতির টাকায় গত ২০১৩ সালে প্রথম গাজীপুরে ছুটি রিসোর্ট ও পূর্বাচলে ছুটি রিসোর্ট নির্মাণ করে লিজ নেওয়া জমিতে।

পরবর্তীতে ওই নির্মিত প্রজেক্টের নাম ব্যবহার করে তারা উত্তরা-১০ নম্বর সেক্টর এবং বসুন্ধরা আবাসিকের জি ব্লকের ২৯ নম্বর রোডের ৮৪০ নম্বর প্লটে আবাসন প্রকল্পের নামে এফএনএফ প্রপারর্টিজ নামে একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান তৈরি করে হাজারো মানুষের কষ্টের টাকা আত্মসাৎ করে তাদের নিঃস্ব করে দেয়। এখন নতুনভাবে ছুটি হারমোনি, ছুটি বে, ছুটি রিসোর্ট কক্সবাজার, সিলেটে সালতানাত টি রিসোর্টের কথা বলে চটকদার বিজ্ঞাপন ব্যবহার করে কোম্পানির সুন্দরী নারী কর্মীদের টোপ দিয়ে মার্কেট থেকে কয়েকশ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সাফ-কবলা রেজিস্ট্রেশনের স্বপ্ন দেখিয়ে তারা বিনিয়োগের প্রলোভন দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে এসব টাকা। প্রকৃত পক্ষে গত ৬-৭ বছরেও এসব প্রজেক্টে কাজ শুরু তো দূরের কথা, একটি ইটও ব্যবহার করা হয়নি। কোনো ক্রেতা এখন পর্যন্ত রেজিস্টেশন বুঝে পায়নি। যদি কোনো ক্রেতা টাকা ফেরত চায় তাহলে তাকে দিনের পর দিন আজ না কাল দিবে বলে প্রতারণা করছে ছুটি গ্রুপ।

জানা গেছে, ছুটির পূর্বাচল, গাজীপুর ছাড়াও কুয়াকাটা এবং কক্সবাজারের মেরিনড্রাইভ সড়কে রয়েছে ছুটির প্রোজেক্ট। কক্সবাজার টেকনাফের এলাকার মেরিন ড্রাইভ সড়কের পুরায় তৈরি হচ্ছে ছুটি রিসোর্ট কক্সবাজার। যেখানে ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিনিয়োগকারীরা পাবেন সাবকবলাসহ মালিকানা বুঝে নেওয়ার সুযোগ। ছুটি রিসোর্ট কক্সবাজার সাড়ে ৩ হাজার শেয়ার মার্কেটে ছাড়ছে, যার প্রতিটি শেয়ারের মূল্য সাড়ে ৬ লাখ টাকা।

বিনিময়ে বিনিয়োগকারীরা কী পাবেÑ এমন প্রশ্নের জবাবে ছুটি রিসোর্টের এক বিক্রয় প্রতিনিধি বলেন, আজীবন জমি ও রিসোর্টের মালিকানা। বিনিয়োগের ওপর বার্ষিক ১৫-২০% মুনাফা। (শেয়ার প্রতি বার্ষিক ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত)। সহজ কিস্তি বা এককালীন ক্রয়ের সুবিধা। সব ‘ছুটি রিসোর্ট’-এ আজীবন ৫০% ছাড়ে থাকার সুযোগ। ভবিষ্যতে শেয়ারের মূল্য কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে। সাফকবলা দলিলে রেজিস্ট্রেশন। এসব স্বপ্ন দেখিয়ে গ্রাহক আকৃষ্ট করলেও পরবর্তীতে লাভ তো দূরের কথা, মূল টাকা পেতেই হয়রানিতে পরতে হয় গ্রাহকদের। ছুটি রিসোর্ট কক্সবাজারের কাজ ২০২৭ সালে শেষ করার কথা থাকলেও দেখা যায়, এখন পর্যন্ত ৩ শতাংশ কাজও শেষ করতে পারেনি। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ছুটি যে মানের রিসোর্ট তৈরির কথা বলে প্রচার চালাচ্ছে তা শেষ করতে কত বছর লাগবে জানে না কেউ।

জানা গেছে, কক্সবাজারে ছুটি গ্রুপ শেয়ার বিক্রির নামে প্রতারণা করছে নিয়মিত। অনেক ভুক্তভোগীর অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানটি সাড়ে ৬ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকায় প্রতিটি শেয়ার বিক্রি করে কক্সবাজারের হোটেলের। পরবর্তীতে বিনিয়োগকারীরা লাভ তো দূরের কথা; বিনিয়োগের টাকাও ফেরত পান না তারা। জমির মালিকদের সঙ্গে জমি বায়না করে কাজ শেষ না করেই হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। পরবর্তীতে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বিরোধ তৈরি হয়েছে জমির মালিকদের।

সূত্র জানায়, কক্সবাজারে সাড়ে ৬ লাখ টাকায় সাফকবলা রেজিস্ট্রেশনের এই প্রতারণাটি স্থানীয়ভাবে ‘টাইম শেয়ারিং’ নামে পরিচিত। অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তারা নামমাত্র মালিকানা দিলেও পুরো বিষয়টিই অবৈধ। এ ক্ষেত্রে বেশির ভাগ বিনিয়োগকারী বছর শেষে মুনাফা পাওয়া তো দূরের কথা, উলটো তাদের আসল টাকা খোয়াতে হচ্ছে। ছুটি গ্রুপ কক্সবাজার, কুয়াকাটাসহ দেশের বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় হোটেল নির্মাণের নামে এই টাইম শেয়ারিং ব্যবসা শুরু করছে। তাদের মূল টার্গেট থাকে প্রবাসী, কালো টাকার মালিক। এ ছাড়া মধ্যবিত্তদের আকর্ষণ করতে ৫ লাখ থেকে সাড়ে ৬ লাখ সাফকবলার এই ফাঁদ পাতা হয়। স্বল্প টাকায় সাফকবলা মালিকানার এই চটকদার বিজ্ঞাপনে নিঃস্ব হয়েছে বহু পরিবার।

প্রতারণার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ছুটি গ্রুপের এই প্রতারণা সম্পর্কে শেয়ারহোল্ডাররা একজন আরেকজনের বিষয়টি কখনোই জানতে পারেন না। এভাবে একটি হোটেলের মালিকানা হিসেবে হাজার হাজার শেয়ার বিক্রি হচ্ছে। যাদের কেউ কাউকে পরস্পর চেনেন না। একই শেয়ার পুনরায় আরেক গ্রুপের কাছে সাফকবলা বলে বিক্রি করা হয়। শেয়ার মালিকদের বছর শেষে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা লাভ দেখানো হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে লোকসান দেখিয়ে ভবিষ্যৎ প্রকল্প এবং মেইনটেন্যান্স হিসেবে আসল টাকা রেখে দিয়ে বছরের পর বছর ঘোরানো হয়।

 

চিহ্নিত মাদক কারবারি পেপার সানি হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার, এরপর কি?

স্টাফ রিপোর্টারঃ

রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী এলাকায় চিহ্নিত মাদক কারবারি রাকিবুল হাসান সানি ওরফে পেপার সানি (২৯) নামের এক যুবককে গত ১০ জুন গলা কেটে হত্যা করা হয়। তাকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মৃত হিসেবে পাওয়া যায়। এরই মধ্যে কয়েকজন আসামিকে গ্রেফতার করেছে পল্লবী থানা পুলিশ। সোমবার (২৩ জুন) তাদেরকে আদালতে চালান করা হয়।

তবে এই মাদক ব্যবসায়ের বিরোধ থেকে খুন হওয়া পেপার সানির মামলার মোড় যেনো জটলার মতো ঘুরছেই। ১০ জুন সকালে পল্লবীর মিরপুর ১১, মিল্লাত ক্যাম্পের (বি-ব্লক) ৩ নম্বর লাইনে সানিকে হত্যা করা হয়। নিহত পেপার সানিকে অনেকেই ইয়াবা সানি নামেও জানতো। অন্যান্য আসামিদের মধ্যে সম্প্রতি মিরপুর ১১ আলুপট্টি থেকে ইমরান, বৌ বাজার থেকে পারভেজ, এবং মিরপুরে মাদক-সন্ত্রাসের অন্যতম গটফাদার রাসেলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে অনেকেই।

স্থানীয় সূত্র বলছে, রাসেল ও তার দুই ভাই তোফায়েল ওরফে কানা তোফায়েল, সানজু এরা তিন ভাই মিলে মাদক সম্রাজ্য চালায়। আর তাকে সাহায্য করে ওই এলাকার অনেকেই। তার মধ্যে ওই লাইনের রোকি অন্যতম। এমনকি রোকি পেপার সানি হত্যা মামলাতেও জড়িত।

অভিযুক্ত রাসেলের পাপের দাস্তান অনেক লম্বা। পরিচয় গোপন রেখে স্থানীয়রা জানান, “পল্লবী থানায় রাসেলের নামে মাদক চোরাচালান, কিশোরগ্যাং সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এমনকি পল্লবী থানায় পুলিশ হেফাজতে মিরপুরের জনি হত্যা মামলায়ও রাসেলর নাম রয়েছে। ওই সময়ে রাসেল পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করতো। ধীরে ধীরে পুলিশের ছত্রছায়ায় রাসেল মাদক কারবারি হয়ে ওঠে। সে ডুইপ প্লটের মাদক সম্রাট হেরোইন মোস্তাকের সাথে প্রতিযোগিতা করে মাদকের ব্যবসা করে।”

নিহত সানি কালশীর মোহাম্মদ সোহেলের ছেলে। তিনি স্ত্রীসহ মা-বাবার সঙ্গে ওই এলাকায় বসবাস করতেন। ঘটনার দিন নিহতের বাবা মোহাম্মদ সোহেল অভিযোগ করে বলেন- ‘জিন্দা, টানা আকাশ, রুবেল, বোমা কাল্লু, কাসরা সোহেলসহ কিশোর গ্যাং গ্রুপের সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যা করেছে। পরে ঘটনাস্থলেই মরদেহ ফেলে পালিয়ে যায় ওরা।’

নিহতের বাবার দাবি, ওই কিশোর গ্যাং গ্রুপকে এলাকার সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদক কারবারে বাধা দেওয়ার কারণে ওরা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে।

তবে স্থানীয় সূত্রে জানায়, ‘মাদক কারবার ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সানির সঙ্গে ওই কিশোর গ্যাংয়ের সন্ত্রাসীদের দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল। এই কারণে ওইদিন সকালে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটায়। নিহত সানি দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা কারবারির সাথে জড়িত। সম্ভবত কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ এবং মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করেই সে খুন হয়েছে। কারণ মিরপুরের প্রতিটি বিহারি ক্যাম্পেই মাদকের রমরমা ব্যবসা চলছে। এসব নিয়ে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব নিত্যদিনের ঘটনা। এমনকি শহীদ জিয়া মহিলা ডিগ্রী কলেজের পাশে যে খুন হয়, ওই মার্ডারও পেপার সানি করে।’

সোমবার (২৩ জুন) আটককৃত আসামিদের বিষয়ে জানতে পল্লবী থানায় উপস্থিত হয় আমরা। পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিউল আলম বা ওসি তদন্ত কাউকেই থানায় পাওয়া যায়নি। থানা থেকে বলা হয়, সকলেই মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতে গেছেন। উক্ত মামলার তদন্ত অফিসার এসআই হুমায়ুন’কে একাধিবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। পরে থানা থেকে আটককৃত দের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়।

তবে ঘটনা এখানেই শেষ নয়। ভুক্তভোগী পারভেজের পরিবারের অভিযোগ, ‘মার্ডার মামলার আসামি রাসেল মিরপুরে মাদক গডফাদারদের মধ্যে অন্যতম। তার কারণেই পারভেজের এই পরিণতি, পারভেজকে ফাঁসানো হয়েছে। রাসেলের কঠিন শাস্তি হলে অন্য সবাই সতর্ক হবে।

পরিচয় গোপন রেখে মামলা সম্পর্কে ভয়াবহ তথ্য দেন স্থানীয় কয়েকজন। তাদের ভাষ্যমতে, “মিরপুর ১১ বড়ো মসজিদের পাশে (বৌউ বাজার), বি ব্লকের ৮ নাম্বার লাইনে রাসেল থাকে। রাসেলের ২ ভাই, ডুইপ প্লটের হেরোইন মোস্তাক, মোস্তাকের প্রতিটি ছেলেই মাদক কারবারির সাথে যুক্ত, বিশেষ করে সুমন, সাইমন, মামুন সহ সবাই, ওখানকার রোকি, মিরপুর ১১ স্বর্নপট্টি সংলগ্ন এফজি ক্যাম্পের ইয়াবা সাব্বির, তার ভাগ্নে ইয়াবা আসিফ ওরফে সেকেন্ড থানা, নিলয় সহ প্রায় ২০ জন এই এলাকায় মাদকের ফ্যাক্টরি গড়ে তুলেছে। তারা প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করে। অথচ পুলিশ কিছুই করে না।”

মিরপুর ১১ সি ব্লক, স্বর্নপট্টি এলাকার কয়েকজনের সাথে কথা হয়। তাদের ভাষ্যও একইরকম। তবে তাদের অভিযোগ আরও গুরুতর। স্থানীয়দের অভিযোগ, “এই এলাকায় মাদকের পাইকারি ব্যবসায়ী বৌ বাজারের রাসেল, ডুইপের মোস্তাক মিয়া ও তার ছেলেরা, স্বর্নপট্টি এলাকায় বিহারি সাব্বির, আসিফ, আসিফের বোন শারমিন। আর বাকি যে নামগুলো শুনলেন, ওরা খুচরা বিক্রি করে। তবে এদেরকে কেউ ভয়ে কিছু বলে না। কারণ ডুইপের হেরোইন মোস্তাকের ২২ টা বাড়ি- টাকার অভাব নেই। আর আসিফ নিজেকে সেকেন্ড থানা বলে পরিচয় দেয়। পল্লবী থানা পুলিশ নাকি ওর দুলাভাই-আত্নীয়। এমনকি শারমিন নিজে সরাসরি দেহব্যবসা ও মাদক ব্যবসায়ের সাথে জড়িত। এই শারমিন পল্লবী থানার পুলিশকে রুমে গোপনে সার্ভিস দিয়েই সবকিছু লিয়াজু করে। এমনকি শারমিন সাবেক এমপি ইলিয়াস মোল্লার রক্ষিতা বলেও সবাই জানে। শারমিন বিভিন্ন এলাকায় সুন্দরী মেয়েদের দিয়ে হানি ট্রাপের ফাঁদ তৈরি করে। তার অনেক ক্ষমতা। এজন্যই ভয়ে কেউ কোনো কথা বলে না।”

এই পেপার সানি হত্যা মামলার বিষয়ে নতুন করে আরেকটি অভিযোগ আসে। স্থানীয় ও কিছু ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, ‘নিহত সানির মা রাসেলের থেকে ৫ লক্ষ টাকা খেয়ে মামলার মোড় অন্য দিকে ঘুরিয়ে নিতে চাচ্ছে। অথচ এই রাসেল, মোস্তাক, আসিফ গং পুরো মিরপুরে মাদকের অভয়ারণ্য গড়ে তুলেছে। এমনকি নিহত সানির বাবা-মা পুলিশের কাছে অনেকের নামও বলেনি। এভাবেই বড় মাফিয়ারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। কারণ নিহত পেপার সানি জীবদ্দশায় ইয়াবার ব্যাবসা করতো, খুন-জখম সহ বিভিন্ন অপকর্ম করতো। পেপার সানির নামে খোঁজ নিলে বিভিন্ন থানায় মামলাও পাবেন। অথচ পেপার সানির মা এসব গোপন রেখে ছেলেকে উস্কে দিতো।’

তবে রাসেল বা কারো কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়ে জানতে চেয়ে বারংবার ফোন করা হলেও নিহত পেপার সানির মা অথবা স্ত্রী ফোনকল রিসিভ করেন নি।

সবমিলিয়ে রাজধানী তথা মিরপুরে মাদকের রমরমা ব্যবসায়ের যেনো কোনো থামার ইঙ্গিত নেই। কয়েকজন বড় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রায় শতাধিক মাদক কারবারি দেদারসে মাদকের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এখন দেখার বিষয়- এই মাদকের রমরমা ব্যবসা, কিশোর গ্যাং, নানাবিধ কোন্দলে খুন সহ অসংখ্য অপরাধের স্বর্গরাজ্যের অবসান ঘটিয়ে মিরপুর ১১ তথা পল্লবীতে প্রশাসন শান্তি ফিরিয়ে আনতে পারবে কি না।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
জুলাই যোদ্ধা স্বীকৃতি পেতে আরও দেড় হাজারের বেশি আবেদন সতর্ক মন্ত্রণালয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিল শুনানি শুরু প্রধান প্রকৌশলীর আস্থাভাজন ইএম ২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদ সম্পদের পাহাড় জানানো যাচ্ছে অভিযোগ, থানায় বসলেই ভিডিওকলে হাজির এসপি প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে কার্গো ভিলেজের অগ্নিকাণ্ডে অত্যন্ত হতাশাজনক : মির্জা ফখরুল রাজনৈতিক দের মাঝে যে অনৈক্য কুমিরের দেখা মিলল রাজশাহীর পদ্মায় সরকার ও সেনাবাহিনী, গণতন্ত্রে উত্তরণ ও ন্যায়বিচার যেন ব্যাহত না হয় আজ থেকে আমরণ অনশন, প্রত্যাখ্যান শিক্ষকদের শিক্ষার্থীরা রোডম্যাপের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন শাকসু নির্বাচনের