আশুলিয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা ও সুদি মহাজন ফরহাদের খুঁটির জোর কোথায়?

স্টাফ রিপোর্টার:

সাভারের আশুলিয়ার সুদ ও জুয়ার নিয়ন্ত্রক ফরহাদ এক সময় মতিঝিল আরাম বাগ ক্লাবের ক্যাসিনো বোর্ড ম্যানেজারের দায়িত্বে ছিলেন আর এই সুযোগে ক্যাসিনো বোর্ডের ২২ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়েও গিয়েছিলেন। এরপর টেংগুড়ি ইকরা বাজার এলাকায় শুরু করেন সুদ ও জুয়ার (ক্যাসিনো) ব্যাবসা। শিমুলিয়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের যুবলীগের সাধারন সম্পাদক শফিক আহমেদ কে সাথে নিয়ে তৈরি করেন অপরাধের রাজত্ব। বর্তমানে ক্যাসিনো ফরহাদের সুদের টাকার দৌরাত্বে অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। সামান্য অর্থের বিনিময়ে ব্ল্যাংক চেক নিয়ে তাতে লাখ টাকার অঙ্ক বসিয়ে দেয়া হয়েছে লাখ লাখ টাকার মিথ্যা মামলা।

 

ভুক্ত ভোগী জিরানী ও টেংগুড়ী এলাকার ব্যবসায়ী দেলোয়ার, মাহফিজুর অপু, মাসুদ জানান, ব্যবসার জন্য কিছু টাকা সুদের উপর আনার পর আমরা কেউ কেউ ২ লাখে ৭ লাখ, কেউ আবার ১ লাখে ৪ লাখ টাকা, ২ লাখে ৬ লাখ দিয়েও রেহাই পাইনি। তারা আরও বলেন সুদ ও জুয়ার (ক্যাসিনো) ব্যাবসায়ী ফরহাদ হোসেন আমাদের চেক বইয়ের পাতাকে পুঁজি করে বিভিন্ন অংক বসিয়ে আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা সহ  অনেক পরিবারকে  নিঃস্ব করে ফেলেছে ।

 

জানাগেছে ফরহাদ ঢাকার মতিঝিলের আরামবাগ ক্লাবের সিরাজ মিয়ার পাটনার ছিলো । আওয়ামী যুবলীগ নেতা সম্রাট গ্রেফতারের দিন উক্ত ক্লাব থেকে প্রায় ২২ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় ফরহাদ হোসেন। বিভিন্ন জনের সাথে প্রতারনা করায় একাধিক প্রতারনা মামলা হয়েছে ফরহাদ হোসেনের নামে গ্রেফতারও হয়েছে একাধিকবার। কিন্তু আইনের মারপ্যাচে বারবার বের হয়ে এসে চালাচ্ছেন সুদ ও জুয়ার (ক্যাসিনো) ব্যাবসা এবং করছেন মানুষের সাথে প্রতারনা।

 

শিমুলিয়া ইউনিয়ন বাগের তল কাছৈর এলাকার মোতালেব জানান,সম্রাট গ্রেফতারের দিন বোর্ড ম্যান হিসাবে ঐ দিন ওর ডিউটি ছিলো। পরিস্থিতি খারাপ দেখে কৌশলে টাকা নিয়ে পালিয়ে চলে আসে। তার পর মাত্র ৫ দিনের মাথায় জিরানী ইকরা স্কুলের বিপরীতে স’মিলের উত্তরে আবুল হোসেনের ৫/৬ শতাংশ জমি কিনে।

 

স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, ফরহাদ হোসেন বর্তমানে জিরানি বাজার ইকরা বাজারের পিছনে এলাকায় আত্মগোপনে আওয়ামী লীগ নেতার সহযোগীতায় বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে । ফরহাদ আশুলিয়ার বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে জবরদস্তি মূলক চাঁদা আদায় করে, দোকানে ইয়াবা ফেলে, ঔষধের দোকানে মেয়াদ বিহীন ঔষধ ফেলে, বিভিন্ন দোকান থেকে জোড় পূর্বক টাকা আদায় করে আসছে। যুবলীগ নেতা শফিক ও ফরহাদ এখন এলাকা বাসীর গলার কাটা। একাধিক নাশকতা ও হত্যা মামলার আসামি হয়েও দিব্বি ঘুরে বেড়াচ্ছে। এছাড়াও, ফরহাদ হোসেন মিথ্যা মামলা দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া, অবৈধ সুদ ব্যবসা চালানো এবং স্থানীয় যুবলীগ নেতাদের সঙ্গে যোগসাজশে জমি দখলের মতো কাজে জড়িত রয়েছে । আশুলিয়া থানা পুলিশ জানিয়েছে ফরহাদ হোসেন এর আগে একটি প্রতারণা মামলায় গ্রেফতার হয়। বর্তমানে এলাকায় এসে আবার ও প্রতারণা করা সহ অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ।

 

আশুলিয়ার বাসিন্দারা ফরহাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তারা বলছেন, ” এখন ফরহাদ হোসেন বিভিন্ন সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে ব্যবসায়ীদেরকে হয়রানি করছে এবং টাকা আদায় করছে। যদি দ্রুত তাকে গ্রেফতার না করা হয়, তাহলে এলাকার শান্তি ভেঙে পড়বে” ।

 

এবিষয়ে ফরহাদ হোসেন এর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তা সম্ভব হয়নি।

 

ফরহাদের মতো অপরাধীরা যখন রাজনৈতিক পরিচয় ও প্রশ্রয় পেয়ে আইনের চোখে ফাঁকি দিতে পারে তখন সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে। পুলিশ ও প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে এলাকাবাসীকে ন্যায় বিচার দেবে এমনই প্রত্যাশা স্থানীয়দের। এলার সকলের এখন একটাই প্রশ্ন সুদ ও জুয়ার (ক্যাসিনো) ব্যাবসায়ী ফরহাদ হোসেনের খুঁটির জোর কোথায়?

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম