
স্টাফ রিপোর্টার:
তালিকাভুক্ত খাদ্য খাতের প্রতিষ্ঠান তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম পিএলসির শেয়ার অধিগ্রহণ, সীমান্ত ব্যাংকের সঙ্গে ঋণচুক্তির বিপরীতে জামানত ও আর্থিক তথ্য প্রকাশ সংক্রান্ত বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে চলমান তদন্ত কার্যক্রমে আরও ৪৫ কার্যদিবস সময় বৃদ্ধি করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
কমিশনের এক চিঠির মাধ্যমে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট তদন্ত কমিটিও সময় বাড়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল বিএসইসি প্রথম তদন্ত আদেশ জারি করে। কমিশনের মূল্যায়নে উঠে আসে, তৌফিকা ফুডসের শেয়ার অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া, ব্যাংক ঋণের বিপরীতে শেয়ার জামানত এবং আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এসব বিষয় পুঁজিবাজার ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর স্বার্থে গভীরভাবে খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
কমিশনের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন—বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আল মাসুম মৃধা, সহকারী পরিচালক শরিফুল ইসলাম এবং নাভিদ হাসান খান। পূর্ব নির্ধারিত সময়সীমা ছিল ৬০ কার্যদিবস, যা শেষ হওয়ার আগেই সময় বাড়ানোর আবেদন করে কমিটি।
বিএসইসির তদন্ত আদেশ অনুযায়ী, তদন্ত কমিটিকে কিছু বিষয় নির্ধারণ করে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। সেগুলো হলো- তৌফিকা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড কীভাবে ১ কোটি ১৫ লাখ শেয়ার অধিগ্রহণ করেছে; শেয়ার বিক্রির প্রস্তাব কীভাবে অনুমোদিত ও বাস্তবায়িত হয়েছে; লেনদেনটি আন্তর্জাতিক হিসাব মান (IAS 24) অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিবেদনে যথাযথভাবে প্রকাশ করা হয়েছে কি না; চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি সীমান্ত ব্যাংকের পাঠানো চিঠিতে উল্লিখিত ৫০ লাখ শেয়ার জামানত রাখা সংক্রান্ত তথ্যের সত্যতা; স্টক ব্রোকারেজ হাউস ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ভূমিকা, আইন অনুযায়ী যথাযথ ছিল কি না।
২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সমাপ্ত হিসাববছরে তৌফিকা ফুডস ২০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করে, যার মধ্যে ১০ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস। একই সময়ে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় (EPS) দাঁড়ায় ১.৪৩ টাকা, যা আগের বছরের ১.২৪ টাকা থেকে বেড়েছে। শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (NAV) ছিল ১৩.৩৭ টাকা।
২০২১ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া তৌফিকা ফুডসের পরিশোধিত মূলধন ৯৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা, মোট শেয়ারের সংখ্যা ৯ কোটি ৩৫ লাখ। ২০২৫ সালের ৩১ মে পর্যন্ত কোম্পানির শেয়ারহোল্ডিং নিম্নরূপ: উদ্যোক্তা/পরিচালক: ৩৮.৬৬%; প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী: ২২.৮২% এবং সাধারণ বিনিয়োগকারী: ৩৮.৫২%।
বিএসইসি বলেছে, তদন্ত কার্যক্রমের সময় বাড়ানো হলেও আদেশে উল্লিখিত অন্যান্য শর্তাবলী অপরিবর্তিত থাকবে। তদন্ত কমিটির কাজ সম্পন্ন হলে তা কমিশনে প্রতিবেদন আকারে জমা দিতে হবে, যা পরবর্তীতে কোম্পানির বিরুদ্ধে সম্ভাব্য ব্যবস্থা নির্ধারণে কাজে লাগবে।