
ডেস্ক রিপোর্ট:
নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামীলীগের আশীর্বাদপুষ্ট পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন কাজী আলমগীর। আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করেন।
পরবর্তীতে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এর সাবেক চেয়ারম্যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিএস-১ মোঃ নজরুল ইসলাম খান (এন আই খান) ১১ জানুয়ারি ২০২৪ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে, আস্থাভাজন কাজী আলমগীরকে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়। নিয়োগ পাওয়ার পর তিনি ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এ নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। গড়ে তোলেন এক নিজস্ব সিন্ডিকেট। তাদের দিয়ে তথ্য গোপন করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বড় অংকের সুদ মওকুপ এবং নিয়ম বহির্ভূত আমানত নগদায়ন সহ যাবতীয় অনিয়মে যুক্ত হন। হাতিয়ে নেন বড় অংকের অর্থ।
এসব অভিযোগ লিখিত আকারে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানালে তারা একটি তদন্তের নির্দেশ দেয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখের অভ্যন্তরীন তদন্ত প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন কর্মকর্তার অনিয়ম খুঁজে পায় তদন্ত সংস্থা। তদন্ত সংস্থাকে ম্যানেজ করেন প্রতিষ্ঠানের এমডি কাজী আলমগীর।
রহস্যজনক কারনে অভিযুক্তদের বরখাস্ত না করে উল্টো বেতন বৃদ্ধি সহ পদোন্নতি দেওয়া হয়। অভিযুক্তদের মধ্যে মানব সম্পদ বিভাগের প্রধান জসিম উদ্দিন খান, সিএফও আবু বকর সিদ্দিক, কোম্পানী সচিব আসাদুজ্জামান, চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এডভোকেট শিহাবুর রহমান এবং লায়াব্যালিটি অপারেশন বিভাগের প্রধান সাহানা আক্তার সীমা। উক্ত কর্মকর্তাদের অনিয়ম স্বত্তেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি বরং হাইকোর্ট কর্তৃক নব নিযুক্ত পরিচালনা পর্ষদ অভিযুক্তদের বরখাস্তের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না করে অনিয়মকারীদের বহাল তবিয়্যতে রেখেছেন।
ইতোপূর্বে কোম্পানী সচিব আসাদুজ্জামানের সাথে যোগশাজসে ভুয়া মিনিটস বানিয়ে অনৈতিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেছেন। যা নতুন পর্ষদের নজরে আসে।
সম্প্রতি খেলাপি ঋণ গ্রাহক এভারবেস্ট টেক্সটাইল লিমিটেডের সুদ মওকুপ স্মারকে তথ্য গোপন করে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ব্যাতীত বড় অংকের সুদ মওকুপ করার অপচেষ্টা করেন এমডি।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী আলমগীরের অনিয়ম সমূহ ফাইন্যান্স কোম্পানী আইন ২০২৩ এর ১৯ (১) গ, ঘ, ঙ, চ এর আওতায় শাস্তিযোগ্য এবং স্বীয় পদ হতে বরখাস্ত হওয়ার মত অপরাধ।
হাইকোর্ট কর্তৃক নব নিযুক্ত পর্ষদের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত সমূহ বাস্তবায়ন না করা সহ বিবিধ অনিয়মে যুক্ত থাকায় ১৮ মে ২০২৫ তারিখে হাইকোর্ট কর্তৃক নিযুক্ত চেয়ারম্যান জনাব মোঃ মাহবুবুল হক কারন দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন এবং তিন দিনের মধ্যে এর ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। উক্ত কারন দর্শানোর নোটিশের অনুলিপি বাংলাদেশ ব্যাংক এবং মহামান্য হাইকোর্টে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য পাঠানো হয়েছে।
অন্যদিকে সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ নজরুল ইসলাম খানের পরিচালনা পর্ষদের সময়কালীন যাবতীয় কার্যক্রম, বিভিন্ন রকম আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি, বিধিবহির্ভূত কর্মকান্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশিত অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রতিবেদন, অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা, রেফটাইলস ফার্ম লিমিটেড এর নিলামের দলিল, এ এন্ড পি ব্যাটারি ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং এভারবেস্ট টেক্সটাইল লিমিটেড এর সুদ মওকুপ সংক্রান্ত যাবতীয় নথি, আমানত নগদায়নের যাবতীয় তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে অনিয়ম তদন্তকারি সংস্থা ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট-সিআইডি।