সব বিষয়ে একমত হওয়ার কোনো বিষয় নেই: আলী রীয়াজ

ডেস্ক রিপোর্ট:

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, আমি বারবার বলেছি। দলগুলোর সঙ্গে আলাদা বৈঠকের সময় সুস্পষ্টভাবে বলেছি কমিশন কিছু চাপিয়ে দিচ্ছে না। সব বিষয়ে একমত হওয়ার কোনো বিষয় নেই। আমরা সব বিষয়ে একমত হবও না।

সোমবার (৭ জুলাই) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১০ দিনের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আজকের আলোচ্য সূচিতে রয়েছে- উপজেলা পর্যায়ে অধস্তন আদালতের সম্প্রসারণ, জরুরি অবস্থা ঘোষণা এবং নারী প্রতিনিধিত্ব।

প্রাথমিক প্রস্তাবে সংবিধানের মূলনীতিতে বহুত্ববাদ নিয়ে দলগুলোর আপত্তি থাকায় সংশোধিত প্রস্তাবে তা ছিল না জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, একইভাবে চার প্রদেশে ভাগের প্রস্তাবে দলগুলোর দ্বিমতের কারণে উপস্থাপন করা হয়নি। সব বিষয়ে একমত হওয়া যাবে না। তবুও আমাদের চেষ্টা করতে হবে। যেগুলো বাদ দিয়ে যে সমস্ত জায়গায় আমরা একমত হতে পারি, সেই জায়গায় যেন আমরা আসতে পারি, সেই চেষ্টা আমাদের থাকতে হবে।

সংলাপে বেশ কিছু বিষয়ে অগ্রগতি অর্জন হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, কিছু বিষয় আলোচনা হয়েছে এবং কিছু কিছু বিষয় এখনো উপস্থাপন করিনি। তার মধ্যে একটি নতুন বিষয় আজকে উপস্থাপন করব।

সংশোধিত প্রস্তাবের বিষয়ে দলগুলোর দলীয় এবং রাজনৈতিক বিবেচনা থাকবে জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, আমরা বিভিন্নভাবে দেখছি সবাই আলোচনার মাধ্যমে চেষ্টা করছে এক জায়গায় আসা, ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা। এই প্রক্রিয়ায় যা হচ্ছে কোনো বিষয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে প্রস্তাব ছিল। কিন্তু আলোচনার মধ্য সেটা সংশোধন করার প্রয়োজন দেখা দিচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি যাতে রাজনৈতিক দলগুলোর সেন্টিমেন্ট, বক্তব্যগুলোকে ধারণ করে সংশোধিতভাবে উপস্থাপন করা।

সংশোধিত প্রস্তাব তৈরিতে কমিশন ধারাবাহিক বৈঠক করছে জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, সংশোধিত প্রস্তাবগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্যকে ধারণ করে তৈরি চেষ্টা হচ্ছে। সেটা আমরা অব্যাহত রাখব। এতে করে যাতে কোনোরকম ভুল বুঝাবুঝি বা বিভ্রান্তির চেষ্টা না হয়। আমাদের দিক থেকে আন্তরিক ও সর্বাত্মকরণের চেষ্টা হচ্ছে আপনাদের বক্তব্য, আকাঙ্ক্ষা সঙ্গে সামঞ্জস্য বিধান করা।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আলোচনা করা কমিশনের প্রধান লক্ষ্য জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করি আপনাদের জায়গায় আসতে। ফলে এই সংশোধিত ভাষ্যগুলো হচ্ছে আপনাদের আলোচনার বিষয়ের গুরুত্ব বিবেচনা।

জুলাই মাসজুড়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচির বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি বলেন, আপনাদের কর্মসূচি একটু অসুবিধা সৃষ্টি করবে। তবুও আমরা আশা করছি, আপনারা সেক্ষেত্রে আমাদের জায়গাতে একত্রে বসতে পারি। তবে সময়ের একটা স্বল্পতা আছে সেগুলো আপনারা নিশ্চয় বিবেচনা করবেন।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত আছেন- কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং ড. আইয়ুব মিয়া।

 

 

শান্তিরক্ষা মিশন থেকে দেশে ফেরত আসছে পুলিশের একটি কন্টিনজেন্ট

ডেস্ক রিপোর্ট:

ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত বাংলাদেশ পুলিশের একটি কন্টিনজেন্ট দেশে ফেরত আসছে। আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে তাদের প্রত্যাবর্তনের কথা হয়েছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের বাজেট স্বল্পতার কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সূত্র বলছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি (ইউএন–অপারেশন) আব্দুল্লাহ আল মামুন সমকালকে বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে আমরা অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছি। মিশনের বাজেট ঘাটতির কারণে একটি কন্টিনজেন্ট ফেরত আসবে। বাজেট সমস্যার দূর হলে আবার হয়তো কঙ্গো বা অন্য কোনো দেশে প্রয়োজন হলে নতুন কন্টিনজেন্টকে ডাকা হবে।

৭৫ নারী পুলিশসহ ১৮০ সদস্যের ওই কন্টিনজেন্ট ২৬ আগস্ট কঙ্গোতে পৌঁছায়। প্রশিক্ষণ শেষে তারা ১০ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যক্রম শুরু করে। তারা কঙ্গোর কিংশাসায় দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। বুধবার থেকে তাদের অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ আছে। ২০০৫ সাল থেকে কঙ্গোতে দায়িত্ব পালন করে আসছে পুলিশ কন্টিনজেন্ট।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কঙ্গো ছাড়া এই মুহূর্তে বাংলাদেশ পুলিশের আর কোনো কন্টিনজেন্ট জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নেই। কঙ্গোতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালনকারী ক্যামেরুন, সেনেগাল ও মিশরের মতো দেশের কন্টিনজেন্টও আংশিকভাবে কমানো হবে। তবে বাংলাদেশের কন্টিনজেন্ট পুরোপুরি ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।আরেকটি সূত্র জানায়, ২০ অক্টোবরের মধ্যে বাংলাদেশ পুলিশের কন্টিনজেন্টকে ফেরত পাঠানোর কথা হয়েছে। তবে কিছু সংখ্যক সদস্য হয়ত আরও কিছু দিন সেখানে অবস্থান করে প্রশাসনিক ও লজিস্টিক কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন। সরঞ্জাম ফেরত আনতে তা গোছানোর কাজটি করবেন তারা। ফেরত পাঠানোর সময় না বাড়লে অধিকাংশ সদস্য নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফেরত আসবেন।সম্প্রতি রয়টার্স ও এএফপির প্রতিবেদনে উঠে আসে, আগামী কয়েক মাসে বিশ্বব্যাপী নয়টি মিশন থেকে অন্তত ২৫ শতাংশ শান্তিরক্ষী কমাবে জাতিসংঘ। এমন সিদ্ধান্তের মূল কারণ অর্থের ঘাটতি। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ তহবিলের অনিশ্চয়তা। এর কারণে ১৩ থেকে ১৪ হাজার সৈন্য ও পুলিশ এবং উল্লেখযোগ্য বেসামরিক কর্মী এই ছাঁটাইয়ের আওতায় আসবেন।জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখে ওয়াশিংটন। যুক্তরাষ্ট্র মিশনের প্রায় ২৬ শতাংশ তহবিলের যোগান তারা দেয়। তাদের পর রয়েছে চীন, দেশটি তহবিলের প্রায় ২৪ শতাংশ দেয়।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সুনামের সঙ্গে  কাজ করছেন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা। শান্তিরক্ষী পাঠানোর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। শান্তিরক্ষী পাঠানোর দেশ হিসেবে নেপাল শীর্ষে। দ্বিতীয় অবস্থানে রুয়ান্ডা। ১৯৮৯ সাল থেকে বাংলাদেশ পুলিশ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। পুলিশের প্রথম মিশন ছিল নামিবিয়ায়। ২০২৫ সালের মে মাস পর্যন্ত বাংলাদেশ পুলিশের ২১ হাজারেরও বেশি কর্মকর্তা বিশ্বজুড়ে ২৪টি দেশে ২৬টি মিশনে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র, দক্ষিণ সুদান ও মধ্য আফ্রিকা। বর্তমানে দক্ষিণ সুদান ও মধ্য আফ্রিকায় আইপিও সদস্য হিসেবে কিছু সংখ্যক পুলিশ সদস্য শান্তিরক্ষা মিশনে কাজ করছেন।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম