জুয়ার ফাঁদে নিঃস্ব হচ্ছেন তরুণরা

মেহেরপুর প্রতিনিধি॥

মেহেরপুরের মুজিবনগর আদর্শ মহিলা কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক নুরুল ইসলাম এবং অফিস সহকারী কাম হিসাবরক্ষক জামান উদ্দিন। কলেজে শিক্ষাদান তাদের কাজ হলেও তারা অনলাইন জুয়ার প্ল্যাটফর্ম বসিয়ে এলাকার যুবসমাজকে ফেলেছেন হুমকির মুখে। তাদের ফাঁদে পড়ে যুবক থেকে শুরু করে নানা পেশার মানুষ হয়েছেন নিঃস্ব।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালে প্রভাষক নুরুল ইসলাম ওরফে লালন মাস্টার ঢাকার একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। সেই চাকরি ছেড়ে ২০২২ সালে এলাকায় এসে জামান উদ্দিন ওরফে জামান মাস্টারের সঙ্গে মিলে কোমরপুর বাজারে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের একটি এজেন্ট ব্যাংকিং শাখা খোলেন। এর চার মাস পর তারা মেহেরপুর জেলায় অনলাইন জুয়ার প্রথম এজেন্টশিপ আনেন মুকুল নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে। সে সময় নুরুল ও জামান নিজেদের ডাচ্-বাংলা ব্যাংক থেকে মুকুলকে এজেন্ট সিম ও জুয়ার ব্যবসা পরিচালনার টাকা দেন। এক পর্যায়ে জুয়া খেলে মুকুল টাকা নষ্ট করতে শুরু করলে জামান ও নুরুল মাস্টার তার মাধ্যমে অনলাইন জুয়া পরিচালনার জন্য আলাদা কয়েকটি চ্যানেল বের করে নেন। জামান মাস্টারের চ্যানেলের নাম ‘জামান নগদ’, ‘জামান রকেট’ ও ‘জামান উপায়’। আর নুরুল ওরফে লালন মাস্টারের চ্যানেলের নাম ‘ড্রাগন বিকাশ’, ‘ড্রাগন নগদ’, ‘ড্রাগন রকেট’ ও ‘মেলবেট চ্যানেল’। এর পর থেকে জামান ও নুরুল যৌথভাবে অনলাইন জুয়ার ব্যবসা চালাতে থাকেন। এ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়।

অনলাইন জুয়ার পাশাপাশি নুরুল মাস্টার আদম ব্যবসাতেও হাত পাকান। এলাকায় অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বিদেশে না পাঠানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি মেহেরপুর জেলার কয়েকজন তরুণকে রাশিয়ায় নিয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামিয়ে দিয়েছিল একটি চক্র। এই চক্রে নুরুল মাস্টারের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

মুজিবনগর আদর্শ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ওমর খৈয়াম উষা বলেন, ‘এর আগে দুজনের বিরুদ্ধে অনলাইন জুয়ায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে মামলার খবর পেয়ে তাদের শোকজ করেছিলাম। তারা শোকজের উত্তর দিয়েছিলেন। এরপর আমাদের কিছুই করার ছিল না। কলেজের কাজ শেষে বাইরে তারা কী করেন, সেটি আমার জানার বা দেখার বিষয় নয়। তবে বিদেশে পাঠানোর নাম করে অনেকের কাছ থেকে নুরুল মাস্টার টাকা নিয়েছেন। ভুক্তভোগীরা আমার কলেজে এসে অভিযোগ দিয়েছেন। আমি যতটুকু জানি কিছু জমি বিক্রি করে নুরুল সেই টাকা পরিশোধ করেছেন।’

অভিযোগের বিষয়ে নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। বর্তমানে আমি খুবই মানবেতর জীবনযাপন করছি। সিটি ব্যাংকের একটি এজেন্ট আউটলেট ছাড়া আমার এখন আর কিছুই নেই। জমি-বাড়ি সব বিক্রি করে দিয়েছি। দোয়া করবেন যেন আমার তিনটি মেয়ে নিয়ে কোনো রকমে ডাল-ভাত খেয়ে বেঁচে থাকতে পারি।’

বিদেশে লোক পাঠানোর নামে টাকা আত্মসাতের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘একটা ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল। উনার ওপর বিশ্বাস করে কীভাবে যে কী করেছিলাম! এখন আমি সম্পূর্ণ নিঃস্ব।’ তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ক্ষেত্রে লোক পাঠানোর অভিযোগের বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।

অন্য অভিযুক্ত জামান উদ্দিন বলেন, ‘মেহেরপুর জেলায় আমি প্রথম ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট পয়েন্ট নিয়ে এসেছি। আমি ও আমার স্ত্রী দুজনই চাকরি করে। কিছু জমি জায়গা কিনেছি। অল্প সময়ের মধ্যে আমার উন্নতি দেখে কোমরপুর গ্রামের অনেকেই হিংসায় আমার নামে এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাদের কথা শুনে আপনি আমার বিরুদ্ধে লিখলে সেটি সঠিক হবে না।’

জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ  বলেন, ‘আপনি যেটা বলছেন সেটা অভিযোগ মাত্র, প্রমাণিত কিছু না। এজন্য এ বিষয়ে আমি কোনো কথা বলব না। তবে বিষয়টি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে খতিয়ে দেখতে বলব।’

মেহেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার  বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে আছে। তদন্ত চলছে। অনলাইন জুয়ায় সম্পৃক্ত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।’

ভালোবাসার টানে তুরস্কের যুবক সিরাজগঞ্জে

ইসরাফিল শেখ(সিরাজগঞ্জ) শাহজাদপুর:

প্রেম এই পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী শক্তিগুলির মধ্যে একটি। প্রেম মানে না কোন বাধা। তাইতো সাড়ে ৪ হাজার কিলোমিটার দূরত্ব পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশী তরুণীর প্রেমের টানে তুরস্কের যুবক ছুটে এলেন বাংলাদেশে।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরুপ লীলাভূমি এই বাংলাদেশ। অপরুপা এ দেশের সবুজ বন বনানী, সুবিশাল সমুদ্র উপকূলবর্তী বন,
বনরাজি, নদনদী, শ্যামল পাহাড়, বিস্তীর্ণ সমুদ্র সৈকত, প্রাচীন ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনসমূহ যুগ যুগ ধরে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ভ্রমণ পিপাসু উৎসাহী মানুষকে আকৃষ্ট করে আসছে।

তাইতো গ্রামের সহজসরল মানুষের জীবন যাপনে মুগ্ধ হয়ে তুরস্কের এই যুবক হাজার হাজার মাইলের দূরত্ব ভালোসার পরাজিত করে ৩ বছরের প্রেমের সম্পর্ককে মূল্য দিতে বিয়ে করে ফেললেন বাংলাদেশী তরুণী মল্লিকাকে।

মল্লিকা সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের কাকিলামারি গ্রামের দলিল লেখক কামরুজ্জামান মানিকের কন্যা। ৩ বছর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইনস্ট্রাগ্রামে নিজের আইডিতে নিজের ছবি পোস্ট করেন মল্লিকা।সেই ছবি দেখে পছন্দ করে ফেলেন তুরস্কের যুবক মুস্তফা ফাইক।

এরপর থেকে শুরু হয় ভাবের আদান প্রদান। তারপর শুরু হয় প্রেম। দীর্ঘদিনের প্রেমের পরিণতি দিতে সাড়ে ৪ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে গত রবিবার বাংলাদেশে আসেন তুরস্কের যুবক মুস্তফা ফাইক। অবশেষে দুই পরিবারের সম্মতিতে মুস্তফা এবং মল্লিকা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন সোমবার রাতে। ভিসা প্রসেসিং শেষে তুরস্কে পাড়ি দিবেন বলেও জানান এই দম্পতি।

মুস্তফা ফাইকের সাথে কথা হলে তিনি জানান, বাংলাদেশে এসেছেন প্রেমের টানেই এবং পরিবারের সম্মতিতেই বিয়ে করেছেন মল্লিকাকে। তাকে বিয়ে করতে পেরে তিনি আনন্দিত। সেই সাথে বাংলাদেশের মানুষ ও প্রকৃতি অনেক সুন্দর বলে জানান এই যুবক।

এদিকে মল্লিকা জানান তিন বছরের সম্পর্ক মুস্তফা ফাইকের সাথে। আমার পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হওয়ায় আমি অনেক খুশি আমার মনের মানুষকে পেয়ে ।ভিসা প্রসেসিং হলে স্বামীর সাথে পাড়ি জমাবেন তুরস্কে।

মল্লিকার মা ও স্বজনেরা এমন বিয়ে মেনে নিয়ে তারাও আনন্দ প্রকাশ করেছেন। অপরদিকে এলাকাবাসী এ খবর পেয়ে দলে দলে ভীড় জমাচ্ছে মল্লিকার বাড়িতে।এলাকার সকলেই বিদেশি জামাই দেখতে পেরে খুশিতে আত্মহারা হয়ে উঠেছে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম