
জেলা প্রতিনিধিঃ
চট্টগ্রামে স্ত্রীকে ১১ টুকরা করে হত্যা করেছে এক পাষণ্ড স্বামী। হত্যাকাণ্ডের পর স্থানীয়রা নিহত গৃহবধূর স্বামীকে আটকে রাখলেও গ্রিল কেটে পালিয়ে যেতে সমর্থ হন তিনি। পারিবারিক কলহের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড, বলছে পুলিশ।
বুধবার (৯ জুলাই) দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে অক্সিজেন এলাকার পাহাড়িকা হাউজিং সোসাইটির এফজে টাওয়ারের ১০তলায় এ ঘটনা ঘটেছে।
চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ থানার পাহাড়িকা আবাসিক এলাকায় দেড় মাস আগে এ জেড টাওয়ারের দশম তলায় বাসা ভাড়া নেয় সুমন ও ফাতেমা। তাদের সিফাত নামে আট বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বুধবার রাতে প্রতিবেশীরা রাতের দিকে ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ ও অস্বাভাবিক নড়াচড়ার শব্দ পেতে থাকে।
এফ জে টাওয়ারের কেয়ারটেকার বলেন, ‘মুষল ধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। এর মধ্যে ফ্ল্যাট থেকে বিভিন্ন ধরনের শব্দ আসছিল। আমিসহ আরও কয়েকজন নিয়ে কিসের শব্দ দেখতে যায়। দশম তলায় গেলে দরজা বন্ধ করে রাখে নিহতের স্বামী। পরে খুললে টুকরো অবস্থায় ফাতেমা বেগমের লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। লাশ ১১ টুকরো করে ঘরের বিভিন্ন জায়গায় ফেলে রাখা হয়। এ সময় আমিসহ স্থানীয়রা মিলে নিহত গৃহবধূর স্বামীকে ধরে ঘরে আটকে রাখি। তবে, রুমের জানালার গ্রিল কেটে দশ তলা থেকে সে পালিয়ে যেতে সমর্থ হয়।’
এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘দেড় মাস আগে তারা ঘর ভাড়া নেয়। বাসা ভাড়া নেয়ার কয়েকদিন পর ফাতেমা বেগম চলে যান। আবার কিছুদিন পর ফিরে আসে। তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিল বলে মনে হয়।’
স্থানীয় কদির নামে এক বাসিন্দা জানান, মরদেহ উদ্ধারের সময় ফ্ল্যাটটির দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। নৃশংস এ ধরনের হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। পাষণ্ড স্বামীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
সিএমপির অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার মাহমুদা বেগম বলেন, ‘পারিবারিক কলহের জেরে এ হত্যাকাণ্ড বলে ধারনা করছি। নিহতের স্বামী পলাতক থাকলেও তাকে ধরতে অভিযান চলছে।’
এ বিষয়ে বায়েজিদ থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘ফাতেমা (৩২) এক গৃহবধূকে গলা কেটে টুকরো, টুকরো করে হত্যা করেছে ঘাতক স্বামী। তিনি ওই ফ্ল্যাটেই স্বামী সুমনের সঙ্গে থাকতেন। তার বাবার নাম কামাল উদ্দিন। তাদের সিফাত নামে আট বছরের একটি ছেলে সন্তান আছে। পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে হত্যা করা হয় বলে ধারণা করছি। ওই নারীকে হত্যায় ছুরি ও চাপাতি ব্যবহার করা হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে টুকরা টুকরা করা হয়েছে। হাড় থেকে মাংস কেটে ফেলা হয়েছে। ১১টি টুকরা ঘরের মেঝেতে ফেলে রেখে পালিয়ে যান খুনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সুরতহাল শেষে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। নিহত ফাতেমা গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলায় বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে তারা চট্টগ্রামে বসবাস করতেন।
সুমন পেশায় ছিলেন গাড়িচালক। নিহত ফাতেমার বাড়ি কুমিল্লা সদর দক্ষিণে। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। ঘটনার সময় সন্তান সিফাত আত্মীয়ের বাসায় ছিলেন।’