জেলা প্রতিনিধি:
চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের (বিআরডিবি) এক নারী মাঠ সংগঠকের (ঋণের কিস্তি আদায়কারী) বিরুদ্ধে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় এক অসুস্থ নারীকে অফিসে তালাবদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। ওইসময় ওই কর্মকর্তা বাজারে গিয়ে ফিরে এসে নামাজ পড়েছেন। ওষুধ খেয়েছেন বলেও জানান তিনি নিজেই।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে জীবননগর উপজেলা বিআরডিবি কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
কথা বলে জানা যায়, ভুক্তভোগী নুরুন নাহার (৪৭) ১৪ মাস আগে বিআরডিবি থেকে তিন লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। ঋণের কিস্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার চার মাস পার হলেও তিনি পুরো টাকা পরিশোধ করতে পারেননি। বৃহস্পতিবার তিনি তার ছোট ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করতে অফিসে যান। এসময় ঋণের পুরো টাকা না দেওয়ায় তাকে অফিসের বারান্দায় তালাবদ্ধ করে রাখা হয় বলে অভিযোগ করেন স্বজনরা।
নুরুন নাহারের ছোট ছেলে (নাম প্রকাশ করেননি) কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার মা অসুস্থ। অনেক কষ্টে ১০ হাজার টাকা নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু তারা বললো পুরো টাকা না দিলে কিছু হবে না। এরপর আমার মাকে অফিসের বারান্দায় তালা দিয়ে রেখে যায়।
অভিযোগের বিষয়ে বিআরডিবির মাঠ সংগঠক আবেদা খাতুন বলেন, তিনি (নুরুন নাহার) কিস্তির টাকা ফেরত দিচ্ছেন না। বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও টাকা দেননি। এজন্য অফিস থেকে আমার বেতন বন্ধ করে দিয়েছে।
পরে পুলিশকে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি ওনাকে অফিসে রেখে বাজারে গিয়েছিলাম। এরপর আমার রুমে গিয়ে নামাজ পড়েছি, ওষুধ খেয়েছি। এখন অফিসে এসে দেখি এত মানুষ জমে গেছে। এখনই তালা খুলে দিচ্ছি।
অফিস কক্ষে তালাবদ্ধ থাকা অবস্থায় নুরুন নাহার বলেন, আমি বলেছি, সব টাকা দিয়ে দেবো। এখন একসঙ্গে দিতে পারছি না। আমার কোনো কথাই তিনি শোনেনি। আমি অসুস্থ তবুও আমাকে তালাবদ্ধ করে রেখে চলে গেছেন।
তিনি বলেন, আমাকে বাথরুমে ঢুকাতে চেয়েছিলেন, সেখানে আটকে রাখবেন বলে। আমি না গেলে এখানেই আটকে রেখে তালা মেরে চলে গেছেন। একথা বলেই কান্নায় ভেঙে ওই পড়েন ভুক্তভোগী ওই নারী।
পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে রাত ৮টার দিকে জীবননগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তালা খুলে নুরুন নাহারকে উদ্ধার করে।
জানতে চাইলে জীবননগর উপজেলা বিআরডিবি কর্মকর্তা জামিল আখতার বলেন, খবর পেয়ে আমি তাৎক্ষণিকভাবে অফিসে ছুটে আসি। এটি অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
এ ঘটনায় জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন বিশ্বাসের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ মাসুদ || বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ২১/১ নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০ || মোবাইল : ০১৫১১৯৬৩২৯৪,০১৬১১৯৬৩২৯৪ || ই- মেইল: dailysobujbangladesh@gmail.com || ওয়েব : www.dailysobujbangladesh.com
Copyright © 2025 দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ. All rights reserved.