আট দিনের রিমান্ডে সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর

ডেস্ক রিপোর্ট:

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন কেন্দ্রিক রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার পৃথক দুই হত্যা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলমের আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বুধবার (১৬ জুলাই) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইশতিয়াকের আদালত এ আদেশ দেন। এদিন তাকে আদালতে হাজির করে যাত্রাবাড়ী থানাধীন রাসেল বকাউল ও রিটন উদ্দিন হত্যার পৃথক দুই মামলায় পাঁচ দিন করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক মো. শাহানুজ্জামান ও সারোয়ার জাহান।

আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখী রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে দুই মামলায় তার আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

রাসেল হত্যা মামলার সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানার সামনের সড়কে আন্দোলনে অংশ নেন ভুক্তভোগী রাসেল বকাউল (২২)। এ সময় পুলিশের হামলায় গুলিবিদ্ধ হন তিনি। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাসেলকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ২৮ আগস্ট নিহতের বড়ভাই হাসনাত বাকাউল বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন।

রিটন হত্যা মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হন রিটন উদ্দিন। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত ২৯ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা হয়।

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল ও অতিরিক্ত সচিব-যুগ্মসচিবসহ ৫ সহযোগীর বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু 

স্টাফ রিপোর্টার:

ঘুষ লেনদেন এবং অর্থপাচারের অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল এবং এক অতিরিক্ত সচিব ও এক যুগ্মসচিবসহ পাঁচ সহযোগীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, তারা পুলিশে চাকরি, মামলা রেকর্ড, চার্জশিট থেকে আসামির নাম বাদ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিসে নিয়োগবাণিজ্য এবং মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বদলি বা পদায়ন করতেন।

এছাড়া লেনদেনকৃত অর্থ ঝুঁকি এড়াতে দেশের বাইরে পাঠানো হয়েছে বলে জানায় দুদক সংশ্লিষ্ট সূত্র।

বৃহস্পতিবার দুপুরে অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করেছে সংস্থাটি।

বিষয়টি  নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম।

দুদকের বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানায়, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন অতিরিক্ত সচিব ড. হারুন অর রশীদ বিশ্বাসের নেতৃত্বে যুগ্মসচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস, মন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মনির হোসেন, জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোল্লা ইব্রাহিম হোসেনকে নিয়ে একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠে। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পুলিশ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিসে নিয়োগবাণিজ্য এবং বিভিন্ন জেলায় গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে পদায়ন করতো এই সিন্ডিকেট।

এছাড়া পুলিশ সার্ভিসে লোভনীয় পদ এসপি হিসেবে বিভিন্ন জেলায় পদায়নের ক্ষেত্রে ৮০ লাখ থেকে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত লেনদেনের তথ্য উঠে এসেছে। এছাড়াও জেলা পুলিশ সুপার পদায়নের ক্ষেত্রে ১ থেকে ৩ কোটি টাকা লেনদেন করার বিষয়টি উঠে এসেছে। সিন্ডিকেটের বাইরে গিয়ে পুলিশের কেউ কোনো জেলায় বা গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন পাওয়া প্রায় অসম্ভব ছিল বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

অন্যদিকে বিভিন্ন বেসরকারি এনজিওকে এনওসি (NOC) দিতে কয়েকটি সংস্থা থেকে ৮০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পেয়েছে দুদক। ২০১৮ সালে রাজধানীর উত্তরার একটি উন্নয়ন সংস্থারকে (এনজিও) পুলিশের বিশেষ শাখা, জেলা প্রশাসক, এনএসআই ইতিবাচক প্রতিবেদন দিলেও তাদের অনুমোদন আটকে দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পরবর্তীতে ২০১৮ সালেরে ডিসেম্বরে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ৮৫ লাখ টাকা ফার্মগেট এলাকায় কামালের পরিবারের এক সদস্যকে বুঝিয়ে দিলে সেই সংস্থাকে অনুমোদন দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এছাড়া ২০২২ সালের ৩০ জুন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পান ডিআইজি মোল্ল্যা নজরুল ইসলাম। পাঁচ কোটি টাকার বিনিময়ে মোল্ল্যা নজরুলকে গাজীপুরের কমিশনার হিসেবে পদায়ন করা হয়। এর মাস খানেক আগে হারুন অর রশীদ বিশ্বাসের কাছে ৫ কোটি টাকার একটি চেক দেন মোল্ল্যা নজরুল। পরবর্তীতে গাজীপুরের কমিশনার হিসেবে নিয়োগের পর হোটেল ওয়েস্টিনে হারুন অর রশীদের কাছে নগদ ২ কোটি টাকা দেন তিনি। এসময় পূর্বের চেকটি ফেরত নিয়ে মোল্ল্যা নজরুল ৩ কোটি টাকার একটি চেক দেন।

পরবর্তীতে বাকি টাকাও দেওয়া হয়। এসব টাকা বস্তায় ভরে পৌঁছে দেওয়া হতো আসাদুজ্জামান খান কামালের ফার্মগেটের বাসায়।

অন্যদিকে মন্ত্রিপুত্র জ্যোতি পুলিশের এক কর্মকর্তাকে বদলি করতে গিয়ে ব্যর্থ হন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বদলি-পদায়ন বাণিজ্য নিয়ে তৎকালীন মন্ত্রী কামালের পরিবারে কলহ হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। কামাল তাকে বলেন হারুন অর রশীদের সঙ্গে কথা বলতে। এ নিয়ে গত জুন মাসে বাসায় কলহ তৈরি হয়। ক্ষুব্ধ হয়ে বাসায় ব্যাপক-ভাঙচুর করেন জ্যোতি।

এছাড়া ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্সে কোনো সার্কুলার হলেই মন্ত্রীর দপ্তর থেকে একটি তালিকা পাঠানো হতো। সে মোতাবেক তাদেরকে নিয়োগ দিতে ফায়ার সার্ভিসকে বাধ্য করতেন সাবেক এই মন্ত্রী। ২০২৩ সালে ২ অক্টোবর ৫৩৫ জনকে জনকে নিয়োগ দেয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। এর মধ্যে ছিলেন ৪৩৬ পুরুষ ফায়ার ফাইটার, ১৫ জন নারী ফায়ার ফাইটার ও ৮৪ জন গাড়িচালক। নিয়োগ কার্যক্রমের শুরুতেই মন্ত্রীর দপ্তর থেকে ২৫০ জনের একটি তালিকা পাঠানো হয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে। সাবেক এই মন্ত্রীর নির্দেশে সেই তালিকা মোতাবেক নিয়োগ দিতে বাধ্য হয় ফায়ার সার্ভিস।

সূত্রমতে, নিয়োগের জন্য জনপ্রতি ৮-১২ লাখ টাকা নিতো কামাল-হারুন সিন্ডিকেট।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
শিক্ষার্থীরা রোডম্যাপের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন শাকসু নির্বাচনের বিদেশ যেতে না পারায় মাইক ভাড়া করে এলাকাবাসিকে গালিগালাজ করলেন কিশোরগঞ্জের যুবক জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল গণফোরাম অন্যদেরও সই করার আহ্বান কমিশনের সূচক সাড়ে ৩ মাস আগের অবস্থানে লেনদেন ৪ মাসে সর্বনিম্ন আওয়ামীলীগ ফিরলে হাসিনার পা ধরেও মাফ পাবেন না: রাশেদ খান বিমানবন্দর অগ্নিকান্ডে পুড়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম কুমিল্লায় গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পালিয়েছেন স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজন ঢাকা এলজিইডিতে দুর্নীতির একচ্ছত্র অধিপতি বাচ্চু মিয়া বিমান বন্দরের সামনে এখোনো উৎসুক জনতার ভীড় নেভেনি আগুন বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি শিক্ষকদের