গফরগাঁও থেকে পালাতক আওয়ামী দোষর রাজউক ইমারত পরিদর্শক আল নাইম মুরাদ

মাহতাবুর রহমান:

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা রাজউক ২০১৫ সালে যে সকল ইমারত পরিদর্শক নিয়োগ প্রদান করেছেন তার মধ্যে অনেকেই ছিলেন ছাত্রলীগের আবার অনেকেই ছিলেন আওয়ামী লীগের সুপারিশ প্রাপ্ত। গত ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে সাংবাদিকের উপর হাতুড়ি নিয়ে হামলা করা সোলাইমান হোসেন তাদের অন্যতম। এবার খুঁজে পাওয়া গেছে এই সোলাইমান হোসেনের ঘনিষ্ট বন্ধু ছাত্রলীগ কর্মী ও ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গফরগাঁও ময়মনসিংহ সংসদীয় আসনের ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল এর সুপারিশে রাজউকের ইমারত পরিদর্শক হিসেবে যোগদান করা আল নাইম মুরাদকে।

 

আল নাইম মুরাদের বিষয়ে অনুসন্ধান করতে দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ এর অনুসন্ধানী দল প্রথমেই পৌঁছায় তার নিজ গ্রাম সালটিয়ায়। ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও থানার একটি ইউনিয়ন এই সালটিয়া। অত্র ইউনিয়নের মোঃ আব্দুল মতিনের ছেলে আল নাইম মুরাদ ১৯৮৭ সালে জন্মগ্রহন করেন। সালটিয়ার আলো বাতাসে বেড়ে ওঠা এই আল নাইম মুরাদ ডিপ্লোমা-ইন-ইনঞ্জিনিয়ারিং (সিভিল) অধ্যায়নের সময় জড়িয়ে পড়েন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল ও আল নাইম মুরাদ এর বাড়ি কাছাকাছি হওয়ায় তাদের ভিতরে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে ২০১৫ সালে এই সংসদ সদস্য বাবেলের সুপারিশে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা রাজউক এ ইমারত পরিদর্শকের চাকুরি বাগিয়ে নেন আল নাইম মুরাদ। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর ২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট ছাত্র-জনতা এই আল নাইম মুরাদের পৈত্রিক বাড়িকে ঘেরাও করলে তিনি কোনোভাবে ঢাকাতে পালিয়ে আসেন বলে তথ্য রয়েছে। এবং তাকে পালাতে সহায়তা করেছেন ছাত্রদলের আব্দুল্লাহ আল বাপ্পি যিনি এই মুরাদের বন্ধু হিসেবেই পরিচিত।

 

আব্দুল্লাহ আল বাপ্পির কাছে এই আল নাইম মুরাদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে তাকে চিনতেই পারেননি। পরে তার কাছে ছবি পাঠানো হলে তিনি বলেন, আল নাইম মুরাদকে কখনোই আওয়ামী লীগের সাথে আমরা প্রকাশ্যে দেখিনি। তাহলে আল নাইম মুরাদকে কেন পালাতে হলো?

 

আল নাইম মুরাদ ছাত্রলীগের রাজনীতির চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজীর অভিজ্ঞতা কে কাজে লাগিয়েছেন এই রাজউকের কর্মস্থলে। চাকরি শুরুর কিছুদিন পরে যখন নিজের চেয়ার পাকাপোক্ত মনে করেছেন তখন থেকেই তিনি ত্রুটিপূর্ণ ভাবন মালিকদের নোটিশের মাধ্যমে ডেকে এনে মোটা অংকের চাঁদার বিনিময়ে সেই ফাইল গায়েব করে দিতেন। কিছু ভবন মালিকরা চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বাড়ির কিছুটা অংশ ভাঙ্গার অভিনয় করে ভয় দেখিয়ে তারপরে টাকা আদায় করতেন। তার এই কাজের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন রাজউকের আরও কয়েকজন কর্মকর্তা যাদের বিষয়েও অনুসন্ধান চলছে।

 

অভিযোগ রয়েছে আল নাইম মুরাদ যখন জোন ৩/১ এ কর্মরত ছিলেন তখন ইস্টার্ন হাউজিংয়ের আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠেছে একাধিক অপরিকল্পিত ভবন যেগুলো সম্পূর্ণরূপে রাজউকের বিধি বহির্ভূত।  এখন প্রশ্ন আসে রাজউকের একজন কর্মকর্তা দায়িত্বে থাকাকালীন অবস্থায় কিভাবে এই অপরিকল্পিত বিধি বহির্ভূত ভবন নির্মিত হল? তাহলে কী এই অনিয়মের পিছনে জড়িত রয়েছেন এই কর্মকর্তা?

 

অনুসন্ধানে আল নাইম মুরাদ এর বেশকিছু অনিয়মের তথ্য-উপাত্ত দৈনিক সবুজ বাংলাদেশের হাতে এসেছে। এই তথ্য-উপাত্ত বিশ্লষনের পরে তার দুর্নীতির খতিয়ান নিয়ে সংবাদ প্রকাশের প্রক্রিয়া চলমান রেখেছে দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ…

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম