মাগুরার আ’লীগ নেত্রী রিয়ার তৎপরতা নিয়ে তদন্ত চলমান

মাগুরার আ.লীগ নেত্রী রিয়ার গোপন তৎপরতা নিয়ে তদন্ত চলমান

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

মাগুরার শ্রীপুর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জোয়ার্দার স্বর্ণালী ওরফে রিয়া জোয়ার্দারের বিরুদ্ধে ঢাকায় অবস্থান করে সরকারবিরোধী নানা তৎপরতায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ভাড়া বাসায় অবস্থান করে তিনি রাজনৈতিক কর্মসূচি ও আর্থিক সহায়তা প্রদানসহ নানাবিধ গোপন কার্যক্রম পরিচালনা করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, রিয়া জোয়ার্দার বর্তমানে পলাতক রয়েছেন এবং সরকারের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ঢাকায় তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে মাগুরা ও ঢাকার বিভিন্ন থানায় প্রতারণা, মাদক ও চাঁদাবাজির একাধিক মামলা রয়েছে।

জানা গেছে, তিনি ক্ষমতাসীন দলের পলাতক সাবেক সাংসদ সাইফুজ্জামান শেখরের ঘনিষ্ঠ হিসেবে দীর্ঘদিন প্রভাব খাটিয়ে আসছিলেন। শ্রীপুর থানায় তার বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীতে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মামলা রয়েছে। এছাড়া যাত্রাবাড়ী থানায় ২০ কেজি গাঁজা উদ্ধারের ঘটনায় তার নাম আসামি হিসেবে উল্লেখ আছে।

অভিযোগ রয়েছে, রাজধানীর গুলশান ও ভাটারা থানা এলাকায় তিনি একটি চক্রের মাধ্যমে সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেল করে অর্থ আদায় করতেন। এ চক্রে শরীফুল জোয়ার্দার, ফাহিমা আক্তার, তাপস বিশ্বাস ও খলিল মৃধার নামও উঠে এসেছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইতিমধ্যে এসব বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে এবং বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।

তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে গুলশান বিভাগের ডিসি তারেক মাহমুদ বলেন, “আলোচিত এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে তথ্য যাচাই ও আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।”

এজিএম সালমা আক্তার অগ্রণী ব্যাংক শান্তিনগর শাখা

স্টাফ রিপোর্টার॥

অগ্রণী ব্যাংকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ হর হামেশাই উঠছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ঋণ প্রদানে নিয়ম লংঘন, অর্থ আত্মসাৎ, এবং জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ উত্তোলন। এই ধরনের ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ব্যাংকটির সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মামলা ও অনুসন্ধান করছে দুদক। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে অগ্রণী ব্যাংক ঋণ প্রদানে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতিতে অন্যতম। প্রভাবশালী ব্যক্তি ও আত্মীয়করণের মাধ্যমে নিয়ম না মেনে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে, যার ফলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ঋণ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে অগ্রণী ব্যাংকের ১৯টি শাখা থেকে ৯০০ কোটি টাকার ঋণ বিতরণে অনিয়মের তথ্য পাওয়া যায় ।

এর ব্যতিক্রম হয়নি অগ্রণী ব্যাংক শান্তিনগর শাখায়। মেসার্স ঔশী এন্টারপ্রাইজ ৭১/৭২ আজিজ সুপার মার্কেট শাহবাগ ঢাকা, প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মোঃ শাজাহান হাওলাদার । তিনি উক্ত প্রতিষ্ঠানের নামে সিসি হাইপো ঋণের আবেদন করলে ১১ /৪/ ২০২২ ইং তারিখ প্রথম ঋণ আবেদনের মঞ্জুরী গৃহীত হয়। উক্ত ঋণটি প্রথম মন্জুরী কালীন শাখা প্রধান ছিলেন সালমা আক্তার, এজিএম অগ্রণী ব্যাংক শান্তিনগর শাখা। বর্তমানে উক্ত ঋণটি অনাদায়ী ( ১কোটি ৭.১৭) টাকা ,যা নবায়নযোগ্য নয় বলে জানা যায়। উপরোক্ত ঋণের বিষয়ে শাখা প্রধান সালাউদ্দিন মুন্সির কাছে জানতে চাইলে তিনি  বলেন, আমি, আমার ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এবং উদ্ধতন কর্তৃপক্ষ নবায়ন না করার বিষয়ে ওয়াকিবহাল, এর বেশি কিছু বলতে পারছিনা।

সরেজমিন অনুসন্ধানে উঠে আসে , ঔশী এন্টারপ্রাইজ যার সত্তাধিকারী মোঃ শাহজাহান হাওলাদার , ৭১/৭২ আজিজ সুপার মার্কেট ঢাকা, এই ঠিকানায় উক্ত প্রতিষ্ঠার নামে কোন প্রতিষ্ঠান কখনো ছিলনা। উক্ত ঠিকানায় ইশা এন্টারপ্রাইজ (পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা ) যার স্বত্বাধিকারী মোঃ এমদাদ হোসেন ২০০৬ সাল থেকে অদ্যবদি ব্যাবসা চালিয়ে আসছে । যার সাথে উপরোক্ত ঔশী এন্টারপ্রাইজের কোন সম্পৃক্ততা বা মালিকানা নেই। ঋণ নবায়নের আবেদনের সাথে সংযুক্ত ট্রেড লাইসেন্স, দোকান ভাড়ার চুক্তিনামা,দোকানের মালিক সমুদয় বিষয় সঠিক নয় মর্মে সরেজমিনে জানা যায় । মিথ্যা, বানোয়াট কাগজপত্রের বিষয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিশেষ করে এজিএম সালমা আক্তার অবগত থাকার পরও কোটি টাকা ঋণ পান মেসার্স ঔশী এন্টারপ্রাইজ। বর্তমানে উক্ত ঋণটি খেলাপি ঋণের তালিকায় ,১ কোটি ৭.১৭ টাকা অনাদায়ী দেখানো হয়েছে। উক্ত বিষয়ে সালমা আক্তার, সাবেক শাখা প্রধান অগ্রণী ব্যাংক শান্তিনগর এর কাছে জানতে চাইলে, তিনি প্রতিবেদককে দুই ঘন্টা বসিয়ে রেখে দাম্ভিকতার সাথে বলেন,” এ বিষয়ে বক্তব্য দেবার প্রয়োজন নেই”। তথ্যসূত্রে উঠে আসে , অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠান ঔশী এন্টারপ্রাইজ এর নামে অগ্রণী ব্যাংকের আগেও বিভিন্ন ব্যাংক থেকে একাধিক সিসি লোন নিয়েছেন। অগ্রণী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ উক্ত বিষয়টি গোপন রেখে তাকে কোটি টাকা ঋণ প্রদান করেন । বিধিবহির্ভুত ঋণ প্রদানে বাংলাদেশ ব্যাংকের কড়া বিধি নিষেধ থাকলেও বর্ণিত কর্মকর্তা উক্ত বিধি অমান্য করে ঐশী এন্টারপ্রাইজ এর সাথে যোগাসাজোশে ঋণ প্রদান করেছেন বলে অনুসন্ধানে উঠে আসে। এরূপ বিধি বহির্ভুভাবে ঋণ প্রদানে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত নিয়মানুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণেরও বিধান রয়েছে।

উক্ত বিষয়ে মোহাম্মদ আবু বক্কর সিদ্দিক, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার জোনাল অফিস ঢাকা উত্তর  বলেন ,আমরা সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখেছি, ঔশী এন্টারপ্রাইজ নামে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি । উক্ত ঠিকানায় এশা এন্টারপ্রাইজ নামে এমদাদ হোসেনের একটি দোকান চলমান এবং মূল মালিকের সাথে ভাড়াকৃত দোকান ২০০৬ সাল থেকে অদ্যবদি ব্যাবসা চালিয়ে আসছেন তিনি। ঔশী এন্টারপ্রাইজ নামে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কখনোই এখানে ছিলনা বলে জানান এমদাদ হোসেন। ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলেন, অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠান,ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে যে সকল ঋণ প্রদান করা হয় এবং ঋণ প্রদানকারীসহ এসব অবৈধ কাজের সাথে যেসকল ব্যাংক কর্মকর্তা জড়িত সকলকেই আইনের আওতায় আনা উচিত।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম