ডেস্ক রিপোর্ট:
আন্দোলনরত হাজারো শিক্ষার্থী গেট ভেঙে সচিবালয়ের ভেতরে ঢুকে পড়েছেন। তার সচিবালয়ের ভেতরে থাকা গাড়ি ভাঙচুর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় সেখানে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লাঠিচার্জ করলে শিক্ষার্থীদের সচিবালয়ের বাইরে চলে যান। এতে অনেক শিক্ষার্থী হয়েছেন বলে জানা গেছে। আজ মঙ্গলবার সাড়ে তিনটার পরে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে আজ দুপুর থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার) ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব সিদ্দিক জোবায়েরের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করছিলেন শিক্ষার্থীরা। সাইন্সল্যাবে ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ, আইডিয়াল কলেজসহ রাজধানীর কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শেষে মিছিল নিয়ে শিক্ষা ভবনের দিকে যান। এ সময় তারা শিক্ষা ভবনের ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। পরে সেখান থেকে সচিবালয়ের সামনে এসে বসে পড়েন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, সচিবালয়ের সামনে আসার পরে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাদের আলোচনার জন্য ২০ মিনিটের সময় নিয়েছেন। কিন্তু এই সময় অতিবাহিত হলেও সরকারের পক্ষ থেকে কেউ আসেনি। পরে শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ে ঢোকার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর আড়াইটার দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের এক নম্বর গেটের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। তারা ‘ভুয়া ভুয়া’ ও ‘আমার ভাই মরল কেন, প্রশাসন জবাব এমন স্লোগান দিচ্ছেন।
শিক্ষা উপদেষ্টা ও সচিবের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা গেট ভেঙে ও দেয়াল টপকে সচিবালয়ে প্রবেশ করেছে। এসময় পুলিশ ও সেনা সদস্য তাদেরকে ঠেকানোর চেষ্টা করলে সংঘর্ষ বাধে। সচিবালয়ের ভেতরে প্রবেশ করে শত শত শিক্ষার্থী সামনে পাওয়া গাড়ি ভাঙচুর করেন। এছাড়া এলজিআরডি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনেও ভাঙচুর চালানো হয়। এসময় সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল ছুড়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেরও চেষ্টা করে।
এর আগে, দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের সামনে আসে শিক্ষার্থীরা। সচিবালয়ে প্রবেশের এক নম্বর গেটের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে তারা। এতে গুলিস্তান জিরো পয়েন্টের সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে বিমানবাহিনীর ফাইটার জেট বিধ্বস্তের ঘটনায় ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩১ এ দাঁড়িয়েছে। ওই ঘটনায় আহত হন দেড় শতাধিক। এ অবস্থার মধ্যে আজ (মঙ্গলবার) চলমান এইচএসসি ও সমমানের কয়েকটি বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো। সরকারের পক্ষ থেকে রাতে জানানো হয়, মঙ্গলবারের পরীক্ষা স্থগিত।
বিক্ষোভকারীরা জানান, অনেক সমালোচনার পর পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত আসে গভীর রাতে। এই সিদ্ধান্ত আগে কেন নেওয়া হলো না, এমন প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তারা। তাদের দাবি, গভীর রাতে এই সিদ্ধান্ত আসায় অনেক শিক্ষার্থী বিভ্রান্ত হয়েছে। তারা এই তথ্য জানতেই পারেনি। ফলে অনেকে আজ পরীক্ষাকেন্দ্রে চলে গেছে! বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি. আর. আবরারের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে তার পদত্যাগ দাবি করছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা যে ছয়টি দাবির কথা জানিয়েছেন সেগুলোও তুলে ধরছেন তারা।
আহতদের চিকিৎসা দিতে রাতে ঢাকায় পৌঁছাবে সিঙ্গাপুরের চিকিৎসক দল
এর আগে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে গোলচত্বরে সকাল ১০টা থেকে জমায়েত হন শত শত শিক্ষার্থী। মুহূর্তেই মিছিল আর প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠেছে চারপাশ। একদিন আগে তাদের কলেজ ক্যাম্পাসে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণহানি ও আহতের ঘটনায় শোকাহত শিক্ষার্থীরা ৬ দফা দাবি জানান তারা। এর মধ্যে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিদর্শনে যান আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার। সেখানে তারা শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ মাসুদ || বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ২১/১ নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০ || মোবাইল : ০১৫১১৯৬৩২৯৪,০১৬১১৯৬৩২৯৪ || ই- মেইল: dailysobujbangladesh@gmail.com || ওয়েব : www.dailysobujbangladesh.com
Copyright © 2025 দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ. All rights reserved.