
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল বরগুনা জেলা শাখার পুনর্গঠিত কমিটিতে সভাপতি হয়েছেন বিগত আওয়ামী সরকারের অবৈধ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া নুরুল ইসলাম। একই কমিটিতে সহ সভাপতির পদ পেয়েছেন আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সহ-সভাপতি,সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা অ্যাডঃ একেএম সামসুদ্দিন সানু ওরফে কমান্ডার সানু। অবশ্য সহ সভাপতির পদ পাওয়া একেএম শামসুদ্দিন সানু জানান তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম মনির সাথে সাক্ষাৎ করে বিএনপিতে যোগদান করেছেন।

ওই কমিটির বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বেশ হাস্যরস সৃষ্টি হয় ও বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। কমিটির সভাপতি পদে আওয়ামী দোসরকে সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাকে সহ-সভাপতির পদ দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন উপজেলা বিএনপির দায়িত্বশীল নেতাসহ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উপজেলা কমিটির সদস্যরা।
বরগুনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক জানান,জেলা মুক্তিযোদ্ধা দলের সংশোধিত কমিটির বিষয়ে তিনি অবহিত নন। এ বিষয়ে তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির সাথে কথা বলেছেন, তিনি প্রত্যাশা করেন শীঘ্রই এই কমিটি সংশোধন করবে কেন্দ্রীয় কমিটি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বরগুনা জেলা জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল থেকে পদত্যাগ করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদে যোগদান করেন বরগুনা জেলার কয়েক জন নেতা। এতে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল বরগুনা জেলার কয়েকটি পদ শূন্য হয়ে যায়। এই শূন্য পদ পূরণের জন্য নতুন করে জাতীয়তাবাদী দলের অনুসারী মুক্তিযোদ্ধাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে আবেদন করেন জেলা নেতৃবৃন্দ। পরে কেন্দ্রীয় কমিটি বরগুনা জেলার সংশোধিত কমিটি অনুমোদন দেয়। আর এতেই বাঁধে বিপত্তি।

মুক্তিযোদ্ধাদের একটি সূত্র জানায়, বর্তমান জেলা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে থাকা মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম (কাস্টমস নুরু) একজন বিতর্কিত ও পল্টিবাজ ব্যক্তি। যিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একেক সময় বিএনপি’র, একেক সময় আওয়ামী লীগের, একেক সময় স্বতন্ত্র আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে সমর্থন ও নির্বাচনী প্রচার- প্রচারনা এবং সভা-সমাবেশ পর্যন্ত অংশ নিয়েছেন। এমনকি বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলেও তিনি নিজেও গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করে হাজারের উপড়ে ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন।
আমতলী উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক জহিরুল ইসলাম (ভিপি মামুন) বলেন, বিষয়টি আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জার এবং বিব্রতকর। এটা কোনভাবেই এটা মেনে নেয়ার মত না। মুক্তিযোদ্ধা দলের কমিটির পদে থেকে চিহ্নিত আওয়ামী দোষরদের যারা ওই কমিটির মধ্যে অর্ন্তভূক্ত করেছেন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে দাবি জানাই। আর দ্রুত জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল বরগুনা জেলা কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন করে প্রকৃত বিএনপিমনা বীরমুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে জেলা কমিটি গঠনের জন্য অনুরোধ জানাই।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল বরগুনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ মনিরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, নতুন পুর্নগঠনের বিষয়ে আমি অবহিত নই। কমিটির বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানার পর আমি কেন্দ্রীয় কমিটির সাথে যোগাযোগ করেছি। আশা করি কেন্দ্রীয় কমিটি শীঘ্রই এ কমিটি সংশোধন করবেন।
উল্লেখ্য গত ২০ আগস্ট তারিখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ইসতিয়াক আজিজ উলফাত স্বাক্ষরিত এক পত্রে ৪০ সদস্য বিশিষ্ট বরগুনা জেলার সংশোধিত কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ওই কমিটির বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বরগুনা জেলা জুড়ে হাস্যরস সৃষ্টি হয় ও বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।