ডেস্ক রিপোর্ট:
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন (অব.) জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, যে বাচ্চারা আমাদের ছেড়ে চলে গেছে, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। ওইদিন ১টা ১২ থেকে ১৩ মিনিটের মাঝামাঝি সময়ে দুর্ঘটনা ঘটে। যদি দুর্ঘটনা ১টা ৪-৫ মিনিটের দিকেও হতো, তাহলে আমরা যে কত কিছু হারাতাম, আরও কতজন মা-বাবা যে সন্তানহারা হতেন, তার ঠিক নেই। কারণ, স্কুল ছুটির পর প্রায় ১০ মিনিট লাগে বাচ্চাদের বের হতে।
শনিবার (২ আগস্ট) সকালে উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাত ও আহত ব্যক্তিদের দ্রুত আরোগ্য লাভের কামনায় শোক ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কর্তৃপক্ষ। সেখানে এসব কথা বলেন অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর আলম (অব.)।
অধ্যক্ষ বলেন, ওইদিন প্রধান শিক্ষিকা ডেকে না নিয়ে গেলে আমিও লাশ হতে যেতাম। পৌনে দুই বছর আমি এই কলেজের দায়িত্বে আছি। কোনো দিন ছুটির সময় আমি বাইরে যাই না। বারান্দায় দাঁড়াই, হাঁটাহাঁটি করি, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের দেখি এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ব পালন করা দেখি। কিন্তু সেদিন ১টার সময় দু’জন নতুন শিক্ষকের সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে বলে প্রধান শিক্ষিকা ডেকে নিয়ে যান। বেলা ১টা ৪ মিনিটের দিকে বের হয়ে গেলাম। আর ১টা ১২ থেকে ১৩ মিনিটের মাঝামাঝি সময়ে দুর্ঘটনা ঘটল।
এ সময় অধ্যক্ষ উদ্ধারকাজে শিক্ষক-কর্মচারীদের ভূমিকার কথা স্মরণ করে বলেন, আপনাদের কষ্ট-বেদনা সবকিছুর প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাই। যদি কারও এতটুকুও মনে হয় অবহেলাজনিত কারণে, এর দায় একমাত্র আমার, আর কারও নয়। আপনারা যেকোনো বিচার করতে পারেন।
অনুষ্ঠানে মাইলস্টোন স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থী জারিফ হাসানের বাবা হাবিবুর রহমান বলেন, সেদিন নাকি ও স্কুলে আসতে চায়নি। ওর মা বলল।’ তিনি আরও বলেন, ‘ছেলেটা আমার খুব চটপটে ছিল। সে খুব ফ্রেন্ডলি ছিল।’
স্কুলের বাংলা মাধ্যমের সহকারী শিক্ষক মাসুকা বেগমও যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় নিহত হয়েছেন। তার শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। সহকর্মীরা বলেছেন, তিনি চাইলে কক্ষ থেকে দৌড়ে বের হয়ে যেতে পারতেন। কিন্তু বাচ্চাদের রেখে রুম থেকে বের হননি।
মাসুকার দুলাভাই খলিলুর রহমান বলেন, আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা শুনতে পাই। সঙ্গে সঙ্গে মাসুকার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করি। কিন্তু পাচ্ছিলাম না। ঢাকায় স্কুলে এসেও তার খোঁজ নেওয়া হয়। তারপরও পাচ্ছিলাম না। পরে হাসপাতালে তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়।
শোক ও দোয়া অনুষ্ঠানের শুরুতে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে বক্তব্য দেন প্রধান শিক্ষিকা খাদিজা আক্তার। শেষে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে দোয়া করা হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কলেজের ইংরেজি শিক্ষক নুসরাত আলম।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ মাসুদ || বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ২১/১ নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০ || মোবাইল : ০১৫১১৯৬৩২৯৪,০১৬১১৯৬৩২৯৪ || ই- মেইল: dailysobujbangladesh@gmail.com || ওয়েব : www.dailysobujbangladesh.com
Copyright © 2025 দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ. All rights reserved.