বিআইডব্লিউটিএ এর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সাইদুরের ভয়াবহ দুর্নীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)-এর ড্রেজিং শাখার দায়িত্বরত প্রধান প্রকৌশলী সাইফুরের ব্যাপক ঘুষ , অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ ১৫ বছরের দুর্নীতিবাজ তালিকায় ঘুরে ফিরে উঠে এসেছে প্রকৌশলী মো. সাইদুর রহমান এর নাম। অভিযোগ রয়েছে, এই কর্মকর্তা ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রকল্পে নদী খননের নামে ১৩৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে অঢেল সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।

সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে রয়েছে ভোগাই ও কংস নদ খননের নামে ভয়াবহ অর্থ লোপাট, জাল সনদ ব্যবহার, একাধিক গাড়ি ও বেনামী সম্পদের মালিক হওয়া, এবং সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কর্মকর্তাদের জিম্মি করে রেখে অবৈধ উপায়ে হাজার কোটি টাকা হাতিয়েছেন।

জানা গেছে, তাঁর নেতৃত্বে ড্রেজিং শাখায় তৈরি হয়েছে একটি শক্তিশালী দুর্নীতিবাজ চক্র, যারা দরপত্র, নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্যের মাধ্যমে কয়েকশ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে,দুদক তাঁর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করলেও মামলা কার্যক্রম দীর্ঘসূত্রতায় ঝুলে থাকায় দৃশ্যমান হচ্ছে না কোন এক অদৃশ্য ইশারায়। অভিযোগ রয়েছে, কিছু দুর্নীতিপরায়ণ দুদক কর্মকর্তার সহায়তায় তার মামলা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা ও তদবির অব্যহত রয়েছে । ইতোপূর্বে সাইদুর ও তার স্ত্রীসহ অন্যদের সম্পদের তথ্য বিবরণী জমা পড়লেও তিন বছরেও যাচাই সম্পন্ন করতে পারেন নি কর্তৃপক্ষ।

বিআইডব্লিউটিএর অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, প্রকল্প বাস্তবায়নে নামে-মাত্র খননের কাগজপত্র তৈরি করে ভুয়া বিল-ভাউচারে তোলা হয় প্রকল্পের টাকা। প্রকল্পের কাজে অংশ নেওয়া ঠিকাদারদের সঙ্গে আঁতাত করে সাইদুর রহমান ও তাঁর সহযোগীরা ওই অর্থ ভাগাভাগি করে নিয়েছেন।

এদিকে, দীর্ঘদিন একটানা একই পদে বহাল থেকে সাইদুর রহমান সরকারি চাকরি বিধিমালার চরম লঙ্ঘন করেছেন। আবার এলজিইডি থেকে চাকরি বরখাস্তের পর তথ্য গোপন করে ২০০৩ সালে বিআইডব্লিউটিএতে চাকরি নেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিআইডব্লিউটিএর একাধিক সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্বার্থ চরিতার্থ করা এ দুর্নীতির সিন্ডিকেট থেকে মুক্তি চান এবং দুর্নীতিবাজ সাইদুরের অবিলম্বে অপসারণ দাবি জানিয়ে আসছেন।

সাম্প্রতিক অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষিত দুর্নীতিবিরোধী ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির বাস্তবায়নে সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে ভুক্তভোগী কর্মচারীসহ সচেতন মহল।

সূত্র জানায়,বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগের নাম এখন দুর্নীতির প্রতীক। সেখানে প্রকৌশলী সাইদুর রহমানের অনিয়ম , দুর্নীতি সিন্ডিকেট সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। তাঁর দুর্নীতির অভিযোগে কি ব্যবস্থা নেয় এটাই এখন দেখার বিষয়—অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং দুদক সত্যিকার অর্থে ব্যবস্থা গ্রহণ করে কি না সাধারণের নজর দুর্নীতি দমন কমিশনের দিকে।
এসব অনিয়মের বিষয় অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ সাইদুর রহমান এর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি কোন রেসপন্স করছেন না।

সহকারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ

অনলাইন ডেস্কঃ

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে সহকারী শিক্ষকদের মারধরে প্রধান শিক্ষক কামরুল আহসান সোহেল (৫২) আহত হয়েছেন। এ সময় তার ছেলে সিনহা ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ফাতেমা বেগম আহত হন। ভবন নির্মাণে জটিলতাসহ নানা দ্বন্দ্বের জেরে সহকারী শিক্ষকরা মারধর করেন বলে অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের।

মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) দুপুরে পলাশবাড়ী উপজেলার বরিশাল ইউনিয়নের জুনদহ উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, নতুন চারতলা ভবন নির্মাণের উদ্দেশে গত বছরের নভেম্বর মাসে স্কুলের পুরাতন টিনসেড ওয়ালআপ ভবন ভেঙে ফেলা হয়। কিন্তু জমির সীমানা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হলে প্রতিবেশী জমির মালিকের অভিযোগে সেখানে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনও সম্ভব হয়নি।

বর্তমানে টিনের ছাপড়া ঘর তৈরি করে প্রখর রোদের মধ্যেই পাঠদান চলছে। সম্প্রতি পাশের জমির মালিকও স্কুলের টয়লেটে যাতায়াতের রাস্তাটি বাঁশের বেঁড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন। এসব কারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির শেষ নেই। এ নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরর মধ্যে চাপাক্ষোভ তৈরি হয়।

তারা আরও জানায়, বিদ্যালয়ের এসব সমস্যা সমাধানে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সহকারী শিক্ষক মুক্তার, রিজেন, কাওছার মোখছার, নাঈমসহ অন্যান্যদের সাথে প্রধান শিক্ষকের বাকবিতণ্ডা বাধে। এর একপর্যায়ে প্রধান শিক্ষক সোহেল ধাক্কা-মারধরের শিকার হন। খবর পেয়ে তার স্বজনরা তাকে বাঁচাতে এলে ছেলে সিনহা ও ছোট ভাইয়েরর স্ত্রী ফাতেমা আহত হন।

হাসপাতালে ভর্তি আহত প্রধান শিক্ষক কামরুল আহসান সোহেল বলেন, বিদ্যালয়ের নানা সমস্যাসহ বর্তমান পরিস্থিতি সকলের জানা। এসব নিয়ে ক্ষুদ্ধ সহকারী শিক্ষকরা। বিদ্যালয় চলাকালে হঠাৎ করে সহকারী শিক্ষকরা একজোট হয়ে মারমুখি হয়ে উঠেন। একপর্যায়ে তারা আমাকে শারীরিকভাবে মারধর করে আহত করে। ঘটনার সময় বাঁধা দিলে তারা ছেলেসহ ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে মারধর করেন। তিনি শারীরিকিভাবে পক্ষঘাত বলেও দাবি করেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষকরা। তাদের মধ্যে সহকারী শিক্ষক মুক্তার হোসেন ও রিজেন মিয়া জানান, বিদ্যালয়ের বেশ কিছু বিষয় নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে মতবিরোধ চলছিলে। এর জেরে প্রধান শিক্ষকের পরিবারের সদস্যরাই বিদ্যালয়ে এসে তাদের ওপর হামলা চালান। আর প্রধান শিক্ষক রেগে গিয়ে টেবিলে থাপড়ালে কাঁচ ভেঙে তার হাত কেটে যায়।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে পলাশবাড়ী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাহাতাব হোসেন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করা হয়। এসময় শিক্ষক ও স্থানীয়দের কাছে ঘটনার বিষয় জানা হয়। তবে শিক্ষকদের উভয়পক্ষ একে-অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিচ্ছে। এ ব্যপারে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা বলেন, এখনও পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সূত্রঃ যমুনা টিভি

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম