তারিখ লোড হচ্ছে...

রূপগঞ্জে মূর্তিমান আতংক ভূমিদস্যু ফয়েজ বাহিনীর খুঁটির জোর কোথায়?

নিজস্ব প্রতিবেদক :

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা বাজারে চাঁদা না পাওয়ায় দুস্কৃতিকারী ও চিহিৃত ভুমিদস্যু মোঃ ফয়েজ ভূইয়া ও দুই ছেলে রিমন ভূঁইয়া, রুমান ভূঁইয়া সহ ২৫/৩০ জন সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে মহামান্য আদালত’কে অবমাননা করে গত শুক্রবার (১১ নভেম্বর ২২) আনুষ্ঠানিক সকাল ১০ টায় এক ব্যবসায়ীর জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

অনুসন্ধানে ও সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ভুমিদস্যু মোঃ ফয়েজ ভূইয়া ও দুই ছেলে রিমন ভূঁইয়া, রুমান ভূঁইয়ার সন্ত্রাসী বাহিনী ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। ফয়েজ বাহিনীর অত্যাচারে রূপগঞ্জ সহ ভুলতা বাজারের সাধারণ জনগন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী।এলাকায় ফ্যাক্টরি, ভবন নির্মাণ, কোম্পানি চালাতে হলে টাকা দিতে হবে বলে জানান ভূমিদস্যু ফয়েজ বাহিনী। জায়গার উপর ভবন নির্মাণ করতে গেলে ভুমিদস্যূরা অস্ত্রে, শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সম্পূর্ণ অন্যায় ভাবে জোরপূর্বক নির্মাণ কাজে বাঁধা দেয়। প্রয়োজনে খুন করার প্রকাশ্যে হুমকি দেয় বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনি বলেন, কিছু দিন পুর্বে আমরা পুরাতন জরাজীর্ণ ভবন ভেঙ্গে নতুন ভবন নির্মান কাজ শুরু করবো এ অবস্থায় ভুলতা বাজার এলাকার চিহিৃত দুস্কৃতিকারী ও ভূমিদস্যু মোঃ ফয়েজ ভূইয়া ও দুই ছেলে রিমন ভূঁইয়া, রুমান ভূঁইয়া সহ ২৫/৩০ জন সন্ত্রাসী বাহিনী এসে বাধা দিয়ে টাকা দাবী করে। তাদের চাহিদা মোতাবেক টাকা না পাওয়ায় চলমান কাজ বন্ধ করে দেয় ও এলাকায় কোম্পানি চালাতে হলে টাকা দিতে হবে বলে জানান। সারাক্ষন সন্ত্রাসী পাহারা বসিয়ে রাখে।

সিকিউরিটি গার্ড নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনি বলেন, গত সোমবার (১৪ নভেম্বর ২২) আনুষ্ঠানিক বিকাল ৫ টায় কাঙ্খিত চাঁদার টাকা না পেয়ে ফয়েজ বাহিনী জায়গা খালি করার নির্দেশ দিয়ে যান।

এ ব্যাপারে ফয়েজ ভূঁইয়া সব অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, আমি ৯০ শতাংশ জমির মধ্যে ৬.৫০ শতাংশ জমি পাবো। গত শুক্রবার আপনি সম্পুর্ণ জমি দখলের চেষ্টা করছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কোর্টে মামলা করেছি। আমি আইনকে শ্রদ্ধা করি। আইনে জমি পেলে কোর্ট আমাকে বুঝিয়ে দিবে। আমি কেন জমি দখল করতে যাবো। ৬.৫০ জমির মধ্যে ৭ প্রকারের গাছ ছিলো তা কেটে দিয়েছেন তারা।

নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে আনসার এবং দালালদের চলছে প্রকাশ্যে ঘুষ বাণিজ্য 

স্টাফ রিপোর্টার:
নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ঘুরছে ছকে বাঁধা ঘুষ দুর্নীতির চরকি। ঘুষ না দিলেই পাসপোর্টের আবেদন হয়ে যায় ত্রুটিপূর্ণ। দালাল চক্রের মাধ্যমে আনসার সদস্য ধরে ঘুষ দিলে ত্রুটি থাকলেও বিশেষ সংকেতে গ্রহণ করা হয় আবেদন। এখানে আনসার সদস্য ও দালালদের দৌরাত্ম্য এতই বেপরোয়া যে, তারা নিজেরাই দিচ্ছেন পুলিশ ভেরিফিকেশনের নিশ্চয়তা।
উপস্থিত সেবা গ্রহীতার মধ্যে অনেকেই বলেন, এভাবে মাছ কেনাবেচার মত পাসপোর্ট কেনাবেচা হচ্ছে কর্তৃপক্ষ কি জানেন না? সেবা গ্রহিতাদের দাবি অবশ্যই জানেন তারা এখানের সিংহভাগই অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। কর্মকর্তাদের যোগসাজশে গঠিত দালাল চক্র পাসপোর্ট করতে আসা লোকদের কাছ থেকে প্রতিমাসে কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে পাসপোর্ট অফিসটি বিশেষ সূত্রে জানা যায়। সূত্র মতে আরো জানা যায়,নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে আনসার সদস্য ও দালাল চক্রের অর্থ বাণিজ্য আর অফিসের অসাধু কর্মকর্তাদের অনিয়ম বেড়েই চলছে দীর্ঘ দিন ধরে । ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পাসপোর্ট সেবা গ্রহীতারা। এখানে র‌্যাব ও পুলিশ একাধিকবার অভিযান চালিয়ে দালালদের গ্রেপ্তার ও পুলিশসহ সরকারি বিভিন্ন কর্মকর্তাদের নাম পরিচয়ে বানানো নকল সিল জব্দ করলেও বন্ধ হচ্ছেনা তাদের দৌরাত্ম্য। অভিযোগ উঠেছে, আনসার সদস্য ও দালালের মাধ্যমেই পাসপোর্ট করতে আসা লোকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন অফিসের কর্তারাই। প্রত্যেক আনসার সদস্য বা দালালের আলাদা কোর্ড নম্বর রয়েছে। ফলে আবেদন জমা হলেই অফিস কর্তারা বুঝতে পারেন আবেদনটি কোন দালাল বা আনসার সদস্যের মাধ্যমে জমা হয়েছে। কৌশল করে আনসার সদস্য এমনকি দালালরা আবেদনকারীকে দিয়ে সরকারি ফি ব্যাংকে জমা করায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৪৮ পৃষ্টার ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্টের ক্ষেত্রে সাধারণত ১৫-২১ কর্মদিবসে ফি ৪ হাজার ২৫ টাকা, জরুরি (১০ কর্ম দিবসে) ফি ৬ হাজার ৩২৫ টাকা ও অতীব জরুরি (২ কর্ম দিবসে) ফি ৮ হাজার ৬২৫ টাকা এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৫ হাজার ৭৫০ টাকা, জরুরি ফি ৮ আজার ৫০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ১০ হাজার ৩৫০ টাকা। ৬৪ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদি পাসপোর্টের জন্য সাধারণ ফি ৬ হাজার ৩২৫ টাকা, জরুরি ফি ৮ হাজার ৬২৫ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ১২ হাজার ৭৫ টাকা এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৮ হাজার ৫০ টাকা, জরুরি ফি ১০ হাজার ৩৫০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ১৩ হাজার ৮০০ টাকা। সব ফির সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট যুক্ত হবে। ১৮ বছরের কম এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সী আবেদনকারীরা কেবলমাত্র ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট পাবেন। অতি জরুরি আবেদনের ক্ষেত্রে পুলিশ প্রতিবেদন সঙ্গে আনতে হবে। নাগরিকদের অভিযোগ, সরকার নির্ধারিত ফি দিয়ে সরাসরি অফিসে আবেদন করে পাসপোর্ট পাওয়া ভাগ্যের ব্যপার। পাসপোর্ট অফিসে ছবি তোলা থেকে ফিঙ্গার প্রিন্ট সব খানেই অনিয়ম। নিয়ম অনুযায়ী সকল কাজ করলেও ঘুষ না দিলে মিলে না সেবা। ত্রুটি ও বিভিন্ন অজুহাতে গ্রহণ করা হয় না আবেদন। আনসার সদস্য বা দালাল ধরে অতিরিক্ত টাকা দিলে সহজে হয়ে যায় কাজ। দালাল ছাড়া সরাসরি আবেদন করলে দিনের পর দিন ঘুরতে হয়। ফলে পাসপোর্ট করতে আসা লোকজন বাধ্য হয়ে দালাল এমনকি আনসার সদস্যদের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। আনসার সদস্য ও দালালরাও পাসপোর্ট অফিসের সামনে ও আশপাশ এলাকায় কম্পিউটার দোকান খুলে দেদারছে চালিয়ে যাচ্ছে এই অবৈধ বাণিজ্য। অফিসটিতে দৈনিক কমপক্ষে ৪ শতাধিকের অধিক আবেদন জমা পড়ে। তার মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই দালালদের মাধ্যমে। প্রতিটি পাসপোর্ট বাবদ ২ হাজার টাকা করে অফিস খরচ হিসেবে দৈনিক অন্তত ৬ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। যা মাসে দাঁড়ায় কোটি টাকার উপরে। সরেজমিনে অনুসন্ধানে নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ের আনসার সদস্যরা আলাদা করে ফিঙ্গারপ্রিন্ট এর সুযোগ তৈরি করে দিতে দেখা গেছে। পাসপোর্ট করতে আসা একাধিক ব্যক্তি জানান, দালাল না ধরে সরাসরি আবেদন জমা দিলে সময় লাগে দুই থেকে তিন মাস। অফিসে আসলে তথ্য কেন্দ্রে যোগাযোগ করতে বলা হয়। তথ্য কেন্দ্রে গেলে দু’তলায় যোগাযোগ করতে বলেন। এভাবে একজন আরেক জনের কাছে পাঠায়। পাসপোর্ট কবে পাব তা নিশ্চত হতে পারি না। পক্ষান্তরে দালাল ধরে সরকারি ফি বাদে, ২ হাজার টাকা অফিস খরচ, পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য ১ হাজার আর দালালকে দেড় হাজার টাকা দিয়ে মাত্র ১৬ দিনে পাসপোর্ট পাওয়া যায়। কেউ কেউ ওই দালালের নাম বা দেখিয়ে দিতে বলতে অনিহা প্রকাশ করলেও ভেতরের দৃশ্য দেখলে বোঝা যায় এখানে কেমন দুর্নীতি হয়। দালালদের ইচ্ছা মতো কান্ড ঘটে থাকে এখানে। পরিচয় গোপন রেখে ছদ্ম বেশে পাসপোর্ট করার কথা বলে “ইন্টারনেট অনলাইন সেবা” নামক কম্পিউটার দোকানের দালালের স্বরণাপন্ন হলে তিনি জানান, ৫ বছর মেয়াদে ১৫ দিনে পাসপোর্ট পেতে সরকারি ফি বাদে, সাড়ে ৪ হাজার টাকা দিতে হবে। এত টাকা বেশি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২ হাজার টাকা অফিসের টেবিল খরচ, ১ হাজার টাকা পুলিশ ভেরিফিকেশন আর বাকি টাকা অন্যান্য খরচ ও তার নিজের পারিশ্রমিক। পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য আপনাকে টাকা দেব কেন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে তিনি বলেন, বেশি বুঝলে ঘুরতে হবে।
দালালরা পুলিশ ভেরিফিকেশন বাবদ টাকা নেওয়ার কারণ খোঁজ করে জানা গেছে, চোখ কপালে উঠার মত তথ্য। তারা নিজেরাই পুলিশের সিল বানিয়ে স্বাক্ষর দিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে। পাসপোর্ট অফিস তা যাছাই করে না। এসব অনিয়মের বিষয়ে জানাতে এবং তার মন্তব্য জানতে নারায়ণগঞ্জ জেলা অঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপপরিচালক গাজী মাহমুদুল হাসানকে তার মুঠো ফোনে একাধিক বার কল দিলেও তিনি মোবাইল কলটি রিসিভ করেননি।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম