ফুটপাত ভাড়া দেওয়া যাবে না: হাইকোর্ট

স্টাফ রিপোর্টারঃ

আগামী সাত দিনের মধ্যে ঢাকায় ফুটপাত বিক্রি ও ভাড়া দেওয়া বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ ধরনের কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতেও সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে, আদালত ফুটপাত দখল এবং ফুটপাতে স্থায়ী বা অস্থায়ী দোকান ও স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বলেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। ঢাকার ২ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ঢাকার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) এবং দুই যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক); জেলা প্রশাসক ও ঢাকার ১৫টি থানার ওসিদেরকে এসব নির্দেশনা মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

একইসঙ্গে ঢাকায় ফুটপাত বিক্রি ও ভাড়া দেওয়া ব্যক্তিদের নামের তালিকা তৈরি করতে এবং ৬০ দিনের মধ্যে আদালতে তালিকা জমা দিতে সরকারকে ৫ সদস্যের একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের দুই প্রতিনিধি, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর প্রতিনিধিদের নিয়ে এই কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। দুই সিটি মেয়র, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিবদের এই কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়।ঢাকায় ফুটপাত বিক্রি ও ভাড়া দেওয়া বন্ধে তাদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা চার সপ্তাহের মধ্যে জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

রাজধানীতে ফুটপাথ বিক্রি ও ভাড়া দেওয়া বন্ধে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের নিষ্ক্রিয়তাকে চ্যালেঞ্জ করে গতকাল (২০শে নভেম্বর) রোববার মানবাধিকার সংস্থা-হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে আইনজীবী মো. সারোয়ার আহাদ চৌধুরী ও রিপন বারাইয়ের জনস্বার্থে দায়ের করা রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. এজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আবেদনের শুনানিকালে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ হাইকোর্টকে বলেন, ঢাকায় ফুটপাত দখল, ভাড়া ও বিক্রির নৈরাজ্যের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ফুটপাথ দখল হয়ে যাওয়ায় জনগণ রাস্তায় হাঁটতে বাধ্য হচ্ছেন। এর ফলে যানজট ও দুর্ঘটনা ঘটছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন না করায় এসব ঘটছে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়।

আদালতে কাঁদলেন ছাগলকাণ্ডের সেই মতিউর

আদালতে কাঁদলেন ছাগলকাণ্ডের সেই মতিউর

ডেস্ক রিপোর্ট:

‎ছাগলকাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমানের জামিন চেয়ে কাঁদলেন আদালতে। ‎যদিও তার এ কান্না মন গলাতে পারেনি আদালতের। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিব শুনানি শেষে তার জামিন নামঞ্জুর করেছেন। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) আয়বহির্ভূত সম্পদের এ মামলায় আসামি মতিউর রহমানকে আদালতে হাজির করা হয়। আইনজীবী মো. ওয়াহিদুজ্জামান এ আসামির পক্ষে জামিনের আবেদন করেন। আইনজীবীর বক্তব্যের পর আসামি নিজে কিছু বলার অনুমতি চান। আদালত অনুমতি দিলে তিনি বলেন, আমি কারাগার থেকে দুদককে একটি চিঠি দিয়েছিলাম। আমি আপনাকে এ চিঠিটা দিলাম। আপনি দয়া করে আমার চিঠিটা পড়ে যে আদেশ দিবেন, আমি তা মাথা পেতে নিবো।

তিনি বলেন, আমার পরিবারটা ধ্বংস হয়ে গেছে। আমি ও আমার স্ত্রী দুজনই কারাগারে। আমার মা প্যারালাইজড। তাকে দেখার কেউ নেই। এই কথা বলে সে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এরপর বলেন, আমাকে জামিন দিন। আমাকে জামিন দিলে আমার কাছে যে নথিপত্র আছে আমি তা আদালতে উপস্থাপন করে নিজেকে নির্দোশ প্রমাণ করতে পারব। তখন আদালত তাকে বলেন, আপনি দোষী বা নির্দোশ তা এখনই বলা যাবে না। মামলাটি এখন তদন্তাধীন। তাই আপনাকে আরও ধৈর্য্যধারণ করতে হবে। এরপর আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন। ‎গত বছরের ২ জুলাই মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদ বিবরণী চেয়ে পৃথক নোটিশ পাঠায় দুদক। এসব নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছর ২৯ আগস্ট মতিউর, তার দুই স্ত্রী এবং ছেলে-মেয়েসহ পাঁচজনের সম্পদ বিবরণী দুদকে জমা দেন। চলতি বছর ৬ জানুয়ারি মামলা করে দুদক। আর ১৪ জানুয়ারি তিনি গ্রেপ্তার হয়ে ১৫ জানুয়ারি কারাগারে যান।

‎কোরবানির জন্য ১৫ লাখ টাকা দিয়ে একটি ছাগল কিনতে গিয়ে আলোচনায় আসেন মুশফিকুর রহমান ইফাত নামের এক যুবক। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল আলোচনা শুরু হয়। বলা হয়, তার বাবা এনবিআর সদস্য এবং কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট মতিউর রহমান। এরপর আলোচনা চলে মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের কোথায় কী পরিমাণ সম্পদ রয়েছে এসব নিয়ে। এসব আলোচনার মধ্যে একের পর এক বেরিয়ে আসতে থাকে মতিউর পরিবারের বিপুল বিত্তবৈভবের চাঞ্চল্যকর তথ্য।

‎পরে গত বছরের ৪ জুন মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অনুসন্ধানের নামে দুদক। অনুসন্ধানে মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ৬৫ বিঘা জমি, আটটি ফ্ল্যাট, দুটি রিসোর্ট ও পিকনিক স্পট এবং তিনটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের তথ্য পায় দুদক। মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব, মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবার হিসাব ও শেয়ারবাজারের বিও হিসাব জব্দ করা হয়। পরে ২৪ জুন মতিউর ও তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী এবং সন্তানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম