বামপন্থিরা আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনার অপচেষ্টা করছে: ফরহাদ

বামপন্থিরা আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনার অপচেষ্টা করছে: ফরহাদ

ডেস্ক রিপোর্ট:

উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বৈধতা দাঁড় করিয়ে বামপন্থিরা আবারও আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনার অপচেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ। এছাড়া বামপন্থিদের বর্ণচোরা হিসেবে অভিহিত করেছেন তিনি। এস এম ফরহাদ বলেন, আজকের মব সৃষ্টির ফ্রেমিংটা ১৯৭১ বনাম ২০২৪ না। এটা মূলত উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বৈধতা দাঁড় করিয়ে আবারও আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনার অপচেষ্টা। শাহবাগ ও বাকশালকে নতুন করে ফিরিয়ে আনার ষড়যন্ত্র।

তিনি বলেন শাহবাগ কায়েম করে আমাদেরকে দিনে দিনে হত্যা করা হয়েছে গুম করা হয়েছে ক্রসফায়ার দেওয়া হয়েছে আয়না ঘরে রাখা হয়েছে। আমরা এতে হতাশ হইনি। আমরা শাহবাগ ও বাকশালের বিরুদ্ধে ছিলাম। সামনে আবার শাহবাগ কায়েম করে আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনার ষড়যন্ত্রে আমরা শঙ্কিত নই। শিক্ষার্থীদেরকে সঙ্গে নিয়ে আমরা এর বিরুদ্ধে থাকব ইনশাআল্লাহ। তিনি বলেন শেখ হাসিনার রাজনীতি টিকিয়ে রাখতে বর্ণচোরা ষড়যন্ত্র করছে বামরা। মতিউর রহমান নিজামীসহ অন্যদের ফাঁসির আদেশ একটি বিচারিক হত্যাকাণ্ড। এর দায় শুধু হাসিনার নয় শাহবাগের ফ্যাসিবাদীদের দোসরদেরও। যারা ১০-১২টা সংগঠন থেকে ২০-২৫ জন নিয়ে টিএসসিতে এসেছে ।

সংবাদ সম্মেলনে ফরহাদ বলেন, বিভিন্ন ট্যাগ বা তকমা দিয়ে বামদের এই আচরণ আজকের নয়। অনেক দিন ধরে চলে আসছে। তারা আজও শেখ হাসিনার ষড়যন্ত্র টিকিয়ে রাখতে বর্ণচোরার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। তিনি আরও বলেন আজকের আয়োজনের বিরুদ্ধে যারা বিক্ষোভ করেছেন এবং মব তৈরি করার জন্য ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন তারা প্রত্যেকেই বিভিন্ন বাম ছাত্র সংগঠনের পোস্টধারী। তারা হয়ত বিভিন্ন সংগঠনের সভাপতি-সেক্রেটারি। যারা ১০-১২টা সংগঠন থেকে ২০-২৫ জন নিয়ে টিএসসিতে এসেছে।

এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে জুলাই বিপ্লবের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে ঢাবি ছাত্রশিবির আয়োজিত ৩ দিন ব্যাপী ‘আমরাই ৩৬ জুলাই: আমরা থামব না’ শীর্ষক বর্ণাঢ্য ও ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজনে জামায়াত নেতা গোলাম আজম, মতিউর রহমান নিজামী, দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী, আলী আহসান মুজাহিদ, মীর কাশেম আলী, কামরুজ্জামান চৌধুরী ও বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছবি বামপন্থীদের তোপের মুখে সরিয়ে নেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ করতে থাকে শিবির ও বাম সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা।

সরকার পুরনো খেলা শুরু করেছে: রিজভী

শেষ রক্ষা পেতে সরকার আবারও সেই পুরনো খেলা শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

 

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী জালেম সরকারের বিরুদ্ধে জনগণ ফুঁসে উঠেছে। তাদের সকল অন্যায় অবিচার অপকর্মের বিচার দেশের জনগণ করবেই। আর যারা এই নিশিরাতের সরকারকে সহযোগিতা করছেন তারা এসব বন্ধ করুন। জনগণের পায়ের আওয়াজ শুনুন।’

 

তবে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের অবৈধ মসনদ খান খান হয়ে যাবে। শেষ রক্ষা পেতে সরকার আবারও সেই পুরানো খেলা শুরু করেছে।

 

বুধবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

 

রিজভী বলেন, ‘এই নিশিরাতের মাফিয়া সরকার পতনের শেষ প্রান্তে পৌছে এসে ১০ ডিসেম্বর বিএনপি’র কর্মসূচিকে নিয়ে ‘পোড়া মাটি নীতি’ অবলম্বন করেছে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ টিকিয়ে রাখার জন্য বিরোধী দলীয় কর্মসূচিকে বানচাল করতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বিএনপির নেতা-কর্মীদের হত্যা-নির্যাতন ও মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।’

 

গণমাধ্যমের শিরোনাম হচ্ছে অসংখ্য ককটেল ফাটানোর অভিযোগে পুলিশের মামলা দায়ের, কিন্তু কেউ ককটেল ফুটতে দেখেনি বা শোনেনি (সূত্র-সমকাল)। কাওরান বাজারে ককটেল বিস্ফোরণ মামলায় আসামি বিএনপি নেতা-কর্মীরা। কিন্তু ককটেল বিস্ফোরণের কোন শব্দ পায়নি এলাকাবাসী (সূত্র-প্রথম আলো), যোগ করেন তিনি।

 

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে পুলিশের মামলায় জাপানে থাকা প্রবাসী ছাত্রদল নেতা গায়েবি মামলার আসামি (সূত্র-ডেইলি স্টার)। সেই পুরনো কায়দায় সারা দেশে আবারও গায়েবি মামলার হিড়িক চলছে।

 

বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহবুবুল ইসলাম মাহবুবকে গতরাতে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে উঠিয়ে নিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত তার কোনো হদিস দিচ্ছে না। এ নিয়ে দল ও তার পরিবার গভীর উৎকন্ঠায় রয়েছে। তাকে ডিবি পুলিশই তুলে নিয়ে গেছে। আমি অবিলম্বে তাকে জনসমক্ষে হাজির করার আহ্বান জানাচ্ছি।

 

রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ‘গত রবিবার সাবেক ছাত্রদল নেতা ও ২০১৮ সালের শরীয়তপুর-৩ আসনের বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী মিয়া নূরুদ্দীন অপুকে দুদুকের একটি ফরমায়েশি ভুয়া মামলায় ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। তিনি প্রচণ্ড অসুস্থ। বিএনপি’র একজন সাবেক সংসদ সদস্য প্রার্থীকে এহেন নিপীড়ন-নির্যাতন-অসম্মান নজীরবিহীন। কোনো সভ্য সমাজে এই ধরনের জুলুম-নির্যাতন-ডান্ডাবেড়ি পরানোর মতো ন্যাক্কারজনক ঘৃণ্য-বর্বরোচিত চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের কাজ হতে পারে না। মিয়া নূরউদ্দিন অপু কোনো খুন বা ডাকাতি মামলার আসামি নন। তিনি বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারের ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলার আসামি।

 

তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ কারাবন্দীদের জন্য রাষ্ট্রের তরফ থেকে অনুসৃত যে ন্যুনতম নীতিমালা তৈরি করেছে সেখানকার ৩৩ নং অনুচ্ছেদে ডান্ডাবেড়ি পরানোকে অমানবিক বলা হয়েছে। ২০১৭ সালের ১৩ মার্চ এবং ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর বাংলাদেশের হাইকোর্ট বেঞ্চ কোনো আদালতের এজলাসে বিচারাধীন আসামিকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে কাঠগড়ায় তোলার বিরুদ্ধে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে। তাকে দীর্ঘদিন কারাগারে আটকিয়ে রাখা হয়েছে, জামিনও দেওয়া হচ্ছে না-যা অমানবিক ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন।

 

রিজভী অবিলম্বে মিয়া নূরউদ্দিন অপুর মুক্তি প্রদান এবং ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে হাতে হ্যান্ডকাপ দিয়ে আদালতে তোলার জন্য দায়ী কারা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।

 

সারাদেশে বিএনপির নেতা-কর্মীদের উপর হামলা-মামলা-গ্রেপ্তারের চিত্র তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ‘রাজশাহী জেলাধীন বাগমারা উপজেলা বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও গণিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম রঞ্জুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

 

জামিন হওয়ার পরেও গত ২৮ নভেম্বর ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফুজ্জাহান জাহানকে কারাফটক থেকে পুনরায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

 

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ-ডেমরা থানাধীন ৬৪ (পূর্ব) নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সহ-সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল এবং সহ-কোষাধ্যক্ষ মজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

 

তিনি বলেন, ‘গত ২৫ নভেম্বর রাতে ৫০ জন নেতা-কর্মীকে আসামি করে শিবগঞ্জ থানায় বিস্ফোরক আইনে গায়েবী মামলা দায়ের করা হয়েছে। মৃত ও বিদেশ থাকে এমন নেতাকর্মীদেরকেও আসামী করা হচ্ছে। শিবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মীর শাহ আলম এই মামলার ১নং আসামি। তিনি গত ১৫ দিন যাবৎ দেশের বাহিরে অবস্থান করছেন। বিদেশে থাকা অবস্থায় তার নামে মিথ্যা, বানোয়াট ও কাল্পনিক গল্প সাজিয়ে মামলা দিয়েছে ভোটারবিহীন সরকার।

 

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির বিএনপির যুববিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল ইসলাম তেনজিং প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম