ভোলায় হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড

ভোলায় হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড

ভোলা সংবাদদাতা:

ভোলার চরফ্যাশনে দুই ভাইকে গলা কেটে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে সেপটিক ট্যাংকির মধ্যে ফেলে দেওয়ার মামলায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড ও দুজনকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার দুপুরে ভোলার চরফ্যাশন আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. শওকত হোসেন এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন ভাড়াটে খুনি শরীফুল ইসলাম। অপর দুইজন মো. বেলাল ও সালাউদ্দিন পলাতক রয়েছেন।

নিহত দুই ভাই তপন চন্দ্র শীল ও দুলাল চন্দ্র শীল চরফ্যাশন পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডে তাদের পৈতৃক ৫৬ শতাংশ জমি বিক্রি করে ভারত চলে যান। ওই জমি ২০ লাখ টাকায় কিনে নেন আছলামপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মো. বেলাল ও তার শ্বশুর আবু মাঝি। তবে তারা মাত্র তিন লাখ টাকা বায়না দিয়ে দলিল করে নেন। বাকি টাকা নেওয়ার জন্য তপন ও দুলাল বাংলাদেশে আসেন। ২০২১ সালের ৭ এপিল তাদের টাকা দেওয়ার কথা বলে চরফ্যাশন উপজেলার আসলামপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সুন্দরী ব্রিজের কাছে নির্জন বাগানে ডেকে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। তাদের যেন কেউ শনাক্ত করতে না পারে তার জন্য মরদেহ আগুনে পুড়িয়ে ঘটনাস্থল থেকে আধামাইল দূরে একটি পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়। এছাড়া তাদের মাথা পুড়িয়ে পাশের একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাংকির মধ্যে ফেলে দেয়।

৮ এপ্রিল লাশ উদ্ধার করে চরফ্যাশন থানা পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে প্রথমে বেওয়ারিশ হিসেবে লাশ দাফন করে। পরে ডিএনএ পরীক্ষায় ভিকটিমদের পরিচয় চিহ্নিত করা হয়। এ ঘটনায় প্রথমে চরফ্যাশন থানার এসআই নুরুজ্জামান বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। পরে ভিকটিমদের ভাই নিপেন শীল বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামি করে মামলা দেন। চরফ্যাশন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনির হোসেন মিয়া জানান এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ জনকে আটক করা হয়েছিল।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, জোড়া খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রথমে যেখানে ঘটনা ঘটেছে ওই এলাকার আবু জাফর ফরাজী (৬২) ও তার স্ত্রী (৪০), মো. আবুল কাশেম (২২) হেলাল উদ্দিন (২৫) ও আলী আজগরসহ (৩৫) সাতজনকে আটক করে জিজ্ঞেসবাদ করা হয়। পরে ভাড়াটে খুনি গাড়িচালক মো. শরীফুলকে আটক করলে তিনি হত্যার ঘটনার বর্ণনা দেন।

 

প্রতিবেশি ভাবিকে প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় কাণ্ড যুবকের

 

জাহিদ হোসেন :
প্রতিবেশি ভাবিকে প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় এমন কাণ্ড যুবকের। সাভারের আশুলিয়ায় প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় সুমাইয়া আক্তার (২৩) নামে এক গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা করেছে প্রতিবেশী শহিদুল ইসলাম বিদ্যুৎ (৩২) নামের যুবক।ঘটনায় র‌্যাব হত্যাকারী ওই যুবককে আটক করেছে।প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় সাভারের আশুলিয়ায় এক গৃহবধূ সুমাইয়া আক্তারকে তার শিশু সন্তানের সামনেই গলা কেটে হত্যা করেছে প্রতিবেশি যুবকের শিকারোক্তি। পরে ছুরি হাতে তাঁর রুমের সামনেই দাঁড়িয়ে ছিলেন শহিদুল ইসলাম বিদ্যুৎ। এসময় র‌্যাবের একটি টহল দল খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে ছুরিসহ তাকে গ্রেফতার করেন। পরে খবর পেয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে সাভার থানা পুলিশ।

মঙ্গলবার বিকেল ৫ টার দিকে আশুলিয়ার ভাদাইল তালতলা এলাকার সোহেলের ভাড়া বাসা থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে বিকাল ৩ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব-৪ সিপিসি-২ এর স্কোয়াড কমান্ডার ও সহকারি পুলিশ সুপার মোঃ সাজ্জাদুর রহমান।
নিহত সুমাইয়া আক্তার রংপুর জেলার বদরগঞ্জ থানার মাসুদ রানার স্ত্রী। তাদের আড়াই বছরের এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। তারা ৩ জনেই ওই বাড়িতে একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। নিহতের স্বামী মাসুদ রানা স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন ।
গ্রেফতারকৃত শহিদুল ইসলাম বিদ্যুৎ (৩২) নাটোর জেলার লালপুর থানার বিজয়পুর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। তিনিও একই বাসায় পাশের রুমেই ভাড়া থাকতেন। পেশায় পোশাক শ্রমিক।
বাড়ির গৃহকর্ত্রী জানান সুমাইয়ার মেয়ের কান্না শুনে ঘর থেকে বের হয়ে দেখেন হাতে রক্ত মাখানো অবস্থাতেই ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল শহিদুল ইসলাম বিদ্যুৎ।
প্রতিবেশী ভাড়াটিয়া নারী মেরিনা বেগম বলেন, বাড়িওয়ালীর ডাকে আমরা ঘর থেকে বের হয়ে দেখি শহিদুল ইসলাম বিদ্যুৎ সিড়ির উপর ছুরি হাতে দাঁড়িয়ে আছে। তাও আমি সাহস করে ঘরে ঢুকে দেখি সুমাইয়ার পুরো শরীরে রক্ত। শহিদুল ইসলাম বিদ্যুৎ আমাকে বলছিল ভাবী মারিয়ামকে (সুমাইয়ার মেয়ে) সামলান মারিয়ামের মা আর নেই।
বাড়ির অন্য রুমের ভাড়াটিয়া মোঃসবুজ বলেন বাড়ির মালিক ডাকলে আমি আমার রুম থেকে বের হয়ে ঐ রুমে গিয়ে দেখি নারীকে চাকু দিয়ে গলা কেটেছে। আর ওই লোক চাকু নিয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। পরে আমি বাইরে গিয়ে আরও কয়েকজনকে ডেকে এনে পুলিশে খবর দেই। র‌্যাব জানায় গত ১ বছর ধরে একই বাসায় পাশাপাশি রুমে ভাড়া থাকার সুবাদে সুমাইয়া আক্তারের সাথে শহিদুল ইসলাম বিদ্যুৎ পরিচিত। পরিচয়ের পর থেকেই সুমাইয়াকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল শহিদুল ইসলাম বিদ্যুৎ। প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় মঙ্গলবার দুপুরে সুমাইয়ার কক্ষে প্রবেশ করে ধারালো ছুরি দিয়ে সুমাইয়ার গলায় আঘাত করে। এতে অচেতন হয়ে পরলে জবাই করে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
র‌্যাব-৪ সিপিসি-২ এর স্কোয়াড কমান্ডার ও সহকারি পুলিশ সুপার মো. সাজ্জাদুর রহমান বলেন, শহিদুল ইসলাম বিদ্যুৎকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে হত্যার কথা স্বীকার করেছে বিদ্যুৎ। সে প্রেমে প্রত্যাখান হয়ে এঘটনা ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিক নিশ্চিত করা হয়েছে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম