ফরিদপুরে ভাড়া বাসায় মিললো স্ত্রীর মরদেহ পালিয়েছে স্বামী

ফরিদপুরে ভাড়া বাসায় মিললো স্ত্রীর মরদেহ পালিয়েছে স্বামী

ফরিদপুর সংবাদদাতা:

ফরিদপুরে একটি ভাড়া বাসা থেকে মিম আক্তার (১৮) নামে এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনার পর তার স্বামী ওই বাসা থেকে পালিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। শনিবার (৯ আগস্ট) দুপুর ২ টার দিকে শহরের রঘুনন্দনপুরের আব্দুল জলিলের চতুর্থ তলা ভবনের দোতলা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী শরিয়তপুরের জাজিরা সদর ইউনিয়নের সিরাজ শেখের মেয়ে। গত ৬ মাস আগে জেলার বোয়ালমারী উপজেলার চতুল ইউনিয়নের বাইখীর গ্রামের মিরাজ বিশ্বাস (২৫) নামে এক যুবক ও মিম স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসাটি ভাড়া নেন। ভবন মালিক জলিল শেখের স্ত্রী নীরুন্নাহার বারী জানান, প্রায় ৬ মাস আগে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসাটি ভাড়া নেন দুজন। তাদের মধ্যে স্ত্রী মিম একটি বিউটি পার্লারে কাজ করতেন এবং মিরাজ বিশ্বাস একটি দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করেন বলে জানিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, মাঝে মধ্যে তাদের মধ্যে ঝগড়া হতো। গতকাল রাতেও তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। শনিবার ভোর রাতে আমাকে ডেকে গেইটের তালা খুলে দিতে বলে মিরাজ। কারণ জানতে চাইলে বলে, তার এক আত্মীয় মারা গেছে। পরে গেইট খুলে দিলে সে চলে যায়। শনিবার সকালে দুইজন ছেলে এসে মিরাজের আত্মীয় পরিচয়ে আমাদের সঙ্গে নিয়ে ওই বাসায় যেতে চায়। তারপর আমরা গিয়ে মিমের মরদেহ ফ্লোরে পড়ে থাকতে দেখি। তা দেখেই ওই দুইজনও কৌশলে পালিয়ে যায়। পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে।

কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মরদেহটি ঘরের ভেতর কাপড় দিয়ে ঢাকা অবস্থায় ছিল। গলায় একটি আঘাতের চিহৃ দেখা গেছে। ঘটনার পর তার স্বামী পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

ইমিগ্রেশনে ডিএম পণ্য আটকের পর তা নিয়ে বাণিজ্য বুঁদ কর্মকর্তারা

 

শার্শা উপজেলা প্রতিনিধিঃ

বেনাপোল কাস্টমস ইমিগ্রেশনে ডিএম(আটক ব্যবস্থাপনা) পণ্যর চালান বাণিজ্য মেতে উঠেছে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তারা। বেনাপোল চেকপোষ্ট ইমিগ্রেশনের বিভিন্ন অনিয়মের সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরপরই নড়ে চড়ে বসেন বেনাপোল কাস্টমসের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। চেকপোষ্ট ইমিগ্রেশনের আরও ও এআরও দের কড়া নির্দেশনা প্রদান করেন। ফলে বন্ধ হয়ে যায় সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ইমরান, নাঈম ও দিদারুলের গ্রীন সিগনালের প্রকাশ্য সিন্ডিকেট বাণিজ্য। ইমিগ্রেশনে দায়িত্বরত দুই রাজস্ব কর্মকর্তা মোকলেছুুর রহমান ও জাহাঙ্গীর দন্ডায়মান হয়ে আটক করতে শুরু করেন ল্যাগেজ পার্টিদের। কিন্তু এত কিছুর পরও টাকার নেশায় আটক পণ্য বাণিজ্য নেশায় বুঁধ সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তারা। একটি গোপন ভিডিওতে দেখা যায় সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ইমরান ও নাঈম ডিউটি করছেন সেখানে টেবিলে আটকানো বিপুল পরিমান পণ্য এআরও ইমরানের সাথে দাবিকৃত টাকায় বনিবনা হয়ে গেলে টেবিলের নিচে দিয়ে ব্যাগ ছেড়ে দিচ্ছেন সিপাইরা। একই ভাবে আটকানো পণ্য দাবিকৃত অর্থ নিয়ে ছেড়ে দিতে দেখা গেছে দিদারুলের।
চেকপোষ্ট ইমিগ্রেশন সূত্র থেকে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ইমিগ্রেশনে দায়িত্বরত সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তারা একটি সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত হয়ে ল্যাগেজ বাণিজ্য করছেন। আর বর্তমানে এসব ল্যাগেজ পার্টির হোতাদের মালামাল আটক হলে সরাসরি মোটা অংকের টাকার মাধ্যমে রফাদফা হয়ে অনায়াসে মাল বের হয়ে আসছে। যা ইমিগ্রেশনের সিসি ক্যামেরা পর্যবেক্ষন করলে মিলে যাবে। আবার বেশির ভাগ সময় দেখা গেছে আটক ডিএ স্লিপে ৬৭ কেজি মালামাল রয়েছে সেখানে এনজিও কর্মী শাহাজামাল ও সিরাজ মোটা অংকের টাকায় রফাদফা করে ৬৭ কেজির স্থলে পয়েন্ট বসিয়ে ৬.৭ কেজি পণ্য রেখে বাকি পণ্য ছেড়ে দিচ্ছে নাঈম, ইমরান ও দিদারুল। আটককৃত ডিএম স্লিপে কেজির অংক কথায় লেখা না থাকার কারনে এই বিশেষ সুবিধায় মাল ছেড়ে দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তারা। একই ভাবে এসব কর্মকর্তারা রাতে ডিউটি শেষে আটককৃত মালামালের মধ্য থেকে পছন্দকৃত শাড়ি, থ্রীপিস, কসমেটিক্স ব্যাগ ভর্তি করে বাসায় নিয়ে যায়। আর এসব পণ্য ভর্তি ব্যাগ ইমিগ্রেশন থেকে বের করে দেন পার্বতী, অনিমা, হান্নান, মান্নান সহ ভিভিন্ন ল্যাগেজ ব্যবসায়ি। এছাড়াও কয়েকজন সিপাই বিভিন্ন সময় আটককৃত পণ্যের ব্যাগ সরিয়ে ল্যাগেজ ব্যবসায়িদের মাধ্যমে বের করে বর্ডারের দোকানে বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নেই।

একাধিক ভারত ফেরত যাত্রীদের নিকট থেকে জানা যায়, কাস্টম সুপার জাহাঙ্গীর কর্তৃক ব্যপক হয়রানী ও লাঞ্চনার শিকার হচ্ছেন তারা। মহিলা যাত্রীদেরও গায়ে হাত তুলছেন এই রাজস্ব কর্মকর্তা। অভিযোগ রয়েছে রাজস্ব কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন যে কারনে সে কাস্টম হাউসেও সিঅ্যান্ডএফ কর্মকর্তাদের সাথে একাধিকবার খারাপ আচারণের কারনে তাকে চেকপোষ্ট ইমিগ্রেশনে বদলি করা হয়। এছাড়াও বেশি লোকজন দেখলে তার মাথায় সমস্যা হয়, তখন ক্ষিপ্ত হওয়া সহ কি ধরনের আচারন করেন সে বোধ হারিয়ে ফেলেন তিনি। পরে তাকে জিজ্ঞাসা করলে কিছুই বলতে পারেন না।
ভারত থেকে আগত পাসপোর্ট যাত্রী এ-০৭৯৭৩৪৯৭ আমিনুল ইসলাম জানান, গত ১৭ই মার্চ তিনি বাংলাদেশে প্রবেশ করেন ১ম বার তিনি ভিসায় বাংলাদেশে আসেন। ভারত থেকে ফেরার সময় পরিবারের জন্য ঈদের শপিং করে আনেন কিন্তু বাংলাদেশে ইমিগ্রেশন স্ক্যানে ব্যাগ দেওয়ার পর রাজস্ব কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর ব্যাগ আটক করে চেক করে আমার সাথে থাকা আনিত মালামাল কোন প্রকার ব্যাগেজ সুবিধা না দিয়ে তিনি সকল মালামাল ডিএম করেন। কি কারণে মালামাল ডিএম করছেন বললে তিনি আমার উপর চড়াও হয়ে মারতে আসেন। রাজস্ব কর্মকর্তার এহেন আচারণে আমি বাকরুদ্ধ হয়ে যায়। দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশনে এমন কর্মকর্তার ডিউটি ঝুঁকিপূর্ন বলে আমি মনে করছি। এছাড়াও বেশি কিছু জিজ্ঞাসা করলে তিনি নাকি পাসপোর্ট যাত্রীদের গায়ে হাত তোলেন।

ডিএম পণ্য ছাড়ার বিষয়ে এনজিও সিরাজুল ইসলামকে মুঠোফোনে জিজ্ঞাসা করলে তিনি ডিএম পণ্য ছেড়ে দেওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, আমি সুপার স্যার, ক্লার্ক লিংকন ও এআরও স্যারের কথায় মাল ছেড়েছি।
ডিএম পণ্য বাণিজ্য বিষয়ে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা দিদারুল আলমকে মুঠোফোনে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, এসব কথা সত্য নয় এখানে উদ্ধর্তন কর্মকর্তারা আছেন তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন।
যাত্রী হয়রানির ব্যাপারে বেনাপোল চেকপোষ্ট ইমিগ্রেশনের রাজস্ব কর্মকতা জাহাঙ্গীর আলমকে জিজ্ঞাসা করার জন্য তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম