শেরপুরের চেল্লাখালী নদীর আয়রন সেতুটি ৩ বছর আগে ভেঙে পড়লেও এখনো নির্মাণ হয়নি

শেরপুরের চেল্লাখালী নদীর আয়রন সেতুটি ৩ বছর আগে ভেঙে পড়লেও নির্মাণ হয়নি সেতু

শেরপুর সংবাদদাতা:

শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বাতকুচির চেল্লাখালী নদীর ওপর নির্মিত আয়রন সেতুটি প্রায় ৩ বছর আগে ভেঙে পড়লেও আজো নির্মিত হয়নি কোন সেতু! শুধু তাই নয়, বিকল্প ব্যবস্থা ও না থাকায় কমপক্ষে ১০ গ্রামের মানুষকে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, ৩ বছর আগে বন্যায় সেতু ভেঙে গেলেও নতুন কোনো সেতু নির্মাণের উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। ফলে ৫-৭ কিলোমিটার পথ ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট এলাকার লোকজনকে। এ ছাড়া দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে গিয়ে দিতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। জানা গেছে যে, বাতকুচি এলাকায় চেল্লাখালী নদীর ওপর আয়রন সেতুটি এলজিএসপির অর্থায়নে নির্মিত হয়েছিল। সেতুটি দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে ২০২৩ সালে বন্যায় প্রবল স্রোতে ভেঙে পড়ে।

পরে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে বাঁশ-খুঁটি দিয়ে সাময়িক চলাচলের উপযোগী করলেও পরের বছরের বন্যায় সেটিও বিলীন হয়ে যায়। ফলে নদী পারাপারের কোনো ব্যবস্থাই করা হয়নি। স্থানীয়রা জানান, সেতু দিয়েই মধুটিলা ইকোপার্ক, পোড়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ, পলাশীকুড়া উচ্চ বিদ্যালয়, আমবাগান বাজার, কয়রাকুড়ি, বেকিকুড়া, আন্ধারুপাড়া, শেখেরকুড়া ও বোনারপাড়া গ্রামের মানুষ যাতায়াত করতেন। কিন্তু সেতুটি ভেঙে পড়ায় কমপক্ষে ৫-৭ কিলোমিটার পথ ঘুরে যাতায়াত করতে গিয়ে শিশু-নারী, বৃদ্ধ, রোগীসহ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

শিক্ষার্থীরা জানান, আগে সেতু দিয়ে প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া-আশা করতাম । ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘ পথ ঘুরে স্কুলে যাতায়াত করতে হচ্ছে। বাতকুচির কৃষকরা বলেন, এ পথে প্রতিদিন আসা-যাওয়া করতে হয়। বর্তমানে সেতুর অভাবে নদী পারাপারে ভীষন কষ্ট হচ্ছে। সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় হাট-বাজারে কৃষি পণ্য আনা-নেয়া, স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী ও পথচারীগণ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। কৃষকরা আক্ষেপ করে বলেন, মাঝেমধ্যেই বন্যহাতির পাল লোকালয়ে চলে আসে। তখন যাওয়ার কোনো পথই থাকে না। অথচ সেতুটি নির্মাণ করা হলে দৌড়ে নিরাপদ স্থানে যাওয়া যেত।

পোড়াগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন বলেন, বাতকুচি এলাকায় চেল্লাখালী নদীর ওপর সেতুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । এ সেতুর ওপর দিয়ে হাজারো মানুষ যাতায়াত করতেন। সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় নদী পারাপারে মানুষের ভীষন কস্ট হচ্ছে।

তিনি জানান, ২ বছর আগে বন বিভাগ, পরিবেশ ও মৃত্তিকা অধিদপ্তরের টিম এসে পর্যাবেক্ষণ করে গেছে এবং এলজিইডির প্রকৌশলীরা এসে মাপজোখ করেছেন। এখন কোন অবস্থায় আছে, তা জানা নেই । তিনি মানবিক কারণেই দ্রুত সেখানে একটি সেতু নির্মাণ প্রয়োজন বলে জানান। “এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নালিতাবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া পিয়াল প্রতিনিধি কে বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
সেখানে সেতুর ব্যাপারে প্রকল্পের প্রস্তাবনা দেয়া আছে। বরাদ্দ ও অনুমতি পেলেই সেতু নির্মাণের পদক্ষেপ নেয়া হবে।”

গোসাইরহাটে অন্তঃসত্ত্বা নারীর ওপর হামলা

 

আজিজুর রহমান বাবু, জেলা সংবাদদাতা, শরীয়তপুর

শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলায় বেবী বেগম (২৮) নামে নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক নারী হামলার শিকার হয়েছেন। রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে উপজেলার নাগেরপাড়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বেরচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই অন্ত:সত্ত্বা নারীর ভাসুর মোয়াজ্জেম সরদার (৩৫), জা জোসনা বেগম (৩০) ও ননদ ফাতেমা বেগম (২৭)ও হামলার শিকার হয়েছেন। এঘটনায় ওই অন্ত:সত্ত্বার নারীর স্বামী ফারুক সরদার গোসাইরহাট থানায় একটি অভিযোগ করেছেন।

ফারুক সরদার জানান, রবিবার দুপুরে গোসাইরহাট থানার নাগেরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক খানের চাচাতো ভাই আজিজুল, এনামুল, সলেমান পূর্বেরচর গ্রামের এক স্কুলছাত্রকে মারধর করছিলো। এসময় ওই স্কুল ছাত্রের প্রতিবেশী আব্দুল জলিল সরদারের ছেলে ফারুক সরদার বাঁধা দিলে দেখে নিবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায় তারা। পরে বিকালে ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক খানের নির্দেশে আজিজুল, এনামুল, সলেমান সহ ২০/২৫ জন লোক ফারুক সরদারের বাড়ি হামলা করে। ফারুক সরদারকে বাড়িতে না পেয়ে তার নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেবী বেগম, বড়ভাই মোয়াজ্জেম সরদার, ভাবী জোসনা বেগম, ও বোন ফাতেমা বেগমকে মারধর করে। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেবী বেগমের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এঘটনায় গোসাইরহাট থানায় একটি অভিযোগ করেছেন।

এ ব্যাপারে ফারুক সরদার বলেন, আমার এক প্রতিবেশী স্কুলছাত্রকে মোজাম্মেল চেয়ারম্যানের ভাই এবং চাচারা মারধর করছে। আমি বাঁধা দেয়ায় আমাকে বাড়িতে এসে খোঁজে। পরে আমাকে না পেয়ে আমার বাড়ি ঘরে হামলা ও লুটপাট করে। আমার নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী, বড় ভাই, ভাবী ও বোনকে মারধর করেছে। আমি এর বিচার চাই।

আহত বেবী বেগম বলেন, মোজাম্মেল চেয়ারম্যানের ভাই এক স্কুলছাত্রকে মারতে ছিলো। আমার স্বামী বাঁধা দেয়ায় বাড়িতে এসে তাকে খোঁজাখুঁজি করে। পরে বাড়িতে না পেয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর করে। আমাকে লাথি দিয়েছে, মারধর করেছে। আমার ভাসুর, জা ও ননদকেও মারধর করেছে। তারা গোসাইরহাট হাসপাতালে ভর্তি।

অভিযোগ অস্বীকার করে নাগেরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক খান বলেন, আমি কোনোভাবেই এর সাথে জড়িত না। যদি কোনো অন্ত:সত্ত্বা নারীর ওপর হামলা হয়, সেটা অবশ্যই ন্যাক্কারজনক। প্রকৃত হামলাকারীদের আইনের আনার দাবি জানাচ্ছি।

গোসাইরহাট থানার ওসি পুস্পেন দেবনাথ বলেন, একটা অভিযোগ হয়েছে, আমরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম