চাঁদাবাজির করায় এনসিপি নেতাকে শোকজ

ডেস্ক রিপোর্ট:

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) চট্টগ্রাম নগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে বন্দরকেন্দ্রিক আন্দোলন দমাতে ৫ লাখ টাকা চাঁদা চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার (১০ আগস্ট) সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর বিষয়টি আলোচনায় আসে। ভিডিওতে নিজাম উদ্দিনকে অন্য একজন ব্যক্তির সঙ্গে টাকা নিয়ে কথা বলতে শোনা যায়।

এদিকে, এ ভিডিও ভাইরালের পর নিজাম উদ্দিনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে এনসিপি। গতকাল দলের চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী (দপ্তর) আরিফ মঈনুদ্দিন সাক্ষরিত এক পত্রে এই কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।

নোটিশে বলা হয়, গত ১০ আগস্ট বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদ মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদ মারফতে আপনার একটি ভিডিও এনসিপি, চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির নজরে এসেছে। ফলে আপনার বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। এমতাবস্থায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে কেন আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সেই বিষয়ে প্রধান যুগ্ম সমন্বয়কারী, এনসিপি চট্টগ্রাম মহানগর, মীর আরশাদুল হক বরাবর আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য আপনাকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

এদিকে, ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া দেড় মিনিটের ওই ভিডিওতে আফতাব হোসেন রিফাত নামে একজনকে নিজাম উদ্দিনের সঙ্গে মেসেঞ্জারে কলে কথা বলতে দেখা যায়, যেটি অন্য আরেকটি ফোনে ভিডিও করা হয়।

শুরুতে আফতাব হোসেন বলেন, ‘যদি মীর ভাইয়েরা আন্দোলন বন্ধ না করে তখন কী করব?’ জবাবে নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘আন্দোলন বন্ধ করাব। তোমারে দিছে, টাকা দিছে?’ এ পাশ থেকে ‘হ্যাঁ ভাই’ জবাব দেন আফতাব। তখন নিজাম বলেন, ‘কত দিয়েছে, কত লাখ’ এমন প্রশ্নে আফতাব বলেন ‘পাঁচ’। এরপর নিজাম উদ্দিন বলেন, আন্দোলন বন্ধ করার জন্য। তখন আফতাব বলেন ‘হ্যাঁ’। নিজাম এরপর বলেন ‘আরও বেশি নিতা প্রেশার দিয়ে।’ তখন আফতাব বলেন, ‘না ভাই, আমার তো ফ্যামিলি মেম্বার, কিভাবে বলি।’

নিজাম বলেন, এখন কি আন্দোলন বন্ধ করতে হবে। তখন আফতাব বলেন, ওনারা তো বললো এমনই। নিজাম বলেন, তোমরা দেখো ওর থেকে আরো পাঁচ লাখ নিতে পারো কি না, নিতে পারলে ওদেরকে আমি এনে রোহান, মীরদেরকে এসে কিছু একটা দিয়ে দিলাম। তখন আফতাব বলেন, কত। নিজাম বলেন, টেন। ওনাদের কাছে এত ছোট ডিমান্ড করতেছো কেন, তুমি বিষয়টা জানাবে না আমারে। এরপর আফতাব জানাচ্ছি বলে ফোন রেখে দেন।

আফতাব হোসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রিক সমন্বয়ক বলে জানিয়েছেন দলটির নেতাকর্মীরা। ভিডিওর কথাটা নিজের বলে স্বীকার করেছেন আফতাব। ভিডিওর বিষয়ে তিনি বলেন, বন্দরকেন্দ্রীক ইস্যু নিয়ে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে আমাকে নিয়ে। ঘটনাটা শুরু হয় মে মাসের ৩০ তারিখ থেকে। জয় আমাকে ফোন দিয়ে ডেকে নেয়। সঙ্গে ২৫ থেকে ৩০ জনকে নিয়ে এসে মারধর শুরু করে। এরপর নিজাম ভাইকে কল দিতে বলে। এরপর তারা জোরপূর্বক ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি করে। নিজাম ভাইয়ের সঙ্গে আমরা সব সময় এমন দুষ্টুমি করি। নিজাম ভাই ভাবছে দুষ্টুমি করে চাঁদার কথা বলছি। নিজাম ভাইও আমার কথার প্রেক্ষিতে কথা বলেছেন।

এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও সম্পর্কে জানতে চাইলে এনসিপি চট্টগ্রাম নগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘ভিডিওটি সাত-আট মাসের আগের। যে ভিডিও করছে সে এই সম্পর্কে একটা বক্তব্য দেবে। ওনার বক্তব্যে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।’

তবে ভিডিওটি বন্দর কেন্দ্রীক কোন আন্দোলনের বিষয়ে কথা বলা হচ্ছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

দেশ এখন দেউলিয়াত্বের কাছাকাছি:জিএম কাদের

অনলাইন ডেস্কঃ

দেশ এখন দেউলিয়াত্বের কাছাকাছি বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তিনি বলেছেন, সরকারের হাতে টাকা নেই, এলসি খুলতে পারছে না।  সরকারের হাতে রিজার্ভ নেই। রিজার্ভের টাকা অন্যখাতে খরচ করা হয়েছে, যা পৃথিবীর ইতিহাসে নেই।

রিজার্ভের অর্থ বিদেশিদের ধার দিয়েছে, বিমানে ও পায়রা বন্ধরে খরচ করা হয়েছে। বিভিন্নভাবে রিজার্ভের ৮ বিলিয়ন খরচ করা হয়েছে। নিত্যপণ্য, ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম আমদানির জন্য এলসি খুলতে পারছে না। আর এ কারণেই চাহিদার তুলনায় বাজারে পণ্য সরবরাহ কম। সকল জিনিসের দাম বেশি আর রিজার্ভ বর্তমান পরিস্থিতি অস্বাভাবিক।

তিনি বলেন, দেশ এখন দেউলিয়াত্বের কাছাকাছি। সরকারের রিজার্ভে যে টাকা আছে দেনা তার চেয়ে বেশি। দেনা পরিশোধ করলে রিজার্ভে কোন টাকা থাকবে না।

আজ শুক্রবার দুপুরে গাজীপুর জেলার চান্দনা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে মহানগর জাতীয় পার্টি আয়োজিত জনসভায় গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ কথা বলেন।

গাজীপুর মহানগর জাতীয় পার্টির উদ্যোগে জনসভায় মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি ও চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা এম এম নিয়াজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন, জাতীয় পার্টি মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, কো চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য আলহাজ্ব শফিকুল ইসলাম সেন্টু, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আবদুস সাত্তার মিয়া, ভাইস চেয়ারম্যান মো. আরিফুর রহমান খান, আহসান আদেলুর রহমান এমপি, গাজীপুর মহানগরের নেতৃবৃন্দের মধ্যে মো. জাকির হোসেন,  হানিফ মাস্টার, বারি মাস্টার।

মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মো. মোশারফ হোসেন এর পরিচালনায় এবং সহ সভাপতি মো. হারুন অর রশিদ এর সঞ্চালনায় জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।

গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরও বলেন, রমজান মাস আসছে, এমনিতেই জিনিসপত্রের দাম ঊর্ধ্বমুখী। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি, রমজানের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় দ্রব্যমূল্য সহনীয় মাত্রায় রাখতে। মানুষের আয় বাড়েনি, কিন্তু জিনিস পত্রের দাম বেড়েই চলছে। দেশের মানুষ যেন সুন্দরভাবে রোজা রেখে ইবাদত করতে পারে। সরকারকেই এই দায়িত্ব পালন করতে হবে। দেশের মানুষ কষ্টে আছে। তাই, পরিবার ভিত্তিক রেশনিং ব্যবস্থা চালু করুন। অতিদরিদ্র, দরিদ্র, নিন্মমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত অনুযায়ী রেশন কার্ড দিতে হবে। প্রতি সপ্তাহের জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কম মূল্যে মানুষের মাঝে বিতরণ করতে হবে। রমজানে নিত্যপণ্যের দাম যেন বাড়াতে না পারে সেজন্য সকলকে সচেতন থাকতে হবে। দায়িত্বশীলরা দুর্নীতি মুক্তভাবে দায়িত্ব পালন করলে রমজানে নিত্যপণ্যের দাম কেউ বাড়াতে পারবে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কম মূল্যে দিতে পারলেই মানুষ বাঁচবে।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যন আরো বলেন, এবার বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার হাজী হজ্জ করতে পারবেন। তিন বার সময় বাড়িয়ে এখন পর্যন্ত এক লাখ হাজী নিবন্ধন করেছেন। এখনো ২৭ হাজার কোটা বাকি আছে। হজ্জ প্যাকেজ এর দাম প্রায় ৭ লাখ টাকা করা হয়েছে। এটা আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের জন্য অসম্ভব। হজ্জের খরচ কমাতে ভর্তুকি দিতে হবে। প্রতিবেশী দেশগুলোতে হজ্জের খরচ কোথাও আমাদের চেয়ে অর্ধেক আবার কোথাও অর্ধেকের চেয়ে কম। বাংলাদেশে কেন হজ্জে যেতে এত টাকা খরচ হবে?

ব্যাংকিং খাতে অবাধ লুটপাট হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সরকারি হিসেবে খেলাপী ঋণের পরিমাণ শতকরা ৮ ভাগ। অথচ, আন্তর্জাতিক মনিটরিং সংস্থাগুলো বলছে বাংলাদেশে খেলাপী ঋণের পরিমাণ শতকরা ২৫ ভাগ। বছরে বিদ্যুত খাতে ১ বিলিয়ন ডলার লস হচ্ছে সরকারের ভুল সিদ্ধান্তে। মেগা প্রকল্পে যে খরচ হয়েছে তার দায়ভার এখন সাধারণ মানুষের ওপর পড়েছে। সেই দায়ভার মেটানো কঠিন হয়ে পড়বে। বাংলাদেশ থেকে দেদারছে অর্থ বিদেশে পাচার হচ্ছে। লুটপাটের কারণে সরকারের হাতে টাকা নেই। আন্তর্জাতিক সংস্থা মুডিস বলেছে, বাংলাদেশকে ঋণ দিলে তা আর ফেরত পাওয়া যাবে না। তাই বাংলাদেশকে ধার দেওয়া ঠিক হবে না।

বাংলাদেশের সামনে বিশাল রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা আছে বলে মন্তব্য করেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান।

‘আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পরস্পরের মুখিামুখি দাঁড়িয়ে আছে। দুটি দলেরই দাবি নিয়ে পিছু হটার সুযোগ নেই। এই দাবিগুলোতে কেউ ছাড় দিলে তারা যেন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তাই সংঘাতময় পরিস্থিতির আশঙ্কায় মানুষের মাঝে ভিতি বিরাজ করছে। আমরা চাই শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হোক। রাজনীতিতে শান্তির সুবাতাস চাই। আমরা রাজনীতির পরিবর্তন চাই। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বারবার ক্ষমতায় গিয়ে দুর্নীতি, লুটপাট, টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজী, দলীয়করণ করবে আমরা এর পরিবর্তন চাই। আমরা চাই সরকার সবাইকে সমান চোখে দেখবে। প্রশাসনও সরকার দলীয় অধীন হলে কোনো ভালো কাজ হয় না।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
বিমান বন্দরের সামনে এখোনো উৎসুক জনতার ভীড় নেভেনি আগুন বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি শিক্ষকদের সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড মামলার পথেই হাঁটছে বকশীগঞ্জের সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলা রাজউকের ইমারত পরিদর্শক মনিরুজ্জামান ৭ বছরেই শত কোটি টাকার মালিক শাহজালাল বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ নতুন ইতিহাস গড়লেন দীপিকা পাড়ুকোন বাংলাদেশকে রাজস্ব ও আর্থিক খাত সংস্কার অব্যাহত রাখতে হবে ডেঙ্গুতে আরও ১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৬১৯ ৩০ কোটি বছর আগে মহাকাশ থেকে ছুটে এসেছিল একটি বিশাল পাথর কুমিল্লায় হত্যার পর নারীর লাশ বেডশিট দিয়ে মুড়িয়ে খাটের নিচে রেখে গেল দুর্বৃত্তরা