
রংপুর জেলা প্রতিনিধি:
রংপুরের তারাগঞ্জে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে জামাই-শ্বশুর নিহতের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথবাহিনী। সোমবার (১১ আগস্ট) ভোরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
দুপুরে রংপুর জেলা পুলিশের মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উপজেলার চরকডাঙ্গা বালাপুর গ্রামের আলেফ উদ্দিনের ছেলে আখতারুল ইসলাম (৪৫), রহিমাপুর (খান সাহেবপাড়া) গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে মিজানুর রহমান (২৬), বুড়িরহাট ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের জাফর আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম (৪০) এবং সয়ার বালাপুর গ্রামের আজিজুল ইসলামের ছেলে ইবাদত আলী (৩৫)।
এর আগে, রোববার দুপুরে নিহত রূপলাল দাসের স্ত্রী ভারতী রানী বাদী হয়ে তারাগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ৫০০ থেকে ৭০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, তারাগঞ্জ বাজারে রূপলাল দাস জুতা সেলাই করতেন। শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে মিঠাপুকুরের ছরান বালুয়া এলাকা থেকে ভাগনে জামাই প্রদীপ দাসকে নিয়ে ভ্যানে করে বাড়ি ফেরার পথে সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট বটতলা মোড়ে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি তাদের পথরোধ করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এরই একপর্যায়ে সন্দেহভাজনরা প্রদীপ দাসের কালো ব্যাগ তল্লাশি করে ‘স্পিড ক্যানের’ বোতলে দুর্গন্ধযুক্ত পানীয় এবং কিছু ওষুধ পান। বোতলের ঢাকনা খোলার পর দুর্গন্ধে বুড়িরহাট এলাকার মেহেদী হাসানসহ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। এতে উত্তেজিত হয়ে রূপলাল দাস ও প্রদীপকে বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে মাঠে নিয়ে লাঠিসোঁটা ও লোহার রড দিয়ে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে গুরুত্বর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে তারাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক রূপলালকে মৃত ঘোষণা করেন। সেখান থেকে প্রদীপ দাসকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির জন্য পাঠান। সেখানে প্রদীপ দাস রোববার ভোর ৪টায় মারা যান।
তারাগঞ্জ থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক বলেন, নিহত রূপলালের স্ত্রী ভারতী রানী বাদী হয়ে ৫০০ থেকে ৭০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছেন। অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।