বিজয় ‘৭১ এর নতুন কমিটি গঠন:সভাপতি জসিম সম্পাদক রুবেল

চট্টগ্রাম অফিস ঃ

মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যয়ে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সংগঠণ বিজয় ‘৭১ এর আগামী ২০২২-২০২৪ মেয়াদের নতুন কমিটি গঠন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কমিটিতে মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ডের সাবেক নেতা মোঃ জসিম উদ্দিন চৌধুরী সভাপতি ও বিজয় ‘৭১ এর প্রতিষ্ঠাতা তরুণ সংগঠক লায়ন ডা. আর কে রুবেল সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নগরীর মোমিন রোডস্থ সংগঠনের নিজ কার্যালয়ে উপদেষ্টাদের উপস্থিতিতে
সর্বসম্ম‌তিক্রমে বার্ষিক সাধারণ সভার মধ্যে দিয়ে নতুন কমিটি গঠন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সদ্য বিদায়ী সভাপতি সজল চৌধুরী’কে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়।

এছাড়া কমিটিতে সহসভাপতি মোঃ কুতুব উদ্দিন, অমর কান্তি দত্ত, উত্তম কুমার আচার্য্য, আনিস আহমেদ খোকন, জাকির হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, মিনা চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. মনির আজাদ, ডা. এস কে পাল সুজন, ডা. অপূর্ব ধর, সবিতা বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মোঃ সেলিম, কে এম রাজীব, রাজশ্রী মজুমদার, আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. অজয় বোস রিংকু, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক সজল দাশ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মোঃ ফরহাদ হোসেন ও মোঃ জুবাইর, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আনন্ত শর্মা, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মুজিবুল হক, সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক প্রণব মজুমদার, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সুদিপ্ত বিশ্বাস, যুব বিষয়ক সম্পাদক আরাফাত রহমান, মহিলা সম্পাদিকা রিংকু ভট্টাচার্য, সদস্য আসিফ ইকবাল ও রতন চক্রবর্তী নির্বাচিত হয়। এছাড়া উপদেষ্টাদের মধ্যে রয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. বিকিরণ প্রসাদ বড়ুয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজল আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্যামল মিত্র, বীর মুক্তিযোদ্ধা রাখাল চন্দ্র ঘোষ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ভানু রঞ্জন চক্রবর্তী ও লেখক আশীষ সেনকে উপদেষ্টা নির্বাচিত করা হয়।

এসময় সংগঠনের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান সাবেক সভাপতি সজল চৌধুরী বলেন, বিজয়’৭১ আমার প্রাণের সংগঠন। এ সংগঠন আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। বিজয়’৭১ মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে, মুক্তিযোদ্ধাদের কথা বলে। এ সংগঠন কারোর একার নয়, এ সংগঠন সকলের। আজ যারা নির্বাচিত হয়েছেন তাদের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে সবাই মিলেমিশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বুকে ধারণ করে বিজয়’৭১ কে দেশ ও দেশের মানুষের কাছে আগামীতে বিজয়ের ইতিহাসের বাণীতে আরও জাগ্রত করে তুলবেন। নবনির্বাচিত সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ডের সাবেক নেতা মোঃ জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বিজয়’৭১ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সংগঠন, বিজয়’৭১ নতুন প্রজন্মরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বুকে ধারণ করার সংগঠন। এ সংগঠনের মধ্যে দিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বুকে ধারণ করে রাখবো। এ সংগঠন মুক্তিযুদ্ধের কথা বলবে। ১৯৭১ সালের ৩০ লক্ষ শহীদের কথা বলবে। নির্যাতিত মা বোনদের কথা বলবে। দেশের কথা বলবে। তাই আজ বিজয়ের মাসে সকলের প্রতি আহবান জানাচ্ছি আমরা সম্মিলিত হয়ে যেন বিজয়’৭১ কে আরও সুসংগঠিত করে তুলতে পারি সে চিন্তা চেতনা দিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

বাবা হার্ট অ্যাটাকে ছেলে ক্যান্সারে মর্মান্তিক বিদায় একই পরিবারের দুই প্রাণের

বাবা হার্ট অ্যাটাকে ছেলে ক্যান্সারে মর্মান্তিক বিদায় একই পরিবারের দুই প্রাণের

নেত্রকোনা সংবাদদাতা:

একদিকে ছেলের ফুসফুস ক্যান্সার, অন্যদিকে অর্থ সংকট—এই দুশ্চিন্তাই এক অসহায় বাবার জীবন কেড়ে নিল। আর বাবার মৃত্যুর মাত্র কয়েকদিন পরই বিনা চিকিৎসায় থেমে গেল মেধাবী কলেজছাত্র সোহান হোসেনের জীবন। নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা উপজেলার হাফেজ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মোঃ মোরসালিন হোসেন সোহান (১৯) দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুস ক্যান্সারে ভুগছিলেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি বাবা মোঃ সোবাহান হোসেন চিকিৎসার ব্যয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে গত ৩০ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন।

বাবার মৃত্যুর পর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও এলাকাবাসীর সহায়তায় সোহানকে ময়মনসিংহ মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাকে ঢাকায় রেফার করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ঢাকায় নেওয়ার পথেই সোহান শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। অভাব আর অসহায়তার সঙ্গে লড়াই করতে করতে শেষপর্যন্ত হেরে গেল দুই প্রজন্ম—একজন পিতা, আর তার স্বপ্ন বয়ে বেড়ানো সন্তান।

সোহানের মৃত্যুতে গোটা পূর্বধলায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কলেজের সহপাঠী, শিক্ষক, প্রতিবেশী এবং সমাজকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবেগঘন বার্তা দিয়েছেন। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো এক বিবৃতিতে বলেন, “সোহানের মৃত্যু শুধু একটি পরিবারের ক্ষতি নয়, বরং একটি সম্ভাবনার করুণ মৃত্যু। দরিদ্র মানুষের চিকিৎসার নিশ্চয়তা না থাকায় প্রতিনিয়ত আমরা এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা প্রত্যক্ষ করছি।”

এদিকে এলাকাবাসীর প্রশ্ন—“দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারে ভোগা একজন ছাত্র এবং তার বাবার আকস্মিক মৃত্যু—এই পুরো বিষয়টিতে কি স্বাস্থ্য বিভাগ বা স্থানীয় প্রশাসনের কোনো দায়িত্ব ছিল না?” সাধারণ মানুষের চিকিৎসা নিয়ে রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সহায়তা প্রাপ্তির সুযোগ ও মানবিক রাষ্ট্রব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে এই করুণ ঘটনা। একই সঙ্গে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে—একটি জীবন বাঁচাতে সমাজের সম্মিলিত প্রয়াস কতটা জরুরি।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম